আপত্তি: কুরআনকে আমি কাদিয়ানের কাছে অবতীর্ণ করেছি
আপত্তি: কুরআনকে আমি কাদিয়ানের কাছে অবতীর্ণ করেছি। মির্যা সাহেবের কাছে ওহী। (তাযকেরাহ ৫৯, ৪র্থ এডিসন)
উত্তর: চলুন এ বিষয়ে হযরত সাহেবের সম্পূর্ণ ইলহামটি দেখে নেয়া যাক। ইলহামটি হল, “ইন্না আনযালনাহু কারীবান মিনাল কাদিয়ান। ওয়া বিলহাক্কি আনযালনাহু ওয়া বিল–হাক্কি নাযালা। সাদাকাল্লাহু ওয়া রাসূলুহু ওয়া কানা আমরুল্লাহি মাফউলা।”(তাযকেরাহ ৫৯,দ্র, ৪র্থ এডিসন)
এই ইলহামটির ঠিক নিচে মির্যা সাহেবকৃত অর্থ এভাবে দেয়া আছে: “আমি এসব লক্ষণাবলী ও অলৌকিক নিদর্শনাবলীকে এবং এই তত্ত্বজ্ঞান ও সূক্ষ্মতত্ত্বপূর্ণ ইলহাম কাদিয়ানের নিকটে অবতীর্ণ করেছি। আর যথার্থ প্রয়োজনে অবতীর্ণ করেছি এবং প্রয়োজন সাপেক্ষেই অবতীর্ণ হয়েছে। আল্লাহ ও তাঁর রসূল আগাম সংবাদ দিয়েছিলেন যা পূর্ণ হয়েছে আর আল্লাহ যা ইচ্ছা পোষণ করেছেন তা পূর্ণ হবারই কথা।” (তাযকেরাহ, ৪র্থ এ্যাডিশন পৃষ্ঠা ৫৯)
পাঠকবৃন্দ লক্ষ্য করুন, আরবী ইলহামটিতে কুরআন অবতীর্ণ করার কথা বলাই হয় নি। ‘কুরআন‘ শব্দটিই এতে নেই। তা সত্ত্বেও মির্যা সাহেবের শত্রুতা মানুষকে কতটা অন্ধ করে দিয়েছে। ‘আল্লামা’ নিজেও ভাল করে জানেন, হযরত মির্যা সাহেবের প্রতি কুরআন অবতীর্ণ হয় নি। বরং শেষ যুগে প্রতিশ্রুত মহাপুরুষের কাছে কুরআনের মাঝে নিহিত ঐশীজ্ঞান ও মারেফাত অবতীর্ণ করার কথা এতে বলা হয়েছে। মির্যা সাহেব নিজে এ ইলহামের অনুবাদ করে দিয়েছেন (উদ্ধৃত মূল পৃষ্ঠাটি ১৪৮ পৃষ্ঠায় দ্রষ্টব্য)।
একজন আরবী-উর্দু জানা ‘আল্লামা’ কেমন করে এত প্রাঞ্জল মিথ্যা বানিয়ে জনগণের সামনে উপস্থাপন করতে পারেন- এটি ভাবতেও অবাক লাগে! সাধারণ বাঙালি মুসলমান আরবী উর্দু জানে না বলে তাদেরকে এত বোকা মনে করার কোন কারণ নেই। পাঠকবৃন্দ, শুধু মানুষ যেন বিভ্রান্ত না হয় তাই আমরা আল্লামা আব্দুল মজিদের এসব আপত্তির উত্তর লিখছি নইলে যার পক্ষ থেকে স্পষ্ট প্রতারণা সাব্যস্ত হয়ে যায় তাকে উত্তর দেয়ার কোন নৈতিক দায়িত্ব প্রতিপক্ষের ওপর বর্তায় না।
হযরত মির্যা সাহেব উক্ত ইলহামের যে ব্যাখ্যা করেছেন তা হল, হাদীসে বর্ণিত হয়েছে শেষযুগের মহাপুরুষ দামেস্কের পূর্বাঞ্চলে শুভ্র মিনারার নিকটে আবির্ভূত হবেন। উক্ত ইলহামে ইনদা কাদিয়ান বলে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে পূর্বাঞ্চলের সেই স্থান হল কাদিয়ান। অর্থাৎ যে স্থান থেকে প্রকৃত ইসলামের সঠিক ব্যাখ্যা সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে। (এই ইলহামের ব্যাখ্যা দেখার জন্য দেখুন ইযালায়ে আওহাম পৃষ্ঠা ৭৩)
যেহেতু মির্যা সাহেবের এ ইলহামে পবিত্র কুরআনের নামটি পর্যন্ত উল্লেখ নেই তাই ইলহামটিকে কুরআন অবমাননাকর বলার কোন সুযোগই নেই।
অন্যান্য উত্তর
- আপত্তি: মির্যা সাহেব রসূল (সা.)-কে হেলাল এবং নিজেকে বদর আখ্যা দিয়েছেন
- আপত্তি: মির্যা সাহেব লিখেছেন, তার সিংহাসন সবার ওপরে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব নিজেকে দরুদ শরীফের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করেছেন
- আপত্তি: মির্যা সাহেব লিখেছেন ইয়ালাস খোদাতা’লার নাম
- আপত্তি: মির্যা সাহেবের উপর অন্য ভাষায় ইলহাম হল কেন?
- আপত্তি: মির্যা সাহেব বলেছেন, মাহদীর মাধ্যমে মহানবী (সা.) এর দ্বিতীয় আগমন হবে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব নতুন নবুয়্যত, ধর্ম, কিবলা, নামায এবং কুরআন বানিয়েছেন
- আপত্তি: মির্যা সাহেবের কথা- একটি নতুন বাহন আবিষ্কার হবে যা আগুন দ্বারা চলবে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব বলেন, কুরআনে তাঁর নাম ইবনে মরিয়ম রাখা হয়েছে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব রেশমী লুঙ্গি পরিধান করেছিলেন যা হারাম