আপত্তি: মির্যা সাহেব লিখেছেন, তার সিংহাসন সবার ওপরে
আপত্তি: বিরুদ্ধবাদীদের আরও একটি আপত্তি হল, মির্যা সাহেব তার রচিত পুস্তক হাকীকাতুল ওহীতে লিখেছেন, “আকাশ থেকে অনেক তাখত (সিংহাসন) অবতীর্ণ করা হয়েছে কিন্তু তোমার তাখত (সিংহাসন) সবার উপরে রাখা হয়েছে।“ এটি বলে তিনি নিজেকে মুহাম্মদ (সা.) থেকেও শ্রেষ্ঠ মনে করেছেন।
উত্তর: যেই রেফারেন্স উপস্থাপন করা হয়েছে সেখানে হযরত আকদাস মসীহ মওউদ (আই.) নিজের ইলহাম বর্ণনা করছেন। আর ইলহামের বাক্যে মানুষের কোন হাত থাকে না। এই দৃষ্টিকোণ থেকে ইলহামের বাক্যের উপর কোন ধরনের আপত্তি উঠতে পারে না।
জামাতে আহমদীয়ার দ্বিতীয় খলীফা হযরত মির্যা বশীর উদ্দিন মাহমুদ আহমদ সাহেব খলীফাতুল মসীহ সানী (রা.) এই আপত্তির উত্তর দিতে গিয়ে বলেন,
“হ্যাঁ এটা সঠিক কিন্তু এর অর্থ এটি নয় যে, এমন টা বলে সে ব্যক্তি নিজেকে রসূলে করীম (সা.) থেকে বেশি মর্যাদাবান সাব্যস্ত করেছেন। হযরত আকদাস মসীহ মওউদ (আই.) লিখেন,
“এই মরিয়ম (আই.) এর কথা বাদ দাও
এর থেকে উত্তম গোলাম আহমদ”
যেমনটা এর মানে হল, আমি যে মুহাম্মদ (সা.) এর গোলাম, ইবনে মরিয়ম থেকে মর্যাদাবান। একইভাবে অসংখ্য জায়গায় তিনি (আই.) লিখেছেন, আমি যে মুহাম্মদের (সা.) গোলাম এক মিনিট তার থেকে দূরে থাকা আমার জন্য মৃত্যুর কারন। তারপর তিনি (আই.) লিখেন,
کُلُّ بَرَ کَۃٍ مِّنْ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم فَتَبَارَکَ مَنْ عَلَّمَ وَ تَعَلَّمَ
অর্থ্যাৎ সকল ধরনের অনুগ্রহ মুহাম্মদ (সা.) থেকে লাভ হয়, সে সবথেকে বেশি কল্যানমন্ডিত যে রসূল (সা.) থেকে শিক্ষা লাভ করেছে অর্থ্যাৎ আমি। এই ইলহামের মূল বিষয়বস্তু হল, হুযুর (সা.) এর পর সকল বুযুর্গদের মধ্যে তিনি (আই.) এর মর্যাদা সবার উপরে।“
(হযরত আতাউল্লাহ শাহ বুখারীর মুকাদ্দমায় হুযুরের বক্তব্য, আনওয়ারুল উলুম, খন্ড-১৩, পৃষ্ঠা: ৩৮৮)
হযরত আকদাস মসীহ মওউদ (আই.) বলেন, “অতএব আমি সর্বদা অবাক দৃষ্টিতে দেখি যে, এই আরবী নবী, যাঁহার নাম মুহাম্মদ(তাঁহার উপর হাজার হাজার দরুদ ও সালাম), তিনি কত উচ্চ পর্যায়ের নবী। তাঁহার উচ্চ মর্যাদার সীমা অনুমান করা সম্ভব নয় ও তার পবিত্রকরণ শক্তির অনুমান করা মানুষের কাজ নহে। আফসোস, যেভাবে সত্যকে সনাক্ত করার কথা ছিল সেভাবে তাঁর মর্যাদাকে সনাক্ত করা হয় নাই। যে তওহীদ পৃথিবী থেকে হারিয়ে গিয়েছিল তিনিই সেই পালোয়ান যিনি তা পুনরায় পৃথিবীতে আনয়ন করেন। তিনি খোদাতা’লাকে শেষ সীমা পর্যন্ত ভালবেসেছেন এবং শেষ সীমা পর্যন্ত মানবজাতির প্রতি সহানুভুতিতে তাঁহার সকল নবী এবং সকল আওওয়ালীন ও আখেরীনদের উপর শ্রেষ্টত্ব দান করেন এবং তাঁর সকল বাসনা তাঁর জীবদ্দশাতেই পূর্ণ করেন। তিনিই সকল আশিসের উৎস। যে ব্যক্তি তাঁর আশিস অস্বীকার করে কোন ফযলের দাবী করে সে মানুষ নহে, বরং শয়তানের বংশধর। কেননা, সকল ফযলের চাবি তাঁকে দেওয়া হয়েছে এবং সকল তত্ত্বজ্ঞানের ভান্ডার তাঁকে দান করা হয়েছে। যে ব্যক্তি তাঁর মাধ্যমে পায় না সে চিরবঞ্চিত। আমরাই বা কি এবং আমাদের মূল্যই বা কি? আমরা নেয়ামতের অস্বীকারকারী হব যদি স্বীকার না করি যে, আমরা প্রকৃত তওহীদ এই নবীর মাধ্যমে এবং জীবন্ত খোদাকে এই কামেল নবীর মাধ্যমে ও তাঁর জ্যোতির দ্বারা সনাক্ত করেছি। খোদার সহিত বাক্যালাপ ও সম্বোধনের সৌভাগ্য, যার সাহায্যে আমরা তাঁর চেহারা দেখি, তাও আমরা এই সম্মানিত নবীর মাধ্যমেই পেয়েছি।“ (হাকীকাতুল ওহী, পৃষ্ঠা: ৮৬-৮৭)
অন্যান্য উত্তর
- আপত্তি: মির্যা সাহেব রসূল (সা.)-কে হেলাল এবং নিজেকে বদর আখ্যা দিয়েছেন
- আপত্তি: মির্যা সাহেব লিখেছেন, তার সিংহাসন সবার ওপরে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব নিজেকে দরুদ শরীফের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করেছেন
- আপত্তি: মির্যা সাহেব লিখেছেন ইয়ালাস খোদাতা’লার নাম
- আপত্তি: মির্যা সাহেবের উপর অন্য ভাষায় ইলহাম হল কেন?
- আপত্তি: মির্যা সাহেব বলেছেন, মাহদীর মাধ্যমে মহানবী (সা.) এর দ্বিতীয় আগমন হবে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব নতুন নবুয়্যত, ধর্ম, কিবলা, নামায এবং কুরআন বানিয়েছেন
- আপত্তি: মির্যা সাহেবের কথা- একটি নতুন বাহন আবিষ্কার হবে যা আগুন দ্বারা চলবে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব বলেন, কুরআনে তাঁর নাম ইবনে মরিয়ম রাখা হয়েছে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব রেশমী লুঙ্গি পরিধান করেছিলেন যা হারাম