প্রেস বিজ্ঞপ্তি
১২-জানুয়ারি, ২০২৩

বুরকিনা ফাসোর মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় নয় জন আহমদী মুসলমানের নৃশংস হত্যাকাণ্ড


বুধবার, ১১ জানুয়ারি ২০২৩, বুরকিনা ফাসোতে আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের একটি মসজিদে সন্ত্রাসীরা অনুপ্রবেশ করে কোনো রকম প্ররোচনা ছাড়াই ঠাণ্ডা মাথায় নয় জন মুসল্লীকে হত্যা করেছে। নিশ্চয় আমরা আল্লাহ্রই, এবং তাঁরই নিকট আমাদের প্রত্যাবর্তন।
দেশটির উত্তরাংশে ডোরি শহরের নিকট ‘মাহ্‌দী আবাদ’-এ তাদের মসজিদে স্থানীয় আহমদী মুসলমানগণ শান্তিপূর্ণভাবে ইশার নামাযের জন্য সমবেত ছিলেন। উল্লেখ্য যে এটি একটি আহমদী মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ গ্রাম, যেখানে প্রায় ৬৫০ জন আহমদী বাস করেন। আযানের সময় আট জন সন্ত্রাসী মটরসাইকেলে আগমন করে মসজিদে অনুপ্রবেশ করে এবং মুসল্লীদের হুমকি দিতে শুরু করে।
বয়োজ্যেষ্ঠ পুরুষদের মধ্য থেকে মসজিদের ইমামসহ নয় জনকে তারা অন্যান্য মুসল্লীদের থেকে পৃথক করে মসজিদের আঙ্গিনায় নিয়ে যায়। তারা দাবি করে যে, ইমাম আলহাজ্জ বুরিমা বিদিগা (৬৭) যেন তার ধর্মবিশ্বাস পরিত্যাগের ঘোষণা দেন, যার উত্তরে তিনি বলেন, “তোমরা চাইলে আমার শিরোচ্ছেদ করতে পারো, কিন্তু আমার পক্ষে ইসলাম আহমদীয়াত পরিত্যাগের ঘোষণা দেওয়া সম্ভব না।” তখন তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
এরপর পালাক্রমে বাকি আট জনকে একই প্রশ্ন করা হয়। একে একে তারা নিজ ধর্মবিশ্বাস পরিত্যাগে অস্বীকৃতি জানান, আর একে একে তাদেরকে গুলি করে হত্যা করা হয়। হত্যার সময়, শহীদগণের মুখে তাদের শেষ শব্দগুলো ছিল ‘আল্লাহু আকবর’। এই হত্যাকাণ্ড শিশুসহ অন্যান্য মুসল্লীদের চোখের সামনে সংঘটিত হয়।
এই ঘৃণ্য আক্রমণ পরিচালনা করার পর, সন্ত্রাসীরা আহমদী মুসলমানদের হুমকি প্রদান করে যে, যদি তারা পুনরায় তাদের মসজিদ খুলেন, বা তাদের ধর্মবিশ্বাস পরিত্যাগের ঘোষণা না দেন তবে ফিরে এসে তাদেরকেও হত্যা করা হবে।
শহীদদের মরদেহ সারা রাত ঘটনাস্থলেই পড়ে থাকে, কেননা অন্যদের মনে এ শঙ্কা ছিল যে, মরদেহগুলো আনতে গেলে তাদেরকেও হত্যা করা হবে। পরের দিন শহীদদেরকে দাফন করা হয়।
আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের একজন মুখপাত্র বলেন:
“সারা বিশ্বে বিস্তৃত আমাদের জামা’ত একটি পরিবারের ন্যায় এবং আমাদের ভাইদের এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে আমাদের হৃদয়গুলো শোকে বিদীর্ণ, আর তাদের প্রিয়জনদের সাথে আমরাও সমব্যথী। আমরা দোয়া করি খোদা তা’লা যেন শহীদদের তাঁর অনুগ্রহ দ্বারা আবৃত করেন।
“আমরা আরও দোয়া করি যেন বুরকিনা ফাসো নিরাপদ থাকে এবং সরকার যেন আহমদী মুসলমানসহ সকল ‘বুরকিনাবি’ জনগণের নিরাপত্তা প্রদানে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারে, এবং এই ভয়াবহ ঘৃণ্য অপরাধের হোতারা যেন বিচারের আওতায় আসে।”
রাষ্ট্রপক্ষ এবং রাষ্ট্র-বহির্ভূত পক্ষ উভয়ের দ্বারাই আহমদী মুসলমানগণ পাকিস্তানসহ বিভিন্ন মুসলমান-অধ্যুষিত দেশে নিপীড়নের শিকার হয়ে আসছে। ইতোপূর্বে ২০১০ সালে লাহোর শহরের দুটি মসজিদে একই সময়ে পরিচালিত হামলায় প্রায় একশত আহমদী মুসলমানকে হত্যা করা হয়।
শহীদরা হলেন:
আলহাজ্জ বুরিমা বিদিগা, বয়স ৬৭
এ জি মানিয়েল আলহাসানি, বয়স ৭০
এ জি হামিদু আব্দুরামানে, বয়স ৬৬
এ জি ইবরাহীম সুলে, বয়স ৬৬
এ জি মালিয়েল উসেনি, বয়স ৬৬
এ জি সুদেয়ি উসমানি, বয়স ৫৮
এ জি ম্যাগুয়েল আগালি, বয়স ৫২
এ জি ইদ্রাহি মূসা, বয়স ৫২
এ জি আদ্রামানি আগুমা, বয়স ৪৩