খলীফা জীবন্ত ধর্মের প্রাণ

কৃষিবিদ মোহাম্মদ ফজলে-ই-ইলাহী

আল্লাহ্ তা’আলা তাঁর পবিত্র গ্রন্থ আল কুরআনে সূরা নূরের ৭ম রুকুতে বলেন,

“তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে এবং পুণ্য কাজ করে তাদের সাথে আল্লাহ্ তা’আলা অঙ্গীকার করেছেন যে, নিশ্চয় তিনি পৃথিবীতে তাদের মধ্যে খিলাফত প্রতিষ্ঠিত করবেন যেভাবে তিনি খিলাফত প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন তাদের পূর্ববর্তীদের মধ্যে………..।”

সুতরাং কোন জীবন্ত ধর্মে খলীফা বিদ্যমান থাকা প্রথম শর্ত। প্রকৃত ইসলামের অনুসারী জামাতে আহ্‌মদীয়ায় সেই খলীফার অস্তিত্ব আছে তা সর্বজনবিদিত। অতএব এই শর্তমতে আহ্‌মদীগণই জীবন্ত ধর্ম ইসলামের ওপর বিশ্বাসের দাবীদার। তাহলে পৃথিবীর আর সব ধর্মমত জীবিত না মৃত তার বিচার ধর্মজ্ঞানী বিজ্ঞদের হাতেই তুলে দিলাম, এ ব্যাপারে এর চেয়ে অধিক কিছু বলার কোন প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। বাকীটুকু বিবেচনার জন্য স্ব স্ব জ্ঞানই যথেষ্ট।

খলীফার অস্তিত্ব বিদ্যমান থাকা, তাঁর প্রয়োজনীয়তা, তাঁর কল্যাণ ও তাঁকে না মানার কারণে ভয়াবহ পরিণাম নিয়ে আমাদের অনেকেই বিভিন্নজনকে নানাভাবে বুঝানোর চেষ্ট করেছেন। কিন্তু হায়! জগদ্বাসীর অনেকেই তাঁকে উপেক্ষীত বস্তুর ন্যায় প্রত্যাখ্যান করেছে। সুতরাং এখন আমাকে কিছু রূঢ় ও কঠিন শব্দ দিয়েই আজকের এই লেখা শুরু করতে হচ্ছে।

“পৃথিবীতে একজন সতর্ককারী আসিয়াছেন কিন্তু পৃথিবী তাহাকে গ্রহণ করে নাই পরন্তু খোদা তাহাকে গ্রহণ করিবেন এবং মহাপরাক্রমশালী আক্রমণ সমূহ দ্বারা তিনি তাহার সত্যতা প্রকাশ করিবেন।”

এই হলো হযরত ইমাম মাহ্‌দী (আঃ)-এর সাথে খোদার অঙ্গীকার। তাঁকে গ্রহণ না করার কারণে এখানে মহাপরাক্রমশালী আযাব দ্বারা মানুষকে শাসন করার কঠিন ইঙ্গিত রয়েছে। যুগে যুগেই খোদা তা’আলা তেমনটি করেন, ইহা তাঁর অনড় বিধান। এজন্য তিনি বড় বড় শক্তি ও জাতিসমূহকে মাটির ধ্বংসস্তুপের গহ্বরে বিলীন করে দিয়েছেন। এমন সব সত্যগাঁথা আল-কুরআনে বিশদ বর্ণনাসহ বিদ্যমান। এর থেকে সবক নেয়াই হচ্ছে খোদার শিক্ষা। প্রয়োজনে তিনি এবারও তেমনটি করবেন। উল্লেখিত ভবিষ্যদ্বাণী এরই ইশারা মাত্র। তবে হে বন্ধুগণ! এই কারণে আমি কিন্তু মোটেই উল্লসিত কিংবা উৎফুল্ল নই। জামানার খলীফাকে না মানার কারণে খোদার আযাব গ্রাসে পৃথিবী তছনছ হউক কিংবা ছিন্নভিন্ন হয়ে যাক তেমনটি কিন্তু আমার মোটেই কামনা নয় এবং এরজন্য আমি পুলকিতও হতে পারি না। কেননা আমাদের প্রিয় ইমাম হযরত মসীহ্‌ মাওউদ ইমাম মাহ্‌দী (আঃ) বলেছেন,

“আমি পৃথিবীর মানুষকে তদ্রূপ ভালবাসি যেমনটি কিনা কোন মাতা তার সন্তানকে ভালবাসেন, বরং তার চেয়েও বেশি।”

তাহলে মানুষের কষ্ট প্রাপ্তিতে আমার তো আনন্দ হওয়ার কথা নয়। এটা তো নির্দয় হৃদয়ের কাজ। কিন্তু সত্য এটাই যে, খোদা তাঁর পবিত্র প্রতিনিধির সত্যতা প্রতিষ্ঠাকল্পে তা-ই করবেন যা তিনি ইচ্ছা পোষণ করেন। এ ব্যাপারে তিনি কোন শক্তিকেই ছাড় দিবেন না। কেননা

“নিশ্চয় আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল অবশ্যই বিজয় লাভ করবে।” (আল কুরআন)

তবে শাস্তি প্রদানে খোদা কখনও অস্থির নন। তাই আমি আবার বন্ধুগণের খেদমতে কিছু বলতে চাই।

পবিত্র কুরআনে খোদার উল্লেখিত প্রথম বাণী হলো,

“পাঠ কর তোমার প্রভুর নামে”। (সূরা আলাক)

অক্ষর জ্ঞানহীন এক রসূলকে তিনি সর্বপ্রথম আদেশ দিলেন পাঠ করতে। আমাদের কাছে ব্যাপারটা একেবারেই হয়তো বেখাপ্পা মনে হয়। কিন্তু খোদার এই ক্ষুদ্র বাণীর বিন্দুতে রয়েছে সিন্ধুর গভীরতা। তিনি বলেছেন,

“হে প্রিয় মুহাম্মদ! তুমি পাঠ কর এই জগতময় সৃষ্টির রহস্যকে। সততঃ তুমি এর মাঝে মহাপরাক্রমশালী এক স্রষ্টার সন্ধান পাবে।”

সুতরাং এই শিক্ষা কেবল তাঁর জন্য (সাঃ) অথবা তখনকার জন্যই নয়। বরং এই বাণী সর্বকালের সর্বজনের জন্যই এক মহান শিক্ষা। আজ যারা সেই খোদারই প্রেরিত পুরুষ হযরত মসীহ্ মাওউদ (আঃ)-কে জানতে ও চিনতে অসমর্থ হচ্ছেন তারাও এই নির্দেশের আলোকে পরখ করে নিতে পারেন আদৌ তাঁর দাবি মিথ্যা কিনা।

প্রবৃত্তির অস্থিরতা, নানাবিধ যন্ত্রণার তাড়নায় মানব অন্তরের চিৎকার, বন্যা-ভূমিকম্পের কড়াল গ্রাস, যুদ্ধাঘাতে মানব রক্তের ঢেউ, আসমান ও জমিনের অস্বাভাবিক তান্ডবলীলা, অচেনা রোগ বালাই এর ভয়ংকর থাবা, সাগর জলের মমত্বহীন আচরণ, সম্পদ লাভ লোভের শিকারে পড়ে বীভৎস চিত্তে মানবহত্যা, সংস্কৃতি বিকৃত জৌলুসে চরিত্র স্খলন। ইত্যাকার প্রতিটি ঘটনা চিত্র থেকেই আপনি হযরত মসীহ্ মাওউদ (আঃ)-এর দাবির সত্যতা জানবার ঈঙ্গিত পাবেন। প্রকৃতির এই প্রতিটি ঘটনাকে জিজ্ঞাসা করুন তাহলে বুঝবেন তারা প্রত্যেকেই ঐ সত্যের পক্ষে সাক্ষ্য দিচ্ছে। কিন্তু তৎপরও যদি আপনি আকাশের এই পয়গামকে না বুঝার ভান করে অলসতা প্রদর্শন করেন তবে আপনি কি করে আশা রাখতে পারেন যে, সেই খোদার আযাব আপনাকে হেনস্তা করবে না? কালে কালে যা হয়েছে আজও তা-ই হবে, এ ব্যাপারে অনুপরমাণু পরিমাণও ব্যতিক্রম হবে না, কেননা তাহলে খোদা তাঁর বান্দার প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে পড়বেন, এক্ষেত্রে খোদার কানুন হচ্ছেঃ

“তিনি কখনও পৃথিবীতে আযাব প্রেরণ করেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত না তিনি তাঁর পক্ষ হতে সতর্ককারী পাঠান।” (সূরা বনী ইসরাঈলঃ ১৬)

খোদা তা’আলা তাঁর নামে মিথ্যা রটনাকারীর শাস্তি সম্পর্কে বলেনঃ

“এবং সে যদি কোন মিথ্যা রচনা করে আমার প্রতি আরোপ করত, তাহলে নিশ্চয় আমরা তাকে ডান হাতে ধৃত করতাম অতঃপর আমরা তার জীবন শিরা কর্তন করে দিতাম।” (সূরা আল্‌ হাক্‌কাঃ ৪৫-৪৭)

এ ব্যাপারে বিবেকবানদেরকে কিছুটা চিন্তা করতে অনুরোধ করছি।

বন্ধুগণ! খোদার পক্ষ থেকে কোন মানুষের আগমন এবং তার দ্বারা খিলাফত প্রতিষ্ঠা কোন সাধারণ কাজ নয়। এ নেয়ামত চায় বহুজনে কিন্তু পায় মাত্র কয়েকজনে। শত ক্রন্দনেও মানুষের ললাটে তা জুটে না। তারা সত্যই ভাগ্যবান, যারা এই উৎসের সন্ধান পেয়েছে। আর তারা হতভাগ্য যারা এর কদর করতে ও একে চিনে নিতে ভুল করছে। কেননা এগুলো হলো খোদা তাআলার হাতে সংরক্ষিত আসমানী চারটি পুরস্কার। (সূরা আন্‌ নিসাঃ ৭০)

খোদা তা’আলা যখন ইচ্ছা পোষণ করেন যে তিনি তাঁর অনুকম্পার জলধারা দ্বারা তাঁর জমিনকে সিক্ত করবেন তখনই তিনি এই পরিকল্পনার মধ্যমে মর্ত্যরাজ্যে নেমে আসেন এবং মানুষের আত্মার অতি কাছে এসে তিনি নিজ অস্তিত্বের কড়া নাড়তে থাকেন। কিন্তু তখন তাঁর সৃষ্ট মানুষ সকল প্রকার অনভিপ্রেত কর্মের দ্বারা জমিনকে কুৎসিত করে তুলে। খোদার জমিনে তারা অংশীবাদিতা পূর্ণ কর্মে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে। কুকর্মের প্রভাবে পৃথিবীকে কলংকিত করে তুলে। হীনকর্ম সাধনে মানুষের বুদ্ধি অচল হয়ে পড়ে। ঠিক তখনই খোদা তাঁর প্রেরিতজনের মাধ্যমে পৃথিবীতে নেমে আসেন এবং খুব কাছ থেকে তিনি তাঁর বান্দাকে সাদরে ডাকতে থাকেন। বিবেক দিয়ে বিবেচনা করুন আজ পৃথিবীর ঠিক তদ্রুপই অবস্থা যা কিনা আমি উপরে বর্ণনা করার চেষ্টা করেছি।

খলীফা ও খিলাফত হলো ইত্যাকার ধ্বংসের হাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার একমাত্র নিয়ামক। ঐশী কর্ম মানুষকে উচ্চতর নৈতিক মার্গে পৌঁছে দেয়, মানুষের আত্মাকে পবিত্র রাজ্যে পরিণত করে। মানুষের হাহুতাশ ও হতাশাকে আশায় পরিণত করে মানুষকে মানুষ হয়ে বাঁচার বুদ্ধি শেখায়, এর অবলম্বন জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা পেয়ে জান্নাতে পদার্পনে সাহস পায়। এর পরশে জগতের তাবৎ অবক্ষয়সমূহ পুণ্যে পরিণত হয়। পরাজয়ের ঘন অন্ধকার থেকে মানুষ তখন সফলতার কিরণে বেরিয়ে আসে, মানুষের সকল “না” গুলি তখন “হ্যাঁ”-তে পরিণত হয়। তখন সত্যের বিপক্ষের অসুর শক্তিগুলি বিনাশপ্রাপ্ত হওয়ার পর সমাজ আবার ভালবাসার আনন্দ স্বাদ অনুভব করে। ইহা মানুষের কোন কিছুই নিতে আসে না, যদিও অজ্ঞগণ তা-ই মনে করে, পরন্তু ইহা মানুষকে অযাচিত হারে কেবল দিতেই থাকে, এ ধন এমন এক সম্পদ যার আধিক্যেই যত কল্যাণ, যে যত বেশি পায় সে তত সফল হয়। ইহা আত্মার এতমিনান। ইহা ধ্বংসপ্রাপ্ত পৃথিবীকে পুনরায় গড়ে তোলে। ইহা মানুষের ইচ্ছাকে জিঘাংসার স্তর হতে প্রেমের স্তরে নিয়ে আসে। মানুষের নফসকে আম্মারার (অবাধ্যতার) স্তর হতে মুতমাইন্না (শান্তি প্রাপ্তির) স্তরে উপনীত করে। এই ধন লাভ যে করেছে তার ইহকাল ও পরকাল শান্তি রাজ্যে পরিণত হয়েছে। সুতরাং এই উৎসের পথে ছুটে আসুন। এই পথ হতে বিচ্যুত হওয়া মানেই আত্মার অপমৃত্যু। সে অর্বাচীন, নাচার ও স্বীয় আত্মার শত্রু। অন্যায়ের গোলামী করবো না বলে সত্য ও ন্যায়ের সম্মুখে মাথা নত করবো না তা তো কখনো হতে পারে না। যে এমনটি করে সে মূর্খ, অপবিত্র এবং বিদ্বেষ পোষণকারী। সে অন্যায়ের লালনকারী ও সত্যের অপলাপকারী। পৃথিবীতে এমন নজির একটিও নেই যে, নিন্দুকেরা বিজয় লাভ করেছে। সুতরাং হে সাধুগণ! আসুন এবং বুদ্ধি ও জ্ঞানের বিচারে তাঁর সত্যাসত্য যাচাই করুন। মহান আল্লাহ্ পবিত্র কুরআনে বলেনঃ

তুমি বল, নিশ্চয় আমি আদিষ্ট হয়েছি যেন আমি তাদের মধ্যে প্রথম হই, যারা আত্মসমর্পনকারী। এবং তুমি আদৌ মুশরেকদের অন্তর্ভুক্ত হইওনা। (সূরা আল-আন’আমঃ ১৫)

বস্তুত আমি সেই সত্তার প্রতিই আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যাঁকে সনাক্তকল্পে আপনি শ্রেষ্ঠ আত্মসমর্পনকারী হতে পারেন। খোদা প্রদত্ত খেলাফতের এই নেয়ামতকে প্রত্যাখ্যান করে আপনি মোটেই নিরাপদ থাকতে পারেন না, আপনার অর্জিত পুণ্য, আপনার আত্মা ও বিশ্বাস, আপনার দেহ-মন কোন কিছুই শঙ্কামুক্ত থাকতে পারে না। জগতের ভয়ঙ্কর সব কর্মচিত্র প্রমাণ করে না যে আমরা কেউ নিরাপদে আছি। খোদার সন্তুষ্টি পুষ্ট হয়ে আমরা তাঁর আশিস ঘেরা কামরায় বাস করছি। না স্থলবাসী, না জলবাসী, কেউই নয়। এর কারণ একটাই, আর তা হচ্ছে আমরা তার প্রেরিত পুরুষকে মান্য করছি না। যামানার মসীহ্‌ হযরত ইমাম মাহ্‌দী (আঃ) বলেছেন,

হে জগদ্বাসী! তোমরা জেনে রাখ যে, আমি জগতে আবির্ভূত হয়েছি, খোদার ফেরেশ্‌তাগণ আমার সাথে আছেন। তাঁরা আমাকে অহর্নিশি সাহায্য করছেন। আমার আগমন বার্তাকে গ্রহণ না করার পরিণামেই আযাবসমূহের আগমন দ্রুত হয়েছে। এশিয়া ও ইউরোপের কোন কল্পিত খোদাই তোমাদের কাউকে এই আযাব থেকে বাঁচার জন্য সাহায্য করবে না, যদি তোমরা আমার অনুগামী না হও। পৃথিবীতে এমন কোন মিথ্যা দাবিকারক আছেন কি যিনি খোদার সামনে দাঁড়িয়ে, খোদাকে সাক্ষী রেখে খোদার পক্ষের একজন বলে দাবি করার সাহস রাখেন এবং তাঁকে না মানার পরিণতি সম্পর্কে এমনভাবে সতর্ক করেন? এহেন সাহস রাখা কেবল একজন সত্যবাদীর পক্ষেই সম্ভব।

যুগের এই ইমামের পক্ষে তাঁর খলীফা আজ বিশ্ব জুড়ে প্রতি গৃহ-দ্বারে শান্তির এই সওগাত পৌঁছানোর প্রয়াসে রত আছেন। তাহরীকে জাদীদ, ওযাকফে জাদীদ, ওয়াকফে নও, হাজারো মুদ্রণ কর্ম, এমটিএ ইত্যাদি কর্ম পরিকল্পনার মাধ্যমে খলীফায়ে ওয়াক্ত ভূপৃষ্ঠের এমন কোন দেশ নেই যেখানে ইসলামের সত্য আওয়াজ পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন না। পৃথিবীর আর সব ধর্মগুলি আজ বিচলিত হয়ে পড়েছে। হযরত ঈসা মসীহ (আঃ) এর মৃত্যু সংবাদে কী খৃষ্টান কী মুসলমান সকলেরই আজ হৃদকম্পন শুরু হয়েছে। ভারতের নিভৃত গ্রাম কাদিয়ান থেকে উত্থিত কন্ঠ জগতের সকল মিথ্যা শিক্ষাকে বিচূর্ণ করে দিচ্ছে। পবিত্রাত্মার সাধুগণ ইতোমধ্যে তা উপলব্ধি করে সত্যের ছায়াতলে ঠাঁই নিয়েছে। সত্যকে পাওয়া যাদের লিপ্সা তারা অনাদিকাল হতেই তেমনটি করেছেন এবং অনন্তকাল পর্যন্ত তারা তেমনটিই করবেন। তাঁদের মাথায় পাথর ছুড়ে হত্যা করলেও তাঁরা এই সত্য প্রাপ্তির স্বীকার করা থেকে নিবৃত্ত হয় না। পক্ষান্তরে পুণ্যবানদের চলার পথে কন্টক বিছানো সত্যবিদ্বেষীদের মজ্জাগত স্বভাব তবে এই শংকাকূল অবস্থা সত্ত্বেও খোদা প্রদত্ত সত্য বিজয় লাভ করে, ইহা অনন্ত কালের সত্য। ইনশাআল্লাহ্ আহ্‌মদীয়াতের বেলায়ও এমনটি ঘটবে। এরই মধ্যে এই শান্তির সওগাত যা ১৮৮৯ সালের ২৩শে মার্চ বিতরণ করা শুরু হয়েছিল তা আজ ১৮৭টি দেশের সদাত্মাগণ তার স্বাদ অনুভব করছে। মহান কুরআন বিভিন্ন ভাষায় অনুদিত হয়ে এই ধন-ভান্ডার এসব দেশের গৃহ দ্বারে পৌঁছে গেছে। সুতরাং সত্য ইসলামের অগ্রযাত্রা রুধিবার শক্তি আজ আর কারো নেই। জ্ঞানের চেয়ে গুণ বড়। জ্ঞান মানুষের আত্মম্ভরিতা বাড়ায়, পক্ষান্তরে গুণ মানুষকে বিনয়ী করে। বস্তুতঃপক্ষে গুণী তারা-যারা খোদার সামনে ভীত। তারা অচিরেই এই আলোর ডাকে সাড়া দিয়ে পাগলপারা হয়ে ছুটে আসবে এবং ছুটে আসছেও, আর জ্ঞানপাপীরা এর বিরোধিতাই করবে। ইহা কালেরই চিত্র।

বন্ধুগণ! মৃত্যু কখনো কাউকে জানিয়ে আসে না, সুতরাং সে ডাক আসার পূর্বেই জীবন খতিয়ান চুকিয়ে নেয়া উচিত। এরজন্য খোদার কৃপাই কাম্য, হে আমাদের বৈরীগণ! আসুন এবং সত্যকে পরীক্ষা করে আত্মাকে পরিশুদ্ধ করুন। জামাতে আহ্‌মদীয়ার খলীফা প্রদত্ত খতিয়ান খাতায় নিজ নাম নিবন্ধ করে জীবন্ত ধর্ম প্রচারে সামিল হউন।

পাক্ষিক আহ্‌মদী - ৩১শে মে ২০০৭