প্রেস বিজ্ঞপ্তি
০৬-জানুয়ারি, ২০২৩

আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের বিশ্ব-প্রধানের সাথে ভার্চুয়াল সাক্ষাতের সম্মান লাভ করলো মরক্কোর আমেলা (কার্যনির্বাহী কমিটি) সদস্যবৃন্দ


১ জানুয়ারি ২০২৩, মরক্কো জামা’তের ন্যাশনাল আমেলা এবং মজলিস আনসারুল্লাহ্ (আহ্মদীয়া মুসলিম চল্লিশোর্ধ্ব পুরুষ অঙ্গ-সংগঠন), খোদ্দামুল আহমদীয়া (আহমদীয়া মুসলিম পুরুষ যুব অঙ্গ-সংগঠন) ও লাজনা ইমাইল্লাহ্ (আহমদীয়া মুসলিম নারী অঙ্গ-সংগঠন)-এর ন্যাশনাল আমেলা সদস্যবৃন্দের সাথে আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের বিশ্ব প্রধান ও পঞ্চম খলীফাতুল মসীহ্ হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.)-এর এক ভার্চুয়াল (অনলাইন) সভা অনুষ্ঠিত হয়।

হুযূর আকদাস টিলফোর্ডের ইসলামাবাদে এমটিএ ইন্টারন্যাশনাল স্টুডিও থেকে এ সভার সভাপতিত্ব করেন, আর নাসেরাত ও লাজনা সদস্যাবৃন্দ মরক্কোর রাবাত থেকে অনলাইনে সভায় সংযুক্ত হন। আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত মরক্কোর পদাধিকারীদের জন্য এটি ছিল আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের বিশ্ব-প্রধানের সাথে আনুষ্ঠানিক সভায় মিলিত হওয়ার প্রথম সুযোগ।

দোয়া দিয়ে শুরু হওয়া কিছু আনুষ্ঠানিকতার পর, হুযূর আকদাস এক এক করে উপস্থিত সকলের সঙ্গে কথা বলেন।

সভা চলাকালীন হুযূর আকদাস, বিশেষ করে তরুণদের নৈতিক প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে, সেক্রেটারি তরবিয়তের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ওপর জোর দেন।

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) বলেন:

“তরবিয়ত বিভাগের দায়িত্বের মধ্যে আহমদী শিশুদের প্রশিক্ষণের দায়িত্ব অন্তর্ভুক্ত, যেন পরবর্তী প্রজন্ম এক আহমদী পরিমণ্ডলে বড় হয়ে ওঠে। যদি আপনারা শিশুদের তরবিয়তে মনযোগী না হন, তাহলে আপনারা আহমদী মুসলমান থাকলেও, আপনাদের সন্তানরা যেখানে খুশি, যেখানে তাদের মন টানবে, চলে যাবে। তাই সন্তানদের তরবিয়তে মনযোগ দিন, যেন তারা আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকে। তাদেরকে বলুন আহমদীয়াত কী আর কেনইবা আমরা আহমদী। মহানবী (সা.)-এর ভবিষ্যদ্বাণী কী ছিল, শেষ যুগের অবস্থা কেমন হওয়ার কথা ছিল আর সেই পরিস্থিতির কারণে কোন্ মসীহ্ ও মাহ্দীর আগমনের কথা ছিল – এ সম্পর্কে তাদেরকে অবহিত করুন। আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের মৌলিক শিক্ষা সম্পর্কে তাদের অবহিত হওয়া উচিত এবং উপলব্ধি করা উচিত যে, আমরা মুসলমান, আমরা আহমদী আর আমরা খাঁটি মুসলমান এবং আমরা মহানবী (সা.)-এর ওপর বিশ্বাস রাখি, এবং এ বিশ্বাস রাখি যে, তিনি (সা.) খাতামান্নাবীন, তাঁর (সা.) ভবিষ্যদ্বাণীসমূহের ওপর আমরা বিশ্বাস রাখি। এ সকল বিষয় শৈশব থেকেই আপনাদের সন্তানদেরকে অবহিত করুন।”

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ আরও বলেন:

“নারীদেরও তরবিয়ত (নৈতিক ও আধ্যাত্মিক প্রশিক্ষণ প্রদান) করুন। লাজনা ইমাইল্লাহ্কে সক্রিয় করুন। লাজনা [ইমাইল্লাহ্] নিজ সদস্যাদের তরবিয়ত করুন। যদি নারীদের তরবিয়ত না হয়, তবে শিশুদের তরবিয়ত সম্ভব নয়। একইভাবে, যদি পুরুষদের উত্তম দৃষ্টান্ত স্থাপিত না হয় – নেকীর ক্ষেত্রে, ধর্মীয় জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্রে, ধর্মীয় আমলের ক্ষেত্রে এবং আধ্যাত্মিকতার ক্ষেত্রে, তবে [তাদের নসীহত] স্ত্রী-সন্তানদের ওপর কোন সুপ্রভাব রাখবে না।”

সভা চলাকালীন সেক্রেটারি ওসীয়্যতের সঙ্গে কথা বলা সময়, হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) বলেন:

“আপনি মানুষের নিকট ‘আল-ওসীয়্যত’ বইটি বিতরণ করুন, যেন তারা বইটি পড়ার পর ওসীয়্যত স্কীমের অংশ হতে পারেন। বইটি না পড়ে কেউ যেন ওসীয়্যতের ফর্ম পূরণ না করেন। যারা ইতোমধ্যে স্কীমে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন কিন্তু বইটি পড়েন নি, আপনি তাদেরকেও পড়ার জন্য বলুন।”

সভার পরবর্তী সময়ে হুযূর আকদাস পুনরায় তরবিয়ত বিভাগের গুরুত্বের ওপর জোর দেন এবং বলেন যে, প্রতিটি স্থানীয় জামা’তের সেক্রেটারি তরবিয়তের নিজ এলাকার স্থানীয় আহমদীদের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক বজায় রাখা উচিত।

হুযূর আকদাস বলেন যে, আহমদী মুসলমানদের তাদের ধার্মিকতা ও ইসলামী শিক্ষার অনুসরণের ফলস্বরূপ সমাজের অন্যান্যদের থেকে স্বতন্ত্র হওয়া উচিত।

মেহমানদের আপ্যায়নের দায়িত্বে নিয়োজিত লাজনা ইমাইল্লাহর সেক্রেটারি যিয়াফত হুযূর আকদাসকে জিজ্ঞেস করেন তাদের পক্ষ থেকে কীভাবে অতিথিদের খাবার পরিবেশন করা উচিত।

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) বলেন:

“অতিথিদের সঙ্গে যথাসম্ভব উত্তম আচরণ করুন। তাদের সামনে যেন ইসলামী আখলাক (চরিত্র) ফুটে ওঠে। আপনার জানা আছে ইসলামী আখলাক কী। আপনার যা আছে, তা দিয়েই অতিথিদের সেবা করুন। যতটা সম্ভব সেবা করুন। মেহমানের সমাদর মসীহ্ মওউদ (আ.) করতেন, এটাই কুরআনের আদেশ, এটাই মহানবী (সা.)-এর সুন্নত। তাই আমাদেরও করা উচিত। সুতরাং, সম্মানজনকভাবে অতিথির সেবা করুন।”