আপত্তি: মির্যা সাহেব বলেছেন, মাহদীর মাধ্যমে মহানবী (সা.) এর দ্বিতীয় আগমন হবে
আপত্তি: মির্যা সাহেব বলেছেন, উম্মতে মুহাম্মদীয়ার মাঝে এ বিশ্বাস ধারাবাহিকভাবে চলে আসছে যে, আখেরী যামানায় ইমাম মাহদীর প্রকাশের মাধ্যমে মহানবী (সা.) এর দ্বিতীয় আগমন হবে ।
জবাব: কুরআন করীমের সূরা জুমুআর ৪নং আয়াতে আল্লাহ্তা’লা বলছেন, “আর তিনি তাকে অন্যদের মাঝেও আবির্ভূত করবেন যারা এখনো তাদের সাথে মিলিত হয়নি।”
এ আয়াতে নবী করীম (সা.) এর দ্বিতীয় আগমনের সুসংবাদ দেয়া হয়েছে। বুখারী শরীফে বর্ণিত হয়েছে, মহানবী (সা.) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় সালমান ফার্সীর কাধে হাত দিয়ে বলেন, ঈমান সপ্তর্ষী মন্ডলে উঠে গেলে পারস্য বংশীয় এক বক্তি তা ফিরিয়ে নিয়ে আসবে। এটি এদিকে ইঙ্গিত করছে যে, এক ব্যক্তি শেষ যুগে যখন কুরআনী শরীয়ত আকাশে উঠে যাবে আগমন করবেন। মূলত তিনিই ইমাম মাহদী ও মসীহ মওউদ হবেন। কেননা দুইজনের কাজ ও যুগের লক্ষণ একই। এ দ্বিতীয় যুগের দল সম্পর্কেই বলা হয়েছে, وَّاٰخَرِیْنَ مِنْھُمْ لَمَّا یَلْحَقُوْا بِھِمْ ।
এ সম্পর্কে হযরত মসীহ্ মওউদ (আ.) বলেন, “ওয়া আখারিনা মিনহুম আয়াত এ ইঙ্গিতও প্রদান করছে যে, যেরূপভাবে এ জামাত মসীহ্ মওউদ (আ.) এর জামাত সাহাবাগণ (রা.) এর জামাতের সাথে সাদৃশপূর্ণ। যেরূপভাবে মহানবী (সা.) নিজে প্রতিশ্রুত মাহদীর গুণ সম্পর্কে বলেছেন, তিনি তার (সা.) এর মত বা সদৃশ হবেন এবং তার সত্তায় দুটি সাদৃশ থাকবে। একটি সাদৃশ্য হযরত মসীহ্ মওউদ (আ.) এর সাথে যার কারণে তাকে মসীহ্ বলা হবে। দ্বিতীয় সাদৃশ্য, মহানবী (সা.) এর সাথে যার কারণে তাকে মাহদী বলা হবে।” (আইয়্যামুস সুলাহ, রূহানী খাযায়েন, খন্ড ১৪, পৃষ্ঠা ৩০৭)
তিনি (আ.) অন্যত্র বলেন, “যেহেতু ওয়া আখারিনা মিনহুম আয়াত অনুযায়ী মহানবী (সা.) এর আগমন বুরুজ ব্যতিরেকে অসম্ভব ছিল, তাই মহানবী (সা.) এর আধ্যাত্মিকতা এমন এক ব্যক্তিকে নিজের জন্য নির্বাচন করেছেন যিনি স্বভাব–চরিত্র এবং সৃষ্টির প্রতি সহানুভুতিতে তার সদৃশ হবেন এবং রুপকভাবে তাকে নিজের নাম আহমদ মুহাম্মদ দান করেছেন যেন এটি বুঝা যায় যে, যেন তার প্রকাশ প্রকৃত অর্থে মহানবী (সা.) এর প্রকাশ ছিল। কিন্তু এ দ্বিতীয় আগমনের বিষয়টি কোন্ যুগে হওয়ার কথা ছিল? এর জবাব হল, যেহেতু খোদা তা’লার কাজে যথার্থতা রয়েছে এবং “যথার্থ স্থানে যথার্থ বিষয় রাখা” তার স্বভাব যেমনটি হাকিম (পরম প্রজ্ঞাময়) নামের অর্থ এ দাবি করে এবং এছাড়া তিনি এক অদ্বিতীয় হওয়ার কারণে একত্বকে পছন্দ করেন। এ কারণে তিনি এটিই চেয়েছেন যে, যেরূপভাবে কুরআনের হেদদায়াতের পূর্ণতা আদম সৃষ্টির ন্যায় ৬ষ্ঠ দিনে জুমুআর দিনে করা হয়েছে, এরূপভাবে তবলীগ ও প্রচারের পূর্ণতার যুগ সেটিই যা ৬ষ্ঠ দিনের সাথে সাদৃশ রাখে। অতএব তিনি এ দ্বিতীয় আগমনের জন্য ৬ষ্ঠ সহস্রকে মনোনীত করেছেন এবং প্রচারের মাধ্যমগুলোকে এ ৬ষ্ঠ সহস্র বছরে প্রশস্ত করা হয়েছে। ডাকবিভাগের উন্নত ব্যবস্থা হয়েছে। অধিকাংশ মানুষ একজন আরেকজনের ভাষা সম্পর্কে অবগত হয়েছে আর এ বিষয়টি ৫ম সহস্র বছরে আদৌ এমন ছিল না, বরং ষাট বছর পূর্বেও যা এ অধমের অতীতের দিনগুলোতেও এ সমস্ত প্রচারমাধ্যম থেকে এ দেশ বঞ্চিত ছিল এবং এসবের মাঝে যা বিদ্যমান ছিল যা অসম্পূর্ণ, অসম্প্রসারিত ও দুর্লভ বস্তু হিসেবে ছিল।“ (তোহফায়ে গোলড়াবিয়া, রূহানী খাযায়েন, খন্ড ১৭, পৃষ্ঠা ২৬৫)
অন্যান্য উত্তর
- আপত্তি: মির্যা সাহেব রসূল (সা.)-কে হেলাল এবং নিজেকে বদর আখ্যা দিয়েছেন
- আপত্তি: মির্যা সাহেব লিখেছেন, তার সিংহাসন সবার ওপরে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব নিজেকে দরুদ শরীফের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করেছেন
- আপত্তি: মির্যা সাহেব লিখেছেন ইয়ালাস খোদাতা’লার নাম
- আপত্তি: মির্যা সাহেবের উপর অন্য ভাষায় ইলহাম হল কেন?
- আপত্তি: মির্যা সাহেব বলেছেন, মাহদীর মাধ্যমে মহানবী (সা.) এর দ্বিতীয় আগমন হবে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব নতুন নবুয়্যত, ধর্ম, কিবলা, নামায এবং কুরআন বানিয়েছেন
- আপত্তি: মির্যা সাহেবের কথা- একটি নতুন বাহন আবিষ্কার হবে যা আগুন দ্বারা চলবে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব বলেন, কুরআনে তাঁর নাম ইবনে মরিয়ম রাখা হয়েছে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব রেশমী লুঙ্গি পরিধান করেছিলেন যা হারাম