আপত্তি: হযরত ঈসা (আ.) মদ পান করতো
আপত্তি :ইউরোপের লোকদের মদ এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার কারণ হল, হযরত ঈসা(আ.) মদ পান করত। তা কোন রোগের কারণে বা পুরাতন অভ্যাস থাকার কারণে। (রূহানী খাযায়েন ১৯/৭১)
উত্তর : আল্লামা আব্দুল মজিদকে এমন একটি আপত্তি উপস্থাপনের জন্য ধন্যবাদ। কেননা উপরোক্ত বক্তব্য যদি মির্যা সাহেব সত্যিই ঈসা(আ.)-এর প্রতি আরোপ করে বলেই থাকেন তাহলে কমপক্ষে মির্যা সাহেবকে আর কখনও খ্রিস্টানদের দালাল বা তাদের রোপিত চারাগাছ বলার সুযোগ থাকছে না। কেননা যে যার দালাল হয় সে তার মালিকের নিন্দা জ্ঞাপন করতে পারে না।
মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী (আ.)-এর বিরুদ্ধে নবীদের মর্যাদাহানীর যে অভিযোগ আরোপ করা হয়েছে- এটিও একটি বানোয়াট আপত্তি। মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী(আ.)কখনও নবীদের কোন ধরনের অসম্মান বা অপমান করেন নি। বরং তিনি তাঁর সব লেখায় নবীদের সম্মান ও মর্যাদাকে সমুন্নত রেখেছেন আর নবীদের বিরুদ্ধে আরোপিত সব অপবাদ থেকে তাদের পুতঃপবিত্র ও নিষ্পাপ সাব্যস্ত করেছেন। এ প্রসঙ্গে তাঁর একটি বক্তব্য তুলে ধরছি। হযরত মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী(আ.) বলেছেন: ‘সমস্ত নবীদের প্রতি ভক্তি ও সম্মান প্রদর্শন করাকে আমি আমার ঈমানের অঙ্গ বলে মনে করি।‘ (মলফুযাত প্রথম খন্ড, ৪২০)
পাঠক! যিনি নিজে বলছেন, ‘সমস্ত নবীদের প্রতি ভক্তি ও সম্মান প্রদর্শন করাকে আমি আমার ঈমানের অঙ্গ বলে মনে করি‘— তিনি কীভাবে তাদের অপমান ও অপদস্থ করতে পারেন?
আপত্তিকর বক্তব্য হিসেবে উত্থাপিত লেখাটি যুক্তিতর্কের একটি বিশেষ জোরালোরূপ হিসেবে হযরত মির্যা সাহেব অবলম্বন করেছিলেন। অনুরূপ ধারালো বক্তব্য মহানবী(সা.)-এর বিরুদ্ধে আপত্তিকারীদের দাত ভাঙ্গা জবাব দিতে গিয়ে মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী(আ.) সারাটি জীবন প্রদান করেছেন। সমালোচকদের তীর্যক আপত্তির প্রত্যুত্তর তাদেরই স্বীকৃত ঐশী গ্রন্থাবলীর বক্তব্য তুলে ধরে উত্তর প্রদান করাটি ছিল মির্যা সাহেবের একটি অভিনব বৈশিষ্ট্য। এখানেও সেই রীতিটিই লক্ষনীয়।
তার যুগে ফতেহ মসীহ নামের এক খ্রিস্টান পাদ্রি মহানবী(সা.)-কে অপমান করে তাদের কল্পিত ঈশ্বরপুত্র ঈশ্বর যিশুর শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে চেয়েছিল। এর প্রত্যুত্তরে মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী(আ.) তাদের ইঞ্জিলের ‘কল্পিত’ ঈশ্বরপুত্র যিশুর স্বরূপ প্রদর্শন করেছেন মাত্র!
এ প্রসঙ্গে হযরত মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী(আ.) তাঁর রচিত নূরুল কুরআন-২ পুস্তকে স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন, “পাঠকদের স্পষ্টভাবে বলে দিচ্ছি, হযরত ইসা (আ.) সম্পর্কে আমার বিশ্বাস খুবই উন্নত আর আমি অন্তর থেকে বিশ্বাস করি, তিনি আল্লাহ্ তা‘লার সত্য নবী এবং আল্লাহর প্রিয়ভাজন ছিলেন। … আমি আমার তর্কযুদ্ধে প্রতিটি স্থানে খ্রিস্টানদের কল্পিত যিশুকে বুঝিয়েছি আর আল্লাহ্ তা‘লার এক নিরীহ বান্দা ইসা ইবনে মরিয়ম যিনি নবী ছিলেন, যার কথা কুরআনে বর্ণিত আছে– আমি আমার এসব সম্বোধনে ঘুনাক্ষরেও তার কথা বলি নি। আর আমি এই রীতিটি টানা চল্লিশ বছর ধরে পাদ্রিদের অকথ্য গালাগালি শুনে অবলম্বন করতে বাধ্য হয়েছি।“ (নূরুল কুরআন-২, রূহানী খাযায়েন ৯ম খণ্ড পৃষ্ঠা-৩৭৫)
জানা গেল, পবিত্র কুরআনে বর্ণিত ঈসা(আ.)-কে অবমাননা করা তো দূরের কথা এখানে তার কোন উল্লেখই নেই বরং তাদের কল্পিত খোদার অসারতা তাদের গ্রন্থাদি থেকে তুলে ধরা হয়েছে মাত্র।
অন্যান্য উত্তর
- আপত্তি: মির্যা সাহেব রসূল (সা.)-কে হেলাল এবং নিজেকে বদর আখ্যা দিয়েছেন
- আপত্তি: মির্যা সাহেব লিখেছেন, তার সিংহাসন সবার ওপরে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব নিজেকে দরুদ শরীফের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করেছেন
- আপত্তি: মির্যা সাহেব লিখেছেন ইয়ালাস খোদাতা’লার নাম
- আপত্তি: মির্যা সাহেবের উপর অন্য ভাষায় ইলহাম হল কেন?
- আপত্তি: মির্যা সাহেব বলেছেন, মাহদীর মাধ্যমে মহানবী (সা.) এর দ্বিতীয় আগমন হবে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব নতুন নবুয়্যত, ধর্ম, কিবলা, নামায এবং কুরআন বানিয়েছেন
- আপত্তি: মির্যা সাহেবের কথা- একটি নতুন বাহন আবিষ্কার হবে যা আগুন দ্বারা চলবে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব বলেন, কুরআনে তাঁর নাম ইবনে মরিয়ম রাখা হয়েছে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব রেশমী লুঙ্গি পরিধান করেছিলেন যা হারাম