মহানবী (সা.)-এর জীবনী: বদর যুদ্ধের নির্দেশাবলী ও সাহাবীদের পরম ভালোবাসার দৃষ্টান্ত

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ - খলীফাতুল মসীহ্‌ আল্‌ খামেস (আই.)

৩০-জুন, ২০২৩

মসজিদ মুবারক, ইসলামাবাদ, টিলফোর্ড, যুক্তরাজ্য

জুমুআর খুতবার সারমর্ম


এই জুমু’আর খুতবার সারাংশটিতে কোনো প্রকার ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে তার দায়ভার আহ্‌মদীয়া বাংলা টীম গ্রহণ করছে।

নিখিলবিশ্ব আহমদীয়া মুসলিম জামাতের বর্তমান ইমাম ও আমীরুল মু’মিনীন হযরত মির্যা মসরূর আহমদ খলীফাতুল মসীহ্ আল খামেস (আই.) গত ৩০শে জুন, ২০২৩ইং ইসলামাবাদের মসজিদে মুবারকে “মহানবী (সা.)-এর জীবনী: বদর যুদ্ধের নির্দেশাবলী ও সাহাবীদের পরম ভালোবাসার দৃষ্টান্ত” বিষয়ক জুমুআর খুতবা প্রদান করেন। প্রদত্ত জুমুআর খুতবায় বদর অভিমুখে মুসলমানদের অভিযাত্রা, যুদ্ধপূর্ব প্রস্তুতি, যুদ্ধের নির্দেশাবলী এবং মহানবী (সা.)-এর প্রতি সাহাবীদের পরম ভালোবাসার দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন।
তাশাহ্‌হুদ তা’উয ও সূরা ফাতেহা পাঠের পর হুযুর (আই.) বলেন, গত খুতবায় মহানবী (সা.)-এর প্রতি সওয়াদ বিন গাযীয়াহ্ (রা.)’র ভালোবাসার অসাধারণ একটি ঘটনা উল্লেখ করেছিলাম। এ সম্পর্কে বিশদ বিবরণ দিতে গিয়ে হযরত মির্যা বশীর আহমদ সাহেব (রা.) তাঁর ‘সীরাত খাতামান্ নবীঈন’ পুস্তকে লিখেন, হযরত সওয়াদ বিন গাযীয়াহ্ (রা.) এই যুদ্ধ থেকে বিজয়ীর বেশে প্রত্যাবর্তন করেন। আর মুশরিকদের মধ্য হতে খালেদ বিন হিশাম (নামী) এক ব্যক্তিকে বন্দীও করেন এবং পরবর্তীতে মহানবী (সা.) তাকে খায়বারের যুদ্ধের ধন-সম্পদ একত্রিত করার জন্য আমেল বা কর্মকর্তা নিযুক্ত করেছিলেন। ২য় হিজরীর রমযান মাসের ১৭ তারিখ সকালে নামাযের পর জিহাদ সম্পর্কে মহানবী (সা.) একটি বক্তব্য প্রদান করেন। এরপর কিছুটা আলো ফুটলে তিনি তির দিয়ে ইশারা করে মুসলমানদের সারিগুলো সোজা করছিলেন। এমন সময় ঘটনাচক্রে সওয়াদ বিন গাযীয়াহ্ (রা.)’র বুকে তীরের সামান্য আঘাত লাগে। সওয়াদ (রা.) মহানবী (সা.)-কে বলেন, “হে আল্লাহ্‌র রসূল (সা.)! আল্লাহ্ আপনাকে সত্য ও ন্যায়ের সাথে প্রেরণ করেছেন। আপনি আমার দেহে তির দিয়ে আঘাত করেছেন, আমি এর প্রতিশোধ নিতে চাই”। মহানবী (সা.) সাথে সাথে বলেন, “ঠিক আছে প্রতিশোধ নাও, তুমিও আমাকে তির দিয়ে আঘাত করো”। একথা বলে তিনি (সা.) নিজের বুকের ওপর থেকে কাপড় সরিয়ে দেন। সওয়াদ (রা.) সুযোগ পেয়েই মহানবী (সা.)-এর বুকে চুমু খেতে শুরু করেন। মহানবী (সা.) তাকে এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, “শত্রু আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে, জানি না এখান থেকে প্রাণে বেঁচে ফিরতে পারব কিনা? (তাই) আমি চাইলাম শাহাদতের পূর্বে আপনার পবিত্র দেহের সাথে আমার দেহকে স্পর্শ করি”।
হযরত মুসলেহ্ মওউদ (রা.) মহানবী (সা.)-এর মৃত্যুর সময়ে অনুরূপ একটি ঘটনা ঘটেছিল বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি (রা.) বলেন, “মহানবী (সা.)-এর মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এলে তিনি (সা.) সাহাবীদের একত্রিত করে বলেন, দেখো! আমিও তোমাদের মতোই একজন মানুষ। হতে পারে তোমাদের (প্রাপ্য) অধিকারের বিষয়ে আমার দ্বারা কোনো ভুল-ত্রুটি হয়ে গেছে আর আমি তোমাদের মধ্য হতে কারো ক্ষতি করেছি। এমন যেন না হয় যে, আল্লাহ্ তা’লার সমীপে আমি এমনভাবে দণ্ডায়মান হবো যে, তোমরা আমার বিরুদ্ধে বাদী হবে। তাই আমি তোমাদের বলছি, যদি তোমাদের মধ্য হতে আমার দ্বারা কারো কোনো ক্ষতি হয়ে থাকে তাহলে সে এই পৃথিবীতেই আমার কাছ থেকে নিজের ক্ষতিপূরণ নিয়ে নিক। মহানবী (সা.)-এর প্রতি সাহাবীদের ভালোবাসার কারণে এটি (সহজেই) অনুমেয় যে, তাঁর এসব বাক্যের কারণে তাদের হৃদয়ে কত না রক্তক্ষরণ হয়ে থাকবে এবং তারা কতটা আবেগাপ্লুত হয়ে থাকবেন! ” বাস্তবেও এমনটিই হয়েছে। “সাহাবীরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তাদের চোখ থেকে অশ্রু প্রবাহিত হচ্ছিল, এমনকি তাদের জন্য কথা বলাও কষ্টকর হয়ে পড়েছিল। এরইমধ্যে একজন সাহাবী দাঁড়িয়ে বলেন, “হে আল্লাহ্‌র রসূল (সা.)! যেহেতু আপনি বলেছেন ‘আমি কারো কোনো ক্ষতি করে থাকলে সে আমার কাছ থেকে প্রতিশোধ নিয়ে নিক’, তাই আমি আপনার কাছ থেকে একটি প্রতিশোধ নিতে চাই”। মহানবী (সা.) বলেন, “হ্যাঁ, তাড়াতাড়ি বলো আমার দ্বারা তোমার কি ক্ষতি হয়েছে?” সেই সাহাবী বলেন, “হে আল্লাহ্‌র রসূল (সা.)! অমুক যুদ্ধের সময় আপনি কাতার বা সারি সোজা করছিলেন। আপনার একটি সারি অতিক্রম করার প্রয়োজন পড়লে আপনি সারি পার হয়ে যখন সামনে অগ্রসর হন তখন আপনার কনুই আমার পিঠে লেগেছিল। আজ আমি এর প্রতিশোধ নিতে চাই। সাহাবীরা বর্ণনা করেন, সেসময় ক্রোধের বশে আমাদের তরবারি খাপ থেকে বাইরে বের হয়ে আসছিল আর আমাদের চোখ রক্তিম হতে থাকে। মহানবী (সা.) যদি তখন আমাদের সামনে উপস্থিত না থাকতেন তাহলে নিশ্চয়ই আমরা তাকে কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলতাম। কিন্তু মহানবী (সা.) নিজের পিঠ তার দিকে ফিরিয়ে বলেন, “তোমার প্রতিশোধ নাও এবং আমাকেও সেভাবেই কনুই দ্বারা আঘাত করো”। সেই সাহাবী বলেন, “হে আল্লাহ্‌র রসুল (সা.)! এভাবে নয়। যখন আপনার কনুই আমার দেহ আঘাত করেছিল তখন আমার পিঠ উন্মুক্ত ছিল, কিন্তু এখন তো আপনার পিঠের ওপর কাপড় রয়েছে?” মহানবী (সা.) সাহাবীদের বলেন, “আমার পিঠ থেকে কাপড় সরিয়ে দাও যেন এই ব্যক্তি আমার কাছ থেকে প্রতিশোধ নিতে পারে”। সাহাবীরা যখন মহানবী (সা.)-এর পিঠ থেকে কাপড় সরিয়ে দেন তখন সেই সাহাবী কম্পিত ঠোঁটে এবং অশ্রুসিক্ত নয়নে সামনে অগ্রসর হন এবং মহানবী (সা.)-এর উন্মুক্ত পিঠে ভালোবাসাপূর্ণ চুমু খান আর বলেন, “হে আল্লাহ্‌র রসূল (সা.)! কোথায় প্রতিশোধ আর কোথায় এই নগণ্য দাস! হুযূরের কথায় যখন আমি বুঝতে পারলাম যে, হয়তো সেই সময় নিকটে যার কথা চিন্তা করলেও আমাদের (শরীরের) পশম দাঁড়িয়ে যায় তখন আমি চাইলাম, আমার ঠোঁট যেন একবার এই কল্যাণমণ্ডিত দেহকে স্পর্শ করে যাঁকে খোদা তা’লা সকল কল্যাণের আধার বানিয়েছেন। অতএব, কনুই লাগার অজুহাতে আমি এই বাসনা পূর্ণ করতে চাইলাম আর আমি শেষবার আপনাকে চুমু দিতে চাইলাম। হে আল্লাহ্‌র রসূল (সা.)! কনুইয়ের আঘাত তো দূরের কথা, আমাদের সবকিছুই তো আপনার জন্য নিবেদিত। আমার আত্মা একটি অজুহাত খুঁজছিল যে, আপনাকে কোনোভাবে চুমু খাওয়ার সুযোগ পাওয়া যায় কিনা!” সেসব সাহাবী যাঁরা পূর্বে এই ব্যক্তিকে হত্যা করতে চেয়েছিল, তখন তার কথা শুনে যারা অত্যন্ত রাগান্বিত ছিল, কিন্তু যখন তারা এই দৃশ্য দেখে যে, এখানে তার হৃদয়ে অন্য কিছু ছিল তখন তারা বলে, আমাদের মধ্যে প্রত্যেকের নিজের ওপর রাগ হতে থাকে যে, আমরা কেন এমন সুযোগ পেলাম না যাতে আমরা আমাদের প্রেমাস্পদকে চুমু দিতে পারতাম?”
হযরত মুসলেহ্ মওউদ (রা.) বলেন, ইনি ছিলেন আমাদের প্রিয় নবী (সা.) যিনি আমাদের হাদী ও পথপ্রদর্শক, তিনি তাঁর জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের জন্য সেই আদর্শ প্রদর্শন করেছেন যার উপমা অন্য কোনো নবীর মাঝে পাওয়া যায় না।
বদরের যুদ্ধে সাহাবীদের স্লোগান অর্থাৎ চিহ্ন বা জয়ধ্বনি কী ছিল এ সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে, হযরত উরওয়া বিন যুবায়ের (রা.) কর্তৃক বর্ণিত হয়েছে, যুদ্ধের দিন মুহাজিরদের ধ্বনি বা স্লোগান ছিল ‘ইয়া বনী আব্দুর রহমান’ এবং খাযরাজ গোত্রের ধ্বনি বা স্লোগান ছিল ‘ইয়া বনী আব্দুল্লাহ্’, আর অওস গোত্রের ধ্বনি বা স্লোগান ছিল ‘ইয়া বনী ওবায়দুল্লাহ্’ এবং মহানবী (সা.) তাঁর অশ্বারোহীদের ‘খায়লুল্লাহ্’ নাম দিয়েছিলেন। একটি রেওয়ায়েত এমনও আছে, সেদিন সবার ধ্বনি বা স্লোগান ছিল ‘ইয়া মনসূরো আমিত’! অর্থাৎ হে মনসূর মেরে ফেলো। আরেকটি রেওয়ায়েতে উল্লেখ আছে, বদরের যুদ্ধে মদীনার আনসারের স্লোগান বা ধ্বনি ছিল আহাদ। এটি নির্ধারণ করার কারণ হলো, রাতের আঁধারে এবং একেবারে নির্জনে যুদ্ধের সময় এই ধ্বনির মাধ্যমে যেন চেনা যায় যে, এরা আনসারী সাহাবী (শত্রু নয়)। আর কাফিরদের ধ্বনি ছিল, ইয়া বনী আব্দুল উযযা।
এরপর মহানবী (সা.) কাতার সোজা করার সময় সাহাবীদের বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত নির্দেশ না দিব ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা আক্রমন করবে না। শত্রুরা কাছাকাছি না আসা পর্যন্ত তির নিক্ষেপ করবে না আর তরবারিও বের করবে না, কারণ বিপক্ষদল তোমাদের কাছাকাছি না এলে তোমাদের তির লক্ষভ্রষ্ট হবে। এরপর তাঁর একটি খুতবার বিবরণ পাওয়া যায় যাতে তিনি মুসলমান সেনাদেরকে ধৈর্যধারণ এবং আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি লাভের জন্য জোরালো তাগিদ দেন।
যুদ্ধ চলাকালীন সময় মুহাম্মদ (সা.) কাউকে কাউকে হত্যা করতে বারণ করেছিলেন। যেমন তিনি (সা.) বলেছিলেন, বনু হাশেমের কাউকে হত্যা করবে না, আবুল বখতরি এবং আব্বাসকে হত্যা করবে না কেননা তারা কুরাইশের চাপে পড়ে বাধ্য হয়ে যুদ্ধে এসেছে। হযরত আবু হুযায়ফা (রা.) বলেন, আমরা আমাদের পিতামাতাকে হত্যা করব আর আব্বাসকে হত্যা করব না এটি কীভাবে সম্ভব? একথা শুনে মহানবী (সা.) উমর (রা.)-কে সম্বোধন করে বলেন, এখন কি আল্লাহ্‌র রসূলের চাচার ওপর তরবারী চালানো হবে? পরবর্তীতে এমন মন্তব্যের কারণে আবু হুযায়ফা (রা.) অনেক অনুতপ্ত ছিলেন। এমনকি তিনি শাহাদতকে তার এই মন্তব্যের প্রায়শ্চিত্ত মনে করতেন। এরপর তিনি ইয়ামামার যুদ্ধে শহীদ হন।
এরপর মহানবী (সা.) ছাউনিতে গিয়ে দোয়ায় রত হন। আল্লাহ্‌র নবী (সা.) কিবলামুখী হয়ে দু’হাত তুলে দোয়া করতে থাকেন, “হে আল্লাহ্! আমাকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছ তা পূর্ণ করো। আজ যদি তুমি মুসলমানদের ধ্বংস করো তাহলে ধরাপৃষ্ঠে তোমার ইবাদতকারী আর কেউ অবশিষ্ট থাকবে না”। এই দোয়া করার সময় তিনি (সা.) এতটা ব্যাকুল ছিলেন যে, কখনো সেজদাবনত হতেন আবার কখনো দাঁড়িয়ে খোদা তা’লাকে ডাকতেন। হযরত আবু বকর (রা.) মহানবী (সা.)-এর সাথে সেই ছাউনীতে ছিলেন। তিনি বলেন, “হে আল্লাহ্‌র রসুল (সা.)! আপনার এ দোয়া আপনার প্রভুর সমীপে যথেষ্ট। তিনি আপনার সাথে কৃত প্রতিশ্রুতি অবশ্যই পূর্ণ করবেন”। যুদ্ধ করার সময় হযরত আলী (রা.)’র যখনই মহানবীর কথা মনে হতো তিনি দৌঁড়ে মহানবীর তাঁবুর কাছে আসতেন আর দেখতেন মহানবী সেজদাবনত হয়ে আকুতি-মিনতি করে দোয়া করছেন। আবু বকর (রা.) যখন বলেন, “হে আল্লাহ্‌র রসূল (সা.)! আল্লাহ্ যেখানে আপনাকে বিজয়ের সুসংবাদ দিয়েছেন তারপরও আপনি এত দোয়া কেন করছেন?” মহানবী (সা.) বলেন, “আল্লাহ্ তো অমুখাপেক্ষী, তাই আমি ভয় পাচ্ছি”। দোয়া করতে করতে একসময় মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তন্দ্রাচ্ছন্ন হন এরপর তৎক্ষণাৎ জেগে ওঠে হযরত আবু বকর (রা.)-কে সুসংবাদ জানিয়ে বলেন, “আনন্দিত হও খোদা তা’লার সাহায্য এসে গেছে এবং জীব্রাঈল (আ.) ঘোড়ার লাগাম ধরে সামনে অগ্রসর হচ্ছেন আর ঘোড়ার পায়ের আঘাতে ধুলা উড়ছে”।
বদরের যুদ্ধে মহানবী (সা.) যুবায়ের বিন আওয়াম (রা.)-কে ডানে এবং মিকদাদ বিন আমর (রা.)-কে বাম দিকে এবং কায়েস (রা.)-কে পদাতিক বাহিনীর নেতা নিযুক্ত করেন। আর মহানবী (সা.) স্বয়ং পুরো সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দেন, তিনি সর্বাগ্রে ছিলেন। শত্রুদের সর্বাপেক্ষা নিকটে ছিলেন। হযরত মির্যা বশীর আহমদ সাহেব (রা.) বর্ণনা করেন, শত্রুদল যখন একেবারে কাছে চলে আসে তখন আল্লাহ্ তা’লার বিষ্ময়কর মহিমা এরূপ ছিল যে, সেসময় সৈন্যদলের দাঁড়ানোর কৌশলের কারণে কাফিরদের কাছে ইসলামী সেনাদল দ্বিগুণ মনে হচ্ছিল। এর বিপরীতে মুসলমানদের কাছে কুরাইশের সংখ্যা নিজেদের চেয়ে কম মনে হচ্ছিল।
মক্কার নেতারা উমায়ের বিন ওয়াহাবকে এ উদ্দেশ্যে প্রেরণ করে যেন সে মুসলমানদের সঠিক সংখ্যা অনুমান করতে পারে। উমায়ের এসে মুসলমানদের সংখ্যা তিনশ’র মতো উল্লেখ করে। তারা অন্য কোনো দল মুসলমানদের সাহায্যার্থে পেছনে আছে কিনা সেটিও খতিয়ে দেখে। সে কাফিরদের বলে, মনে হয়েছে যেন তাদের উটগুলো নিজেদের হাওদার ওপরে মানুষ নয় বরং মৃত্যুকে বহন করছে। কেননা মুসলমানরা মৃত্যুর জন্য তৈরি হয়ে এসেছে। তাদের অবস্থা এমন যে, কারো কাছে অস্ত্র না থাকলেও কাউকে না মেরে তারা মরবে না। হাকিম বিন হিযাম এ কথা শুনে উতবার কাছে গিয়ে তাদেরকে যুদ্ধ বাতিল করে মক্কায় ফেরত যাবার পরামর্শ দেয়। উতবাও যেহেতু ভীতসন্ত্রস্ত ছিল তাই সে এ কথার সমর্থন করে এবং কাফিরদের বুঝাতে চেষ্টা করে। এরপর হাকীম, আবু জাহলকে উক্ত প্রস্তাব দেয়, কিন্তু আবু জাহল এই মন্তব্য করে তার কথা উড়িয়ে দেয় যে, উতবার পুত্র মুসলমানদের সাথে আছে বলে সে ভয় পাচ্ছে। এরপর সে কাফির সেনাদলকে চরমভাবে উত্তেজিত করে যার ফলে কাফিররা পূর্ণোদ্যমে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
হুযূর বলেন, আগামীতে এর বিস্তারিত ঘটনা বর্ণনা করা হবে, ইনশাআল্লাহ।