মহানবী (সা.)-এর জীবনী: বদরের যুদ্ধে কুরাইশ নেতাদের পরিণাম ও যুদ্ধবন্দিদের প্রতি আচরণ

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ - খলীফাতুল মসীহ্‌ আল্‌ খামেস (আই.)

১৪-জুলাই, ২০২৩

মসজিদ মুবারক, ইসলামাবাদ, টিলফোর্ড, যুক্তরাজ্য

জুমুআর খুতবার সারমর্ম


এই জুমু’আর খুতবার সারাংশটিতে কোনো প্রকার ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে তার দায়ভার আহ্‌মদীয়া বাংলা টীম গ্রহণ করছে।

নিখিলবিশ্ব আহমদীয়া মুসলিম জামাতের বর্তমান ইমাম ও আমীরুল মু’মিনীন হযরত মির্যা মসরূর আহমদ খলীফাতুল মসীহ্ আল্ খামেস (আই.) গত ১৪ই জুলাই, ২০২৩ইং ইসলামাবাদের মসজিদে মুবারকে “মহানবী (সা.)-এর জীবনী: বদরের যুদ্ধে কুরাইশ নেতাদের পরিণাম ও যুদ্ধবন্দিদের প্রতি আচরণ” বিষয়ক জুমুআর খুতবা প্রদান করেন। প্রদত্ত জুমুআর খুতবায় বদরের যুদ্ধ শেষে কাফিরদের পরিণাম ও দাফনকার্য এবং মুসলমানদের মালে গণিমত লাভের বিষয়টি তুলে ধরেন। খুতবার শেষাংশে হুযূর (আই.) সম্প্রতি প্রয়াত কতিপয় নিষ্ঠাবান আহমদীর স্মৃতিচারণ করেন ও নামাযান্তে তাদের গায়েবানা জানাযা পড়ান।
তাশাহ্‌হুদ, তা’উয ও সূরা ফাতিহা পাঠের পর হুযূর (আই.) বলেন, বদরের যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে মহানবী (সা.)-এর জীবনচরিত এবং এ সম্পর্কিত বিভিন্ন ঘটনা বর্ণনা করা হচ্ছিল। এ যুদ্ধের পরিসমাপ্তিতে কুরাইশ নেতাদের দাফনের প্রেক্ষাপটে বর্ণিত হয়েছে, একবার মহানবী (সা.) কাবাচত্বরে নামায পড়ছিলেন। কাফিরদের একজন সেজদারত অবস্থায় তাঁর (সা.) কাঁধের ওপর পশুর ভারী গর্ভাশয় রেখে দেয় এবং কাফিররা হাসিতামাশা করতে থাকে। এ খবর শুনে হযরত ফাতেমা (রা.) দৌড়ে এসে তাঁর কাঁধের ওপর থেকে তা সরিয়ে দেন। মহানবী (সা.) নামায শেষে তাদের জন্য (তিনবার) এই বদদোয়া করেন যে, “হে আল্লাহ্! তুমি কুরাইশদেরকে ধৃত করো”। এরপর তিনি আমর বিন হিশাম, উতবা বিন রবীয়্যা, শায়বা বিন রবীয়্যা, ওয়ালীদ বিন উতবা, উমাইয়্যা বিন খালাফ এবং আরো কতিপয় কাফিরের নাম নিয়ে দোয়া করেন যে, “হে আল্লাহ্! তুমি তাদেরকে ধৃত করো”। হযরত আব্দুল্লাহ্ (রা.) বলেন, আল্লাহ্‌র কসম! বদরের দিন আমি তাদের সবার লাশ পড়ে থাকতে দেখেছি। এরপর তাদেরকে বদরের প্রান্তরে একটি গর্তে কবর দেয়া হয়েছিল। মহানবী (সা.) বলেন, “গর্তের অধিবাসীরা অভিশপ্ত”।
হযরত আবু তালহা (রা.) বর্ণনা করেন, “মহানবী (সা.) বদরের যুদ্ধের দিন কুরাইশ নেতাদের মধ্য থেকে চব্বিশজন সম্পর্কে নির্দেশ দেন তাদেরকে যেন একটি কূপে নিক্ষেপ করা হয়। মহানবী (সা.) ফেরত যাবার সময় সেই কূপের পাশে দাঁড়ান এবং তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, হে অমুকের পুত্র! হে তমুকের পুত্র! আমাদের প্রভু আমাদের সাথে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আমরা তা পেয়ে গেছি, কিন্তু তোমাদের প্রভু তোমাদের সাথে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তোমরা কি তা পেয়েছ?” আরো বর্ণিত হয়েছে, তিনি (সা.) বলেছিলেন, “হে কূপবাসী! তোমরা তোমাদের নবীর অত্যন্ত নিকৃষ্ট আত্মীয়স্বজন। তোমরা আমাকে অস্বীকার করেছ অথচ অন্যরা আমাকে সত্যয়ন করেছে। তোমরা আমাকে স্বদেশ থেকে বের করে দিয়েছ আর অন্যরা আমাকে আশ্রয় দিয়েছে”। এই অবস্থা দেখে হযরত উমর (রা.) বলেন, “হে আল্লাহ্‌র রসূল (সা.)! আপনি তাদেরকে উদ্দেশ্য করে কী বলছেন? তারা তো মৃত”। মহানবী (সা.) বলেন, “সেই সত্তার কসম যার হাতে মুহাম্মদের প্রাণ! তারা তোমাদের চেয়ে আমার কথা বেশি ভালোভাবে শুনছে”। এছাড়া আরো বর্ণিত হয়েছে, মহানবী (সা.) বদরের যুদ্ধের পূর্বেই কয়েকজন কাফিরের নিহত হওয়ার স্থান চিহ্নিত করে দিয়েছিলেন। পরের দিন বাস্তবিক অর্থেই তারা সেখানেই নিহত হয়ে পড়ে ছিল, যেসব স্থান মহানবী (সা.) দেখিয়েছিলেন।
হুযূর (আই.) বলেন, বদরের যুদ্ধে মহানবী (সা.)-এর অনেক মু’জিযা প্রকাশিত হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, হযরত উকাশা বিন মিহসান (রা.) বদরের দিন যুদ্ধ করতে থাকেন, হঠাৎ তার হাত থেকে তরবারী পড়ে যায়। মহানবী (সা.) তখন তাকে একটি কাঠের খড়ি দিয়ে বলেন, এটি দিয়ে যুদ্ধ করো। এরপর সেটি তরবারীর আকার ধারণ করে আর তিনি তা দ্বারা যুদ্ধ করতে থাকেন। হযরত কাতাদা (রা.) কর্তৃক বর্ণিত আছে যে, চোখে আঘাত লাগার কারণে তাঁর চোখের মণি বাইরে বেরিয়ে আসে। তিনি তা খুলে ফেলে দিতে চেয়েছিলেন। মহানবী (সা.) তার চোখের মণিটি হাতের তালুতে নিয়ে পুনরায় তা যথাস্থানে স্থাপন করে দেন। হযরত কাতাদা বলেন, “এরপর আমার চোখ একেবারে ঠিক হয়ে যায় আর মনেই হচ্ছিল না যে, আমার চোখে কোনো সমস্যা হয়েছিল?”
কাফিরদের পরাজয়ের সংবাদ মক্কায় পৌঁছানোর ঘটনাটি হলো, হায়সামা বিন আইয়াস বিন আব্দুল্লাহ্ যুদ্ধ সমাপনান্তে প্রথমে মক্কায় ফিরে যায়। লোকজন তাকে যুদ্ধের ফলাফল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে সে বলে, অমুক অমুক কুরাইশ নেতা নিহত হয়েছে অর্থাৎ সে মক্কার প্রধান প্রধান নেতাদের নাম উল্লেখ করে। প্রথমে লোকেরা তার কথা বিশ্বাস করছিল না বরং তারা তাকে পরীক্ষা করে দেখে। তখন সে বলে, “আমি পাগল হই নি, আমি স্বচক্ষে তাদেরকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেছি”। এরপর মক্কার কুরাইশরা নিহতদের জন্য আহাজারি বা মাতম করতে আরম্ভ করে, কিন্তু সে তাদেরকে আহাজারি করতে নিষেধ করে যাতে মুসলমানরা তাদের দুঃখে আনন্দিত হওয়ার সুযোগ না পায়। অপরদিকে মহানবী (সা.) মদীনাবাসীদের কাছে বিজয়ের সংবাদ পৌঁছাতে হযরত আব্দুল্লাহ্ বিন রওয়াহা (রা.)-কে মদীনার উচ্চভূমিতে এবং হযরত যায়েদ বিন হারেসা (রা.)-কে মদীনার নিম্নাঞ্চলে প্রেরণ করেন। হযরত উসামা বিন যায়েদ (রা.) বলেন, “আমরা বিজয়ের সংবাদ তখন পেয়েছি যখন হযরত উসমান (রা.)’র সহধর্মিনী হযরত রুকাইয়্যা বিনতে রসূল (সা.)-এর দাফন সম্পন্ন করি। হযরত যায়েদ বিন হারেসা (রা.) যখন উটে চড়ে মদীনায় প্রবেশ করেন তখন মুনাফিক ও ইহুদীরা একথা বলাবলি করতে আরম্ভ করে যে, মুসলমানরা যুদ্ধে পরাজিত হয়েছে এবং নাউযুবিল্লাহ্ মুহাম্মদ (সা.)ও নিহত হয়েছেন, তাই যায়েদ তার উটে চড়ে ফিরে এসেছে। এরপর যখন যায়েদ (রা.) বিজয়ের সুসংবাদ শোনান এবং বলেন, মক্কার কুরাইশের অমুক অমুক নেতা নিহত হয়েছে তখন মুনাফিকরা বলতে আরম্ভ করে, এটি কীভাবে সম্ভব? সম্ভবত যুদ্ধে পরাজয় বরণ এবং মহানবী (সা.)-এর নিহত হওয়ার কারণে যায়েদের মাথা নষ্ট হয়ে গেছে! এভাবে মদীনার মুনাফিক এবং ইহুদীরা গুজব ছড়াচ্ছিল। তখন যায়েদ (রা.)’র পুত্র তাকে একান্তে ডেকে এনে জিজ্ঞেস করেন, আপনি যা বলছেন আসলেই কি তা ঘটেছে? এরপর তিনি পুনরায় এ কথার সত্যয়ন করেন। এরপর মুসলমানরা আনন্দঘন পরিবেশে মদীনার বাইরে গিয়ে মহানবী (সা.) ও তাঁর সাথীদের স্বাগত জানায়”।
এরপর হুযূর (আই.) বলেন, এ যুদ্ধে মুসলমানরা মালে গণীমতের সম্পদ হিসেবে ১৫০টি উট এবং ১০টি ঘোড়া লাভ করে। এছাড়া আরো অনেক উপকরণাদি যেমন অস্ত্রশস্ত্র, কাপড়চোপড়, অসংখ্য চামড়া প্রভৃতিও লাভ করে । মহানবী (সা.) অন্যান্য সাহাবীর ন্যায় সমভাবে এর অংশ লাভ করেন। সাহাবীরা মহানবী (সা.)-এর জন্য একটি তরবারী রেখে দিয়েছিলেন। তিনি (সা.) এর নাম যুলফিকার রাখেন। পরবর্তীতে সকল যুদ্ধে তিনি এই তরবারিটি নিজের কাছে রাখতেন। তাঁর মৃত্যুর পর এ তরবারী আব্বাসী খলীফাদের হাতে চলে যায়। এছাড়া আবু জাহলের উটটি মহানবী (সা.)-কে দেয়া হয়েছিল আর সেটি মহানবী (সা.)-এর কাছে হুদায়বিয়ার সন্ধি পর্যন্ত ছিল। উক্ত সময় সেই উটটি হারিয়ে যায় এবং নিজে নিজে আবু জাহলের বাড়িতে চলে যায়। যেহেতু সেটিকে কুরবানীর পশু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল তাই জরিমানার বিনিময়ে সেটি ফেরত আনা হয়। এছাড়াও মহানবী (সা.)-এর নির্দেশে মদীনায় শহীদদের পরিবারবর্গকে এবং যেসব সাহাবীকে তিনি মদীনায় দায়িত্বরত অবস্থায় রেখে গিয়েছিলেন তাদেরকেও মালে গণিমতের অংশ দেয়া হয়।
অতঃপর হুযূর (আই.) বলেন, ফিদিয়া বা মুক্তিপণ নিয়ে বদরের যুদ্ধবন্দিদের মুক্ত করে দেয়া হয়। বন্দিদের সামর্থ্য অনুসারে এ ফিদিয়ার পরিমাণ ১০০০ থেকে ৪০০০ দেরহাম পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছিল। কতক বন্দিকে মদীনার শিশুকিশোরদের পড়ালেখা শেখানোর শর্তে মুক্তি দেয়া হয়। বর্ণিত আছে, মহানবী (সা.) মুক্তিপণ গ্রহণ সম্পর্কে সাহাবীদের কাছে পরামর্শ চেয়েছিলেন। হযরত আবু বকর (রা.) বলেন, “আমার মতে আপনি তাদের কাছ থেকে মুক্তিপণ নিয়ে তাদের ছেড়ে দিন। কেননা পরবর্তীতে তা আমাদের জন্য সেই কাফিরদের মোকাবিলায় শক্তিমত্তার কারণ হবে আর অচিরেই আল্লাহ্ তা’লা তাদেরকে ইসলামের প্রতি হিদায়াতও দিবেন”। হযরত উমর (রা.) বলেন, “আমি তাঁর মতের বিরোধী। আমার মতে তাদেরকে আমাদের হাতে ছেড়ে দিন, আমরা তাদের শিরোচ্ছেদ করবো”। মহানবী (সা.) হযরত আবু বকর (রা.)’র মতামতকে প্রাধান্য দেন। পরদিন হযরত আবু বকর (রা.) ও মহানবী (সা.) বসে কান্না করছিলেন। হযরত উমর (রা.) তাদের কান্নার কারণ জিজ্ঞেস করলে মহানবী (সা.) বলেন, “তোমার সাথী আমাকে যে বন্দিদের কাছ মুক্তিপণ নিয়ে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল, (কিন্ত) আমাকে তাদের শাস্তিকে এই গাছের চেয়েও নিকটতর করে দেখানো হয়েছে, (যে গাছটি তখন মহানবী (সা.)-এর কাছেই ছিল)”। এরপর আল্লাহ্ তা’লা সূরা আনফালের ৬৮নং আয়াত অবতীর্ণ করেন, مَا كَانَ لِنَبِيٍّ أَنْ يَكُونَ لَهُ أَسْرَى حَتَّى يُثْخِنَ فِي الْأَرْضِ تُرِيدُونَ عَرَضَ যার অর্থ হলো, দেশে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত কাউকে বন্দী করা কোনো নবীর জন্য শোভনীয় নয় ।
হুযূর (আই.) বলেন, হাদীসগুলোতে যেভাবে এ ঘটনাটি বর্ণিত হয়েছে তা সুস্পষ্ট নয়। অধিকাংশ জীবনীকার ও ঐতিহাসিক মনে করেন, মহানবী (সা.) আবু বকর (রা.)’র পরামর্শ অনুযায়ী বন্দিদের কাছ থেকে মুক্তিপণ নেয়ার যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন তাতে আল্লাহ্ তা’লা অসন্তুষ্ট হয়েছেন। হযরত মুসলেহ্ মওউদ (রা.) এর সমাধান বাতলে দিয়ে বলেন, “নীতিগত কথা হলো; রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ না হলে কাউকে বন্দি করা বৈধ নয়। এক্ষেত্রে তফসীরকারকগণ হযরত উমর (রা.)-কে প্রয়োজনাতিরিক্ত মর্যাদা দিতে গিয়ে মহানবী (সা.)-এর মর্যাদার কথা আর খেয়াল রাখেন নি। অনেকেই বলেছেন, মহানবী (সা.)-এর সিদ্ধান্তকে আল্লাহ্ তা’লা অপছন্দ করেছেন, কিন্তু এই ব্যাখ্যা ভুল। কেননা প্রথমত, তখন পর্যন্ত বন্দিদের মুক্তিপণের ব্যাপারে কোনো ঐশী নির্দেশ অবতীর্ণ হয়নি তাই মহানবী (সা.)-এর প্রতি কোনো অপবাদ আরোপিত হতে পারে না। দ্বিতীয়ত, মহানবী (সা.) নাখলার বন্দিদের মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু আল্লাহ্ তা’লা এটি অপছন্দ করেছেন বলে জানা যায়নি। তৃতীয়ত, এর দুই আয়াত পরেই (অর্থাৎ সূরা আনফালের ৭০ নাম্বার আয়াতে) খোদা তা’লা মুসলমানদের অনুমতি দিয়েছেন যে, মালে গণিমতের যা কিছু তোমরা পাবে তা খাও কেননা তা বৈধ ও পবিত্র। অতএব মালে গণিমতের বৈধ ও পবিত্র হওয়ার ব্যাপারে আল্লাহ্ তা’লা সত্যয়ন করছেন। অতএব এর সঠিক ব্যাখ্যা হলো, এই আয়াতে মূলত একটি নীতিগত বিষয় বর্ণিত হয়েছে যে, বন্দি কেবলমাত্র তখনই করা যাবে যখন রীতিমত যুদ্ধ হবে এবং শত্রুদের পরাজিত করা হবে। এখানে হযরত উমর (রা.)’র মুক্তিপণ না নেওয়া সম্পর্কিত মতামতের বা তার প্রস্তাব গৃহীত হয় নাই বলে আল্লাহ্ তা’লা অপছন্দ করেছেন বলে কিছু বুঝানো হয়নি”। আল্লামা শিবলী নোমানি ও আল্লামা ইমাম রাযীও এই তফসীরই করেছেন। বাকী ইনশাআল্লাহ্ আগামীতে বর্ণনা করা হবে।
খুতবার শেষাংশে হুযূর (আই.) সম্প্রতি প্রয়াত দু’জনের স্মৃতিচারণ করেন। এর মধ্যে প্রথমজন হলেন, রানা আব্দুল হামিদ খান সাহেব কাঠগড়ি যিনি সম্প্রতি ইন্তেকাল করেন, إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ । তার পিতার নাম ছিল চৌধুরী আব্দুল লতিফ সাহেব কাঠগড়ি। তিনি মুরুব্বী সিলসিলাহ্ এবং ওয়াক্ফে জাদীদ পাকিস্তানের নায়েব নাযেম মাল ছিলেন। তিনি ১৯৭৯ সাল থেকে আমৃত্যু জামাতের নিরলস সেবা করেছেন আর তিনি সাহাবীর আওলাদ ছিলেন। এরপর হুযূর নুসরত জাহাঁ আহমদ সাহেবার স্মৃতিচারণ করেন, যিনি আমেরিকার মুকাররম মুবাশ্বের আহমদ সাহেব, মুরুব্বী সিলসিলাহ্‌র সহধর্মিনী ছিলেন। তিনি ওয়াশিংটনে জামাতের সেবা করার তৌফিক লাভ করেছেন। তার স্বামী যখন জীবন উৎসর্গ করেন তখন থেকে তিনি পরিপূর্ণভাবে তাকে সমর্থন দিয়েছেন এবং সহযোগিতা করেছেন। তিনি অনেক পুণ্যবতী ও জামাতের একনিষ্ঠ সেবিকা ছিলেন। হুযূর (আই.) উভয়ের আত্মার শান্তি, মাগফিরাত এবং জান্নাতে তাদের সুউচ্চ মর্যাদার জন্য দোয়া করেন এবং জুমুআর পর তাদের গায়েবানা জানাযা পড়ান।