প্রেস বিজ্ঞপ্তি
১৯-জানুয়ারি, ২০২৪

আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের বিশ্ব-প্রধানের সাথে ভার্চুয়াল সাক্ষাতের সম্মান লাভ করলো যুক্তরাষ্ট্রের কানেটিকাটের খোদ্দাম


“যা-ই ঘটে যাক, কখনোই নামায বাদ দিবেন না।” – হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.)

১৪ জানুয়ারি ২০২৪, যুক্তরাষ্ট্রের কানেটিকাট-এর ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সী যুবক সদস্যদের সঙ্গে একটি সভা করেন আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের বিশ্ব-প্রধান ও পঞ্চম খলীফাতুল মসীহ্‌ হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.)।

টিলফোর্ডের ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত এ সভার জন্য ২৩ জন খোদ্দাম সফর করে যুক্তরাজ্যে উপস্থিত হন।

হুযূর আকদাস সভায় অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের সফরকালীন সুবিধা-অসুবিধা এবং তাদের শিক্ষার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চান।

অংশগ্রহণকারীগণ ধর্মবিশ্বাস ও সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে হুযূর আকদাসের নিকট প্রশ্ন করার সুযোগ লাভ করেন।

একজন অংশগ্রহণকারী অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা চলাকালীন হোমিওপ্যাথি ওষুধ ব্যবহারের বিষয়ে হুযূর আকদাসের পরামর্শ চান।

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) বলেন:

“আমাদের কেবল এক (প্রকারের) ওষুধের উপর ভরসা করা উচিত নয়। যদি আপনি মনে করেন যে, হোমিওপ্যাথি কোন রোগের চিকিৎসার জন্য কার্যকর হতে পারে, এমনকি সম্পূরক হিসেবেও, তাহলে আপনি সেটা ব্যবহার করতে পারেন … একবার হযরত মুসলেহ্‌ মওউদ (রা.) ঔষধ সেবন করছিলেন। তিনি প্রথমে অ্যালোপ্যাথি ঔষধ সেবন করলেন, এরপর স্থানীয় আয়ুর্বেদী ঔষধ সেবন করলেন, এবং এরপর হোমিওপ্যাথি ঔষধ সেবন করলেন। পাশে দাঁড়ানো একজন জিজ্ঞাসা করলেন, কয়েক রকম ঔষধ খাওয়ার পরে তিনি কীভাবে বুঝতে পারবেন যে, কোন ওষুধটি কাজ করেছে। তিনি উত্তরে বলেন, ‘আমি এই ঔষধগুলোর কোনটার ওপরই ভরসা করি না। আমার ভরসা আল্লাহ্‌ তা’লার ওপর। আমি জানিনা ওষুধগুলোর কোনটিকে আল্লাহ্‌ তা’লা আমার এই ব্যাধির আরোগ্য দানের কল্যাণ দান করেছেন। এই জন্য আমি সবগুলোই ব্যবহার করছি।’ ”

আরেকজন অংশগ্রহণকারী ‘পরকালের জীবন’ সম্পর্কে প্রশ্ন করেন এবং জানতে চান সেটি চিরন্তন হবে কিনা।

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) উত্তরে বলেন:

“পরকালে সময়ের ধারণাটি আমাদের আয়ত্তের বাইরে। সুতরাং, যদি আল্লাহ্‌ তা’লার দৃষ্টিতে সময় সীমিতও হয়ে থাকে, আমাদের কাছে তা অসীম। এর শেষ কখন হবে তা আমরা বলতে পারি না। আপেক্ষিকভাবে, আমরা বিষয়টি জানি না। আল্লাহ্‌ তা’লা বলেন যে, তাঁর এক দিন আমাদের ৫০,০০০ বছরের সমান। আরেক স্থানে তিনি বলেছেন যে, তাঁর এক দিন এক হাজার বছরের সমান, আর যদি আপনি গুণ করে দেখেন তবে লক্ষ-কোটি বছর পাওয়া যায়। সুতরাং, আপেক্ষিক ভাবে, আমরা জানি না কখন সেই সময়ের শেষ হবে।”

একজন অংশগ্রহণকারী বলেন যে, এই দলটির যুক্তরাজ্য সফরের উদ্দেশ্য ছিল, হুযূর আকদাসের পেছনে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামায বাজামা’ত আদায় করা। তিনি হুযূর আকদাসের কাছে জানতে চান, এই সফরের পরে ফিরে গিয়ে তাদের কোন বিষয়টি স্মরণ রাখা উচিত।

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) বলেন:

“সকল সময়ে নিজেদের পাঁচ বেলার নামায সঠিক সময়ে আদায়ের বিষয়ে যত্নবান থাকুন। যা-ই ঘটে যাক, কখনোই নামায বাদ দিবেন না। এটি মূল বিষয় হওয়া উচিত যার ওপর আপনারা জোর দেবেন এবং যত্নবান থাকবেন।”

সভা চলাকালীন হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) ইসলামের পয়গাম পৌঁছে দেওয়ার বিষয়টির ওপর আলোচনা করেন, এমনকি সেই সময়ে যখন মানুষ খুব একটা মনোযোগী হয় না।

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) বলেন:

“আমাদের কাজ হল পয়গাম পৌঁছে দেওয়া এবং যতটুকু সম্ভব আমাদের প্রকাশনা, প্যাম্ফলেট, লিফলেট বিতরণ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে তবলীগ (ধর্ম প্রচার)-এর কাজ করা। এর ফল আল্লাহ্‌ তা’লার হাতে। তিনি যখন চান, আপনাদেরকে এর ফল প্রদান করবেন।”

আরেকজন অংশগ্রহণকারী হুযূর আকদাসের কাছে বিয়ে এবং নিজ সহধর্মিনী ও শ্বশুর বাড়ির আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সফল সম্পর্ক কীভাবে গড়ে তোলা যায় সেবিষয়ে পরামর্শ চান।

হুযূর আকদাস হালকা মেজাযে বিয়েতে ধৈর্য এবং সহিষ্ণুতার আবশ্যকতা ব্যাখ্যা করেন।

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) বলেন:

“কেউ পারফেক্ট (শতভাগ দোষমুক্ত) না। সর্বদা নিজের স্ত্রীর বিষয়ে ধৈর্য অবলম্বন করুন। যখনই কোন ত্রুটি চোখে পড়বে – নিজের চোখ বন্ধ করবেন, কান বন্ধ করবেন, মুখে বন্ধ করবেন। আপনার জীবন ঠিকঠাক চলতে থাকবে!”