শ্রেষ্ঠ মহাপুরুষ – নিষ্ঠাবান বদরী সাহাবীগণ: হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ - খলীফাতুল মসীহ্‌ আল্‌ খামেস (আই.)

০৫-নভেম্বর, ২০২১

মসজিদ মুবারক, ইসলামাবাদ, টিলফোর্ড, লন্ডন

জুমুআর খুতবার সারমর্ম


এই জুমু’আর খুতবার সারাংশটিতে কোনো প্রকার ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে তার দায়ভার আহ্‌মদীয়া বাংলা টীম গ্রহণ করছে।

আহ্‌মদীয়া মুসলিম জামা’তের বিশ্ব-প্রধান ও পঞ্চম খলীফাতুল মসীহ্, আমীরুল মু’মিনীন হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) গত ৫ই নভেম্বর, ২০২১ইং ইসলামাবাদের মসজিদে মুবারকে প্রদত্ত জুমুআর খুতবায় তাহ্‌রীক-এ-জাদীদ-এর ৮৮তম নববর্ষের ঘোষণা ও সদ্য-সমাপ্ত ৮৭তম বর্ষের বিভিন্ন ঈমানোদ্দীপক ঘটনার আলোকে আর্থিক কুরবানীর গুরুত্ব ও কল্যাণ বর্ণনা করেন।

তাশাহ্‌হুদ, তাআ’ঊয ও সূরা ফাতিহা পাঠের পর হুযূর (আই.) বলেন, আল্লাহ্ তা’লা পবিত্র কুরআনে মু’মিনদের যেসব বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করেছেন তন্মধ্যে একটি হল, তারা নিজেদের পবিত্র সম্পদ আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি লাভের নিমিত্তে তাঁর পথে ব্যয় করে। কখনো মু’মিনদের বৈশিষ্ট্য হিসেবে, কখনো সদকা প্রদানের আহবান জানিয়ে, আবার কখনো যাকাত প্রদানের নির্দেশরূপে; অর্থাৎ বিভিন্ন আঙ্গিকে আল্লাহ্ সম্পদ ব্যয় করার নির্দেশ দিয়েছেন। সেইসাথে এসব সম্পদ কোন্ কোন্ খাতে ব্যয় করতে হবে তা-ও তিনি বলে দিয়েছেন। পূর্বের সকল ঐশী জামাতের মত আহমদীয়া জামাতেও সম্পদকে পবিত্র করার নিমিত্তে, আল্লাহ্ তা’লার সন্তুষ্টি ও কৃপা লাভের উদ্দেশ্যে আল্লাহ্‌র পথে সম্পদ ব্যয় করার প্রচলন রয়েছে। হযরত মসীহ্ মওউদ (আ.) যে মিশন নিয়ে পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছেন তা কোন সাধারণ কাজ নয় বরং এক মহান দায়িত্ব; আর সেটি হল আল্লাহ্ তা’লার একত্ববাদ প্রতিষ্ঠা করা, ইসলাম ও মহানবী (সা.)-এর পতাকা সারা পৃথিবীতে উড্ডীন করা। আর জানা কথা- এই কাজের জন্য অর্থের প্রয়োজন। আল্লাহ্ তা’লার কৃপায় জামাতের সদস্যরা তাঁর পথে সম্পদ ব্যয়ের নির্দেশ অনুধাবন করে ও পালন করে। পৃথিবীজুড়ে আহমদীরা আর্থিক কুরবানীর এমন আশ্চর্য সব দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন যা দেখে মানুষ বুঝতে পারে, হযরত মসীহ্ মওউদ (আ.)-ই আল্লাহ্‌র প্রেরিত সেই মহাপুরুষ যার মাধ্যমে শেষযুগে ইসলামের অনিন্দ্য-সুন্দর শিক্ষা পৃথিবীতে প্রচার হওয়ার কথা। বিরুদ্ধবাদীরা যদি শুধু এই নিদর্শনটিই গভীর দৃষ্টিতে দেখতো এবং মনের ঘৃণা-বিদ্বেষ একপাশে সরিয়ে রেখে নিরপেক্ষভাবে বিষয়টি যাচাই করতো- তবে তা-ই তাদের সত্য উপলদ্ধি করার জন্য যথেষ্ট হতো। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, তাদের হৃদয় পাথরের চেয়েও কঠিন, বিশেষতঃ নামসর্বস্ব আলেমদের; তাদের বিষয়টি আল্লাহ্ দেখবেন।

হুযূর (আই.) বলেন, আহমদীরা আল্লাহ্‌র পথে সম্পদ ব্যয় করে মসীহ্ মওউদ (আ.)-এর মিশনের সহায়তার লক্ষ্যে, ইসলাম ও মহানবী (সা.)-এর পতাকা বিশ্বের সকল প্রান্তে উড্ডীন করতে। নিঃসন্দেহে মু’মিনদের সাথে আল্লাহ্ তা’লা এই অঙ্গীকারও করেছেন- তারা যা-ই আল্লাহ্‌র পথে ব্যয় করবে, তিনি তা কয়েকগুণ বাড়িয়ে ফেরত দেবেন; কিন্তু অজস্র এমন আহমদী রয়েছেন যারা সেই প্রতিদানের আশায় নয়, বরং শুধুমাত্র আল্লাহ্‌র ভালোবাসা ও সন্তুষ্টির খাতিরে আর্থিক কুরবানী করে। এই জামাত কোটিপতিদের জামাত নয়, জামাতের অধিকাংশ সদস্যই দরিদ্র বা মধ্যবিত্ত। তা সত্ত্বেও তাদের মাঝে ত্যাগের এক অদম্য স্পৃহা রয়েছে; তারা ইসলামের পুনর্জাগরণে ভূমিকা রাখতে চায়। আর তাই আল্লাহ্ তা’লা তাদের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা কবুল করে তাতে এত সমৃদ্ধি দান করেন যে, তা দিয়ে লক্ষ-কোটি পাউন্ডের কাজ হয়ে যায়। কাজেই, প্রকৃত বিষয় হল আল্লাহ্‌র দরবারে গৃহীত হওয়া। প্রসঙ্গতঃ হুযূর (আই.) এ-ও বলেন, জামাত যখন বড় হতে থাকে তখন বিভিন্ন চিন্তাধারা বা যথাযথ তরবীয়ত না পাওয়ার ফলে এমন একটি অংশ দেখা যায়, যারা প্রশ্ন তোলে- ‘আমরা কেন চাঁদা দেব?’ বাড়িতে এমন আলোচনার ফলে শিশুদের মনেও নেতিবাচক প্রশ্ন সৃষ্টি হয়। এক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের প্রথম দায়িত্ব হল, নিজেদের আচরণ ও ব্যবহার দ্বারা মানুষের সন্দেহ দূর করা; মানুষ যেন বুঝতে পারে যে তাদের চাঁদা নির্দিষ্ট খাতে ব্যয় করা হয়, কোন অপব্যবহার বা অপচয় করা হয় না। দ্বিতীয়তঃ তারা যেন আহমদীদেরকে ভালোবাসার সাথে আর্থিক কুরবানীর গুরুত্ব বুঝান যে, এর মাধ্যমে তারা আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি লাভ করবে; সেইসাথে এ-ও বলেন; এসব অর্থ কোথায় এবং কী কাজে ব্যয় হয়। হুযূর (আই.) বলেন, এসব অর্থ মূলতঃ ইসলামের প্রচারকার্যে ব্যয় হয়; এমটিএ, কুরআন ও বিভিন্ন ধর্মীয় বই-পুস্তক ইত্যাদি প্রকাশে ব্যবহৃত হয়, দরিদ্র শিশু ও অভুক্তদের জন্য ব্যয় করা হয়, মুবাল্লিগদের শিক্ষা ও তবলীগ, মসজিদ নির্মাণ ইত্যাদি আরও অনেক প্রয়োজনে ব্যয় করা হয়। হুযূর বলেন, এসব বলার কারণ এটি নয় যে, অনেকে এমন প্রশ্ন তুলছে; কারণ হল- জামাত যখন বিস্তৃত হয় তখন সেই সুযোগে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী ও কুমন্ত্রণাদাতা লোকেরাও এসে সন্দেহ ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে। এরূপ চিন্তা-ভাবনা সৃষ্টির সুযোগই যেন না হয় তাই হুযূর বিষয়টি এভাবে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেন।

হুযূর (আই.) বলেন, আল্লাহ্‌র কৃপায় জামাতে এমন অসংখ্য সদস্য রয়েছেন যারা কপর্দকহীন হওয়া সত্ত্বেও আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি অর্জনের মানসে ধার-কর্জ করে হলেও তাঁর পথে ব্যয় করে, আর এর মাধ্যমে তারা কুরআনে বর্ণিত আল্লাহ্ তা’লার অমোঘ ঘোষণা, وَيَرْزُقْهُ مِنْ حَيْثُ لَا يَحْتَسِبُ অর্থাৎ, আল্লাহ্ তাদেরকে এমন স্থান থেকে রিয্ক প্রদান করেন যা তারা কল্পনাও করতে পারে না- এর দৃশ্য অবলোকন করে। এটি অতীতের কোন কথা নয়, বরং আজও আহমদী জামাতের সদস্যরা নিয়মিত এসব দৃশ্য দেখেন; আল্লাহ্ তা’লা এভাবে মু’মিনদের বিশ্বাসকে সুদৃঢ় করেন। এরপর হুযূর (আই.) তার সমীপে প্রেরিত আহমদী সদস্যদের বাস্তব অভিজ্ঞতা-নির্ভর এরূপ কতিপয় ঘটনা উল্লেখ করেন।

গিনি-কোনাকরির মুবাল্লিগ ইনচার্জ সাহেব খুতবায় হুযূরের বর্ণিত আর্থিক কুরবানী সংক্রান্ত কিছু ঈমানোদ্দীপক ঘটনা উল্লেখ করে জামাতের সদস্যদেরকে বলেন- তাদেরকেও এরূপ দৃষ্টান্ত প্রদর্শন করতে হবে। এতে অনুপ্রাণিত হয়ে এক বোন মায়মুনা সাহেবা আর্থিক সংকট সত্তে¡ও নিজের বাবার কাছ থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া অর্থের অর্ধেক তাহরীকে জাদীদ খাতে চাঁদা হিসেবে প্রদান করেন। এর ২৪ ঘন্টার মধ্যেই আশ্চর্য উপায়ে তিনি এমন স্থান থেকে সেই অর্থের ৬গুণ বেশি অর্থ লাভ করেন, যেখান থেকে অর্থ লাভের কোন আশাই তার ছিল না। আবার কানাডার একটি মজলিসের প্রেসিডেন্ট সাহেব অন্যান্য সদস্যদের তাহরীকে জাদীদের বকেয়া চাঁদা নিজের পক্ষ থেকে পরিশোধ করে দেয়ার সংকল্প করেন। তার ব্যাংক একাউন্টে কোন টাকা ছিল না; কিন্তু এই সংকল্প করার পরদিন যখন চেক করেন, তখন তাতে তিন হাজার ডলার ছিল। এটি তার পূর্বে প্রাপ্য কোন টাকা ছিল যা পাবার আশাই ছিল না। তিনি বুঝতে পারেন, তার সংকল্পের কারণে আল্লাহ্ তাকে এই অর্থ পাইয়ে দিয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার এক ভাই শাহীন সাহেব আর্থিক সংকট সত্ত্বেও সাহস করে নিজের একাউন্টে থাকা অর্ধেক অর্থ চাঁদা হিসেবে দিয়ে দেন, এরপর সেদিনই তার পিতার কাছ থেকে উপহারস্বরূপ কিছু অর্থ পান যা প্রদত্ত চাঁদার বিশগুণ বেশি ছিল। শাহীন সাহেব সেই টাকা থেকেও চাঁদা দেন। সেদিন সন্ধ্যায়ই তিনি মধ্যপ্রাচ্যে একটি ভালো চাকরির প্রস্তাব পান, এভাবে তার আর্থিক সংকটও আল্লাহ্ দূর করে দেন। কাযাখিস্তানের একজন স্থানীয় নিষ্ঠাবান আহমদী আলী বেগ সাহেব তাহরীকে জাদীদ খাতে দশ হাজার টেংগে চাঁদা দেন। এরপর তিনি যে প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন সেই প্রতিষ্ঠান ঘোষণা করে- তাদের অসাধারণ মুনাফা হওয়ায় প্রতিষ্ঠান তিনজন উত্তম কর্মীকে এক লাখ টেংগে পুরস্কার দেবে; বিস্ময়করভাবে তিনজনের একজন নির্বাচিত হন আলী বেগ সাহেব। তার মতে, এটি নিঃসন্দেহে চাঁদার কল্যাণেই হয়েছে। ভারতের কেরালা-নিবাসী একজন নিষ্ঠাবান সদস্য প্রতিবছর খুব বড় অংকের চাঁদা প্রদান করতেন। এবছর করোনার কারণে অন্যান্য চাঁদা পরিশোধ করলেও তাহরীকে জাদীদের জন্য বড় অংক দেয়ার মত আর্থিক সঙ্গতি ছিল না। কিন্তু তাহরীকে জাদীদের অর্থবছর শেষ হওয়ার দু’দিন পূর্বে তিনি দশ লক্ষ রুপি চাঁদা দেন, পরবর্তীতে জুমুআর খুতবা শুনে অনুপ্রাণিত হয়ে আরও প্রায় আট লক্ষ রুপি প্রদান করেন এবং আশা প্রকাশ করেন, একটি সরকারি কন্ট্রাক্ট পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে; সেটি পেলে আরও চাঁদা দেবেন। হুযূর (আই.) মন্তব্য করেন, এভাবে জামাতের ধনী ব্যক্তিরাও চাঁদা প্রদানে উৎসাহ-উদ্দীপনা রাখেন; আল্লাহ্ তাদেরকে যে সম্পদ দিয়েছেন তারা তা গোপন না করে আল্লাহ্‌র পথে ব্যয় করেন।

হুযূর (আই.) সিয়েরালিওনের লুঙ্গি অঞ্চলের একজন নিষ্ঠাবান আহমদীর ঘটনা উল্লেখ করেন, যিনি পকেট উজাড় করে চাঁদা দেয়ার কারণে পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন এবং পথিমধ্যেই একাধিক পুরনো পরিচিত ব্যক্তির সাথে সাক্ষাতের ফলে প্রায় সমপরিমাণ অর্থ উপহার পান। উপরন্তু বিদেশ থেকে এক আত্মীয় চাঁদার চেয়ে আটগুণ বেশি অর্থ উপহার পাঠান। সেদেশেরই ফ্রিটাউন অঞ্চলের একজন তরুণ শিক্ষার্থী মুনির হোসেন সাহেবের চাঁদা প্রদানের গভীর আগ্রহ এবং আল্লাহ্ তা’লা কীভাবে তাকে তা পূর্ণ করার সৌভাগ্য দান করেন- সেই ঘটনাও হুযূর (আই.) তুলে ধরেন। একইভাবে হুযূর (আই.) গাবুনের একজন নবাগত আহমদীর ঘটনা, জর্ডানের এক ভদ্রমহিলার ঘটনা, বুর্কিনাফাঁসোর একটি গ্রামের আহমদী সদস্যদের ঘটনাসহ আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে শিশুদের মাঝেও চাঁদা প্রদানের উৎসাহ ও স্পৃহার ঘটনা তুলে ধরেন। ছোট্ট শিশুরাও তাদেরকে চকলেট খাওয়ার জন্য দেয়া টাকা নিয়ে গিয়ে তাহরীকে জাদীদের চাঁদা প্রদান করে, কোন স্থানে ক্লাস ফোরের কয়েকজন শিশু প্রতিযোগিতা করে তাহরীকে জাদীদের চাঁদা দেয়। এরূপ আশ্চর্য সব ঘটনা আহমদীয়া জামাতেই ঘটে থাকে যা পৃথিবীর অন্য কোন স্থানে দেখা যায় না। হুযূর (আই.) সেই শিশুদের জন্য বিশেষভাবে দোয়াও করেন। হুযূর (আই.) বেলিস, মরক্কো, অস্ট্রেলিয়া, আর্জেন্টিনা, মালি, বেনিন ইত্যাদি বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ঈমানোদ্দীপক ঘটনা তুলে ধরেন। বেনিনের একটি নবাগত আহমদী গ্রামের প্রেসিডেন্ট ইসমাঈল সাহেব মন্তব্য করেন, ইতোপূর্বে তারা মুসলমান হিসেবে প্রতি বছরই তাদের ইমামকে পয়সা দিয়ে এসেছেন, কিন্তু তা সেই ইমাম নিজেই খরচ করতো; আর এবছর আহমদী হওয়ার পর চাঁদা দিয়ে জানতে পেরেছেন, এই সামান্য অর্থও বিশ্বব্যাপী ইসলামের প্রচার ও প্রসারে ব্যয় হচ্ছে। তাদের গভীর উপলদ্ধি হল, চাঁদা প্রদানের ফলে এবছর তাদের বাড়িতে আর্থিক সংকটও সৃষ্টি হয়নি, তারা এবং তাদের সন্তানরাও সুস্থ থেকেছেন, নামাযেও তাদের উপস্থিতি বেড়েছে, আল্লাহ্ তাদের সুরক্ষা করেছেন এবং আর্থিক কুরবানীর ফলে এবার তারা এমন আত্মিক প্রশান্তি লাভ করেছেন যা পূর্বে কখনো করেননি। হুযূর (আই.) বলেন, মানুষ বলে- আফ্রিকার গণ্ডগ্রামের মানুষ কিছু জানে বা বোঝে না; অথচ ইনি কত গভীর ও উচ্চাঙ্গীন দৃষ্টি রাখেন যে, অনেক উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিও তার মত এভাবে এসব বিষয় বর্ণনা করতে পারবে না। হুযূর (আই.) দোয়া করেন, আল্লাহ্ তা’লা আমাদের প্রত্যেককে ইসলামের প্রচারের জন্য কুরবানী করার সৌভাগ্য দান করুন; আমরা যেন নিজেদের পবিত্র ধন-সম্পদ কুরবানী করতে পারি, আর তা যেন আল্লাহ্ তা’লার দরবারে গৃহীত হয় এবং তিনি যেন আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট হন।

অতঃপর হুযূর (আই.) তাহরীকে জাদীদের ৮৮তম নববর্ষের ঘোষণা দেন ও ৮৭তম বছরের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন। বিগত বছর পৃথিবীজুড়ে আহমদীরা এই খাতে ১৫.৩ মিলিয়ন (অর্থাৎ এক কোটি তেপ্পান্ন লক্ষ) পাউন্ড কুরবানী করার সৌভাগ্য লাভ করেছেন, যা বিগত বছরের তুলনায় ৮ লক্ষ ৪২ হাজার পাউন্ড বেশি। চাঁদা প্রদানে শীর্ষ দশটি দেশ যথাক্রমে, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশ, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ঘানা ও মধ্যপ্রাচ্যের আরেকটি দেশ; পাকিস্তানকে এর মধ্যে গণনা করা হয় নি। চাঁদায় অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা বৃদ্ধিতে আফ্রিকার বাইরের দেশগুলোর মধ্যে জার্মানি, যুক্তরাজ্য, হল্যান্ড, বাংলাদেশ, মরিশাস প্রভৃতি দেশের উল্লেখ করেন। পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংকটসহ সার্বিক অবস্থার কারণে হুযূর (আই.) বিশেষভাবে তাদের জন্য দোয়ার তাহরীক করেন। হুযূর প্রত্যেক কুরবানী প্রদানকারীর ধন-সম্পদ ও জনবলে সমৃদ্ধির জন্যও দোয়া করেন।