প্রেস বিজ্ঞপ্তি
২৭-ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

ঘানায় আহমদীয়াতের শতবর্ষ: ঈমানোদ্দীপক ভাষণের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হলো ঐতিহাসিক জলসা সালানা ঘানা ২০২৪


“ভালোবাসা ও সহানুভূতির মাধ্যমে আপনাদের জাতির হৃদয় ও মন জয় করার চেষ্টা করুন।” – ‍হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.)

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের বিশ্বপ্রধান পঞ্চম খলীফা হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত ঘানার বার্ষিক সম্মেলন (জলসা সালানা)-এর সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

হুযূর আকদাস টিলফোর্ডের ইসলামাবাদে মসরূর হল থেকে ভার্চুয়ালি সমাপনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন আর ঘানার জলসাগাহ বাগ-এ-আহমদে ৩৯,০০০-এরও অধিক মানুষ সমবেত হয়েছিলেন।

হুযূর আকদাস তাঁর বক্তব্যে বয়আতের দশটি শর্ত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন যা একজন প্রকৃত আহমদী মুসলমান হওয়ার জন্য প্রতিশ্রুত মসীহ্ (আ.) প্রত্যেকের মেনে চলা আবশ্যক করেছেন।

ভাষণের শুরুতে হুযূর আকদাস এ বছরের জলসা সালানার তাৎপর্য সম্পর্কে আলোকপাত করেন, যা আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত ঘানা প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ উপলক্ষ্যে উদযাপিত হচ্ছে, এবং যে সময়ে আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত ঘানার প্রত্যেক অংশে সুপরিচিত হয়ে উঠেছে।

ঘানার আহমদী মুসলমানদেরকে তাদের দায়িত্বাবলি স্মরণ করাতে গিয়ে হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) বলেন:

“আপনারা যখন অগ্রসর হবেন আপনাদেরকে নিজেদের দায়িত্বাবলির প্রতি নিবিড় মনযোগ দিতে হবে এবং উপলব্ধি করতে হবে আপনাদের শতবর্ষ যেমন আনন্দের তেমনি এটি আপনাদের ঘাড়ে দায়িত্বের ভারী বোঝা অর্পণ করছে। এটি কখনো হওয়া উচিত নয় যে, এ মাইলফলকে পৌঁছানোর পর আপনারা বসে পড়বেন এবং আরাম করবেন। বরং আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত ঘানার দ্বিতীয় শতাব্দীতে প্রবেশের সাথে সাথে প্রত্যেক আহমদী মুসলমানের দায়িত্ব হল অব্যাহত সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি বজায় রাখার আন্তরিক চেষ্টা করা। আপনাদের দেশের প্রতিটি মানুষের কাছে প্রকৃত ইসলামের বার্তা পৌঁছানোর চেষ্টা করতে হবে। ভালোবাসা ও সহানুভূতির মাধ্যমে আপনাদের জাতির হৃদয় ও মন জয় করার চেষ্টা করুন।”

হুযূর আকদাস গুরুত্বারোপ করে বলেন যে, মানুষকে ইসলামের দিকে আহ্বান করতে হলে আহমদী মুসলমানদেরকে ইসলামী শিক্ষার অনুসরণে অবশ্যই অগ্রণী ভূমিকায় থাকতে হবে।

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) বলেন:

“আহমদী মুসলমান হিসেবে কখনো ভুলবেন না আপনি কে এবং আপনি কীসের প্রতিনিধিত্ব করছেন। স্মরণ রাখবেন আপনি যখন তবলীগের (প্রচার) মাধ্যমে আহমদীয়া মুসলিম জামা’তকে এগিয়ে নিতে চেষ্টা করবেন তখন যারা আপনার বার্তা শুনবে তারা জিজ্ঞেস করবে মসীহ্ মওউদ (আ.)-এর মান্যকারীরা কীভাবে ভিন্ন? তারা লক্ষ্য করবে আপনি আল্লাহ্ তা’লার প্রতি সত্যিকার ভালোবাসা রাখেন কিনা এবং প্রত্যেক পরিস্থিতি ও স্থানে নৈতিকতার উৎকৃষ্ট দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন কিনা। তারা জানতে চাইবে আপনি নিজে সেসকল নির্দেশনা মেনে চলেন কিনা যেগুলোর প্রতি আপনি অন্যদের আহ্বান করছেন। যদি এসকল প্রশ্নের উত্তর ‘না’ হয় তাহলে আপনি কীভাবে পূর্ণ আন্তরিকতার সঙ্গে অন্যদের ইসলামের প্রতি ডাকবেন?”

হুযূর আকদাস এরপর বয়’আতের শর্তসমূহের বিস্তারিত ব্যাখ্যা তুলে ধরে বলেন যে, কীভাবে এগুলো এক “আচরণবিধি” হিসেবে “আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষণের জন্য পথনির্দেশনা প্রদান করে।”

হুযূর আকদাস বলেন যে, শর্তগুলোর অনুবর্তিতা করা “নিশ্চিত করে যে, আমরা মসীহ্ মওউদ (আ.)-এর দেওয়া আধ্যাত্মিক মশালকে বহন করতে পারি এবং অন্যদেরকে অনুসরণের জন্য সত্যিকার ধার্মিকতার পথ আলোকিত করতে পারি।”

আহমদী মুসলমানদের অবশ্যই ‘শিরক’ (তথা আল্লাহ্ তা’লার সমকক্ষ দাঁড় করানো) এড়িয়ে চলতে বলার নিদের্শনা সম্পর্কিত বয়’আতের প্রথম শর্ত নিয়ে বলতে গিয়ে হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) বলেন:

“আল্লাহ্ তা’লার একত্বে বিশ্বাস আমাদের কাছে এই দাবি করে যে, আমরা যেন আমাদের সকল আশা, আকাঙ্ক্ষা ও বাসনাকে তাঁর নিকট উপস্থাপন করি, এই বিশ্বাস নিয়ে যে, আমাদেরকে সাহায্য করার এবং সকল প্রয়োজন পূর্ণ করার ক্ষমতা কেবল তাঁরই রয়েছে। এটি দাবি করে যে, আমরা তাঁকে এবং কেবল তাঁকেই ভয় করি। মোট কথা, মসীহ্ মওউদ (আ.) বলেন যে, আল্লাহ্ তা’লার একত্বে বিশ্বাস পরিপূর্ণ হতে পারে না যতক্ষণ না আমরা আল্লাহ্ তা’লার সঙ্গে নিঃশর্ত আনুগত্যের বন্ধন স্থাপন করি।”

হুযূর আকদাস ব্যভিচার ও অশ্লীল আচরণ পরিহারের গুরুত্ব সম্পর্কেও কথা বলেন।

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) বলেন:

“এটি এমন একটি পাপ যা ব্যক্তি ও বৃহত্তর সমাজের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এ সম্পর্কে মসীহ্ মওউদ (আ.) বলেন যে, যদি কেউ বিয়ে করতে অসমর্থ হয়, তাহলে তার উচিত অন্যান্য উপায়ে সতিত্ব রক্ষা করা এবং প্রবৃত্তিকে দমন করা। উদাহরণস্বরূপ, সে নিয়মিত রোযা রাখতে পারে, ন্যূনতম খাদ্য গ্রহণ বা কঠোর শারীরিক পরিশ্রম করতে পারে।”

উক্ত বিষয়ে বিস্তারিত বলতে গিয়ে, হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) বলেন:

“বর্তমান পৃথিবীতে প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন মাধ্যম ও প্রযুক্তির উদ্ভব হচ্ছে যা মানুষকে নৈতিকতা থেকে দূরে নিয়ে যাচ্ছে এবং তাদেরকে অশ্লীলতা ও নোংরামীর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে ইন্টারনেট, টেলিভিশন এবং গণমাধ্যম সবই পাপাচারের প্রবেশদ্বার এবং আবালবৃদ্ধবনিতা সকলের নৈতিক স্খলনের মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে। এসকল অনৈতিকতা থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করার জন্য এটি আবশ্যক যে, প্রত্যেক আহমদী প্রতিনিয়ত ‘ইসতিগফার’ (আল্লাহ্ তা’লার নিকট ক্ষমা ও আশ্রয় চাওয়ার দোয়া)-এ রত থাকে এবং আল্লাহ্ তা’লার দরবারে মাথা নত করে তাঁর সাহায্য, করুণা ও সকল প্রকার অনিষ্ট থেকে সুরক্ষা প্রার্থনা করতে থাকে।”

হুযূর আকদাস আহমদী মুসলমানদেরকে এমন আমল সম্পর্কে স্মরণ করিয়ে দেন যা কারো আধ্যাত্মিকতা বৃদ্ধি করে। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হল পাঁচ ওয়াক্ত ফরয নামায আদায় করা, রাতে ঐচ্ছিক তাহাজ্জুদ নামাযে নিয়মিত হওয়ার চেষ্টা করা এবং ‘দরূদ’-এর মাধ্যমে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপর আশিস বর্ষণের জন্য দোয়া করা।

হুযূর আকদাস তাঁর ভাষণে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর উক্তি তুলে ধরেন যেখানে অপর মুসলমানদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শনের উপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) বলেন:

“মহানবী (সা.) বলেন: ‘হে আল্লাহর বান্দাগণ! একে অপরের ভাই হয়ে যাও। এক মুসলমান অপর মুসলমানের ভাই। কেউ তার ভাইয়ের ক্ষতি করতে পারে না। তাকে অপমান করতে পারে না, আর তাকে নিজ থেকে হীন জ্ঞান করতে পারে না।’ এরপর তিনি (সা.) তাঁর বক্ষের দিকে ইঙ্গিত করে তিনবার বলেন: ‘ধার্মিকতা এখানে থাকে। কারো ভাইকে নিজ থেকে হীনতর জ্ঞান করা তার জন্য পাপ। প্রত্যেক মুসলমানের রক্ত, সম্পদ ও সম্মান অন্য মুসলমানের জন্য হারাম।’ ”

উক্ত শিক্ষা সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) বলেন:

“এটি অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, সরাসরি এ শিক্ষা লাভ করার পরও, মুসলমানরা ও বিভিন্ন মুসলিম দেশের নেতৃবৃন্দ নিষ্ঠুরভাবে একে অপরকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে, পরস্পরকে শত্রু জ্ঞান করছে — আর এসবই আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল (সা.)-এর নামে সংঘটিত হচ্ছে। প্রায়ই কেবল রাজনৈতিক ক্ষমতা সংরক্ষণ ও হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য মুসলমান সরকার ও তাদের নেতৃবৃন্দ বর্বর নিষ্ঠুরতায় নিমজ্জিত হচ্ছে এবং ন্যায়ের সমস্ত সীমা লঙ্ঘন করছে। তাই জলসা সালানায় অংশগ্রহণকারী সকলের উচিত অত্যাচার ও অন্যায়ের অবসান এবং বিশ্বে প্রকৃত শান্তি বিরাজ করার জন্য আন্তরিকভাবে দোয়া করা।”

বয়’আতের অপর এক শর্ত সম্পর্কে বলতে গিয়ে হুযূর আকদাস স্মরণ করিয়ে দেন প্রত্যেক আহমদী মুসলমানকে অবশ্যই “ধর্ম ও ধর্মের সম্মান রক্ষা করাকে নিজ প্রাণ, সন্তান-সন্ততি, সম্মান ও সম্পদের চেয়ে প্রিয়তর জ্ঞান করবে।”
হুযূর আকদাস বলেন যে, প্রত্যেক আহমদী মুসলমানের এটিও নিশ্চিত করতে হবে যে, তারা যেন অন্যদের কষ্ট লাঘব করার জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা গ্রহণ করে।

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) বলেন:

“আমি পুনর্ব্যক্ত করছি যে, প্রত্যেক আহমদী মুসলমানকে অবশ্যই সহানুভূতি ও মানবিকতা প্রদর্শন করতে হবে এবং অপরের কষ্টকে নিজের বলে মনে করতে হবে। আমি বারবার সমগ্র বিশ্বের আহমদীদেরকে এর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বলে আসছি। সেসকল আহমদী মুসলমান যাদের সক্ষমতা আছে তাদের অবশ্যই সমাজের দরিদ্র সদস্যদের ক্ষুধা দূর করার চেষ্টা করতে হবে। দারিদ্র্যের মাঝে বসবাসকারী বা যারা কোনো ধরনের সমস্যার মধ্যে আছে তাদের অভাব দূর করার বিষয়ে তাদেরকে সচেষ্ট হতে হবে। তাদের প্রতি সহানুভূতি দেখান, তাদেরকে খাওয়ান ও যত্ন নিন।”

পরবর্তীতে হুযূর আকদাস বলেন যে, যদি কারো সহায়তার বা দানের প্রয়োজন হয়, তার নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সর্বাত্মক প্রচেষ্টাও চালিয়ে যাওয়া উচিত।

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) বলেন:

“যাদের দান বা অন্যের সাহায্যের প্রয়োজন হয়, তারা যেন নিজেদের পরিস্থিতি উন্নয়নে প্রচেষ্টা ব্যতিরেকে দিনের পর দিন কেবল সাহায্য গ্রহণ করে না যায়। বরং তাদের কঠোর পরিশ্রম করা এবং নিজ পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করা উচিত এই আশায় যে, একদিন তারা কষ্টে জর্জরিত অন্যান্য মানুষের জন্য সাহায্য ও সহায়তার উৎস হতে পারবে।”

হুযূর আকদাস বলেন, বয়’আতের অংশ হিসেবে প্রত্যেক আহমদী মুসলমান আল্লাহ্ তা’লার সন্তুষ্টির জন্য প্রতিশ্রুত মসীহ্ (আ.)-এর আনুগত্য করার শপথ নিয়ে থাকে।

মসীহ্ মওউদ (আ.)-এর পর খিলাফতের প্রতি আনুগত্য ও গভীর ভালোবাসার গুরুত্ব তুলে ধরতে গিয়ে, হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) বলেন:

“এই যুগে আল্লাহ্ তা’লা আমাদেরকে খিলাফতে-আহমদীয়ার কল্যাণ দান করেছেন। তাই প্রত্যেক আহমদীর খিলাফতের প্রতি বিশ্বস্ত, অনুগত ও বাধ্য হতে হবে এবং যুগ-খলীফার সঙ্গে তাদের ভালোবাসা ও আন্তরিকতার বন্ধনকে প্রতিনিয়ত উন্নত করতে হবে। এটি আমাদের ধারাবাহিক উন্নতির চাবিকাঠি এবং আমাদের জামা’তের দীর্ঘস্থায়ী সাফল্যের উপায়।”

আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের নতুন শতাব্দীর আগমনকে তাদের নিজেদের মাঝে এক ইতিবাচক পরিবর্তন আনার প্রচেষ্টা নবায়নের এক সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করার জন্য হুযূর আকদাস আহমদী মুসলমানদের আহ্বান জানান।

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) বলেন:

“আমি আপনাদের প্রত্যেককেই বলছি – এখন সময় এসেছে এগিয়ে আসার এবং অনড় সংকল্প ও দৃঢ়চিত্ততার সাথে অঙ্গীকার করার যে, আপনারা মসীহ্ মওউদ (আ.)-এর হাতে যে বয়’আত করেছেন তার শর্ত পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় সকল পবিত্র পরিবর্তন আনতে চিরকাল চেষ্টা করে যাবেন। ইনশাআল্লাহ্ [আল্লাহ্ চাইলে] যদি তা করেন, তবে আপনারা অন্যদের নিকট ইসলাম পৌঁছানোর মাধ্যম হবেন এবং আপনার দেশে বসবাসকারী মানুষজনসহ সমগ্র বিশ্বের মানুষকে সত্যিকার ইসলামের ছায়াতলে নিয়ে আসার কারণ হবেন।”

হুযূর আকদাস তাঁর বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে আফ্রিকার এবং বিশেষত আহমদী মুসলমানদের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেন।

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) বলেন:

“কঠিন সত্য হচ্ছে উন্নত বিশ্বের সিংহভাগ বস্তুবাদে নিমজ্জিত এবং আধ্যাত্মিকতা বা ন্যায়বিচারের সঙ্গে তাদের কোনো যোগসূত্র নেই। যেখানে তারা নিজেদেরকে শান্তি ও সাম্যের ধারক বলে দাবি করে সেখানে তারা ভয়াবহ যুদ্ধ ও অবিচারের মাধ্যমে মানবতার ওপর ঘোরতর নিষ্ঠুরতা চালাচ্ছে। তাদের প্রতারণামূলক আচরণের বাস্তবতা তাদের আপাত উচ্চ-মানসিকতার বিবৃতিগুলোকে ভণ্ডামি ও ফাঁকা বুলি ছাড়া কিছুই সাব্যস্ত করে না … আমি দোয়া করি, আপনাদের সন্তান-সন্ততি ও পরবর্তী প্রজন্ম যেন পাশ্চাত্য দ্বারা প্রভাবিত ও অনুপ্রাণিত হওয়ার পরিবর্তে, আপনাদের জাতিসমূহ আহমদীয়াত গ্রহণ এবং বিশ্বে সত্যিকারের আধ্যাত্মিক বিপ্লব ঘটাতে অগ্রণী অবস্থানে থাকার ফলস্বরূপ, পুরো বিশ্ব যেন ইনশাআল্লাহ্ ঘানা ও আফ্রিকান দেশগুলোকে ন্যায়, সত্য ও নৈতিকতার আলোকবর্তিকা হিসেবে দেখতে শুরু করে।”

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) আরও বলেন:

“যদি এমনটি ঘটে তাহলে ঘানা ও অন্যান্য দেশের আহমদীগণ আধ্যাত্মিক মুক্তির পথে হাঁটবে এবং বিশ্বের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বাঁচানোর কারণ হবে, ইনশাআল্লাহ্। আর, তারাই সেই সকল মানুষ হবেন, যারা বিশ্বকে অশান্তি, অনৈতিকতা, সংঘাত ও ধর্মহীনতার ভয়ংকর চক্র থেকে বাঁচানোর ক্ষেত্রে মহান ভূমিকা পালন করবে।”