পর্দা: নারীর মর্যাদার প্রতীক


আহমদ তবশির চৌধুরী

يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُل لِّأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاء الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِن جَلَابِيبِهِنَّ ذَلِكَ أَدْنَى أَن يُعْرَفْنَ فَلَا يُؤْذَيْنَ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا

অর্থাৎ: “হে নবী! তুমি তোমার পত্নী, তোমার কন্যা এবং মোমেনগণের পত্নীগণকে বল, যেন তাহারা তাহাদের চাদর নিজেদের উপর (মাথা হইতে টানিয়া মুখমণ্ডল পর্যন্ত) ঝুলাইয়া লয়। এতদ্বারা তাহাদের পরিচয় অত্যন্ত সহজ হইবে এবং তাহাদিগকে কষ্ট দেওয়া হইবে না। বস্তুতঃ আল্লাহ্‌ অতীব ক্ষমাশীল, পরম দয়াময়।” সূরা আহযাব: ৬০

“পর্দা নারীর মর্যাদার প্রতীক”। বিষয়টি নিঃসন্দেহে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সময়োপযোগী। বেপর্দা আর নারী-পুরুষের অবাধ মোলা-মেশা সমাজে কেমন বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে এবং নারীকে কীভাবে ভোগ্য-পণ্যের বস্তুতে পরিণত করেছে তা আমরা আমাদের চারদিকে লক্ষ্য করলেই দেখতে পাই। পারিবারিক ও সামাজিক বিশৃঙ্খলা, অশান্তি, দাম্পত্য-কলহ ও পারস্পরিক অবিশ্বাস, বিবাহ-বিচ্ছেদ, নারী-নির্যাতন ইত্যাদি সবকিছুর পেছনেই একটি প্রধান কারণ হলো পর্দাহীনতা এবং নর-নারীর অবাধ মেলা-মেশা।

যদিও ইসলামের পর্দা-ব্যবস্থা সম্পর্কে অজ্ঞতা অথবা এর অন্তর্নিহিত তাৎপর্যকে না বুঝার কারণে কেউ কেউ একে পশ্চাৎপদতা, সেকেলে, নারীকে শৃঙ্খলিতকরণের পন্থা, উন্নয়নের অন্তরায় এবং নারী ও পুরুষের মধ্যে একটি বৈষম্য সৃষ্টির প্রয়াস বলে আখ্যায়িত করে থাকেন। মূলত এই ভুল বুঝাবুঝির জন্য মুসলিম-বিশ্বের কতিপয় এলাকায় ইসলামের সত্যিকার শিক্ষার অপপ্রয়োগ আর পাশ্চাত্য গণমাধ্যমের নেতিবাচক ভূমিকাই দায়ী। পাশ্চাত্য গণমাধ্যমের এটা একটা নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, ইসলামের কথা উঠলেই তার প্রতি একটা কুৎসিৎ আচরণ প্রদর্শন করা হয়। আর তাঁদের এই অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হয়ে আমাদের এই অঞ্চলেও অনেকে পর্দা-প্রথা সম্পর্কে বিরূপ ধারণা পোষণ করে থাকেন। একজন খ্রীষ্টান ‘নান’ বা ধর্মজাজিকা যখন লম্বা গাউন আর মাথা-ঢাকা পোশাক পড়ে থাকেন তখন তা আর পশ্চাৎপদতা, উন্নয়নের অন্তরায় বা নারীকে শৃঙ্খলিতকরণের প্রয়াস বলে বিবেচিত হয় না। বরং তা শ্রদ্ধা, ভক্তি বা মাতৃত্বের প্রতীক রূপেই বিবেচিত হয়।

নারী-পুরুষের পৃথকীকরণের যে-নির্দেশ ইসলাম দেয়, তা কোনো ভাবেই প্রাচীন অন্ধকার যুগের সংকীর্ণমনা দৃষ্টিভঙ্গি-প্রসূত নয়। হযরত ইমাম মাহ্‌দী (আঃ)-এর চতুর্থ খলিফা, আমাদের প্রয়াত ইমাম হযরত মির্যা তাহের আহমদ (রাহঃ) বলেন,

“বস্তুতঃ সমাজে নর-নারীর অবাধ মেলা-মেশার প্রশ্নটা বা এর উল্টোটার সঙ্গে সমাজের অগ্রবিমখুতা বা পশ্চাৎমুখিতার কোনো সম্পর্ক নেই। গোটা ইতিহাসেই দেখা যায় যে, সমাজগুলো সামাজিক বা ধর্মীয় তরঙ্গমালায় হয় তুঙ্গে উঠে অগ্রসর হয়েছে, নয়তো তার তলায় পড়ে নিমজ্জিত হয়ে গেছে।”(Islam’s Response To Contemporary Issues)

অতএব, ইসলামের পর্দা-ব্যবস্থা বা ক্ষেত্র-বিশেষে নারী-পুরুষের পৃথকীকরণ নারীকে শৃঙ্খলিত করার পরিবর্তে তাঁকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছে, সমাজে একটি ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ-ব্যবস্থার প্রবর্তন করেছে। ইসলাম নারীকে কিরূপ আসনে অধিষ্ঠিত করেছে বা পর্দাপ্রথা নারীকে কী মর্যাদা দিয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনায় যাওয়ার আগে আসুন আমরা দেখি যে, তথাকথিত প্রগতি, নারী-স্বাধীনতা, নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা সমাজকে বা নারীকে কী দান করেছে।

বর্তমান যুগে, বিশেষত পাশ্চাত্য-বিশ্বে নারীকে তাঁর নিজের ভাগ্যনিয়ন্তা রূপে আখ্যায়িত করা হয়। সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারী পুরুষের সাথে তাল-মিলিয়ে এবং অনেকক্ষেত্রে নারীকে পুরুষের তুলনায় অধিকতর যোগ্য বা efficient বলেও চিহ্নিত করা হচ্ছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সত্যিই কি নারী লিঙ্গ-বৈষম্যকে অতিক্রম করে পুরুষের সমান মর্যাদা লাভ করতে পেরেছে? ‘কলঙ্কময় অতীতের’ নিগ্রহ ও দমন-নিপীড়ন থেকে রক্ষা পেয়েছে? তথাকথিত নারী-স্বাধীনতা কি নৈতিকতা সম্বৃদ্ধ শান্তি পূর্ণ একটি নতুন সমাজ-ব্যবস্থার ইঙ্গিত প্রদান করে? সত্যিই কি নারী প্রকৃত সামাজিক ন্যায়-বিচার লাভে সমর্থ হয়েছে? আমরা যদি বর্তমান পাশ্চাত্য-সমাজের দিকে তাকাই তাহলে এর উত্তর হবে: ‘না’। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নারী তাঁর অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে সমর্থ হলেও পাশ্চাত্যের সমাজ-ব্যবস্থা আজ এক ভয়াবহ সঙ্কটের সম্মুখিন। তাই এককালের ‘সেকেলে’ বা ‘out dated family concept’ বা পারিবারিক প্রথা নিয়ে সমাজবিজ্ঞানীগণ নতুন করে ভাবতে শুরু করেছেন। নারী-নির্যাতন, শিশুহত্যা, পতিতাবৃত্তি, ধর্ষণ, বিবাহ-বিচ্ছেদ, লিভিংটুগেদার, মাদকাসক্তি, কুমারী-মাতৃত্ব বা single mother, ইত্যাদি সমস্যা আজ পাশ্চাত্য-সমাজকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। কেবল পাশ্চাত্য বা উন্নত বিশ্বই নয়, আজ আমাদের সমাজেও এ-সকল ব্যাধির ক্রমশ সংক্রমণ ঘটছে। বাহ্যিক চাকচিক্য আর উন্নতির খোলস ভেদ করতে পারলেই আমরা সেই অন্তর্নিহিত সমস্যাগুলো দেখতে পাই। প্রচলিত সাধারণ ধারণায় বিংশ শতাব্দি, বিশেষ করে দ্বিতীয়-বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময় থেকে বর্তমানকাল পর্যন্ত সময়কে নারী স্বাধীনতার স্বর্ণযুগ বলে আখ্যায়িত করা হলেও এক সমীক্ষায় দেখা যায় যে, এই সময়ে বিশ্বে নারী-নির্যাতন বৃদ্ধি পেয়েছে শতকরা পঁচিশ ভাগ। এ বিষয়ে এখানে কয়েকটি জরিপের উল্ল্যেখ করা হলোঃ

  • (১) গর্ভপাত:

    ১৯৬৮ সালে ইংল্যাণ্ডে গর্ভপাতকে বৈধতা প্রদান করার পর সেখানে কেবল রেজিস্টার্ড গর্ভপাতের ঘটনাই বৃদ্ধি পেয়েছে দশগুণ। এর মধ্যে মাত্র শতকরা একভাগ (১%) স্বাস্থ্যগত কারণে আর বাকী ৯৯%-ই অবৈধ গর্ভধারণের কারণে ঘটেছে। ১৯৬৮ সালে যেখানে ২২,০০০ রেজিস্টার্ড গর্ভপাত ঘটানো হয় সেখানে ১৯৯১ সালে এক লক্ষ আশি হাজার আর ১৯৯৩ সালে তা দাঁড়ায় আট লক্ষ উনিশ হাজারে। এর মধ্যে পনের বছরের কম বয়সী মেয়ের সংখ্যা তিন হাজার। এটা তো গেল যুক্তরাজ্যের অবস্থা। এখন আসুন যুক্তরাষ্ট্র বা আমেরিকার দিকে দৃষ্টি দেয়া যাক। সেখানকার পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ। রেজিস্টার্ড পরিসংখ্যান অনুযায়ী কেবলমাত্র ১৯৯৪ সালেই যুক্তরাষ্ট্রে দশ লক্ষ গর্ভপাত ঘটানো হয়। The Alan Guttmachere Institute নামের একটি গবেষণা-প্রতিষ্ঠানের মতে প্রকৃত গর্ভপাতের সংখ্যা উক্ত সংখ্যার তুলনায় ১০%-২০% বেশি। এক্ষেত্রে কানাডার পরিস্থিতি কিছুটা ‘ভালো’। অর্থাৎ, যুক্তরাষ্ট্রের অর্ধেক। তবে জাপানের সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিগুন । অর্থাৎ, জাপানে প্রতি বছর প্রায় বিশ লক্ষ রেজিস্টার্ড গর্ভপাত ঘটানো হয়ে থাকে। তথাকথিত সভ্য-জগতে ‘ইচ্ছার স্বাধীনতা’-র জন্য বিগত ২৫ বছরে এক বিলিয়ন অর্থাৎ দশ কোটিরও অধিক ভ্রুণকে হত্যা করা হয়। উক্ত সংখ্যা কেবলমাত্র রেজিস্টার্ড পরিসংখ্যান থেকে নেয়া হয়েছে । প্রকৃত সংখ্যা আরো ভয়াবহ। ‘বর্বরযুগে’ কন্যা-সন্তানদের হত্যা করা হতো অর্থনৈতিক কারণে। কিন্তু আজ তথাকথিত সভ্য-জগতে ব্যাভিচার, অবৈধ-মিলন আর অনৈতিকতার চিহ্ন মুছে ফেলতে এইসব হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে। এ-সবই হলো বেপর্দা আর নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশার কুফল।

  • (২) ধর্ষণ:

    ধর্ষণের প্রকৃত সংখ্যা জানা সহজ নয়। অনেক ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগী এ-বিষয়ে রিপোর্ট করে না। ফলে, যে-সংখ্যা পাওয়া যায়, বাস্তবে তা অনেক বেশি ঘটে। ব্রিটিশ পুলিশের মতে ১৯৮৪ সালে, এই এক বছরে, বৃটেনে ২০,০০০ (বিশ হাজার)-এর অধিক নিগ্রহ এবং ১৫০০ (পনের শ’) ধর্ষণের ঘটনা রেকর্ড করা হয়। The London Rape Crisis Center -এর মতে বৃটেনে প্রতিবছর অন্তত পাঁচ থেকে ছয় হাজার ধর্ষণের ঘটনা রেকর্ড হয়ে থাকে, আর প্রকৃত সংখ্যা তার চাইতেও বেশি। ১৯৯৪ সাল নাগাদ এই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৩২,০০০ হাজারে। উক্ত সংস্থার মতে “If we accept the highest figures, we may say that, on average, one rape occurs every hour in England.” মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিস্থিতি সবচাইতে ভয়াবহ। এখানে বিশ্বের সর্বাধিক সংখ্যক ধর্ষণের ঘটনা ঘটে থাকে। সে সংখ্যা জার্মানীর সংখ্যার চাইতে চারগুণ, বৃটেনের চাইতে ১৮ গুণ আর জাপানের চাইতে প্রায় বিশগুণ বেশি। সবচাইতে উদ্বেগজনক এবং বাস্তবতা এই যে, ৭৫% ভাগ ধর্ষণের ঘটনাই ঘটে থাকে পূর্ব-পরিচিতের দ্বারা আর ১৬% নিকট-আত্মীয় বা বন্ধুর দ্বারা। National Council for Civil Liberties নামক সংস্থার মতে ৩৮% ক্ষেত্রে পুরুষ তাঁর অফিসিয়াল ক্ষমতা বা কর্তৃত্ব প্রয়োগ করে নারীকে ধর্ষণ করে থাকে। আর ৮৮% মহিলা কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির স্বীকার হয়ে থাকেন। এই হলো তথাকথিত উন্নত ও নারী-স্বাধীনতার দাবীদার দেশগুলোর অবস্থা।

  • (৩) বিবাহ-বিচ্ছেদ:

    বিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে বিবাহপূর্ব সহবাস এবং ‘Live Together’ -এর প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। ১৯৬০ সালে জন্ম গ্রহণকারী বৃটেনের নারীদের প্রায় অর্ধেক প্রাক-বিবাহ সহবাসের অভিজ্ঞতা অর্জন করে। এর পক্ষে তাঁদের যুক্তি ছিল যে, এর ফলে নর-নারী একে অপরকে ভালোভাবে জানতে পারে এবং এর পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে তা স্থায়ীত্ব লাভ করে থাকে। কিন্তু বাস্তবতা তার সম্পূর্ণ বিপরীত। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ইংল্যাণ্ডেই সর্বাধিক বিবাহ-বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে থাকে। ১৯৮৩ সালে যুক্তরাজ্যে যেখানে এক লক্ষ সাতচল্লিশ হাজার বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে, ১৯৯৪ সালে তার সংখ্যা দাঁড়ায় এক লক্ষ পঁয়ষট্টি হাজারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৭০ সালে বিবাহ-বিচ্ছেদের সংখ্যা ছিল সাত লক্ষ আট হাজার, আর ১৯৯০ সালে তা দাঁড়ায় এগার লক্ষ পঁচাত্তর হাজারে। পক্ষান্তরে, বিবাহের হারে তেমন কোনো উল্ল্যেখযোগ্য-সংখ্যক পরিবর্তন হয়নি।

  • (৪) কুমারী-মাতৃত্ব ও একক-মাতৃত্ব:

    পশ্চিমা-বিশ্বের তথাকথিত “নারী স্বাধীনতার” আরেক অভিশাপ হলো কুমারী-মাতৃত্ব। বৃটেনে এক জরিপে দেখা যায় যে, ১৯৮২ সালে যেখানে কুমারী-মাতার সংখ্যা ছিল নব্বই হাজার, ১৯৯২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় দুই লক্ষ পনের হাজারে। ১৯৯২ সালে জন্ম নেওয়া শিশুদের ৩১% ছিল অবিবাহিতা মাতার সন্তান। এই অবিবাহিতা বা কুমারী-মাতাদের মধ্যে আড়াই হাজারের বয়স ১৫ (পনের) বছরের নীচে। বৈধ বিবাহের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া শিশুর তুলনায় অবৈধ শিশুর জন্মের হারও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপরদিকে, অবৈধভাবে জন্ম নেওয়া শিশুর দায়ভার অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বর্তাচ্ছে কুমারী-মাতা বা একক-মাতৃত্বের (single mother) উপর। নারীর উপর কুমারী-মাতৃত্বের এই দায়ভার পশ্চিমা-বিশ্বে নারী-নিপীড়নের এক নিষ্ঠুর উদাহরণ।

  • (৫) মদ্যপান ও ধুমপান:

    পশ্চিমা ধাঁচের নারী-পুরুষের সমানাধিকার নারী সমাজের মধ্যে অনেক মন্দ অভ্যাসের জন্ম দিয়েছে। একসময় মদ্যপান ও ধূমপানকে কেবল পুরুষের বদঅভ্যাস হিসাবে চিহ্নিত করা হতো। কিন্তু আজ নারীও তাতে আসক্ত হয়ে পড়েছে। The Sunday Times – এর এক রিপোর্টে দেখা যায় যে, নারীরা “নির্দ্ধারিত মাত্রার” চাইতে অধিক পরিমাণে মদ্যপানে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে। আর ধুমপানের ক্ষেত্রে এর সংখ্যা এবং পরিমাণ পুরুষের সমান সমান।

  • (৬) বিজ্ঞাপনে ও পর্নোগ্রাফীতে:

    তথাকথিত নারী-স্বাধীনতার নামে নারীকে আজ যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে বিজ্ঞাপন-সামগ্রী এবং পর্নোগ্রাফীতে। পণ্যের বিজ্ঞাপনে নারী যেন আজ একটি অপরিহার্য বিষয়। সম্প্রতি দি ওয়াশিংটন পোষ্ট পত্রিকার বরাত দিয়ে আমাদের ঢাকার দৈনিক জনকন্ঠে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়,

    “আমেরিকার মেয়েরা যৌন-আবেদনময়ী হওয়ার পরিবেশেই বড় হচ্ছে। তাঁদের সামনে যেসব পণ্য ও ছবি তুলে ধরা হচ্ছে তাতে তাঁরা যৌনতার দিকেই আকৃষ্ট হচ্ছে। মার্কিন সংস্কৃতি, বিশেষ করে প্রধাণ প্রধাণ প্রচার-মাধ্যমে মহিলা ও তরুনীদের যৌন-ভোগ্য-পণ্য হিসেবে দেখানো হচ্ছে। আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল এসোসিয়েশন (এপিএ) টাষ্ক ফোর্স অন দ্যা সেক্সুয়ালাইজেশন অব গার্লস-এর সম্প্রতি প্রকাশিত এক রিপোর্টে একথা বলা হয়। রিপোর্টের প্রণেতাগণ বলেন, টিভি-শো থেকে ম্যাগাজিন এবং মিউজিক-ভিডিও থেকে ইণ্টারনেট পর্যন্ত প্রতিটি প্রচার-মাধ্যমেই এই চিত্রই দেখা যায়। …………. প্রণেতাদের মতে, যৌনরূপদান তরুনী ও মহিলাদের তিনটি অতি সাধারণ মানসিকস্বাস্থ্য সমস্যার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। এগুলো হলো পেটের গোলযোগ, আত্মসম্মানহানিবোধ এবং মনমরা ভাব। …………….. লিজ গুয়া নামের একজন মহিলা বলেন, তিনি তাঁর ৮ (আট) বছরের মেয়ে তানিয়ার উপযোগী পোশাক খুঁজে পেতে অসুবিধায় রয়েছেন। প্রায়ই সেগুলো খুবই আঁটসাঁট, নয়তো খুবই খাটো। যৌন-আবেদন ফুটিয়ে তোলার জন্যই এ ধরনের পোশাক তৈরি করা হয়।” (দৈনিক জনকন্ঠ, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০০৭)

এতক্ষণ পর্যন্ত তথাকথিত নারী-স্বাধীনতার নামে পশ্চিমা-জগতের ঘুনেধরা সমাজের একটি ভয়ঙ্কর চিত্র আপনাদের সম্মুখে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। বাস্তবচিত্র তার চাইতেও আরো অনেক বেশি ভয়াবহ। অর্থনৈতিক চাকচিক্য আর প্রযুক্তিগত উন্নতির আড়ালে তথাকথিত ‘আধুনিক’ বিশ্বের সমাজ ও পারিবারিক ব্যবস্থায় আজ ধ্বস নেমেছে। নারী-স্বাধীনতা ও ব্যক্তি-স্বাধীনতার নামে নারী আজ পদে পদে লাঞ্ছিত ও নিগৃহীত হচ্ছে, ব্যবহৃত হচ্ছে’ ভোগের সামগ্রী হিসাবে। এথেকে মুক্তির একমাত্র উপায় ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা ও জীবন-নির্ধারণের সঠিক ও পূর্ণ অনুসরণ।

আমি আমার বক্তব্যের শুরুতে পবিত্র কুরআন মজিদের সূরা আহযাবের যে আয়াতটি তেলাওয়াত করেছি সেখানে সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ্‌ তা’লা নবী করিম হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এবং মুমেনগণকে এই নির্দেশ দিয়েছেন যে, তাঁদের স্ত্রী এবং কন্যাগণ যেন চাদর দ্বারা নিজেদের মুখমণ্ডল ও শরীর ঢেকে রাখে। যার মধ্যে তাঁদের জন্য রয়েছে স্বাচ্ছন্দ্য এবং প্রশান্তি।

অনেকে বলে থাকেন যে, প্রকৃত পর্দা হলো মনে। মন ঠিক থাকলে নাকি দেহের পর্দার প্রয়োজন হয় না। ইসলামও একথা স্বীকার করে যে, মনের পর্দা খুবই জরুরী, পবিত্র কুর’আনও মনের পর্দার উপর জোর দিয়েছে। কিন্তু, মন তো দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন নয়। দেহকে কেন্দ্র করেই মনের অস্তিত্ব। তাই, সবার আগে প্রয়োজন দেহের পর্দা।

আমি শুরুতেই উল্ল্যেখ করেছি যে, অনেকে ইসলামের পর্দা-ব্যবস্থাকে সঠিকভাবে না বুঝার কারণে একে নানাভাবে সমালোচনা করে থাকেন। তাঁরা মনে করেন যে, এ-ব্যবস্থার মাধ্যমে মুসলিম-সমাজে নারীদের উপরে একপ্রকার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। যার ফলে, তাঁরা মানবীয় কার্যাদিতে ইচ্ছামত অংশগ্রহণ করতে পারে না। কিন্তু এই ধারণা ঠিক নয়। পর্দাপ্রথা এবং নারী-পুরুষের পৃথকীরণের ইসলামী ধারণাকে বুঝতে হলে তা বুঝতে হবে নারীদের সতীত্বের পবিত্রতা রক্ষার্থে এবং সমাজে নারীদের মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখার স্বার্থে গৃহীত ব্যবস্থাদির প্রেক্ষাপটে, যার মাধ্যমে ঐসব উদ্দেশ্য লঙ্ঘনের আশঙ্কা তিরোহিত হয়।

পবিত্র কুরআনে সূরা নূরের ৩১ ও ৩২ নং আয়াতে আল্লাহ্‌ তা’লা বলেন,

قُل لِّلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ذَلِكَ أَزْكَى لَهُمْ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ

অর্থাৎ: “তুমি মুমেনদিগকে বল, তাহারা যেন নিজেদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং তাহাদের লজ্জাস্থান সমূহের হিফাযত করে। ইহা তাহাদের জন্য অত্যন্ত পবিত্রতার কারণ হইবে। নিশ্চয় তাহারা যাহা করে সেই সম্বন্ধে আল্লাহ ভালভাবে অবগত আছেন।” (২৪:৩১)

وَقُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَى جُيُوبِهِنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاء بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاء بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُوْلِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَى عَوْرَاتِ النِّسَاء وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِن زِينَتِهِنَّ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَا الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ

অর্থাৎ: “এবং তুমি মুমেন নারীদিগকে বল, তাহারাও যেন নিজেদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং নিজেদের লজ্জাস্থান সমূহের হিফাযত করে এবং নিজেদের সৌন্দর্যকে প্রকাশ না করে, কেবল উহা ব্যতিরেকে যাহা স্বাভাবিক ভাবেই প্রকাশ পায়; এবং তাহারা ওড়নাগুলিকে নিজেদের বক্ষদেশের উপর টানিয়া লয়, এবং তাহার যেন তাহাদের স্বামীগণ অথবা তাহাদের পিতাগণ অথবা তাহাদের স্বামীর পিতাগণ অথবা তাহাদের পুত্রগণ অথবা তাহাদের স্বামীর পুত্রগণ অথবা তাহাদের ভ্রাতাগণ অথবা তাহাদের ভ্রাতুষ্পুত্রগণ অথবা নিজেদের ভগ্নি পুত্রগণ অথবা তাহাদের সমশ্রেণীর নারীগণ অথবা তাহারা যাহাদের মালিক হইয়াছে তাহাদের ডান হাত অথবা পুরুষদের মধ্য হইতে যৌন কামনা বিহীন অধীনস্থ ব্যক্তিগণ অথবা নারীদের গোপন বিষয় সমূহ সম্বন্ধে অজ্ঞ বালকগণ ব্যাতীত অপর কাহারও নিকট নিজেদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে।” (২৪:৩২)

নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা এবং নর-নারীর মধ্যে চুপিসারে সংঘটিত সব অনৈতিক ক্রিয়াকলাপের পরিণাম কি ভয়ঙ্কর হতে পারে, তা আমি ইতিপূর্বে আপনাদের সম্মুখে উপস্থাপন করেছি। আমরা দেখেছি যে, আপাত দৃষ্টে নারী-পুরুষ উভয়ের সম্মতিতে সংঘটিত অপরাধের ফল নারীকেই এককভাবে ভুগতে হয়েছে বেশি। তাই, ইসলাম নারী-পুরুষ উভয়কে শুধু পরস্পরের প্রতি লোলুপ দৃষ্টি দিতেই বারণ করেনি, অধিকন্তু সকল প্রকারের দৈহিক সংস্পর্শ থেকেও বিরত থাকতে নির্দেশ প্রদান করেছে, যাতে করে অদম্য তাড়নার উদ্রেক ঘটতে না পারে। ইসলাম মনে করে “Prevention is better than the cure” অর্থাৎ, দুর্ঘটনা ঘটার আগে তার পথগুলো বন্ধ করাই শ্রেয়তর।

নারীদের কাছে ইসলাম এটাই প্রত্যাশা করে যে, তাঁরা শালীন ও সম্ভ্রমশীল পোশাক পরিধান করবে। তাঁদেরকে এই উপদেশও দেয়া হয়েছে যে, তাঁরা যেন এমনভাবে চলা-ফেরা না করে, যার দরুন অবাঞ্ছিত লোকেরা তাঁদের উপর কুদৃষ্টি দিতে পারে। কসমেটিকস্‌ লাগাতে বা অলঙ্কারাদি পড়তে বারণ করা হয়নি; বরং যা করতে বলা হয়েছে, তা হলো, সেগুলোর দ্বারা যেন গায়ের মাহরেম বা পরপুরুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা না হয়।

একজন নারী, যিনি তাঁর পোশাক ও চলা-ফেরায় পর্দার নিয়মাবলী বা ‘হিজাব’ পালন করে থাকেন, তিনি সাধারণত অন্য পুরুষ দ্বারা অসম্মানিত ও লাঞ্ছিত হন না। এইভাবে, একজন মুসলিম নারী ‘হিজাব’ বা পর্দা-পালনের মাধ্যমে সেসব অনেক সমস্যা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে পারেন, যা আজ পশ্চিমা জগতের নারীরা অহরহ মোকাবিলা করছেন। আমরা যাঁরা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে মোটামুটি বড় ছিলাম, তাঁদের নিশ্চয় মনে থাকবে যে, সেই সময়ে অনেক মহিলা, বিশেষ করে কম-বয়সী মেয়েরা বোরকা পড়তে শুরু করেছিল। এর কারণ ছিলঃ দখলদার পাক-বাহিনী ও তার দোসরদের কু-দৃষ্টি থেকে নিজেদের আড়াল করে রাখা। তাছাড়া, এরকম ধারণাও ছিল যে, যারা বোরকা পরিধান করে তাদেরকে ওরা (পাক-বাহিনী) সম্মানের চোখে দেখে থাকে। এই বিষয়টি থেকেও বুঝা যায় যে, পর্দা মহিলাদের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

ইসলাম নিঃসন্দেহে পর্দাপ্রথার মাধ্যমে নারী জাতিকে মর্যাদা ও সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত করেছে এবং তাঁকে এমন এক নিরাপত্তা দান করেছে, যার ফলে একজন নারী অধিকতর স্বাচ্ছন্দে তাঁর কাজকর্মসমূহ সমাধা করতে পারে। পর্দা মুসলিম নারীকে প্রশান্তি দান করেছে। আমরা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করে থাকবো যে, পর্দা বা হিজাব পালনকারী একজন নারী অধিকতর নিরুদ্বেগ ও স্বাচ্ছন্দপূর্ণ জীবন যাপন করে থাকেন। এটা এই কারণে যে, আত্ম-মর্যাদাশীল নারী হওয়ার জন্য ইসলাম দৈহিক অবয়বের গুরুত্বকে কমিয়ে দিয়েছে।

একজন মুসলিম নারী তাঁর প্রতিভা ও মননশীলতার বিকাশের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ স্বাধীন। এজন্য তাঁকে কোনোরূপ শারীরিক সৌন্দর্যের উপর নির্ভর করতে হয় না, বাজারের পণ্য হিসেবে বিবেচিত হতে হয় না। একই সাথে একজন নারী সঠিকরূপে হিজাব বা পর্দা-পালনের মাধ্যমে সমাজের প্রতি তাঁর দায়িত্বও পালন করে থাকেন। কেননা, ইসলাম কেবল ব্যক্তির জন্য দিক-নির্দেশনা প্রদান করে না, বরং সমাজের কল্যাণের জন্যও দিক নির্দেশনা প্রদান করে থাকে। আর এক্ষেত্রে পর্দাপ্রথা সমাজের নৈতিক পরিস্থিতিকে সুরক্ষা করে থাকে। একজন মুসলিম নারীর দায়িত্ব কেবল স্ত্রী, মাতা বা কন্যা হিসেবেই নয়, বরং সমাজে নৈতিকতার মানদণ্ড রক্ষায়ও পুরুষের পাশাপাশি তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারেন। আর এইভাবে একজন পর্দানশীন মুসলিম নারী নিজের ও সমাজের কল্যাণ-সাধনের মাধ্যমে মহান আল্লাহ্‌ তা’আলার নৈকট্য লাভ করে থাকেন।

সবশেষে হযরত খলীফাতুল মসীহ রাবে (রাহে.)-এর একটি উদ্বৃতি তাঁর বিখ্যাত পুস্তক “Islam’s Response to Contemporary Issues” থেকে প্রদান করছি:

হুজুর (রাহে.) বলেন,

“ইসলামের মতে, নারীকে অবশ্যই যথেচ্ছ ব্যবহার করা এবং ভোগের সামগ্রীরূপে ভুমিকা পালন করা থেকে মুক্ত করতে হবে। তাঁদের হাতে অবশ্যই এমন যথেষ্ট সময় থাকতে হবে, যাতে তাঁরা তাঁদের গৃহের প্রতি যে দায়িত্ব এবং মানবজাতির ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রতি যে দায়িত্ব তা পালন করতে পারে।” (প্রাগুক্ত: ৯৩ পৃষ্ঠা)

অতএব, আমি একথা অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে বলতে পারি যে, পর্দা মোটেও পশ্চাৎপদতা বা নারীকে শৃঙ্খলিত করার কোনো পন্থা নয়। বরং, পর্দা নারীকে মর্যাদাপূর্ণ আসনে আসীন করেছে। পশ্চিমা-বিশ্বে আহ্‌মদী মহিলাগণ প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও পর্দা পালন করছেন। পর্দা-পালন করেও উচ্চ-শিক্ষা থেকে শুরু করে তাঁদের উপর অর্পিত সকল দায়িত্ব তাঁরা সুষ্ঠভাবে পালন করছেন। আদর্শবানকে মানুষ সব সময়ই সম্মানের চোখে দেখে থাকে। অতএব, স্বীয় আদর্শকে একবার প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে আর কোনো সমস্যার অবকাশ থাকে না। আমাদের প্রয়াত ইমাম হযরত খলীফাতুল মসীহ্‌ রাবে (রাহ.) এবং আমাদের বর্তমান ইমাম হযরত খলীফাতুল মসীহ্‌ আল্‌ খামেস (আই:) আহ্‌মদী মহিলাগণকে পর্দা-পালনের দিকে বিশেষ তাগিদ প্রদান করেছেন। একজন আহ্‌মদী হিসেবে প্রত্যেক আহ্‌মদী মহিলার খলিফার আদেশ পালন করা অবশ্য কর্তব্য।

মহান আল্লাহ্‌ তা’লা সংশ্লিষ্ট সবাইকে পর্দার প্রকৃত তাৎপর্য উপলব্ধি করে তা পালন করার শক্তি দান করুন, আমীন।

তথ্য সূত্র
  • হযরত খলীফাতুল মসীহ্‌ রাবে (রাহে.) রচিত "Islam's Response to Contemporary Issues"
  • মরহুম আলহাজ্ব আহ্‌মদ তৌফিক চৌধুরী রচিত 'কালে কালে কাল গণনা- যুগে যুগে নারী'
  • www.islamiska.org/e/chap2.htm

  • www.alislam.org/books/pathwaytoparadise/LAJ-chap4.htm

  • দৈনিক জনকন্ঠ

আহ্‌মদীয়া মুসলিম জামা'ত, বাংলাদেশের ৮৩তম সালানা জলসায় (২০০৭) প্রদত্ত লেখকের লিখিত বক্তৃতা, যা পরবর্তীতে লেখক স্বয়ং কিছুটা সংযোজন ও পরিবর্ধন করেছেন। পাক্ষিক আহ্‌মদী - ৩১শে মার্চ ২০০৭