আপত্তি: কুরআনে যে ভুলগুলো সংঘটিত হয়েছে আমি তা চিহ্নিত করতে এসেছি
আপত্তি: তাফসীরের কারণে কুরআনে যে ভুলগুলো সংঘটিত হয়েছে আমি তা চিহ্নিত করতে এসেছি। এক আত্মভোলার কাশফ। (রুহানী খাযায়েন ৩/৪৮২)
উত্তর: সবচেয়ে হাস্যকর বিষয় হল, যে উদ্ধৃতি তিনি আপত্তি হিসাবে তুলে ধরেছেন তা মির্যা সাহেবের বক্তব্যই নয়। সাধারণ মানুষ উর্দু আরবী পড়তে জানে না দেখে একজন ‘আল্লামা’ এভাবে বিভ্রান্তি ছড়াবেন এটি বিশ্বাসযোগ্য নয়। উক্ত পৃষ্ঠায় খোদাপ্রেমে আসক্ত এক মাজযুব ব্যক্তি জামালপুর নিবাসী জনৈক গোলাবশাহ হযরত মির্যা সাহেবের আবির্ভাবের ৩০ বছর পূর্বে তার আগমন সম্বন্ধে আগাম বর্ণনা বা বিবৃতি যথাযথ সাক্ষ্য প্রমাণসহ উপস্থাপন করেছেন। করিম বখশ নামে এক ব্যক্তি তার জীবন সায়াহ্নে এসে আল্লাহর নামে শপথ করে গোলাব শাহ নামক খোদাভক্ত ‘মাজযুব’-এর সেই ভবিষ্যদ্বাণীটি সাক্ষীদের সামনে লিখিত আকারে জমা দেওয়ার পর হযরত মির্যা সাহেব ১৮৯১ সালে তার লিখিত সাক্ষ্যটি ‘ইযালায়ে আওহাম’ গ্রন্থে ছাপিয়ে দেন। খোদাভক্ত গোলাপ শাহর বক্তব্যটি করিম বখশের বর্ণনায় নিম্নরূপ:
‘ঈসা এখন যুবক বয়সে উপনীত হয়েছেন এবং তিনি লুধিয়ানায় এসে কুরআনের ভুল বের করবেন এবং কুরআনের মানদণ্ডে সিদ্ধান্ত দিবেন।’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘মৌলভীরা তাকে অস্বীকার করবে।’ আমি তখন অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করি, ‘কুরআন তো আল্লাহর বাণী, কুরআনেও কি ভুল-ভ্রান্তি আছে?’ তিনি উত্তরে বললেন, ‘তফসীরের উপর তফসীর হয়ে গেছে এবং কবির ভাষা ছড়িয়ে গেছে।’ এরপর বললেন, ‘ঈসা যখন আসবেন তখন তিনি কুরআন থেকে ফয়সালা করবেন। আর মৌলভীরা তা অস্বীকার করবে। আর যখন সেই ঈসা লুধিয়ানায় আসবেন তখন ব্যাপক প্লেগের পাদুর্ভাব ঘটবে।’ আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘ঈসা এখন কোথায়?’ তিনি বললেন, ‘কাদিয়ানে’। আমি বললাম, ‘কাদিয়ান তো লুধিয়ানার মাত্র তিন ক্রোশ দূরে অবস্থিত- সেখানে আবার ঈসা কোথায়?’ তিনি এর উত্তর দিলেন না। আমি তখন জানতাম না গুরুদাসপুর জেলাতে কাদিয়ান নামে একটি গ্রাম আছে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘ঈসা ইবনে মরিয়ম নবিউল্লাহ তো আকাশে আছেন এবং মক্কায় অবতরণ করবেন।’ তিনি উত্তরে বললেন, ‘ঈসা ইবনে মরিয়ম নবিউল্লাহ মারা গেছেন। এখন তিনি আসবেন না। আমরা বাদশাহ, মিথ্যা বলব না।’
উক্ত বর্ণনায় জানা যায়, গোলাব শাহ মাজযুব বলেছেন, আগমনকারী ঈসা এসে মুসলমান ওলামাদের মাঝে প্রচলিত ভুল ধ্যান-ধারণা কুরআন শরীফ থেকে খণ্ডন করবেন। গোলাব শাহ সাহেবের উক্ত ভবিষ্যদ্বাণীর তিন স্থানে এই কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু কোন এক অদৃশ্য কারণে আল্লামা আব্দুল মজিদ সে কথা উল্লেখ না করে উক্ত ব্যক্তির খণ্ডিত ও অসম্পূর্ণ বর্ণনাকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করেছেন এবং বিকৃত বক্তব্যটিকে আবার মির্যা সাহেবের প্রতি আরোপও করেছেন!
হে ‘আল্লামা’! আমরা আবার বলছি, কুরআনকে সংশোধন করার জন্য নয় আলেম-উলামাদের মাঝে প্রচলিত ভুল ধ্যানধারণাকে কুরআন দ্বারা খণ্ডন করার কথা উক্ত ব্যক্তির ভবিষ্যদ্বাণীতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে। আমাদের ধারণা ছিল, আপনি হযরত মসীহে মাওউদ(আ.)-এর বইগুলো পড়ে তাঁর বিরুদ্ধে কলম ধারণ করেছেন। আপনার এ আপত্তিটি পড়ে মনে হচ্ছে, আপনি তার লেখাটি পড়েও দেখেন নি। আপনি অন্যদের চর্বিত চর্বণ উপস্থাপন করেছেন মাত্র।
অন্যান্য উত্তর
- আপত্তি: মির্যা সাহেব রসূল (সা.)-কে হেলাল এবং নিজেকে বদর আখ্যা দিয়েছেন
- আপত্তি: মির্যা সাহেব লিখেছেন, তার সিংহাসন সবার ওপরে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব নিজেকে দরুদ শরীফের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করেছেন
- আপত্তি: মির্যা সাহেব লিখেছেন ইয়ালাস খোদাতা’লার নাম
- আপত্তি: মির্যা সাহেবের উপর অন্য ভাষায় ইলহাম হল কেন?
- আপত্তি: মির্যা সাহেব বলেছেন, মাহদীর মাধ্যমে মহানবী (সা.) এর দ্বিতীয় আগমন হবে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব নতুন নবুয়্যত, ধর্ম, কিবলা, নামায এবং কুরআন বানিয়েছেন
- আপত্তি: মির্যা সাহেবের কথা- একটি নতুন বাহন আবিষ্কার হবে যা আগুন দ্বারা চলবে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব বলেন, কুরআনে তাঁর নাম ইবনে মরিয়ম রাখা হয়েছে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব রেশমী লুঙ্গি পরিধান করেছিলেন যা হারাম