মহানবী (সা.)-এর জীবনী: উহুদের যুদ্ধকালীন কতিপয় ঘটনা এবং বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা সম্পর্কে সতর্কতা

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ - খলীফাতুল মসীহ্‌ আল্‌ খামেস (আই.)

১২-জানুয়ারি, ২০২৪

মসজিদ মুবারক, ইসলামাবাদ, টিলফোর্ড, যুক্তরাজ্য

জুমুআর খুতবার সারমর্ম


এই জুমু’আর খুতবার সারাংশটিতে কোনো প্রকার ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে তার দায়ভার আহ্‌মদীয়া বাংলা টীম গ্রহণ করছে।

নিখিলবিশ্ব আহমদীয়া মুসলিম জামাতের বর্তমান ইমাম ও আমীরুল মু’মিনীন হযরত মির্যা মসরূর আহমদ খলীফাতুল মসীহ্ আল্ খামেস (আই.) গত ১২ই জানুয়ারি, ২০২৪ তারিখে যুক্তরাজ্যের (ইসলামাবাদস্থ) মসজিদ মুবারক-এ “মহানবী (সা.)-এর জীবনী: উহুদের যুদ্ধকালীন কতিপয় ঘটনা এবং বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা সম্পর্কে সতর্কতা” বিষয়ক জুমুআর খুতবা প্রদান করেন। প্রদত্ত জুমুআর খুতবায় মহানবী (সা.)-এর জীবনচরিত বর্ণনার ধারাবাহিকতায় উহুদের যুদ্ধকালীন বিভিন্ন ঘটনার বিশদ বর্ণনা করেন। খুতবার শেষাংশে হুযূর (আই.) ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মুসলমান ভাইবোনদের জন্য দোয়ার আহ্বান করে বিশ্ববাসীকে বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা সম্পর্কে সতর্ক করেন এবং সম্প্রতি প্রয়াত কতিপয় নিষ্ঠাবান আহমদীর স্মৃতিচারণ করেন ও নামাযান্তে গায়েবানা জানাযা পড়ান।
তাশাহ্‌হুদ, তা’আউয ও সূরা ফাতিহা পাঠের পর হুযূর (আই.) বলেন, উহুদের যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে মহানবী (সা.)-এর জীবনচরিত ধারাবাহিকভাবে বর্ণিত হচ্ছিল। এ সম্পর্কে পরবর্তী ঘটনা হলো, বিজয়ের পর সাহাবীদের অপ্রস্তুত অবস্থায় শত্রুরা যখন পুনরায় জোরালো আক্রমণ করে তখন মহানবী (সা.) শত্রুদের সবচেয়ে নিকটে অবস্থান করছিলেন এবং তাঁর কাছে কেবলমাত্র ১৫জন সাহাবী ছিলেন। মুহাজিরীনদের মধ্য হতে যে আটজন ছিলেন, (তারা হলেন,) হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা.), হযরত উমর (রা.), হযরত তালহা (রা.), হযরত যুবায়ের (রা.), হযরত আব্দুর রহমান বিন অওফ (রা.), হযরত সা’দ বিন আবী ওয়াক্কাস (রা.) এবং হযরত আবু ওবায়দা বিন জার্‌রাহ্ (রা.)। আর আনসারের সাতজন হলেন, হযরত হুব্বাব বিন মুনযের (রা.), হযরত আবু দুজানা (রা.), হযরত আসেম বিন সাবেত (রা.), হযরত হারেস বিন সিম্মা (রা.), হযরত সাহ্‌ল বিন হুনায়েফ (রা.) এবং হযরত সা’দ বিন মুআজ (রা.)। আবার অনেকে বলেছেন, হযরত সা’দ বিন উবাদা (রা.) এবং হযরত মুহাম্মদ বিন মাসলামা (রা.) ছিলেন। আবার কেউ কেউ বলেছেন, তাঁর সামনে ত্রিশজন (সাহাবী) অবিচল ছিলেন আর সবাই একথাই বলছিলেন যে, আমার মুখমণ্ডল যেন মহানবী (সা.)-এর পবিত্র মুখমণ্ডলের সামনে থাকে এবং আমার প্রাণ তাঁর প্রাণের সামনে (থাকে)। হে আল্লাহ্‌র রসূল (সা.) আপনার প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক আর আমার প্রাণ আপনার জন্য নিবেদিত।
একটি রেওয়ায়েতে আছে, মহানবী (সা.)-এর সাথে এগারোজন (সাহাবী) এবং তালহা বিন ওবায়দুল্লাহ্ রয়ে গিয়েছিলেন। আরেকটি রেওয়ায়েতে আছে, মুশরিকরা যখন মহানবী (সা.)-কে ঘিরে ফেলে তখন তিনি (সা.) সাতজন আনসারী সাহাবী এবং একজন কুরাইশ সাহাবীর মাঝখানে ছিলেন। অনুরূপভাবে আরেকটি রেওয়ায়েতে আছে, মহানবী (সা.) নয়জন সাহাবীর মাঝে একাই ছিলেন। (এদের মধ্যে) সাতজন আনসার এবং দুজন কুরাইশের মধ্য হতে, আর মহানবী (সা.) ছিলেন দশম।
বিভিন্ন রেওয়ায়েতে এই সংখ্যাটি আট, নয়, বারো কিংবা ত্রিশজনেরও উল্লেখ পাওয়া যায়। জামাতের রিসার্চ সেল এক্ষেত্রে ৩০জনের উল্লেখ করেছে। হুযূর বলেন, সময়ের পরিবর্তনে এই সংখ্যাটি তারতম্য ঘটেছে। তবে বর্ণিত হয়েছে, গুটিকতক সাহাবী মহানবী (সা.)-এর নিকটে ছিলেন এবং সেই মুহূর্তে মহানবী (সা.) সাহাবীদের এক দলের কাছ থেকে জীবন বাজি রেখে আমৃত্যু লড়াই করে যাওয়ার শর্তে অঙ্গীকারও নিয়েছিলেন। এই বয়আতকারী সৌভাগ্যবানদের মধ্যে যেসব নাম রেওয়ায়েতে বর্ণিত হয়েছে তারা হলেন,
হযরত আবু বকর (রা.), হযরত উমর (রা.), হযরত আলী (রা.), হযরত তালহা (রা.), হযরত যুবায়র (রা.), হযরত সা’দ (রা.), হযরত সাহ্ল বিন হুনায়েফ (রা.), হযরত আবু দুজানা (রা.), হযরত হারেস বিন সিম্মাহ্ (রা.), হযরত খুব্বাব বিন মুনযের (রা.), হযরত আসেম বিন সাবেত (রা.)। তাঁদের মধ্য হতে কেউই শহীদ হননি।
হযরত মির্যা বশীর আহমদ সাহেব (রা.) উহুদের দিন সাহাবীদের আত্মনিবেদনের কথা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, যেসব সাহাবী মহানবী (সা.)-এর চারপাশে একত্রিত ছিলেন তারা এরূপ দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠা করেছেন যে, ইতিহাসে এর কোনো তুলনা পাওয়া যায় না। মহানবী (সা.)-কে উদ্দেশ্য করে যেসব আক্রমণ রচনা করা হচ্ছিল সাহাবীরা তা নিজেদের বুক পেতে প্রতিহত করছিলেন এবং শত্রুদের ওপর পাল্টা আক্রমণও করছিলেন। এই গুটিকতক সাহাবী এত বিশাল সৈন্যবাহিনীর সামনে কতক্ষণই বা টিকতে পারত! তাই শত্রুদের উপর্যুপরি আক্রমণের কারণে সাহাবীরা বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্ত হয়ে যেতেন, কিন্তু আক্রমণের গতি কিছুটা কমলে সাথে সাথে তারা পতঙ্গের ন্যায় পুনরায় দ্রুতগতিতে স্বীয় নেতার পাশে এসে সমবেত হতেন।
এ পর্যায়ে হুযূর (আই.) খ্রিষ্টানদের একটি অপবাদের খ-ন করে বলেন, খ্রিষ্টানরা আপত্তি করে যে, মহানবী (সা.) নাকি মিথ্যা বলা বা ভুল বলাকে বৈধ আখ্যা দিয়েছেন। হযরত মসীহ্ মওউদ (আ.) এই আপত্তির খণ্ডন করতে গিয়ে বলেন, “আমাদের নেতা ও প্রভু মুহাম্মদ (সা.)-এর শিক্ষার একটি অনন্য দৃষ্টান্ত এখানে সাব্যস্ত হয় আর তা হলো, যেই তওরিয়া বা দ্ব্যর্থবোধক কথা আপনাদের ঈসা মন্ত্রমুগ্ধের ন্যায় সারা জীবন ব্যবহার করেছেন, মহানবী (সা.) যতটা সম্ভব তা থেকে মুক্ত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। তওরিয়ার শাব্দিক অর্থ মুখে কিছু বলা এবং হৃদয়ে অন্য কিছু থাকা। এমন কিছু বলা যা দুটি অর্থ বহন করে অর্থাৎ যা বুঝানোর চেষ্টা করা হয় তা বুদ্ধিমানরা বুঝতে পারলেও নির্বোধরা বুঝতে পারে না। হযরত মসীহ্ মওউদ (আ.) বলেন, হাদীস থেকে সাব্যস্ত হয়, এটি উন্নত মানের তাকওয়া পরিপন্থী। অতএব, মহানবী (সা.)-এর জীবনী থেকে এটি কোনোভাবেই প্রমাণিত হয় না, বরং আপনাদের পুস্তক অনুযায়ী আপনারা যাকে খোদা মনে করেন তার জীবনীতে এমন ঘটনা বহু পাওয়া যায়।” এভাবে তিনি (আ.) খণ্ডনমূলক উত্তর প্রদান করেছেন।
এরপর হুযূর (আই.) হযরত মুসআব বিন উমায়ের (রা.)’র শাহাদতের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, আক্রমণ-পাল্টাআক্রমণের সময় ইবনে কামিয়া হযরত মুসআব (রা.)’র সেই হাতে আঘাত করে কর্তন করে যে হাতে তিনি পতাকা বহন করছিলেন। এরপর হযরত মুসআব (রা.) অপর হাত দিয়ে পতাকা আঁকড়ে ধরেন। ইবনে কামিয়া সেই হাতও কেটে ফেলে। অতঃপর হযরত মুসআব (রা.) উভয় বাহু দ্বারা পতাকা বুকের সাথে আঁকড়ে ধরেন। এরপর ইবনে কামিয়া হযরত মুসআব (রা.)’র বুকে বর্ষা দ্বারা আঘাত করে আর তিনি শাহাদতের কোলে ঢলে পড়েন। এই ঘটনা দেখে অন্য দুজন সাহাবী সেদিকে অগ্রসর হন এবং নিজেদের হাতে পতাকা তুলে নেন। একটি বর্ণনায় উল্লেখ রয়েছে, মহানবী (সা.) মুসআব (রা.)’র শাহাদতের পর ইসলামের পতাকা হযরত আলী (রা.)’র হাতে তুলে দিয়েছিলেন।
উহুদের যুদ্ধের সময় তন্দ্রাচ্ছন্ন হওয়ার বিষয়ে হুযূর (আই.) বলেন, সাহাবীগণ বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন যে, কীভাবে আল্লাহ্ তা’লা এই ক্ষণস্থায়ী তন্দ্রার মাধ্যমে মুসলমানদের প্রতি প্রশান্তি অবতীর্ণ করেছেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ্ তা’লা নিম্নোক্ত আয়াতটি অবতীর্ণ করেন,

ثُمَّ أَنزَلَ عَلَيْكُم مِّن بَعْدِ الْغَمِّ أَمَنَةً نُّعَاسًا يَغْشَىٰ طَائِفَةً مِّنكُمْ ۖ وَطَائِفَةٌ قَدْ أَهَمَّتْهُمْ أَنفُسُهُمْ يَظُنُّونَ بِاللَّهِ غَيْرَ الْحَقِّ ظَنَّ الْجَاهِلِيَّةِ ۖ يَقُولُونَ هَل لَّنَا مِنَ الْأَمْرِ مِن شَيْءٍ ۗ قُلْ إِنَّ الْأَمْرَ كُلَّهُ لِلَّهِ

অর্থ: অতঃপর তিনি (আল্লাহ্) তোমাদের প্রতি দুঃখের পর প্রশান্তি প্রদানের উদ্দেশ্যে তন্দ্রা অবতীর্ণ করেছিলেন যা তোমাদের এক দলকে আচ্ছাদিত করছিল। আর এক দল এমনও ছিল যাদের জীবন তাদের চিন্তিত করে রেখেছিল, তারা আল্লাহ্‌র সম্পর্কে অজ্ঞতার যুগের ন্যায় কুধারণা করছিল। তারা বলছিল যে, গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে কি আমাদেরও কোনো অধিকার আছে? তুমি ঘোষণা করে দাও! সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার নিশ্চিতভাবে কেবলমাত্র আল্লাহ্‌ তা’লার। (সূরা আ লে ‘ইমরান: ১৫৫)

হযরত আবু তালহা (রা.) বর্ণনা করেছেন, উহুদের যুদ্ধে আমি মাথা তুলে দেখি যে, সবাই নিজেদের ঢালের নিচে চিবুক নিচু করে ঝিমুচ্ছিলেন। মূলত, সমস্ত সাহাবী এরূপ সময়ে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে গিয়েছিলেন যখন যুদ্ধও চলছিল এবং শত্রুদের পক্ষ থেকে ভয়াবহতার আশংকাও ছিল। এটি কোনো কাকতালীয় বিষয় ছিল না, বরং একটি অসাধারণ নিদর্শন ছিল।
মহানবী (সা.)-কে এ যুদ্ধে অনেকবার শত্রুদের আক্রমণের শিকার হতে হয়েছিল। এক বর্ণনানুযায়ী তাঁর পবিত্র চেহারায় সত্তরটি তরবারীর আঘাতের দাগ পড়েছিল, কিন্তু এসব আক্রমণ থেকে আল্লাহ্ তা’লা তাকে সুরক্ষা করেছেন। এছাড়া আবু আমের ফাসেক যুদ্ধের পূর্বে উহুদ প্রান্তরে অনেকগুলো গর্ত করে রেখেছিল যেন মুসলমানরা অসতর্ক অবস্থায় এগুলোতে পড়ে যায়। এরূপ একটি গর্তে মহানবী (সা.)ও পড়ে গিয়েছিলেন এবং তাঁর উভয় হাঁটুতে আঘাত পেয়েছিলেন। হযরত আলী (রা.) দ্রুত সামনে অগ্রসর হয়ে তাঁর হাত ধরেন এবং হযরত তালহা (রা.) তাঁকে টেনে তুলে নিয়ে আসেন।
আক্রমণের সময় ইবনে কামিয়া মহানবী (সা.)-এর ঘাড় বরাবর তরবারী দ্বারা আক্রমণ করেছিল, যার ফলে তিনি ঘাড়ে এতটা আঘাত পেয়েছিলেন যে, এক মাসেরও অধিক সময় তিনি তাঁর ঘাড়ে ব্যাথা অনুভব করতে থাকেন। ইবনে কামিয়া তাকে উদ্দেশ্য করে পাথরও নিক্ষেপ করেছিল যা তার এক পার্শ্বে লেগেছিল। এছাড়া উতবা বিন আবী ওয়াক্কাসের নিক্ষিপ্ত একটি পাথর মহানবী (সা.)-এর পবিত্র চেহারায়ও লেগেছিল যার ফলে তার একটি দাঁত শহীদ হয়েছিল এবং নিচের অংশের ঠোঁট ফেটে গিয়েছিল। মহানবী (সা.) উতবার বিরুদ্ধে দোয়া করেন, সে যেন এক বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পূর্বেই কাফির অবস্থায় মারা যায়। এই দোয়া এত দ্রুত গৃহীত হয়েছে যে, সেই দিনই হাতেব বিন আবী বালতা (রা.) তাকে হত্যা করেন।
উহুদের যুদ্ধের অবশিষ্ট বর্ণনা আগামীতে জারি রাখার ঘোষণা দিয়ে হুযূর (আই.) চারজন মরহুমের স্মৃতিচারণ করেন এবং তাদের ক্ষমা ও কৃপালাভের জন্য দোয়া করেন। হুযূর (আই.) প্রথমে ফিলিস্তিনের অধিবাসী মুকাররম আবু হিলমী মুহাম্মদ উকাশা সাহেব এর স্মৃতিচারণ করেন, যাকে নির্দয়ভাবে গুলি করে শহীদ করা হয়েছে। পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের জন্য দোয়া করে হুযূর (আই.) বলেন, আল্লাহ্ তা’লা গাজা এবং ফিলিস্তিন এলাকায় নিরাপত্তা বিধান করুন, অত্যাচারীদের অত্যাচার বন্ধ করুন এবং অত্যাচারীদের ধ্বংস করুন। ইসরাঈল এখন লেবাননের সীমান্তবর্তী হিজবুল্লাহ্‌র বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সুযোগ খুঁজছে যার ফলে অবস্থার আরো অবনতি হচ্ছে। অনুরূপভাবে আমেরিকা এবং ব্রিটেন ই‍য়েমেনের হুতি গোত্রগুলোর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মাঠে নেমেছে, এ সমস্ত বিষয় যুদ্ধের পরিধিকে আরো বিস্তৃত করছে। অনেক লেখক লিখছে, এখন বিশ্বযুদ্ধের লক্ষণ অতি নিকটে মনে হচ্ছে। কাজেই, অনেক বেশি দোয়ার প্রয়োজন। আল্লাহ্ তা’লা মানবজাতিকে বিবেক-বুদ্ধি দান করুন। প্রয়াত অপর তিনজন হলেন, মুকাররম হায়দার আলী জাফর সাহেবের স্ত্রী মুকাররমা আমাতুন নাসির জাফর সাহেবা, হাবিবুল্লাহ্ কাহলুন সাহেবের স্ত্রী মুকাররমা নাসিম আখতার সাহেবা এবং রশীদ আহমদ জামীর সাহেবের স্ত্রী মুকাররমা মুবারেকা বেগম সাহেবা।