আপত্তি: মির্যা সাহেব তার অস্বীকারকারীদের কাফের আখ্যায়িত করেন
আপত্তিঃ হযরত মির্যা সাহেব পূর্বে তার অস্বীকারকারীদের কাফের আখ্যায়িত করা থেকে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তিনি এবং তার জামা‘ত মসীহ মওউদের অস্বীকারকারীদের কাফের মনে করা শুরু করে দেন।
জবাব: হুবুহু এই একই প্রশ্ন হুযুর (আ.) কে করা হয়েছিল। আপত্তিকারক লিখেন, “হুযুর মহোদয় অসংখ্য জায়গায় লিখেছেন যে, কলেমা পাঠকারী এবং ক্বিবলা অভিমুখিদের কাফের বলা কোনভাবেই সঠিক নয়। এ থেকে স্পষ্ট বুঝা যায় যে, সেই সকল মুমিন ব্যতিরেকে যারা তাকে অস্বীকার করার কারণে কাফের হয়ে যায়, তাকে না মানার জন্য কাফের হতে পারে না। কিন্তু আব্দুল হাকিম খানকে তিনি লিখেন যে, প্রত্যেক সেই ব্যক্তি যে আমার দাবি শুনেছে এবং সে আমাকে মেনে নেয়নি, সে মুসলমান নয়। এই বর্ণনা এবং পূর্ববর্তী কিতাবসমূহের বর্ণনার মাঝে মতপার্থক্য রয়েছে। অর্থাৎ, তিনি ‘তিরিয়াকুল কুলুব’ ইত্যাদি গ্রন্থে লিখেছেন যে, আমাকে না মানার কারণে কেউ কাফের হয় না আর এখন তিনি লিখছেন যে, আমাকে অস্বীকার করার কারণে কাফের হয়ে যায়।”
হযরত মসীহ মওউদ (আ.) এর জবাবে লিখেন, “এটি কতই না অদ্ভুত বিষয় যে, আপনারা কাফের আখ্যায়িতকারী এবং অস্বীকারকারীদেরকে দুই ধরণের মানুষ মনে করছেন। কিন্তু খোদার নিকট একই রকম। কেননা যে ব্যক্তি আমাকে মান্য করে না সে একারণেই মান্য করে না যে, সে আমাকে মিথ্যারোপকারী আখ্যা দেয়। কিন্তু আল্লাহ্তা‘লা বলেন, খোদা তা‘লার উপর মিথ্যারোপকারী সবচেয়ে বড় কাফের। যেরূপ তিনি বলেছেন,
وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرَى عَلَى اللّهِ كَذِبًا أَوْ كَذَّبَ بِآيَاتِهِ إِنَّهُ لاَ يُفْلِحُ الظَّالِمُونَ (সূরা আনআম : ২২) অর্থাৎ, সবচেয়ে বড় কাফের দুই ধরণের। এক খোদার উপর মিথ্যারোপকারী। দুই, খোদা তা‘লার বাণীর উপর মিথ্যারোপকারী।
তাই যেহেতু আমি একজন মিথ্যারোপকারীর মতে খোদার উপর মিথ্যারোপ করেছি। এই পরিপ্রেক্ষিতে আমি শুধু কাফেরই নই, বরং সবচেয়ে বড় কাফের হলাম। আর যদি আমি মিথ্যারোপকারী না হই, তাহলে সেই কুফরের ফতোয়া তার উপর গিয়েই পরবে। যেরুপ আল্লাহ তা‘লা এই আয়াতে বলেছেন। এছাড়া যে আমাকে মানে না সে খোদা ও রসূলকেও মানে না। কেননা আমার সম্মন্ধে খোদা ও তার রসূলের ভবিষ্যদ্বাণী রয়েছে।”
টিকায় লিখা আছে, “নিঃসন্দেহে সেই ব্যক্তি যে খোদার বাণীর উপর মিথ্যারোপ করে সে কাফের। সুতরাং যে আমাকে মানে না সে আমাকে মিথ্যারোপকারী আখ্যা দেয়ার কারণে আমাকে কাফের সাব্যস্ত করে। এজন্য আমাকে অস্বীকার করার কারণে সে নিজেই কাফের হয়ে যায়।” (হাকীকাতুল ওহী, পৃ ১৬৩, টিকা)
তিনি আরো বলেন, “আমি অবলোকন করছি যে, যত সংখ্যক লোক আমার প্রতি ঈমান আনে না তারা সবাই এমন লোক যে, অন্যান্য সকল মানুষদের মুমিন মনে করে যারা আমাকে কাফের ভাবে। কিন্তু আমি এখনও কিবলা অভিমুখিদের কাফের বলি না। কিন্তু যাদের মাঝে তাদের নিজেদের হাত দ্বারা কুফরীর কোনো কারণ সৃষ্টি হয়ে গিয়েছে তাদেরকে আমি কিভাবে মুমিন বলতে পারি।” (হাকীকাতুল ওহী পৃ ১৬৫, টিকা)
অর্থাৎ, যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষজন নিজেদের মাঝে কুফর সৃষ্টি না করবে ততক্ষণ তারা কাফের হবে না। আর যখন কুফরের কারণ সৃষ্টি করবে তখন কাফের হয়ে যাবে। মুসলমানদের এই কুফরীর দুরবস্থা দেখেই তো আল্লামা ইকবাল বলেন,
“তোমরা বেশভূষায় খ্রিষ্টান আর সভ্যতায় হিন্দু,
আর এরাই মুসলমান যাদেরকে দেখে লজ্জা পায় ইহুদ।”
অন্যান্য উত্তর
- আপত্তি: মির্যা সাহেব রসূল (সা.)-কে হেলাল এবং নিজেকে বদর আখ্যা দিয়েছেন
- আপত্তি: মির্যা সাহেব লিখেছেন, তার সিংহাসন সবার ওপরে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব নিজেকে দরুদ শরীফের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করেছেন
- আপত্তি: মির্যা সাহেব লিখেছেন ইয়ালাস খোদাতা’লার নাম
- আপত্তি: মির্যা সাহেবের উপর অন্য ভাষায় ইলহাম হল কেন?
- আপত্তি: মির্যা সাহেব বলেছেন, মাহদীর মাধ্যমে মহানবী (সা.) এর দ্বিতীয় আগমন হবে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব নতুন নবুয়্যত, ধর্ম, কিবলা, নামায এবং কুরআন বানিয়েছেন
- আপত্তি: মির্যা সাহেবের কথা- একটি নতুন বাহন আবিষ্কার হবে যা আগুন দ্বারা চলবে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব বলেন, কুরআনে তাঁর নাম ইবনে মরিয়ম রাখা হয়েছে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব রেশমী লুঙ্গি পরিধান করেছিলেন যা হারাম