আপত্তি : আমার আলামত দশ লক্ষ। রসূলুল্লাহ্(সা.)-এর মু’জিযা তিন হাজার
উত্তর: হযরত মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী(আ.) মহানবী হযরত মুহাম্মদ(সা.)-এর দাসত্বে আল্লাহ্ তা’লার নৈকট্যপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিসাবে দাবি করেছেন। আর আল্লাহ্কে এ যুগে লাভ করার একমাত্র পথ হিসেবে মহানবী(সা.)-এর পূর্ণ অনুসরণ ও অনুগমনকে তিনি বার বার তাঁর পুস্তকাদিতে উল্লেখ করেছেন। তাঁর এ বক্তব্য সূরা আলে ইমরানের আয়াতের সাথে হুবহু মিল খায়। সূরা আলে ইমরানের ৩২ নম্বর আয়াতে আল্লাহ্ তা’লা বলেন,
قُلْ إِن كُنتُمْ تُحِبُّونَ اللَّـهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللَّـهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَاللَّـهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
তুমি বলে দাও, তোমরা যদি আল্লাহ্র ভালোবাসা চাও তাহলে আমার অনুকরণ অনুসরণ কর তাহলে আল্লাহ্ তোমাদেরকে ভালোবাসবেন এবং তোমাদের গুণাহসমূহ ক্ষমা করে দিবেন। আর আল্লাহ্ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।
অতএব, মুহাম্মদ(সা.)-এর পর আল্লাহ্র নৈকট্য লাভের একমাত্র পথ হযরত মুহাম্মদ(সা.)-এর আনুগত্য। হযরত মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী(আ.)-এর দ্যার্থহীন বক্তব্য শুনুন,‘আমাদের নবী(সা.)-এর পক্ষ থেকে যত মোজেযা প্রকাশিত হয়েছে আর কোন নবীর পক্ষ থেকে এতটা প্রকাশিত হয় নি। … আমাদের নবী(সা.)-এর মোজেযা এখনও প্রকাশিত হচ্ছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত এসব মোজেযা প্রকাশিত হতে থাকবে। আর আমার সমর্থনে যেসব মোজেযাই প্রকাশিত হচ্ছে তার সবই মূলত মহানবী(সা.)-এরই মোজেযা’ (তাতিম্মা হাকীকাতুল ওহী: পৃষ্ঠা ৩৫)
অতএব, হযরত মির্যা সাহেবের নিজস্ব কোন নিদর্শন নেই, সব নিদর্শনই হযরত মুহাম্মদ(সা.)-এর বরকত বা কল্যাণে তিনি প্রাপ্ত হয়েছেন। হযরত মির্যা সাহেবের প্রত্যেকটি দোয়ার কবুলিয়াতের ঘটনা একটি নিদর্শন। ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী কাদিয়ানে আগত প্রত্যেকটি ব্যক্তি একেকটি নিদর্শন। আল্লাহ্ তা’লা নিজের ইচ্ছা ও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবেন বলে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার পূর্ণতায় প্রত্যেকটি সাহায্য সহযোগিতার ঘটনা একেকটি নিদর্শন। প্রাচ্যে ও পাশ্চাত্যে আহমদীয়া জামা’তের বিস্তৃতি ও ব্যাপ্তি একটি নিদর্শন। আল্লাহ্ তা’লার পক্ষ থেকে প্রাপ্ত ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী প্রত্যেক বিরুদ্ধবাদী নেতা কর্মীর মৃত্যু বা ধ্বংস একেকটি নিদর্শন। ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী প্লেগের আক্রমণে মৃত্যুবরণকারী প্রত্যেক ব্যক্তি একেকটি নিদর্শন। বিভিন্ন স্থানে ক্ষতিগ্রস্ত ও ধ্বংসের প্রতিটি ঘটনা একেকটি নিদর্শন। কিন্তু এসব নিদর্শন তখনই নিদর্শন বলে সাব্যস্ত হবে যখন মির্যা সাহেব নিজে মুহাম্মদ(সা.)-এর ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী সত্য প্রমাণিত হবেন। আর তখন এসব আর মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী(আ.)-এর নিদর্শন থাকবে না বরং সবই মুহাম্মদ(সা.)-এর মহান নিদর্শন বলে প্রমাণিত হবে। কেননা, দাসের নিজস্ব কোন সম্পত্তি নাই যা আছে সবই মুহাম্মদ(সা.)-এর। মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী(আ.) বলেন, সাব হামনে উসসে পায়া শাহেদ হে তু খুদায়া ওহ জিসনে হাক দিখায়া ওহ মাহলাকা এহী হ্যায়। আপত্তিকারী হযরত মির্যা সাহেবের এসব বক্তব্য খুব ভাল করেই জানেন। কেননা, মির্যা সাহেবের সব লেখাই তিনি পড়েছেন বলে তার সমালোচনার হাবভাবে প্রতিয়মান হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও মির্যা সাহেবের রূহানী খাযায়েনের দুই খ-ের দু’টি পৃথক উদ্ধৃতিকে এমনভাবে পাশাপাশি তুলে ধরেছেন যেন মানুষ মনে করে মির্যা সাহেব নিজেকে মুহাম্মদ(সা.)-এর বিপক্ষে বড় করে দেখিয়েছেন। অথচ মির্যা সাহেব ইমাম মাহদী হিসাবে নিজেই মহানবী(সা.)-এর ভবিষ্যদ্বাণীর জ্বলন্ত নিদর্শন। তাই ইমাম মাহদী হিসেবে তাঁর সকল নিদর্শন মূলত মহানবী(সা.)-এর নিদর্শন বলে গণ্য হবে এবং এতে মহানবী(সা.)-এরই মর্যাদা উন্নীত হতে থাকবে।”
অন্যান্য উত্তর
- আপত্তি: মির্যা সাহেব রসূল (সা.)-কে হেলাল এবং নিজেকে বদর আখ্যা দিয়েছেন
- আপত্তি: মির্যা সাহেব লিখেছেন, তার সিংহাসন সবার ওপরে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব নিজেকে দরুদ শরীফের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করেছেন
- আপত্তি: মির্যা সাহেব লিখেছেন ইয়ালাস খোদাতা’লার নাম
- আপত্তি: মির্যা সাহেবের উপর অন্য ভাষায় ইলহাম হল কেন?
- আপত্তি: মির্যা সাহেব বলেছেন, মাহদীর মাধ্যমে মহানবী (সা.) এর দ্বিতীয় আগমন হবে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব নতুন নবুয়্যত, ধর্ম, কিবলা, নামায এবং কুরআন বানিয়েছেন
- আপত্তি: মির্যা সাহেবের কথা- একটি নতুন বাহন আবিষ্কার হবে যা আগুন দ্বারা চলবে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব বলেন, কুরআনে তাঁর নাম ইবনে মরিয়ম রাখা হয়েছে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব রেশমী লুঙ্গি পরিধান করেছিলেন যা হারাম