আপত্তি: আল্লাহ্ আমার হাতে বয়াত গ্রহণ করেছেন
আপত্তি: মির্যা গোলাম আহমদ সাহেব রূহানী খাযায়েন ১৮শ খণ্ডের ২২৭ পৃষ্ঠায় লিখেছেন, “আল্লাহ্ আমার হাতে বয়াত গ্রহণ করেছেন”
উত্তর: এমন কোন দাবিই মির্যা সাহেব করেন নি! ডাহা মিথ্যাকথা। আল্লাহ মিথ্যাবাদীর প্রতি লানত করুন। প্রিয় পাঠক, রূহানী খাযায়েন ১৮শ খণ্ডের ২২৭ নম্বর পৃষ্ঠায় হযরত মির্যা গোলাম আহমদ(আ.) তাঁর কয়েকটি আরবী ইলহাম প্রকাশ করেছেন। খোদার পক্ষ থেকে প্রাপ্ত এসব ইলহামের মাঝে একটি বাক্য হল, ‘ইন্নি বায়া’তুকা বায়া’নী রাব্বী’। এ থেকে আপত্তিকারী যে বিকৃত অর্থ বের করেছেন তা মোটেও ধোপে টেকে না। কেননা, ইলহামপ্রাপ্ত ব্যক্তি স্বয়ং এর সাথেই এর অনুবাদ প্রকাশ করে দিয়েছেন। ২২৭ নম্বর পৃষ্ঠা থেকেই এসব ইলহামের অনুবাদ আরম্ভ হয়ে পরবর্তী পৃষ্ঠা অর্থাৎ ২২৮ নম্বর পৃষ্ঠায় গিয়ে শেষ হয়েছে। যে কোন নিরপেক্ষ খোদাভীরু ব্যক্তি উক্ত ইলহামের অর্থ বোঝার জন্য বা দাবিকারকের দাবি জানার জন্য ‘মুলহাম্’ তথা সেই ইলহামপ্রাপ্ত ব্যক্তিরই দ্বারস্থ হতে বাধ্য। কিন্তু বিদ্বেষ ও শত্রুতা মানুষকে কখনও কখনও এত অন্ধ করে দেয় যার কারণে, সে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এক্ষেত্রেও অনুরূপ ঘটনাই ঘটেছে। আরবী শব্দ ‘বায়উন’ অর্থ ‘ব্যবসা’ তথা ‘লেনদেন’। এ ইলহামে সে শব্দটিই ব্যবহৃত হয়েছে। হযরত মির্যা গোলাম আহমদ(আ.) নিজে এ ইলহামের অর্থ প্রকাশ করে লিখেছেন: “আমি তোমার সাথে একটি লেনদেন করেছি। অর্থাৎ, একটি জিনিস আমার ছিল যার অধিকারী তোমাকে করা হয়েছে আর তোমার কাছে একটি জিনিস ছিল যার অধিকারী হয়েছি আমি। তুমিও এই ব্যবসার স্বীকারোক্তি দিয়ে বল, ‘খোদা আমার সাথে একটি লেনদেন করেছেন।’ যারা আধ্যাত্মিক জগতের সামান্য ছোঁয়াও রাখেন তারা ভালভাবে জানেন, আল্লাহ্র কাছে নিজেকে সঁপে দেয়াই হচ্ছে ইসলাম ধর্মের মূল শিক্ষা। এর বিনিময়ে আল্লাহ্ তা’লা নিজের সন্তুষ্টি তথা ‘জান্নাত’ দান করেন। একথার ঘোষণা দিয়ে আল্লাহ্ তা’লা কুরআন শরীফে স্পষ্টভাবে বলেছেন,
إِنَّ اللَّـهَ اشْتَرَىٰ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ أَنفُسَهُمْ وَأَمْوَالَهُم بِأَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ ۚ
অর্থাৎ ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ বিশ্বাসী মুমিনদের কাছ থেকে তাদের জীবন ও ধন-সম্পদ কিনে নিয়েছেন এর বিনিময়ে তাদেরকে জান্নাত দেয়ার শর্তে’ (সূরা তওবা, আয়াত ১১১)
এ আয়াতের শেষে বিশ্বাসী মুমিনদের এ কাজটিকে স্পষ্ট ভাষায় একটি ‘ব্যবসা’ বা লেনদেন হিসেবে উল্লেখ করে আল্লাহ তা’লা বলছেন,
فَاسْتَبْشِرُوا بِبَيْعِكُمُ الَّذِي بَايَعْتُم بِهِ ۚ وَذَٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ’
অর্থ: ‘অতএব তোমরা তোমাদের এই ব্যবসার কারণে আনন্দিত হও যা তোমরা তাঁর সাথে করেছ। আর এটিই হল মহাসাফল্য।’
আপত্তিকারীদেরকে জিজ্ঞেস করি, যে ব্যক্তি নিজ জীবনে আল্লাহর পক্ষ থেকে এই পূর্বঘোষিত মহাসাফল্য লাভের সুসংবাদ পেয়েছেন তাঁর বিরোধিতা করা কি আপনাদের সাজে? নাকি ‘তাজ্আলূনা রিযকাকুম আন্নাকুম তুকায্যিবূন’ কথাটি আপনাদের জন্যও প্রযোজ্য? একদিকে এত গভীর আধ্যাত্মিক বিষয়টিকে এড়িয়ে যাবার চালাকি, অপর দিকে ইলহামের অর্থ বিকৃত করার ধৃষ্টতা! আল্লাহ্র ভয় বলতে কি কিছুই অবশিষ্ট নেই?”
অন্যান্য উত্তর
- আপত্তি: মির্যা সাহেব রসূল (সা.)-কে হেলাল এবং নিজেকে বদর আখ্যা দিয়েছেন
- আপত্তি: মির্যা সাহেব লিখেছেন, তার সিংহাসন সবার ওপরে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব নিজেকে দরুদ শরীফের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করেছেন
- আপত্তি: মির্যা সাহেব লিখেছেন ইয়ালাস খোদাতা’লার নাম
- আপত্তি: মির্যা সাহেবের উপর অন্য ভাষায় ইলহাম হল কেন?
- আপত্তি: মির্যা সাহেব বলেছেন, মাহদীর মাধ্যমে মহানবী (সা.) এর দ্বিতীয় আগমন হবে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব নতুন নবুয়্যত, ধর্ম, কিবলা, নামায এবং কুরআন বানিয়েছেন
- আপত্তি: মির্যা সাহেবের কথা- একটি নতুন বাহন আবিষ্কার হবে যা আগুন দ্বারা চলবে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব বলেন, কুরআনে তাঁর নাম ইবনে মরিয়ম রাখা হয়েছে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব রেশমী লুঙ্গি পরিধান করেছিলেন যা হারাম