আপত্তি: মির্যা সাহেব তার বিভিন্ন পুস্তকে ঈসা(আ.)-এর বিভিন্ন কবরের কথা উল্লেখ করেছেন, কোনটি সঠিক?
উত্তর: হযরত মসীহ্ মাওউদ (আ.) বলেন,
‘একথা সত্য, মসীহ তার দেশ গেলিলে গিয়ে মারা গেছেন।’ (ইযালায়ে আওহাম, রূহানী খাযায়েন ৩য় খ-, পৃষ্ঠা ৩৫৩)
আবার হযরত মসীহ্ মওউদ (আ.) বলেছেন,
‘এরপর মসীহ সেই স্থান থেকে সংগোপনে পালিয়ে কাশ্মিরের দিকে এসে গেছেন এবং সেখানেই মৃত্যু বরণ করেছেন আর তোমরা শুনেছ, শ্রীনগরের খানইয়ার মহল্লায় তাঁর কবর আছে।’
(কিশতিয়ে নূহ, রূহানী খাযায়েন ১৯শ খ- পৃষ্ঠা ৩৫৩)
যদি ইযালায়ে আওহাম পুস্তকে পূর্বাপর পর্যালোচনা করা হয় তাহলে দেখা যাবে, হযরত মসীহ্ মাওউদ(আ.) এই উদ্ধৃতিতে খ্রিস্টানদের বিশ্বাসের আলোকে হযরত মসীহ্ও তিন দিন জীবিত থাকার বিষয়টি উল্লেখ করছেন যে তিন দিন পর খ্রিস্টানদের বিশ্বাস অনুযায়ী যিশু খোদার ডান পাশে গিয়ে বসেছেন।
হযরত মসীহ্ মাওউদ(আ.) ইযালায়ে আওহামে ‘২৩ এপ্রিল প্রকাশিত আখবার নূর আফশাঁর আপত্তি’ শিরোনামে একটি প্রবন্ধ লিখেছেন। নূর আফসাঁ পত্রিকায় হযরত মসীহর আকাশে চলে যাবার দলীল দেয়া হয়েছিল, ১১জন হাওয়ারী স্বচক্ষে তাঁকে আকাশে চলে যেতে দেখেছে। এর প্রেক্ষিতে হযরত আকদাস মসীহ মাওউদ(আ.) লেখেন,
‘এখন পাদ্রি সাহেব শুধু একথাতেই সন্তুষ্ট হয়ে ভেবে নিয়েছেন যে, হযরত মসীহকে এই নশ্বর দেহ সহই তাঁর মৃত্যুর পর আকাশে দিকে উঠানো হয়েছে। কিন্তু তারা জানে এই বর্ণনা লুকা কর্তৃক বর্ণিত যিনি হযরত মসীহকে দেখা তো দূরের কথা তার শাগরেদদের কাছ থেকেও কিছু শুনেন নি। এক্ষেত্রে এমন ব্যক্তির বর্ণনা কীভাবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে যেখানে কোন চাক্ষুষ সাক্ষির নাম উদ্ধৃত নেই। এসব বর্ণনা বিভিন্ন ভুল ধারণায় ভরপুর। এটা ঠিক, মসীহ নিজের দেশ গেলিলে মারা গেছেন কিন্তু যে দেহ দাফন করা হয়েছিল সেই দেহ নিয়েই তিনি জিবিত হয়ে গেছেন তা নয় বরং সেই অধ্যায়ের ৩ আয়াত স্পষ্ট করছে মৃত্যুর কাশফীভাবে ৪০দিন পর্যন্ত মসীহ তার শাগরেদদের দেখা দিয়েছেন। এস্থলে কেউ এটি মনে করবেন না, মসীহ ক্রুশবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন কেননা আমি প্রমাণ করেছি, খোদা তালা মসীহর প্রাণ রক্ষা করেছিলেন। বরং প্রথম অধ্যায়ের ৩ আয়াত মসীহর স্বাভাবিক মৃত্যুর বিষয়ে সাক্ষ দিচ্ছে যা গালীলে সংঘটিত হয়েছে।… মনে রাখবে এসব বিশ্লেষণ এমন অবস্থায় যখন আমরা এসব উদ্ধৃতিকে সঠিক ও হস্তক্ষেপের উর্ধে মেনে নিই কিন্তু এসব উদ্ধৃতি মেনে নেয়া দুঃষ্কর বিষয়।”
(ইযালায়ে আওহাম; রূহানী খাযায়েন ৩য় খ-, পৃষ্ঠা ৩৫৩-৩৫৬)
এই উদ্ধৃতি থেকে স্পষ্ট প্রতিভাত হয়, হযরত মির্যা সাহেব যে কবরকে গালীলে অবস্থিত বলে বর্ণনা করেছেন তা বাইবেলের আলোকে এবং খ্রিস্টানদের আকীদা থেকে বলেছেন যে কবরে হযরত মসীহ ক্রুশ বিদ্ধ হবার পর ছিলেন। এই কবরটি একটি কক্ষের ন্যায় ছিল খ্রিস্টানরা আজও এর উপাসনা করে।
হযরত মির্যা সাহেব উপরোক্ত উদ্ধৃতিতে স্পষ্ট বলেছেন,
‘এস্থলে কেউ এটি মনে করবেন না, মসীহ ক্রুশবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন কেননা আমি প্রমাণ করেছি, খোদা তালা মসীহর প্রাণ রক্ষা করেছিলেন।’ এরপর তিনি শেষে বলছেন, ‘মনে রাখবে এসব বিশ্লেষণ এমন অবস্থায় যখন আমরা এসব উদ্ধৃতিকে সঠিক ও হস্তক্ষেপের উর্ধ্বে ধরে নিই কিন্তু এসব উদ্ধৃতি মেনে নেয়া দুঃষ্কর বিষয়।’ এ থেকে স্পষ্ট বুঝা যায় হযরত মসীহ মাওউদ (আ.) গালীল বা বিলাদে শামের কবরকে জীবিত দাফনের কবরই বলেছেন। হযরত মির্যা সাহেব রূহানী খাযায়েন ১০ম খণ্ড, সাত্ বচন পুস্তকের ৩০৭ নম্বর পৃষ্ঠায় বলেন,
‘হ্যা, আমি কোন এক পুস্তকে এটিও লেখেছিলাম, হযরত মসীহর কবর বিলাদে শামে কিন্তু এখন সঠিক গবেষণা আমাদেরকে এ বিষয়টি লিখতে বাধ্য করছে, প্রকৃত কবর কাশ্মীরেই আছে এবং বিলাদে শামের কবর হল যেখানে তাকে জীবিত দাফন করা হয়েছিল এবং তিনি তা থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন।”
অতএব, মির্যা সাহেব পূর্বে কোন পুস্তকে গালীল বা বিলাদে শামে মসীহর কবর আছে বলে বলে থাকলেও তার নিজের বক্তব্য অনুযায়ী কাশ্মীরের খানইয়ার মহল্লার কবরই প্রকৃত কবর আর গালীল বা বিলাদে শামের কবরটিতে হযরত মসীহ(আ.)-কে আহত অবস্থায় মৃত ভেবে দাফন করা হয়েছিল। অতএব স্পষ্ট করে বলে দেয়ার পর এতে আর কোন আপত্তি থাকতে পারে না। যে হেদায়েত অন্বেষণ করে আল্লাহ তাকে হেদায়েত দান করুন। আমীন।
অন্যান্য উত্তর
- আপত্তি: মির্যা সাহেব রসূল (সা.)-কে হেলাল এবং নিজেকে বদর আখ্যা দিয়েছেন
- আপত্তি: মির্যা সাহেব লিখেছেন, তার সিংহাসন সবার ওপরে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব নিজেকে দরুদ শরীফের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করেছেন
- আপত্তি: মির্যা সাহেব লিখেছেন ইয়ালাস খোদাতা’লার নাম
- আপত্তি: মির্যা সাহেবের উপর অন্য ভাষায় ইলহাম হল কেন?
- আপত্তি: মির্যা সাহেব বলেছেন, মাহদীর মাধ্যমে মহানবী (সা.) এর দ্বিতীয় আগমন হবে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব নতুন নবুয়্যত, ধর্ম, কিবলা, নামায এবং কুরআন বানিয়েছেন
- আপত্তি: মির্যা সাহেবের কথা- একটি নতুন বাহন আবিষ্কার হবে যা আগুন দ্বারা চলবে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব বলেন, কুরআনে তাঁর নাম ইবনে মরিয়ম রাখা হয়েছে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব রেশমী লুঙ্গি পরিধান করেছিলেন যা হারাম