প্রেস বিজ্ঞপ্তি
০৬-সেপ্টেম্বর, ২০২৩

শান্তির জন্য ইসলামী মূলনীতির রূপরেখা প্রদান করে সকল ধর্মের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের আহ্বান জানালেন আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের বিশ্ব-প্রধান


“ইসলাম মুসলমানদেরকে জোরপূর্বক তলোয়ার, বোমা বা বন্দুকের মতো ঘৃণ্য ও ধ্বংসাত্মক শক্তির মাধ্যমে তাদের বিশ্বাস ছড়িয়ে দেওয়ার অনুমতি দেয় না। বরং তাদেরকে যুক্তি, প্রমাণ ও ভালোবাসার মাধ্যমে মানবজাতির হৃদয় ও মন জয় করার আহবান জানায়।” – হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.)

২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের বিশ্ব-প্রধান ও পঞ্চম খলীফাতুল মসীহ্ হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) জার্মানির ৪৭তম জলসা সালানা (বার্ষিক সম্মেলন)-এর দ্বিতীয় দিনে ৮৮০ জনের অধিক বিশিষ্ট ব্যক্তি ও অতিথির উদ্দেশে ভাষণ প্রদান করেন।

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) তাঁর বক্তব্যে ইসলামের বিরুদ্ধে উত্থাপিত প্রধান আপত্তিসমূহ খণ্ডন করেন, যেমন, ইসলামের প্রাথমিক যুগের যুদ্ধসমূহ, মুসলমান অভিবাসীদের একীভূতকরণ ও ইসলামে নারীর মর্যাদা।

হুযূর আকদাস তাঁর বক্তব্যে ইউরোপে কুরআন পোড়ানোর সাম্প্রতিক ঘটনাসমূহেরও তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেন।

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) পবিত্র কুরআনের সূরা ইউনুস-১০:১০০ আয়াত উপস্থাপন করেন যেখানে বলা হয়েছে:

“এবং যদি তোমার প্রভু ইচ্ছা করতেন তাহলে ভূপৃষ্ঠে যত লোক আছে সকলেই ঈমান আনতো। সুতরাং, তুমি কি লোকদের ঈমান আনতে বাধ্য করবে?”

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) ব্যাখ্যা করে বলেন, যদি আল্লাহ্ চাইতেন তাহলে তিনি সকল মানুষকে ইসলাম গ্রহণে বাধ্য করতে পারতেন। “কিন্তু তিনি নির্ধারণ করেছিলেন যে, মানুষের স্বাধীনতা থাকবে”, আর তাই এটা অসম্ভব যে, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বিশ্বাসের স্বাধীনতার ভিত্তি লঙ্ঘন করবেন।

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) ইসলামের বাণী পৌঁছানোর সঠিক পন্থা তুলে ধরে বলেন:

“ইসলাম মুসলমানদেরকে জোরপূর্বক তলোয়ার, বোমা বা বন্দুকের মতো ঘৃণ্য ও ধ্বংসাত্মক শক্তির মাধ্যমে তাদের বিশ্বাস ছড়িয়ে দেওয়ার অনুমতি দেয় না। বরং তাদেরকে যুক্তি, প্রমাণ ও ভালোবাসার মাধ্যমে মানবজাতির হৃদয় ও মন জয় করার আহবান জানায়।”

হুযূর আকদাস পবিত্র কুরআনের সূরা আল মায়েদা-৫:৯ আয়াতেরও উল্লেখ করেন। যেখানে বলা হয়েছে:

“কোনো জাতির শত্রুতা যেন তোমাদেরকে ন্যায়বিচার না করায় প্ররোচিত না করে। তোমরা সদা ন্যায়বিচার করো। এটি তাক্‌ওয়ার অধিকতর নিকটবর্তী।”

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ এই আয়াতটিকে “ইসলামে ন্যায়বিচারের মানদণ্ড প্রতিষ্ঠাকারী” হিসেবে উল্লেখ করেন।

হুযূর আকদাস প্রশ্ন উত্থাপন করেন যে, সরকারপক্ষ নির্বিশেষে কোথাও কি এমন পাওয়া যায় যে, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বা যুদ্ধে প্রতিপক্ষের সাথে ন্যায়বিচারের এমন উন্নত মান প্রদর্শিত হয়।

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) এর উত্তর প্রদান করে বলেন:

“কেবল ইসলামেই আমরা পরম ন্যায়বিচারের এমন দ্ব্যর্থহীন ও অতুলনীয় নীতি পেয়ে থাকি এবং এটি খুবই দুঃখের বিষয় যে, এমনকি আজকের আধুনিক যুগেও মুসলমান দেশগুলোর সরকারসমূহ ইসলামী মানদণ্ড অনুসরণ করে শাসনকার্য পরিচালনা করতে ব্যর্থ হচ্ছে।”

হুযূর আকদাস আরেকটি বহুল প্রচলিত আপত্তির বিষয়ে আলোচনা করেন যে, ইসলাম যুদ্ধের ধর্ম।

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ গুরুত্বারোপ করে পুনর্ব্যক্ত করেন যে, আল্লাহ্ তা’লা কখনোই মুসলমানদেরকে যুদ্ধ বা অস্ত্র হাতে তুলে নেয়ার জন্য উন্মুক্ত অনুমতি প্রদান করেন নি। হুযূর আকদাস জোর দিয়ে বলেন, কুরআনে কেবল “চরম পরিস্থিতি এবং কঠোর শর্ত ও বিধিনিষেধ আরোপিত থাকার শর্তে” তা করার অনুমতি আছে।

হুযূর আকদাস বিষয়টিকে বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করে বলেন, প্রাথমিক যুগে মুসলমানদের মক্কার অমুসলিমদের হাতে বহু বছর ধরে নির্মম নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছে, যা এতই প্রবল ছিল যে, তাদেরকে মদীনায় অভিবাসিত হতে হয়। মক্কাবাসীরা মদীনাতেও মুসলমানদের পিছু ছাড়ে নি এবং তারা ইসলাম ও অন্যান্য ধর্মের উপাসনালয়গুলোকেও নির্মূল করতে অগ্রসর হয়।

হুযূর আকদাস বলেন, এমন সন্ধিক্ষণে মুসলমানদেরকে “বিবেকের ও বিশ্বাসের স্বাধীনতার সর্বজনীন নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য” আত্মরক্ষামূলক যুদ্ধের অনুমতি প্রদান করা হয়েছিল।

ইসলামের সঙ্গে যেসমস্ত উগ্র মতাদর্শকে ভ্রান্তভাবে সম্পৃক্ত করা হয় এবং (ইসলামের নামে) সাম্প্রতিক কালে চরমপন্থীদের দ্বারা পরিচালিত বিভিন্ন ঘৃণ্য হামলার বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে, হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) বলেন:

“বিদ্বেষপূর্ণ চরমপন্থী বা রাজনৈতিক স্বার্থান্বেষী ব্যক্তিরা নিজেদের কুমতলব এবং স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য পবিত্র কুরআনের কিছু আয়াতের ভিত্তিতে সম্পূর্ণ ভ্রান্ত উপসংহারে উপনীত হয়ে থাকে।”

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) আরও বলেন:

“যদি কোনো ব্যক্তি ঐসকল আয়াতের সঠিক প্রেক্ষাপট নিরপেক্ষভাবে অনুসন্ধান করেন, তাহলে তিনি দেখতে পাবেন যে, ইসলাম কোনো প্রকার নিষ্ঠুরতার অনুমতি প্রদান করে না, আর পবিত্র কুরআন বা ইসলামী শিক্ষার মাঝে কোনো স্ববিরোধিতাও নেই।”

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) এটিও গুরুত্ব দিয়ে বলেন যে, পবিত্র কুরআন “স্পষ্টভাবে মুসলামানদেরকে বিদ্রোহ বা দেশের আইন লঙ্ঘন করতে নিষেধ করে”, আর তাই “একজন প্রকৃত মুসলমানের তার জাতি বা দেশের জন্য হুমকি হয়ে ওঠার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।”

এরপর, হুযূর আকদাস নতুন দেশের প্রতি মুসলমান অভিবাসীদের বিশ্বস্ততার বিষয়ে বলেন যে, নাগরিক হিসেবে মুসলামানগণ আশ্রয় দানকারী দেশের প্রতি বিশ্বস্ততা ও একনিষ্ঠতার অঙ্গীকার করে। হুযূর আকদাস উল্লেখ করেন, আইন মান্যকারী নাগরিক হওয়া এবং বিশ্বস্ততার সাথে দেশের সেবা করা কীভাবে মুসলমানদের ধর্মীয় দায়িত্ব হিসেবে গণ্য।

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) বলেন:

“মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রসিদ্ধ একটি হাদীস হলো, ‘দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ’। এরপর কীভাবে বলা যেতে পারে যে, মুসলমানরা দেশের প্রতি অনুগত নাগরিক নয়; কিংবা, তারা সমাজে বিভাজনের বীজ বপন করছে?”

একজন মুসলমানের কীভাবে সমাজে একীভূত হওয়া উচিত, সে বিষয়েও হুযূর আকদাস ব্যাখ্যা করেন ।

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) বলেন:

“যদিও তারা অন্য কোথাও জন্মগ্রহণ করেছেন, তবে তারা এখন নতুন দেশের অংশ এবং এর উন্নতির জন্য যেকেনো প্রকার ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত – একজন মুসলমান অভিবাসীর জন্য এর চেয়ে ভালো উপায়ে সমাজে একীভূত হওয়ার পন্থা আর কী হতে পারে? সুতরাং, এই দাবি করা পুরোপুরি ভুল যে, ইসলামের শিক্ষা এমন যার কারণে মুসলমানরা অমুসলিম দেশে একীভূত হতে পারবে না।”

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) ব্যাখ্যা করে বলেন যে, ধর্মীয় দায়িত্ব পালন করলে সমাজে একীভূত হওয়া যাবে না কিংবা এরূপ বৈচিত্র সমাজে দ্বন্দ্ব বা বিভাজন সৃষ্টি করবে এমন ধারণা সঠিক নয়।

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) বলেন:

“যদি ধর্মীয় বাধ্যবাধকতার জন্য কোনো মুসলমান মদ্যপান করা থেকে বিরত থাকে, নাইট ক্লাবে না যায়, শালীন পোশাক পরিধান করে এবং এমন আচরণ পরিহার করে যা তার নৈতিক আদর্শের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, এর মানে এই নয় যে, সে একীভূত হতে ব্যর্থ হয়েছে। বরং আমি মনে করি, একীভূতকরণের জন্য প্রয়োজন সর্বদা আগত দেশের কল্যাণ কামনা করা, সকল ধরনের ত্যাগ স্বীকারের জন্য প্রস্তুত থাকা এবং আন্তরিকতার সঙ্গে জনগণের সেবা করার চেষ্টা করা।”

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) বলেন, এই ধরনের একীভূতকরণ “সমাজকে সমৃদ্ধ করার একটি মাধ্যম সাব্যস্ত হবে এবং এর ফলে নাগরিকদের মধ্যে দৃঢ় বন্ধন রচিত হবে।”

হুযূর আকদাস পবিত্র কুরআনের সূরা আয যারিয়াত-এর ৫১:২০ আয়াত উদ্ধৃত করেন:

“এবং তাদের সম্পদে তাদেরও অধিকার রয়েছে যারা সাহায্য চায় এবং যারা সাহায্য চাইতে পারে না।”

উক্ত আয়াতটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে, হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) বলেন:

“কারো সাহায্য চাওয়ার অপেক্ষায় মুসলমানরা বসে থাকবে না; বরং, তারা অগ্রসর হয়ে সমাজে সেই সকল মানুষকে খুঁজে বের করবে যারা কষ্টে আছে এবং তাদেরকে সমস্যা থেকে উত্তরণে সাহায্য করবে। পবিত্র কুরআনের এ আয়াতে যেখানে বলা হয়েছে যে, কোনো কোনো জীব তাদের প্রয়োজন বলতে পারে না, সেখানে পশু-পাখি এবং অন্যান্য বন্য-জীবও অন্তর্ভুক্ত। কেউ কেউ মনে করেন, ইসলাম পোষা প্রাণী রাখা কিংবা প্রাণীদের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করাকে নিরুৎসাহিত করে; কিন্তু, এ আয়াতটি একজন মুসলমানকে তাদের দায়িত্বাধীন প্রাণীদের প্রতি যত্নবান হওয়ার নির্দেশ দেয়। একইভাবে, উক্ত আয়াতটি বন্য প্রাণী এবং আমাদের এই পৃথিবীকে সংরক্ষণের গুরুত্বের দিকেও ইঙ্গিত প্রদান করে।”

এরপর, হুযূর আকদাস কুরআন থেকে অন্য জাতি বা মানুষকে নিয়ে বিদ্রুপ বা উপহাস করা থেকে বিরত থাকার অনন্য শিক্ষা তুলে ধরেন এবং ব্যাখ্যা করেন যে, এই উপহাসের ফলে অসন্তোষ সৃষ্টি হয় যা সমাজের শান্তি বিনষ্ট করে।

হুযূর আকদাস সাম্প্রতিক সময়ে সুইডেনে কুরআন পোড়ানোর ঘটনা উল্লেখ করেন, যেখানে কিছু ব্যক্তি কুরআনের কপি পুড়িয়ে ফেলে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ঘৃণ্য ঘটনাটি প্রদর্শন করে এবং মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর অত্যন্ত আপত্তিকর ব্যঙ্গচিত্র ইউরোপের পত্রপত্রিকায় প্রকাশ করে।

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) এসকল জঘন্য কাজের জবাব প্রদান করেন এবং বলেন:

“এসকল জঘন্য কাজের পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের আপত্তি কেবল সেসকল ঘটনাতেই সীমাবদ্ধ নয়, যেখানে ইসলাম ও মুসলমানদেরকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়। বরং আমরা বিশ্বাস করি যে, যেকোনো ধর্মের অনুসারীদের নিকট যা কিছু পবিত্র – তার অবমাননা করা অশোভনীয় এবং কঠোর ভাষায় এমন আচরণের নিন্দা করা উচিত।”

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) আরও বলেন:

“এমন আচরণ অকারণে নিরপরাধ মানুষকে বিক্ষুব্ধ ও ব্যথিত করে এবং তাদের মনে তীব্র ক্রোধ ও বিরক্তির জন্ম দেয়। এগুলো সমাজের শান্তি ও সংহতি বিনষ্ট করার কারণ।”

বক্তৃতা শেষ করার পূর্বে হুযূর আকদাস ইসলামে নারীদের অধিকার নিয়ে উত্থাপিত প্রশ্নের উত্তর প্রদান করেন এবং ১৪০০ বছর পূর্বেই ইসলাম নারীদের যেসকল অধিকার প্রদান করেছিল তার ওপর আলোকপাত করেন।

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) বলেন:

“প্রকৃত সত্য হলো, নারীদের অধিকার হরণের পরিবর্তে বরং ইসলামই নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বর্তমানে ‘প্রগতিশীল’ দেশ হিসেবে পরিচিত দেশগুলো তদনুরূপ অধিকার প্রদানের বহু শতাব্দী পূর্বেই করেছে। এমন এক যুগে যখন নারীর অধিকারকে বিবেচনার যোগ্য বলেও মনে করা হতো না, তখন পবিত্র কুরআন এবং মহানবী (সা.) নারী ও মেয়েদের শিক্ষা, বিবাহবিচ্ছেদ ও উত্তরাধিকারসহ অগণিত অধিকার চিরতরে সংরক্ষণ করেছেন।”

হুযূর আকদাস মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) প্রদত্ত একটি উপমার উল্লেখ করেন, যেখানে নারীদেরকে ‘পাঁজরের হাড়’-এর সাথে তুলনা করা হয়েছে, যার দ্বারা এদিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে যে, তাদের প্রতি সদয় আচরণ করা উচিত। আর পাঁজরের হাড় যেমন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গসমূহকে রক্ষা করে, তেমনই মানবজাতির সংরক্ষণের জন্যও নারীরা গুরুত্বপূর্ণ।

উপরন্তু, নারীদের পারিবারিক অধিকার নিয়ে হুযূর আকদাস পবিত্র কুরআনের সূরা আন নিসা-৪:২০ আয়াত তুলে ধরেন যেখানে বিশেষভাবে পুরুষদের নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে, তারা যেন তাদের স্ত্রীদের সঙ্গে প্রীতিপূর্ণ আচরণ করে এবং তাদের প্রয়োজন পূরণের চেষ্টা করে।

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) বলেন, উক্ত আয়াতটি “ঘোষণা করছে যে, নারীরা স্বাধীন সত্তা এবং তাদেরকে জোর করে কারো অধিকারভুক্ত বলে গণ্য করা যাবে না।”

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) আরও বলেন:

“অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে, একজন নারী যা উপার্জন করবে তা তার নিজের, এবং স্বামী এর অংশ দাবি করতে পারে না। বিবাহ-বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে ইসলাম শিক্ষা দেয় যে, বৈবাহিক জীবনে স্বামীপ্রদত্ত সবকিছু রেখে দেওয়ার অধিকার নারীর আছে।”

হুযূর আকদাস ব্যাখ্যা করেন, বর্তমান বিশ্বে বিবাহ-বিচ্ছেদের সময়ে দীর্ঘস্থায়ী দ্বন্দ্ব ও তিক্ত বিরোধ দেখা দেয় এবং পুরুষরা স্ত্রীদেরকে প্রদত্ত জিনিসপত্র ফেরত চায়। কিন্তু, ইসলাম এটির অনুমতি দেয় না।

পরিশেষে, হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) পুর্নব্যক্ত করেন যে, ইসলামের বিরুদ্ধে উত্থাপিত আপত্তিসমূহ সবই ভিত্তিহীন এবং বলেন:

“ইসলামকে সহিংস ও চরমপন্থী ধর্ম হিসেবে আখ্যায়িত করা কিংবা ইসলামে নৈতিক শিক্ষার ঘাটতি রয়েছে এমন দাবি করা সম্পূর্ণ ভুল … বরং, এটি এমন এক ধর্ম যা সকল ধর্ম ও বিশ্বাসের মানুষের মাঝে বন্ধন রচনা করতে চায়।”