ওয়াকফের অঙ্গীকার পূর্ণ করা – বাৎসরিক ইজতেমা, ওয়াক্‌ফ-এ-নও (আত্‌ফাল ও খোদ্দাম), যুক্তরাজ্য – ২০১৯

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) খলীফাতুল মসীহ্ আল্ খামেস

০৭-এপ্রিল, ২০১৯

৭ এপ্রিল ২০১৯, আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের বিশ্ব-প্রধান, পঞ্চম খলীফাতুল মসীহ্‌ হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) যুক্তরাজ্যের জাতীয় ওয়াকফে নও পুরুষ ইজতেমার সমাপনী অধিবেশনে বক্তব্য প্রদান করেন। ইসলামের শান্তিপূর্ণ সেবায় নিজেদের জীবন উৎসর্গকারী আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের পুরুষ সদস্যবৃন্দ যারা যুক্তরাজ্যে বসবাসরত তারা অনুষ্ঠানটিতে অংশগ্রহণ করেন। এর এক দিন পূর্বে নারী সদস্যাদের জন্য এরকম আরেকটি অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। লন্ডনের বায়তুল ফুতূহ্ মসজিদে ১৭০০ মানুষের সমাগমে অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয় যেখানে ওয়াকফে নও স্কীমের প্রায় ১৪০০ সদস্য অংশগ্রহণ করেন। এ উপলক্ষ্যে হুযূর আকদাস প্রদত্ত বক্তৃতার বঙ্গানুবাদ নিম্নে উপস্থাপন করা হলো।

তাশাহুদ, তাআব্বুয, তাসমীয়া এবং সূরা ফাতিহা পাঠের পর আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের বিশ্ব-প্রধান হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) বলেন:
মহান আল্লাহ্‌ তা’লার অনুগ্রহে আহমদী পিতামাতা যারা তাদের ধর্মবিশ্বাসের জন্য নিজেদের সন্তানদের জীবন উৎসর্গ করছেন, তাদের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং প্রতি বছর হাজারো শিশু ওয়াকফে নও স্কীমের অধীনে জন্মগ্রহণ করছে। আপনারাও সেই সৌভাগ্যবান মানুষদের অন্তর্ভুক্ত যাদের পিতামাতা, জন্মের পূর্বেই ইসলামের সেবায় তাদের সন্তানদের জীবন উৎসর্গ করেছেন, আর বর্তমানে আপনাদের অনেকেই পরিপক্কতার বয়সে পৌঁছেছেন।
কেউ কেউ স্কুলে আছেন, আর অনেকেই উচ্চশিক্ষা সম্পূর্ণ করেছেন। তা করার পর কেউ কেউ ওয়াকফে জিন্দেগী [জীবন উৎসর্গকারী] হিসেবে পূর্ণকালীন জামা’তকে [আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত] সেবা দিচ্ছেন, জামেয়া আহমদীয়ায় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করার পর অনেককেই মুবাল্লেগ হিসেবে কর্মক্ষেত্রে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যান্যরাও রয়েছেন যারা জামা’তের অনুমতি গ্রহণ করে বিভিন্ন পেশায় যোগ দিয়েছেন। যাহোক, এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, যারা ব্যক্তিগতভাবে কাজ করছেন তাদের অবশ্যই উচিত যত বেশি সম্ভব ধর্মের সেবার উদ্দেশ্যে সময় বের করা এবং সর্বদা মনে রাখা উচিত যে, তারা ওয়াকফে নও।
সর্বপ্রথম, ওয়াকফে নও স্কীমের প্রত্যেক সদস্যের উপলব্ধি করা উচিত যে, তার ওয়াকফের [উৎসর্গ] কল্যাণ ও প্রকৃত মূল্যায়ন তখনই হবে যদি আল্লাহ্ তা’লার সঙ্গে তার এক আন্তরিক সম্পর্ক স্থাপন হয়ে থাকে। আর আল্লাহ্ তা’লার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের সর্বোত্তম উপায় হল আল্লাহ্‌র ইবাদত করা এবং নামায আদায় করা। অতএব, যেকোনো কিছু নির্বিশেষে, আল্লাহ্ তা’লার প্রতি আন্তরিকতা ও ভক্তির প্রেরণা নিয়ে আপনাদের পাঁচ ওয়াক্তের নামায অবশ্যই আদায় করতে হবে।
উপরন্তু, বা-জামাত নামায আদায় করা আহমদী মুসলমান পুরুষের ওপর ফরয। কাজেই, আপনারা যারা মসজিদ কিংবা নামায সেন্টার থেকে একটি সহনীয় দূরত্বে অবস্থান করেন তাদের অবশ্যই জামা’তে নামায আদায় করার জন্য উপর্যুপরি প্রচেষ্টা গ্রহণ করতে হবে। জামা’তে নামায আদায় করা আপনাদের জীবনের নিত্যকার ও প্রধান বৈশিষ্ট্য হওয়া উচিত।
যেমনটি আমি বলেছি, অনেক ওয়াকফে নও সাবালক হয়েছেন ও বুঝে উঠার বয়সে পৌঁছেছেন এবং অনেকে যৌবনে পদার্পণ করেছেন। অথচ জামা’তে পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করা তো দূরে থাক, জিজ্ঞেস করা হলে অনেকে স্বীকার করেন যে, তারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাযও সঠিকভাবে আদায় করেন না। তাহলে এমন ওয়াকফ-এর উদ্দেশ্য বা উপকার কী?
একদিকে, তারা তাদের জীবনকে আল্লাহ্ তা’লার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেছেন। অথচ তারা আল্লাহর ইবাদত করার প্রতি অবহেলা প্রদর্শন করছেন; কলেমার পর এটি যেকোনো মুসলমানের জন্য ‍সবচেয়ে মৌলিক ফরয। অতএব স্মরণ রাখবেন যে, আপনার জীবন উৎসর্গ করার ব্রত তখনই সার্থক ও পরিপূর্ণ হবে যখন আপনি মহান আল্লাহ্ তা’লার আদেশ মেনে চলবেন এবং সর্বদা দৃঢ়ভাবে তাঁর প্রতি নিবেদিত থাকবেন।
যদি আপনি আল্লাহ্ তা’লার ইবাদতের মৌলিক দায়িত্ব পালন না করেন, তাহলে তাঁর সঙ্গে বিশ্বস্ততা ও আন্তরিকতাপূর্ণ সম্পর্ক কীভাবে স্থাপন করা সম্ভব?
তাই আপনি যদি প্রমাণ করতে চান আপনি নামমাত্র একজন ওয়াকফে নও নন, আপনি বাস্তবিকই আপনার জীবন ইসলামের তরে উৎসর্গ করেছেন এবং আপনার পিতামাতার কৃত অঙ্গীকার পূর্ণ করতে আপনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, তাহলে আপনাকে অবশ্যই আপনার ধর্মবিশ্বাসের এই অপরিহার্য দিককে গুরুত্ব দিতে হবে।
আপনাকে অবশ্যই আপনার ইবাদতের মান উন্নত করতে হবে এবং নিশ্চিত করতে হবে যে, এমন একটি দিনও যেন না কাটে যেদিন আপনি দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায়ের প্রাথমিক কর্তব্য পালন করতে ব্যর্থ হন।
এটি স্পষ্ট হওয়া উচিত যে, এমনটি করতে ব্যর্থ হওয়ার অর্থ এই যে, আপনার ওয়াকফ অর্থহীন ও বৃথা হয়ে পড়লো।
একজন ওয়াকফে নও সদস্য হিসেবে এটি অত্যাবশ্যক যে, আপনি আল্লাহ্ তা’লার অন্যান্য আদেশের ওপর আমল করতে চেষ্টা করেন। হুকূকুল্লাহ – আল্লাহর অধিকার এবং হুকূকুল-ইবাদ – আল্লাহর সৃষ্টির অধিকার প্রদানের ক্ষেত্রে একজন ওয়াকফে নও-এর মান অবশ্যই অন্যদের চেয়ে অনেক উন্নত হতে হবে।

সারকথা এই যে, আপনার নাম ওয়াকফে নও-এর তালিকার অন্তর্ভুক্ত এই ভেবে কখনোই আপনার তুষ্টি সহকারে পেছনে বসে থাকা উচিত নয়। বরঞ্চ, আপনাকে অবশ্যই আপনার দায়িত্বের গুরুত্ব এবং আপনার ধর্মবিশ্বাসের প্রতি আপনার চিরন্তন বাধ্যবাধকতা অনুধাবন করতে হবে। সর্বদা নৈতিকতার মান উন্নত করা এবং ধর্মীয় জ্ঞান বৃদ্ধি করা আপনার কর্তব্য। কখনোই ভুলে যাবেন না আপনার পিতামাতা ধর্মের তরে আপনাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন এবং আপনাদের জন্য দোয়া করেছেন।

এই পরিপ্রেক্ষিতে, এটি প্রত্যেক ওয়াকফে নও-এর পিতামাতাকে স্মরণ করানো গুরুত্বপূর্ণ যে, সেই মুহূর্ত, যখন তারা তাদের অনাগত সন্তানকে জামা’তের জন্য উৎসর্গ করেছেন, তখন থেকে তাদের উচিত আন্তরিকভাবে আল্লাহ্‌ তা’লার কাছে দোয়া করা, যেন তাদের সন্তানকে আল্লাহ্‌ তা’লা ওয়াকফের দাবি পূর্ণ করার তৌফিক প্রদান করেন। অনুরূপভাবে, পিতামাতার উচিত তাদের সন্তানদের নৈতিক ও ধর্মীয় প্রশিক্ষণের বিষয়ে গভীর মনোযোগ দেওয়া এবং তাদেরকে তাদের ওয়াকফের দাবি পূরণের বিষয়ে পথপ্রদর্শন করা।
এখন সংক্ষেপে পিতামাতাদের সম্বোধন করার পর আমি ওয়াকেফে নও-দের দিকে পুনরায় দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে চাই। আপনাদের সকলের অবশ্যই আপনাদের দায়িত্ব-কর্তব্যাবলি এবং একজন ওয়াকফে যিন্দেগীর প্রত্যাশিত মান অনুধাবন করা উচিত। মৌলিকভাবে ওয়াকফ-এর অর্থ হল আল্লাহ্‌ তা’লার এবং তাঁর সৃষ্টির অধিকার প্রদান করা, জ্ঞানের প্রসারে ক্রমাগত চেষ্টা করা এবং নৈতিকতা ও আধ্যাত্মিকতার মান উন্নত করা। এর অর্থ, যেকোনো সময়ে ও পরিস্থিতিতে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা। বস্তুত, কেবল বিশ্বাস সম্পর্কে জ্ঞাত থাকাই যথেষ্ট নয়, বরং সকল ক্ষেত্রে পালন করা অত্যাবশ্যক।
ওয়াকেফীনে নও হিসেবে আপনাদের অবশ্যই হযরত মসীহ্ মওউদ (আ.)-এর প্রত্যাশাসমূহ সম্পর্কে জানা উচিত। জামা’তের সদস্যবৃন্দ, বিশেষত, যারা ইসলামের তরে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাদের কাছে তাঁর প্রত্যাশা কী ছিল? এর জন্য আপনাকে অবশ্যই মসীহ্ মওউদ (আ.)–এর বইপত্র ও লেখাসমূহ পড়তে হবে যেখানে তিনি বিভিন্ন সময়ে পরিষ্কারভাবে তাঁর প্রত্যাশাসমূহ ব্যক্ত করেছেন।
আমি এখন আমার ভাষায় এই পরিপ্রেক্ষিতে মসীহ্ মওউদ (আ.)-এর কিছু মূল্যবান দিকনির্দেশনা উপস্থাপন করবো। এক স্থানে মসীহ্ মওউদ (আ.) বলেন যে, যদি কোন ব্যক্তি পবিত্র জীবনের বাসনা লালন করে এবং পরকালের কল্যাণরাজি অর্জন করতে চায়, তাহলে তাদেরকে সেই অবস্থানে পৌঁছানোর জন্য চেষ্টা ও সংগ্রাম করতে হবে; যেখানে তারা অকপটে দাবি করতে পারবে যে, তাদের জীবন, তাদের মৃত্যু, তাদের ত্যাগ এবং তাদের ইবাদত সকল কিছু আল্লাহ্ তা’লার জন্য।
মসীহ্ মওউদ (আ.) বলেছেন যে, ইব্‌রাহীম (আ.)-এর মতো আমাদের হৃদয় প্রতিধ্বনি করবে ও ঘোষণা দিবে যে, ‘আমি আমার প্রভুর প্রতি পরিপূর্ণরূপে অনুগত হয়ে পড়েছি’। স্পষ্টভাবে মসীহ্ মওউদ (আ.) বলেছেন যে, কোন ব্যক্তি, যে নিখুঁতভাবে আল্লাহর আদেশাবলি পালন করে না এবং অনুধাবন করে না যে, আল্লাহ্ তা’লার ইবাদতই তার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য, সে প্রকৃত বিশ্বাসীর মর্যাদা লাভ করতে পারে না।
অতএব, আপনাদেরকে বুঝতে হবে যে, যদিও আপনারা পশ্চিমা সমাজে বসবাস করছেন তবুও আপনাদেরকে অবশ্যই ইসলামী শিক্ষানুযায়ী আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে জীবনযাপন করতে হবে। আপনাদেরকে দৃঢ় মনোবলের সাথে আপনাদের ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সংস্কৃতিকে ধারণ করতে হবে। আপনাদেরকে অবশ্যই আপনাদের জীবনে সেই সকল নেক পরিবর্তন আনতে হবে যা আল্লাহ্ তা’লা ও তাঁর সৃষ্টির অধিকার প্রদানে আপনাদের সহায়ক হবে। আপনাদের জ্ঞানের সমৃদ্ধি সাধনে, নৈতিক ও আধ্যাত্মিকতার মান উন্নয়নে এবং নিজের উন্নতিকল্পে আপনাকে অবশ্যই সর্বদা চেষ্টা করতে হবে।
মসীহ্ মওউদ (আ.)-ও শিক্ষা প্রদান করেছেন যে, যারা তাঁর সঙ্গে নিজেদেরকে সম্পৃক্ত করেছেন তাদের উচিত তারা যেন তাদের জীবন তাদের ধর্মের তরে সেইভাবে উৎসর্গ করেন যেভাবে তিনি করেছেন। তাই সর্বদা আমাদের মসীহ্ মওউদ (আ.)-এর ব্যক্তিগত দৃষ্টান্ত স্মরণে রাখা উচিত। মসীহ্ মওউদ (আ.) তাঁর জীবনের প্রতিটি দিন ও রাত ইসলামের তরে উৎসর্গ করেছিলেন। শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত তাঁর জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত ঐশী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, সমগ্র বিশ্বে প্রকৃত ইসলামের শিক্ষা পুনরুজ্জীবিত করা ও প্রচারের কাজে কেটেছে। উদাহরণস্বরূপ, একবার মসীহ্ মওউদ (আ.) বলেন যে, তিনি কাজ চালিয়ে যান যতক্ষণ না তিনি অনুভব করেন যে, চরম ক্লান্তির কারণে তিনি ভেঙ্গে পড়ছেন। কেবল নিদারুণ ক্লান্তির সেই সময়েই মসীহ্ মওউদ (আ.) শুয়ে থাকতেন এবং অল্প সময়ের জন্য বিশ্রাম নিতেন। এটি হচ্ছে মসীহ্ মওউদ (আ.)-এর মহান দৃষ্টান্ত, আর আমাদের কর্তব্য তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করা। আমার কোনো সংশয় নেই যে, যদি ওয়াকফে নও সদস্যবৃন্দ সমষ্টিগতভাবে তাঁর উদাহরণ স্বল্প পরিসরেও অনুসরণ করেন, তাহলে তারা আধ্যাত্মিকতা ও নৈতিকতায় বিশ্বে বিপ্লব বয়ে আনবেন।

আপনাদের কাজের ক্ষেত্রে, যখন আপনারা যৌবনে পদার্পণ করেন তখন এটি আবশ্যকীয় নয় যে, আপনাদের প্রত্যেককে জামা’তের সার্বক্ষণিক কাজে ডাকা হবে। যেমনটি আমি পূর্বে বলেছি, আপনাদের মধ্যে অনেকে জামা’তের অনুমতি নিয়ে অন্যান্য স্থানে কাজ করছেন। কিন্তু, যেখানেই আপনারা কাজ করছেন জাগতিকতা যেন আপনাদেরকে গ্রাস করে না নেয় এবং আপনার জীবনের মূল উদ্দেশ্য হয়ে না দাঁড়ায়। বরং, আপনার ওয়াকফ সর্বদা অবশ্যই আপনার প্রথম অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।
আল্লাহ্ তা’লার ইবাদতে নিমগ্ন হওয়ার জন্য আপনাদেরকে অবশ্যই সচেষ্ট হতে হবে এবং নৈতিক ও আধ্যাত্মিক মানের উন্নতি ও ধর্মীয় জ্ঞানের সমৃ্দ্ধির জন্য ক্রমাগতভাবে চেষ্টা করে যেতে হবে। আপনি যেখানেই বাস করেন কিংবা কাজ করেন না কেন, আপনাকে অবশ্যই নিজ জীবনকে ইসলামী শিক্ষার ব্যবহারিক প্রয়োগের এক বিকাশস্থলে পরিণত করতে হবে এবং দূর-দূরান্তে ধর্মের প্রচারের জন্য চেষ্টা করতে হবে। ধর্মের তরে খোদা প্রদত্ত আপনার ক্ষমতা ও দক্ষতাসমূহ ব্যবহার করুন। কেবল যদি আপনি এইভাবে জীবনযাপন করেন তখন আপনি একজন প্রকৃত ওয়াকফে নও হিসেবে পরিগণিত হবেন।
একস্থানে, মসীহ্ মওউদ (আ.) এই বিষয়টি উল্লেখ করেছিলেন যে, মহান আল্লাহ্ তা’লা পবিত্র কুরআনে এই বলে ইব্‌রাহীম (আ.)-এর প্রশংসা করেছেন যে:

وَإِبْرٰهِيمَ الَّذِي وَفّٰی

“এবং ইব্‌রাহীম, যে আদেশাবলি পালন করেছে” (৫৩:৩৮)

এ আয়াতের অর্থ এই যে, হযরত ইব্‌রাহীম (আ.) আল্লাহ্ তা’লার সঙ্গে কৃত অঙ্গীকার পূর্ণ আনুগত্য ও বিশ্বস্ততার সঙ্গে পালন করেছেন। ফলস্বরূপ তিনি তাঁর সৃষ্টিকর্তার ভালোবাসা লাভ করেছেন।
এখন আপনাদের সকলের ওপর এ দায়িত্ব বর্তায় যে, আপনারা আল্লাহ্ তা’লার সঙ্গে কৃত আপনাদের পবিত্র অঙ্গীকার রক্ষা করবেন। এটি করা সহজ বা সাধারণ কোনো কাজ নয়। একজন ওয়াকফে যিন্দেগী ও একজন ওয়াকফে নও-এর অঙ্গীকার সুবিস্তৃত এবং চিরন্তন এক অঙ্গীকার। এর অর্থ ধর্মের জন্য আপনার জীবন দিয়ে দেওয়া।
যেভাবে আমি বলেছি, এর জন্য প্রয়োজন ইবাদতের মানে ধারাবাহিক উন্নতি করা এবং আপনাদের নৈতিক ও আধ্যাত্মিকতার মান বৃদ্ধি করা। প্রশ্নাতীতভাবে, যদি সকল ওয়াকেফীনে নও তাদের অঙ্গীকার পূরণ করেন তাহলে আমরা বিশ্বে একটি মহান বিপ্লব ও আধ্যাত্মিক পরিবর্তনের সাক্ষী হব। তবে, এখনো অনেকটা পথ বাকি রয়েছে।
মাঝেমধ্যে, তরুণ বিবাহিত দম্পত্তি আমার সঙ্গে দেখা করতে আসেন এবং স্বামী বা স্ত্রী গর্বের সঙ্গে বলেন ‘আমি একজন ওয়াকফে নও, আমার স্ত্রী বা স্বামী এবং আমার সন্তানও ওয়াকফে নও’। এটি ভালো যে পুরো পরিবার এই মহান স্কীমের অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু, যেমনটি আমি অনেকবার বলেছি, কেবল ওয়াকফে নও উপাধি ধারণ করা অর্থহীন। এটি অর্থপূর্ণ তখন হয় যখন একজন ওয়াকফে নও সদস্য তার অঙ্গীকারকে বুঝে এবং তার সক্ষমতা দিয়ে বিশ্বস্ততার সঙ্গে এটি পূরণ করার প্রাণপণ চেষ্টা করে।
আপনাদের অঙ্গীকারের মর্যাদা রক্ষা করতে অবিরাম প্রচেষ্টা, গভীর ভালোবাসা এবং সুবিশাল ত্যাগ প্রয়োজন। এর জন্য প্রয়োজন সৃষ্টিকর্তার প্রতি পূর্ণ ভক্তি। মসীহ্ মওউদ (আ.) একবার বলেছেন যে, আল্লাহ্ তা’লার নৈকট্য অর্জনের জন্য আল্লাহ্‌র কাছে সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ করতে হবে হযরত ইব্‌রাহীম (আ.) এর মত করে, যিনি তাঁর সম্পূর্ণ সত্তাকে উৎসর্গ করেছিলেন এবং আল্লাহ্ তা’লার জন্য সম্ভাব্য সকল কষ্ট স্বীকার করেছেন।
এ কারণেই আল্লাহ্ তা’লা পবিত্র কুরআনে হযরত ইব্‌রাহীম (আ.)-এর আনুগত্য ও বিশ্বস্ততার সাক্ষ্য দিয়েছেন। সুতরাং, এটি হল সেই মান যা প্রত্যেক ওয়াকফে নও-এর অনুকরণের প্রচেষ্টা করা উচিত। অপর এক স্থানে মসীহ্ মওউদ (আ.) বলেছেন যে, আল্লাহ তা’লার প্রতি প্রকৃত বিশ্বস্ততা ও আনুগত্যের জন্য ব্যক্তির নিজস্ব আশা-আকাঙ্ক্ষার মৃত্যু প্রয়োজন। এর জন্য প্রয়োজন যে, একজন ব্যক্তি আনন্দের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত এবং বস্তুগত সকল আকাঙ্ক্ষা পরিত্যাগ করবে এবং আল্লাহর জন্য সকল প্রকার প্রত্যাখ্যান ও অপমান সহ্য করবে।
উপরন্তু, মসীহ্ মওউদ (আ.) বলেছেন যে, প্রতিমা পূজা বলতে কেবল গাছ, পাথর বা এমন কিছুর উপাসনা বুঝায় না। বরং, সেই সকল বিষয় যা আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের সময়ে বাধা হিসেবে সামনে এসে দাঁড়ায় এবং আল্লাহ্ তা’লার উপরে অগ্রাধিকার লাভ করে তা এক প্রকার প্রতিমা পূজা।
আপনাদের সকলের এ বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করা উচিত এবং নিজের জীবন মূল্যায়ন করে দেখা উচিত যে, বিভিন্ন জাগতিক কর্মকাণ্ড ও আজকালকার বহুল প্রচলিত খেল-তামাশা আপনাদেরকে ধর্মচর্চা থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে কিনা। এই সকল জাগতিক আকাঙ্ক্ষায় যদি কোন ব্যক্তি আল্লাহ্ তা’লাকে ভুলে যান তাহলে তিনি কীভাবে হযরত ইব্‌রাহীম (আ.) কর্তৃক প্রদর্শিত বিশ্বস্ততা ও আনুগত্যের উদাহরণ অনুসরণ করবেন কিংবা মসীহ্ মওউদ (আ.) এর প্রত্যাশিত মানে পৌঁছাবেন?
যদিও অনেক ওয়াকফে নও তাদের পেশা ও ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত, তবুও তাদের উচিত জাগতিক কর্মকাণ্ডকে আল্লাহ তা’লার ইবাদতে হস্তক্ষেপ করতে না দেওয়া। একইভাবে, যেসব শিশু-কিশোর কম্পিউটার গেম খেলে বা অন্যান্য শখের কাজ করে তাদের এটি নিশ্চিত করতে হবে যে, এগুলো যেন তাদের ইবাদত ও অন্যান্য ধর্মীয় দায়িত্বের প্রতি অবহেলা করার দিকে তাদেরকে নিয়ে না যায়।
বরং, তাদের অবশ্যই এমন অভ্যাস তৈরি করতে হবে যে, যখনই নামাযের সময় হয় তারা যেন সেগুলো পরিত্যাগ করতে পারে এবং ধর্মকে জাগতিক বিষয়াবলির ওপর প্রাধান্য দিতে পারে। হযরত মসীহ্ মওউদ (আ.) বলেছেন যে, তাঁর জামা’তের সদস্যদের এটি স্মরণ রাখা উচিত যে, যতক্ষণ না একজন ব্যক্তি আল্লাহ্ তা’লার ভক্তিতে পূর্ণ আন্তরিক হন এবং তাঁর সন্তুষ্টির জন্য প্রত্যেক পরীক্ষা ও ক্লেশ সহ্য না করেন তারা সত্যিকার নৈতিকতা ও ধার্মিকতা অর্জন করবেন না।
সুতরাং, এই হচ্ছে ধর্মের প্রতি বিশ্বস্ততার মান যা আল্লাহ্ তা’লার নৈকট্য এবং অনুগ্রহ অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয়। যেমনটি আমি পূর্বে উল্লেখ করেছি, কেবল ওয়াকফে নও স্কীমের অন্তর্ভুক্ত হওয়া এবং এই উপাধি অর্জন করা গর্বের বিষয় নয়। তাই কেউ যদি আমাকে জানান যে, তিনি, তার স্ত্রী এবং সন্তানাদি সকলে ওয়াকফে নও তাহলে তাদের বুঝা উচিত কেবল এটি কোনো অর্থ বহন করে না, যদি না তারা আন্তরিকভাবে মসীহ্ মওউদ (আ.)-এর প্রত্যাশানুযায়ী আনুগত্যের উঁচু মানে পৌঁছাতে সচেষ্ট হন।
যতক্ষণ না আপনারা ধর্মকে জাগতিকতার উপর প্রাধান্য দিবেন, ওয়াকফে নও-এর অংশ হওয়ার কোনো মূল্য নেই। এছাড়া, আপনাদের অবশ্যই সর্বদা নিজের জন্য দোয়া করতে হবে যেন মহান আল্লাহ্ তা’লা আপনাদেরকে আপনাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের তৌফিক দান করেন।
এখানে আমি সেই সকল ছেলেদের, যারা এখনো আতফাল, তাদের এবং খোদ্দামদেরকেও স্মরণ করাচ্ছি যে, একজন ওয়াকফে নও হিসেবে আপনাকে অবশ্যই আতফালুল আহমদীয়া ও খোদ্দামুল আহমদীয়ার সক্রিয় সদস্য হতে হবে। আপনাকে অন্যান্য আতফাল ও খোদ্দামদের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ হতে হবে এবং যেকোনো দায়িত্ব বা ত্যাগের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
তাছাড়া, একজন ওয়াকফে নও হিসেবে আপনার ইবাদতের মান অন্য যেকোনো আহমদী হতে উন্নত হওয়া উচিত। যেমনটি আমি বলেছি, বা-জামাত নামায আদায়ের প্রতি আপনাকে অবশ্যই যত্নশীল হতে হবে এবং আপনাকে প্রতিদিন কুরআন তিলাওয়াত করতে হবে। কেবল তখনই আপনি নিজেকে প্রকৃত ওয়াকফে নও বলে অভিহিত করতে পারবেন। ফরয নামাযের পাশাপাশি, বয়সে বড় আহমদী ছেলেদের নিয়মিত নফল নামাযও আদায় করতে হবে। কেবল তখনই আপনি নিজেকে প্রকৃত ওয়াকফে নও বলে অভিহিত করতে পারবেন।
উপরন্তু, বড় আতফাল এবং খোদ্দামুল আহমদীয়ার সকল সদস্যের মনোযোগ সহকারে পবিত্র কুরআনের অর্থ পড়া উচিত এবং মসীহ্ মওউদ (আ.) ও খলীফাগণের তফসীর অধ্যয়ন করা উচিত। আপনাদের আল্লাহ্ তা’লার আদেশসমূহ খুঁজে বের করা উচিত এবং নিজ সাধ্যানুসারে এর ওপর আমল করার বিষয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হওয়া উচিত। কেবল তখনই আপনি নিজেকে প্রকৃত ওয়াকফে নও বলে অভিহিত করতে পারবেন।
সর্বদা একজন ওয়াকফে নও-এর আচার-ব্যবহার সবচেয়ে উন্নত মানের হতে হবে। কেবল তখনই আপনি নিজেকে প্রকৃত ওয়াকফে নও বলে অভিহিত করতে পারবেন।
এছাড়া, যেখানে সকল আতফাল ও খোদ্দামেরই যথাযথ পোশাক পরিধান করা উচিত এবং অন্যের সঙ্গে কথাবার্তা ও মেলামেশায় ভদ্র ও শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত, সেখানে ওয়াকফে নও-দের মান আরও উন্নত হওয়া উচিত। কেবল তখনই আপনি নিজেকে প্রকৃত ওয়াকফে নও বলে অভিহিত করতে পারবেন।
মেয়েদের তুলনায় ছেলেরা আধুনিক সমাজে প্রচলিত অশালীনতা ও অশ্লীলতা দ্বারা বেশি প্রভাবিত হয়ে যায়। কিন্তু, আমাদের ছেলেদের সর্বদা নিজেদের শালীনতা বজায় রাখা উচিত এবং অনৈতিক ও অশ্লীল কার্যকলাপের শিকারে পরিণত হওয়া উচিত নয়। কেবল তখনই আপনি নিজেকে প্রকৃত ওয়াকফে নও বলে অভিহিত করতে পারবেন।
আপনার পিতামাতাকে শ্রদ্ধা করা উচিত, তাদের কথা শোনা উচিত, তাদের সেবা-যত্ন করা উচিত এবং তাদের জন্য দোয়া করা উচিত। কেবল তখনই আপনি নিজেকে প্রকৃত ওয়াকফে নও বলে অভিহিত করতে পারবেন।
একইভাবে, আপনার ভাই-বোনের সঙ্গেও ভালোবাসা ও স্নেহের ব্যবহার করুন এবং তাদের সামনে উত্তম উদাহরণ প্রতিষ্ঠা করুন। কেবল তখনই আপনি নিজেকে প্রকৃত ওয়াকফে নও বলে অভিহিত করতে পারবেন।
আপনি যদি বিবাহিত হন তাহলে স্ত্রী ও সন্তানদের সামনে আপনার সম্ভাব্য সর্বোত্তম দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। ভালোবাসা ও যত্নের সঙ্গে তাদের সঙ্গে আচরণ করুন এবং তাদের চাহিদা পূরণ করুন। পরবর্তী প্রজন্ম যেন জামা’তের সঙ্গে বিশ্বস্তার সাথে আবদ্ধ থাকে তার জন্য আন্তরিকভাবে সচেষ্ট থাকুন। কেবল তখনই আপনি নিজেকে প্রকৃত ওয়াকফে নও বলে অভিহিত করতে পারবেন।
একইভাবে, যারা বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাদের উচিত ধার্মিক আহমদী মেয়ে বিয়ে করা, যেন আপনাদের পরবর্তী বংশধর উত্তম পরিবেশে গড়ে উঠে। আপনি যদি জামা’তের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম রক্ষায় আপনার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারেন, কেবল তখনই আপনি নিজেকে প্রকৃত ওয়াকফে নও বলে অভিহিত করতে পারবেন।
শারীরিক ও মানসিকভাবে আপনার শক্তিশালী হওয়া উচিত। আপনার বিশ্বাসের জন্য আপনাকে কঠোর পরিশ্রম এবং যেকোনো কাজ করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। জামা’তের জন্য যেকোনো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে এবং প্রয়োজনীয় ত্যাগ স্বীকার করতে আপনাকে প্রস্তুত থাকতে হবে। কেবল তখনই আপনি নিজেকে প্রকৃত ওয়াকফে নও বলে অভিহিত করতে পারবেন।
তবলীগের ক্ষেত্রে, ওয়াকফে নও-দের সম্মুখসারিতে থাকা উচিত এবং ইসলামের শিক্ষার প্রচারকে নিজেদের ব্যক্তিগত দায়িত্ব মনে করা উচিত। এই লক্ষ্যে ধর্মীয় শিক্ষায় আপনাদেরকে সমৃ্দ্ধ হতে হবে। তাই আমি পুনরায় আপনাদেরকে পবিত্র কুরআনের গভীর তত্ত্বজ্ঞান লাভের চেষ্টা করা এবং জামা’তের বই ও সাময়িকী পড়ার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। কেবল তখনই আপনি নিজেকে প্রকৃত ওয়াকফে নও বলে অভিহিত করতে পারবেন।
পাশাপাশি এটিও স্মরণ রাখুন, যুগ-খলীফার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণে কাজ করা এবং তাঁর সার্বক্ষণিক সহায়ক অঙ্গে পরিণত হওয়া একজন ওয়াকফে নও-এর দায়িত্ব। আপনি কেবল তখনই এটি করতে পারবেন যখন আপনি খিলাফতের একনিষ্ঠ আনুগত্যকারী হবেন। যদি আপনি যুগ-খলীফার নির্দেশনা ও আদেশাবলি মান্য করেন, কেবল তখনই আপনি অন্যদেরও তা করতে উৎসাহিত করতে পারবেন।
যেখানে প্রত্যেক আহমদীর উচিত আমার জুমুআর খুতবা শোনা এবং অন্যান্য প্রোগ্রাম দেখাকে এক নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত করা, সেখানে এটি সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ যে, ওয়াকেফীনে নও-রা আমি যা বলি তা যেন শুনেন, নোট করেন, আমি যা বলি তার ওপর অভিনিবেশ করেন এবং যা তারা শিখেছেন তা নিজেদের জীবনে অঙ্গীভূত করতে চেষ্টা করেন। অধিকন্তু, একজন ওয়াকফে নও-এর সকল ধরনের অহংকার ও গর্ব থেকে মুক্ত থাকা উচিত। বরং, নম্রতা ও সহনশীলতা আপনাদের লক্ষণ হওয়া উচিত। যদি আপনি এ সকল গুণ অর্জনের চেষ্টা করেন, কেবল তখনই আল্লাহ্ তা’লার সন্তুষ্টি ও নৈকট্য অর্জন করতে পারবেন। আল্লাহ্ তা’লা আপনাদেরকে আপনার দায়িত্ব ও কর্তব্যসমূহ বুঝার এবং ওয়াকফের মর্যাদা সর্বোত্তমভাবে পূরণ করার তৌফিক দান করুন।
আপনি জামা’তের পূর্ণকালীন সেবায় নিয়োজিত থাকুন কিংবা অন্য কোথাও কাজ করুন না কেন, আপনাকে অবশ্যই আপনার জন্মের পূর্বে পিতামাতাকৃত পবিত্র অঙ্গীকার রক্ষার্থে সচেষ্ট হতে হবে।
আল্লাহ্ তা’লা আপনাদেরকে ধর্মের জ্ঞান ও উপলব্ধিতে উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ করুন। তিনি আপনাদের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক মানে উন্নতি দান করুন, ক্রমান্বয়ে জামা’তের অধিকতর সেবায় নিয়োজিত হওয়ার এবং নিষ্ঠার সঙ্গে আপনাদের অঙ্গীকার পালনের তৌফিক দান করুন, আমীন।

অনুবাদ: মোবাশ্বের আহমদ (তাকফি)
মূল: https://www.alislam.org/articles/fulfilling-pledge-of-waqf/