শ্রেষ্ঠ মহাপুরুষ – নিষ্ঠাবান বদরী সাহাবীগণ

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ - খলীফাতুল মসীহ্‌ আল্‌ খামেস (আই.)

১১-জানুয়ারি, ২০১৯

বায়তুল ফুতুহ মসজিদ, লন্ডন, যুক্তরাজ্য

জুমুআর খুতবার সারমর্ম


এই জুমু’আর খুতবার সারাংশটিতে কোনো প্রকার ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে তার দায়ভার আহ্‌মদীয়া বাংলা টীম গ্রহণ করছে।

আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের বিশ্ব-প্রধান ও পঞ্চম খলীফাতুল মসীহ্‌ হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) গত ১১ই জানুয়ারী, ২০১৯ লন্ডনের বায়তুল ফুতুহ মসজিদে প্রদত্ত জুমুআর খুতবায় পূর্বের ধারা অনুসরণে নিষ্ঠাবান বদরী সাহাবীদের বর্ণাঢ্য জীবনের স্মৃতিচারণ করেন। এ খুতবায় তিনি হযরত খাল্লাদ বিন আমর জমূহ্ (রা.) ও হযরত উকবা বিন আমের (রা.)’র জীবনের স্মৃতিচারণ করেন।

হুযূর (আই.) বলেন, হযরত খাল্লাদ বিন আমর জমূহ্ (রা.) একজন আনসারী সাহাবী ছিলেন, তিনি তাঁর পিতা হযরত আমর বিন জমূহ্ ও তিন ভাই হযরত মাআয (রা.), মুআওয়েয (রা.) ও আবু আয়মন (রা.)-এর সাথে বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তবে অন্যান্য বর্ণনা থেকে প্রতীয়মান হয়, তার পিতা হযরত আমর বিন জমূহ্ (রা.) বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন নি। হযরত আবু আয়মন সম্পর্কে এটিও বর্ণিত হয়েছে, তিনি প্রকৃতপক্ষে হযরত খাল্লাদের আসল ভাই ছিলেন না, বরং তাদের পিতার মুক্তকৃত দাস ছিলেন।

হাদীস পাঠে জানা যায়, মহানবী (সা.) বদরের যুদ্ধের জন্য মদীনা থেকে রওয়ানা হয়ে ‘সুকিয়া’ নামক স্থানে গিয়ে শিবির স্থাপন করেন ও মুসলিম বাহিনীকে খতিয়ে দেখেন যে, কারা যুদ্ধে যাবার যোগ্য। এই স্থানে তিনি (সা.) নামায পড়েন আর মদীনাবাসীদের জন্য দোয়াও করেন। তখন কয়েকজন আনসারী সাহাবী এসে এই স্থানে শিবির স্থাপন করাকে একটি শুভ লক্ষণ বলে মহানবী (সা.)-কে জানান; কেননা অনেকদিন পূর্বে যখন হুসায়কা’র ইহুদীদের সাথে মদীনাবাসীদের যুদ্ধ হয়েছিল, তখন সেই যুদ্ধের আগেও তারা এই স্থানেই শিবির স্থাপন করেছিলেন এবং তারা ইহুদীদের শোচনীয়ভাবে পরাজিত করেছিলেন। হযরত খাল্লাদ (রা.)ও বর্ণনা করেন, সেদিন বেলা বাড়ার পর যখন তিনি বাড়িতে গিয়ে তার পিতার সাথে দেখা করেন ও জানান যে, মহানবী (সা.) সুকিয়াতে শিবির করেছেন, একথা শুনে তার পিতাও একে শুভ লক্ষণ বলে মন্তব্য করেন। এই স্থানের নাম পূর্বে হুসায়কাহ্ ছিল, মহানবী (সা.) এর নাম পাল্টে সুকিয়া রাখেন। হযরত আমর বিন জমূহ (রা.) বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণের ব্যাপারে খুবই আগ্রহী ছিলেন, কিন্তু যেহেতু তার একটি পা খোঁড়া ছিল, তাই তার ছেলেরা তাকে যুদ্ধে যেতে বাধা দেন। এমনিতেও শারীরিকভাবে অক্ষম হওয়ায় তার জন্য যুদ্ধে যাওয়া আবশ্যক ছিল না, উপরন্তু ছেলেরা তাকে বলেন, আমরা আপনার তিন ছেলে যুদ্ধে যাচ্ছি, তাই অসুস্থ শরীর নিয়ে আপনাকে আর যেতে হবে না। কিন্তু উহুদের যুদ্ধের সময় তিনি আর কোন বারণ মানেন নি। তার একান্ত অনুরোধের প্রেক্ষিতে মহানবী (সা.) অক্ষমতা সত্ত্বেও তাকে যুদ্ধে যাবার অনুমতি দেন। তিনি শাহাদাতের গভীর বাসনা রাখতেন, আর এই আকাক্সক্ষার কথা তিনি মহানবী (সা.)-এর কাছে উল্লেখও করেছিলেন। যুদ্ধের জন্য যাত্রাকালে তিনি দোয়া করেন, ‘হে আল্লাহ্! আমাকে শাহাদতের সৌভাগ্য দান কর এবং আমাকে ব্যর্থ-মনোরথ করে আমার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে এনো না।’

উহুদের যুদ্ধে হযরত খাল্লাদ ও হযরত আবু আয়মনও শহীদ হন। তার মা হিন্দ বিনতে আমর (রা.) হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ্‌র ফুফু ছিলেন। উহুদের যুদ্ধের দিন তিনি তার শহীদ স্বামী, পুত্র ও ভাইয়ের লাশ উটের পিঠে চাপিয়ে ফিরছিলেন, তখন হযরত আয়েশা (রা.)-এর সাথে তার সাক্ষাত হয়। হযরত হিন্দকে হযরত আয়েশা (রা.) যুদ্ধের অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, মহানবী (সা.) নিরাপদ আছেন; আর তিনি (সা.) যেহেতু নিরাপদ আছেন, তখন অন্য আর কোন ক্ষতিতে কিছু আসে যায় না। এরপর তিনি কুরআনের যে আয়াতটি পাঠ করেন তার অর্থ হল, আর ‘আল্লাহ্ অস্বীকারকারীদেরকে তাদের ক্রোধ সহ (মদীনা থেকে) ফিরিয়ে দিলেন (আর) তারা কোন কল্যাণ লাভ করতে পারে নি। আর যুদ্ধে আল্লাহ্ই মু’মিনদের পক্ষে যথেষ্ট হয়ে গেলেন। আল্লাহ্ অতীব ক্ষমতাবান, মহা পরাক্রমশালী।’ (সূরা আহযাব: ২৬)

তিনিও অত্যন্ত নিষ্ঠাবতী একজন নারী ছিলেন। হযরত হিন্দের উট উহুদের প্রান্তর ছাড়া আর অন্য কোনদিকেই যেতে চাইছিল না, সব দেখে-শুনে মহানবী (সা.) সিদ্ধান্ত দেন- আল্লাহ্ তা’লার ইচ্ছা হল, উহুদের শহীদদেরকে উহুদের ময়দানেই দাফন করা হোক। এরপর মহানবী (সা.) শহীদদের সমাহিত করা পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করেন এবং বলেন, ‘হে হিন্দ! আমর বিন জমূহ্, তোমার ছেলে খাল্লাদ এবং তোমার ভাই আব্দুল্লাহ্ জান্নাতে পরষ্পরের বন্ধু।’ এরপর হিন্দ নিবেদন করেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল (সা.)! আপনি আমার জন্যও দোয়া করুন, আল্লাহ্ যেন আমাকেও তাদের সান্নিধ্যে পৌঁছে দেন।

দ্বিতীয় যে সাহাবীর হুযূর স্মৃতিচারণ করেন তার নাম হল, হযরত উকবা বিন আমের (রা.)। তার পিতা ছিলেন আমের বিন নাবিহী আর মায়ের নাম ছিল হযরত ফুকায়হা বিনতে সকন (রা.)। ছেলের সাথে তিনিও ইসলাম গ্রহণের সৌভাগ্য লাভ করেন। হযরত উকবা বিন আমের সেই ছ’জন আনসার সাহাবীর একজন ছিলেন যারা সর্বপ্রথম মক্কাতে গিয়েই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং পরে আকাবার প্রথম বয়আতেও অংশ নেন। ‘সীরাত খাতামান্নাবীঈন’ পুস্তকে হযরত মির্যা বশীর আহমদ সাহেব (রা.)ও এই ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ লিখেছেন। মহানবী (সা.) সর্বত্রই ইসলামের দাওয়াত পৌঁছিয়েছিলেন এবং তিনি নিয়মিত খোঁজ রাখতেন যে কেউ মক্কায় এসেছে কি-না? একবার তিনি (সা.) জানতে পারেন, ইয়াসরেব বা মদীনার একজন সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি সুয়াঈদ বিন সামেত মক্কায় এসেছেন। তিনি একজন প্রসিদ্ধ কবিও ছিলেন। মহানবী (সা.) তার সাথে সাক্ষাৎ করে ইসলামের দাওয়াত দেন। সুয়াঈদ কুরআনের কিয়দাংশ শুনে গভীরভাবে অভিভূত ও অনুপ্রাণিত হন। কিন্তু দুঃখের ব্যাপার হল, সুয়াঈদ মদীনায় গিয়ে তবলীগ করার সুযোগ পান নি বরং এর আগেই গোত্রগত কোন ঝামেলায় জড়িয়ে তিনি নিহত হন। এর কিছুদিন পর হজ্জ্বের সময় মহানবী (সা.)-এর সাথে অওস গোত্রের কিছু লোকের সাক্ষাৎ হয়, যারা মদীনারই আরেক মূর্তিপূজারী গোত্র খাযরাজের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য কুরাইশদের সাহায্য চাইতে এসেছিল। মহানবী (সা.) তাদেরকে ইসলামের দাওয়াত দেন। তা শুনে আইয়াস নামক এক যুবক খুবই প্রভাবিত হন এবং বলেন, আমরা যে উদ্দেশ্য নিয়ে এখানে এসেছি, তার চেয়ে এই ব্যক্তির [অর্থাৎ মহানবী (সা.)-এর] আহ্বানের বিষয় অধিক উত্তম। কিন্তু তখন তাদের দলনেতা তাকে সেখানেই থামিয়ে দেন। আইয়াস নামক সেই যুবক কিন্তু তার বিশ্বাসে অটল ছিলেন, এমনকি মৃত্যুর সময়ও তিনি তওহীদের কলেমা পাঠ করতে করতে মৃত্যুবরণ করেন। পরবর্তীতে বুয়াসের যুদ্ধ শেষ হলে নবুওয়তের একাদশতম বছরে মক্কাতে ইয়াসরেব বা মদীনার কয়েকজনের সাথে মহানবী (সা.)-এর আবার দেখা হয়। তিনি (সা.) তাদের পরিচয় সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে অবহিত হন যে, তারা খাযরাজ গোত্রের সদস্য। তিনি (সা.) পরম ভালোবাসার সাথে তাদেরকে তবলীগ করেন, তাদেরকে কুরআনের কিছু বাণী শোনান। তারা শুনে ইসলামের সত্যতা অনুধাবন করেন আর ঠিক করেন, ইহুদীদের আগেই তাদের এই ঐশী মিশনে যোগ দেওয়া উচিৎ যেন তারা ইহুদীদের চেয়ে এক্ষেত্রে এগিয়ে থাকতে পারেন। তাই তারা প্রত্যেকেই ইসলাম গ্রহণ করেন। তারা হলেন, হযরত আবু উমামা আসাদ বিন যারারাহ্ (রা.), অওস বিন হারেস (রা.), রা’ফে বিন মালেক (রা.), কুতবা বিন আমের (রা.), উকবা বিন আমের (রা.), জাবের বিন আব্দুল্লাহ্ বিন রিয়াব (রা.) । যেহেতু তখন পর্যন্ত মক্কা, তায়েফসহ পুরো আরব ভূখণ্ড ইসলামের বিরুদ্ধে ছিল, তাই মহানবী (সা.) ও সাহাবীরা মদিনার দিকে এই আশায় তাকিয়ে ছিলেন যে, দেখা যাক এখানে কী হয়। ইসলামের জন্য এই সময়টি ছিল অত্যন্ত কঠিন একটি সময়, কিন্তু মহানবী (সা.) ও সাহাবীরা আল্লাহ্‌র সাহায্যের ব্যাপারে নিশ্চিত বিশ্বাস ও আশায় ছিলেন। অতঃপর হজ্জ্বের সময় মহানবী (সা.) মিনাতে গিয়ে হজ্জ্বে আগতদের মাঝে খোঁজ নিতে গিয়ে ইয়াসরেব বা মদিনা থেকে আগত কাফেলার সাক্ষাৎ পান। তারা বারোজন ছিলেন, যাদের মধ্যে পাঁচ জনই গতবারের মুসলমান, জাবের বিন রিয়াব (রা.) অনুপস্থিত ছিলেন। আর নতুন সাতজন যারা ছিলেন তারা হলেন, হযরত মুআয বিন হারেস, যাকওয়ান বিন আবদে কায়েস, আবু আব্দুর রহমান, উবাদা বিন সামেত, আব্বাস বিন উবাদা বিন নাযলা, আবুল হাইশাম বিন আত-তাইহান, উয়ীম বিন সায়েদা। এদের মধ্যে খাযরাজ ও অওস- উভয় গোত্রের লোকই ছিলেন। তারা মহানবী (সা.)-এর হাতে বয়আত নেন, আর এটিই ইতিহাসে আকাবার প্রথম বয়আত নামে পরিচিত। তারা মহানবী (সা.)-কে তাদের সাথে একজন শিক্ষক প্রেরণ করার জন্য অনুরোধ করেন যাতে তিনি মদিনায় ইসলাম প্রচার করতে আর তাদেরকে ইসলাম ধর্ম শেখাতে পারেন। তখন মহানবী (সা.) আব্দুদ্ দ্বার গোত্রের একজন নিষ্ঠাবান যুবক হযরত মুসআব বিন উমায়ের (রা.)-কে মুবাল্লিগ হিসেবে তাদের সাথে প্রেরণ করেন। তার সুন্দর তবলীগের ফলে পরের বছর অর্থাৎ ১৩ নববীতে আরও ৭০জন মদিনাবাসী ইসলাম গ্রহণ করেন, যা ইতিহাসে আকাবার দ্বিতীয় বয়আত নামে খ্যাত।

হযরত উকবা বিন আমের বদর, উহুদ, খন্দকসহ সকল যুদ্ধে মহানবী (সা.)-এর সহযোদ্ধা ছিলেন। দ্বাদশ হিজরিতে হযরত আবু বকর (রা.)-এর খিলাফতকালে ইয়ামামার যুদ্ধে তিনি শাহাদাত বরণ করেন। হুযূর (আই.) দোয়া করে বলেন, আল্লাহ্ তা’লা সাহাবীদের পদমর্যাদা ক্রমাগত উন্নত করতে থাকুন, (আমীন)

খুতবার শেষদিকে হুযূর আমেরিকার অনেক পুরনো এক নিষ্ঠাবান আহমদী সিস্টার আলীয়া শহীদ সাহেবার গায়েবানা জানাযার ঘোষণা দেন এবং তার পুণ্যময় জীবনের স্মৃতিচারণ করেন। তিনি মরহুম আহমদ শহীদ সাহেবের স্ত্রী ছিলেন, গত ২৬ ডিসেম্বর ১০৫ বছর বয়সে তিনি ইন্তেকাল করেন, ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। সুদীর্ঘ জীবন সত্ত্বেও আল্লাহ্ তা’লা তাকে কর্মক্ষম রেখেছেন ও সেবার সুযোগ দিয়েছেন। ১৯৩৬ সনে তিনি বয়আত করার সৌভাগ্য লাভ করেন। ১৯৬৩-৬৬ আমেরিকার লাজনা ইমাইল্লাহ্‌র সদর ছিলেন। এছাড়া সুদীর্ঘ ৫০ বছরের অধিককাল বিভিন্নভাবে জামাতের মূল্যবান সেবার সুযোগ পেয়েছেন। তার একমাত্র ছেলে উমর শহীদ সাহেব বর্তমানে পিটার্সবার্গ জামাতের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি একজন আফ্রো আমেরিকান ছিলেন। তার আগের নাম ছিল ইলা লুইস। তার সাথে বিয়ের আগেই তার স্বামী ইসলাম গ্রহণ করেন, কিন্তু আলীয়া সাহেবা তখনও ইসলাম গ্রহণ করেন নি। পরবর্তীতে তিনি লুকিয়ে লুকিয়ে আহমদীয়াত সম্পর্কে জানতে থাকেন এবং ধীরে ধীরে জামাতের শিক্ষার প্রতি আকৃষ্ট হন। তিনি হযরত মুসলেহ্ মওউদ (রা.)-এর ‘আহমদীয়াত তথা প্রকৃত ইসলাম’ বই পড়ে খুব প্রভাবিত হন। পরবর্তীতে এক অনুষ্ঠানে মওলানা আব্দুর রহমান খান বাঙ্গালী সাহেবের একটি বক্তৃতা শুনে তিনি গীর্জায় যাওয়া পরিহার করে মসজিদে যেতে আরম্ভ করেন। অবশেষে ১৯৩৬ সালে তিনি আহমদীয়াত ও ইসলাম গ্রহণ করেন। হুযূর মরহুমার বিভিন্ন গুণাগুণ ও অসাধারণ সেবাসমূহের কিছু ঝলক তুলে ধরেন। হুযূর (আই.) আল্লাহ্ মরহুমার পদমর্যাদা উন্নত হওয়ার জন্য এবং তার সন্তান-সন্ততিকে তার আদর্শ ধরে রাখার তৌফিক লাভের জন্য আল্লাহ্‌র কাছে দোয়া করেন।