আপত্তি: মির্যা কাদিয়ানী কাজের মহিলাকে দিয়ে রাতে পা টিপাতেন


আপত্তি: মির্যা কাদিয়ানী সাহেবের বাসায় মুসাম্মত ভানু নামে এক মহিলা কাজ করততাকে দিয়ে রাতে পা টিপাতেন (সীরাতুল মাহদী, ১/৭২২ মির্যা বশীর আহমদ এম. এ. কৃত)।

উত্তর: মুসাম্মত ভানু মির্যা সাহেবের বাড়ির এক প্রবীণ বৃদ্ধা বুয়া ছিলেন যিনি দীর্ঘদিন যাবৎ সে বাড়িতে কাজ করেছেন। মির্যা সাহেবের স্ত্রী-সন্তানের উপস্থিতিতে ভক্তির আতিশয্যে তিনি একবার মির্যা সাহেবের পা টিপতে যান এবং পা না টিপে লেপের উপর দিয়েই খাটের কাঠ টেপা শুরু করেন। বুড়ির এ কাণ্ড দেখে মির্যা সাহেব হাসতে থাকেন। ‘আল্লামা’ আব্দুল মজিদ সাহেব যেখান থেকে উদ্ধৃতিটি নকল করেছেন সেই পুরো উদ্ধৃতিটি তুলে ধরলেই পাঠকের কাছে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যেত।

আলোচ্য ৭৮০ নম্বর বর্ণনাটির পূর্ণ বিবরণ হল, ডামীর মুহাম্মদ ইসমাঈল সাহেব তার বোন হযরত মসীহে মাওউদ(.)-এর স্ত্রী সৈয়দা নুসরত জাহান বেগম(রা.)-এর কাছ থেকে শুনে বর্ণনা করেছেন, “হযরত মির্যা সাহেবের বাড়িতে মোসাম্মত ভানু নামে এক বুড়ি কাজের বুয়া ছিল। সেই বুড়ি এক প্রচণ্ড শীতের রাতে হুযুরের পা টেপার জন্য বসল। যেহেতু এই বুড়ি লেপের ওপর দিয়েই পা টিপছিল তাই সে বুঝতে পারে নিসে যা টিপছে তা পা নয় বরং খাটের পট্টি। কিছুক্ষণ পর হযরত মির্যা সাহেব বললেনভানুআজ অনেক শীত পড়েছেতাই না? (ভানু পা না টিপে খাটটির ফ্রেমের কাঠ টিপছিল তাই সেদিকে ইঙ্গিত করছিলেন)। ভানু উত্তরে বলল, ‘হ্যাভীষণ শীত পড়েছেদেখুন না আপনার পা কাঠের মত শক্ত হয়ে গেছে!’ …ভানু কাদিয়ানের নিকটবর্তী গ্রামের অধিবাসী এবং নিষ্ঠাবান ও ধার্মিক মহিলা ছিল।”

‘আল্লামা’ আব্দুল মজিদ যদি পুরো উদ্ধৃতিটুকু পড়তেন তাহলে এমন আপত্তি করতেই পারতেন না। পুরো বিবরণটিতে দেখা যাচ্ছে, হযরত মির্যা সাহেবের পরিবার সেখানে উপস্থিত আর স্বয়ং তার স্ত্রী হাসির গল্প হিসেবে এ ঘটনা বর্ণনা করছেন। আর মোসাম্মত ভানু এমনই বয়স্ক একজন বুড়ি যে খাটের খুটি আর মানুষের পা-এর মাঝেও পার্থক্য করতে পারে না! বাড়ির বুয়া দীর্ঘদিন কাজ করতে করতে বাড়ির সাধারণ সদস্যদের মতই আচরণ করে। নবী-রসূলদের আল্লাহ্ তা’লা সাধারণ মানুষের তুলনায় ভিন্ন ও অনেক উচ্চাঙ্গের পবিত্রতা দান করে থাকেন।

যদি মজিদ সাহেবের মন এতেও প্রশান্ত না হয় সেক্ষেত্রে আমরা বুখারী শরীফে হযরত উবাদা বিন সামেতের স্ত্রী হযরত উম্মে হারাম বিন মিলহানের একটি ঘটনা উল্লেখ করছি-

হযরত আনাস ইবনে মালেক বর্ণিত হাদীসরসূলুল্লাহ(সা.) উম্মে হারাম বিনতে মিলহানের গৃহে যেতেন। তিনি ছিলেন হযরত উবাদা বিনতে সামেত(রা.)-এর স্ত্রী। একদিন তিনি(সা.) তার কাছে এলেন তখন তিনি তাঁকে খাবার খাওয়ালেন। এরপর সে তার(সা.) মাথার উকুন বাছতে শুরু করলেন। রসূলুল্লাহ(সা.) ঘুমিয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণপর হেসে হেসে জেগে উঠলেন .. (বুখারী কিতাবুর রু’ইয়া বাবুর রু’ইয়া বিননাহার: ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক অনুদিত বুখারী শরীফ ১০ম খণ্ড, পৃষ্ঠা-৩৩৮, হাদীস নম্বর- ২৯৪০)

‘আল্লামা’ আব্দুল মজিদ এক্ষেত্রে কি রসূল(সা.)-এর চরিত্র নিয়েও আপত্তি তুলবেন? নাউযুবিল্লাহ। ‘আল্লামা’! এখানে আপত্তির কিছু নেই। কেননা প্রত্যাদিষ্ট মহাপুরুষদের আল্লাহ্ তা’লা সাধারণ মানুষের তুলনায় ভিন্ন ও অনেক উচ্চাঙ্গের পবিত্রতা দান করে থাকেন। তবে হ্যাঁ, জগতে কিছু এমন প্রকৃতির মানুষও আছে যারা অনেক ইতিবাচক বিষয়কেও নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখে এবং ধর্মশিক্ষকদের কাছ থেকে ধর্মকর্ম না শিখে উল্টো তাদেরকে শেখাতে উদ্যত হয়।

অন্যান্য উত্তর