শ্রেষ্ঠ মহাপুরুষ – নিষ্ঠাবান বদরী সাহাবীগণ

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ - খলীফাতুল মসীহ্‌ আল্‌ খামেস (আই.)

২৭-জানুয়ারি, ২০২৩

মসজিদ মুবারক, ইসলামাবাদ, টিলফোর্ড, যুক্তরাজ্য

জুমুআর খুতবার সারমর্ম


এই জুমু’আর খুতবার সারাংশটিতে কোনো প্রকার ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে তার দায়ভার আহ্‌মদীয়া বাংলা টীম গ্রহণ করছে।

আহ্মদীয়া মুসলিম জামা’তের বিশ্ব-প্রধান ও পঞ্চম খলীফাতুল মসীহ্ হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) গত ২৭শে জানুয়ারি, ২০২৩ইং ইসলামাবাদের মসজিদে মুবারকে প্রদত্ত জুমুআর খুতবায় বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী কয়েকজন সাহাবী, হযরত আবু যিয়াহ্ (রা.), হযরত আনসা (রা.), হযরত আবু মারসাদ বিন আবি মারসাদ (রা.), হযরত উনায়স বিন আবু মারসাদ (রা.), হযরত সালিত বিন কায়েস (রা.), হযরত মুজাযযের বিন যিয়াদ (রা.), হযরত রিফা বিন রাফে বিন মালিক বিন আযালান (রা.), হযরত উসাইদ বিন মালেক বিন রাবিয়া (রা.), হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্দিল আসাদ (রা.), হযরত খাল্লাদ বিন রাফে (রা.), হযরত আব্বাদ বিন বিশর (রা.) ও হযরত হাতেব বিন বালতা (রা.)-এর জীবনচরিতের আংশিক স্মৃতিচারণ করেন যা মূল স্মৃতিচারণের পর হস্তগত হয়েছে।
তাশাহ্হুদ, তা’ঊয এবং সূরা ফাতিহা পাঠের পর হুযূর (আই.) প্রথমে হযরত আবু লুবাবা বিন মুনযের (রা.)’র স্মৃতিচারণ করেন। হযরত আবু লুবাবা (রা.) এবং আরো কয়েকজন সাহাবী তাবূকের যুদ্ধে যান নি এবং এ কারণে তারা লজ্জিত হয়ে আল্লাহ্ তা’লার সমীপে তওবা করেছিলেন এবং নিজেদেরকে খুঁটির সাথে বেঁধে রেখেছিলেন। এরপর তাদের অনুশোচনা ও ক্ষমাপ্রার্থনার কারণে আল্লাহ্ তাদের ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। হযরত খানসা (রা.)’র স্বামী যখন উহুদের যুদ্ধে শাহাদত বরণ করেন তখন তার পিতা তাকে মুযায়নাহ্ গোত্রের এক লোকের সাথে বিয়ে দেন, যাকে তিনি অপছন্দ করতেন। হযরত খানসা (রা.) মহানবী (সা.)-এর সমীপে এ বিষয়ে অনুযোগ করলে তিনি (সা.) সেই বিয়ে বাতিল করে দিয়ে হযরত লুবাবা (রা.)’র সাথে তাকে বিয়ে দেন। হযরত আবু লুবাবা (রা.) বর্ণনা করেন, “মহানবী (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি সুললিত কন্ঠে কুরআন তিলাওয়াত করে না সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়”।
হযরত আবু যিয়াহ্ বিন সাবেত বিন নু’মান (রা.)’র স্মৃতিচারণে হুযূর (আই.) বলেন, তিনি বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিলেন, কিন্তু পথিমধ্যে পাথরের আঘাতে আহত হয়ে তিনি মদীনায় ফিরে আসেন। কিন্তু মহানবী (সা.) তাকে বদরের মালে গণিমত থেকে অংশ প্রদান করেছিলেন।
এরপরে হুযূর মহানবী (সা.)-এর ক্রীতদাস হযরত আনসা (রা.)’র স্মৃতিচারণ। তার ডাক ছিল নাম আবু মসরূহ্ বা আবু মিসরাহ্ ছিল। হযরত আনসা (রা.) সারাহ্’তে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। মদীনায় হিজরত করার সময় তিনি কুলসুম বিন হিদমের বাড়িতে মতান্তরে হযরত সা’দ বিন খায়সামার বাড়িতে অবস্থান করেছিলেন। মহানবী (সা.) সাধারণত যোহরের নামাযের পর লোকদের সাথে সাক্ষাতের অনুমতি দিতেন। সাক্ষাতপ্রার্থীদের জন্য হযরত আনসা (রা.) মহানবী (সা.)-এর কাছ থেকে অনুমতি নিতেন।
এরপর হুযূর (আই.) হযরত আবু মারসাদ বিন আবী মারসাদ (রা.)’র উল্লেখ করেন। তিনি ও তার পুত্র যখন মদীনায় হিজরত করেছিলেন তখন উভয়ে কুলসুম বিন হিদমের বাড়িতে অবস্থান করেছিলেন। তিনি মহানবী (সা.)-এর সাথে মক্কা বিজয় ও হুনাইনের যুদ্ধেও অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ৪র্থ হিজরীতে হামযা বিন আব্দুল মুত্তালিবের অভিযানে শহীদ হয়েছিলেন।
তার পুত্র উনায়েস বিন আবু মারসাদ (রা.)ও বদরী সাহাবী ছিলেন। তাকে কান্নাসও বলা হয়েছে। তার নাম সম্পর্কে মতবিরোধ আছে। কিন্তু তার অধিক প্রসিদ্ধ নাম ছিল কান্নাস বিন হুসাইন। হযরত আবু মারসাদ এবং তার পুত্র উনায়েস উভয়ে মক্কা বিজয় এবং হুনাইনের যুদ্ধে মহানবী (সা.)- এর সাথে অংশগ্রহণ করেছিলেন। মহানবী (সা.) হযরত হামযা (রা.)’র নেতৃত্বে মদীনার পশ্চিম দিকে ‘সাইফুল বাহারের ঈস’ অঞ্চলে ত্রিশজন মুহাজিরের একটি দল প্রেরণ করেছিলেন। তখন সেখানে আবু জাহলের নেতৃত্বে মক্কার তিনশ’ কাফির অবস্থান করছিল। পরস্পরের মাঝে যুদ্ধ লেগে যাবার উপক্রম হতেই তদঞ্চলের একজন সম্ভ্রান্ত নেতা মাজদী উভয় দলের সাথে কথা বলে মিটমাট করে দেন। এ যাত্রায় মহানবী (সা.) ইসলামের সর্বপ্রথম পতাকা হযরত হামযা (রা.)-কে দিয়েছিলেন আর এ পতাকা বহন করছিলেন হযরত আবু মারসাদ (রা.)।
এরপর হুযূর (আই.) উল্লেখ করেন সালীত বিন কায়েস (রা.)’র। তিনি আনসার ছিলেন। তিনি হযরত খালিদ বিন ওয়ালীদ (রা.)’র ভাই ওয়ালীদ বিন ওয়ালীদকে বদরের যুদ্ধে বন্দি করেছিলেন। মক্কা বিজয়ের সময় তিনি আনসারদের পতাকাবাহক ছিলেন। ত্রয়োদশ হিজরী, মতান্তরে, চতুর্দশ হিজরীতে সালীত বিন কায়েস জিসরের যুদ্ধে শাহাদতবরণ করেছিলেন। একবার এক আনসারীর একটি বাগানে হযরত সালীত (রা.) খেজুর গাছ লাগিয়েছিলেন। মহানবী (সা.) তাকে বলেন, “এটি যার বাগান ছিল তাকেও এ গাছের খেজুর থেকে অংশ দিও” (কৃতজ্ঞতাস্বরূপ)।
এরপর রয়েছেন হযরত মুজাযযের বিন যিয়াদ (রা.)। মুজাযযের (রা.) আবু বাখতারীকে হত্যা করেছিলেন বলে বর্ণনায় পাওয়া যায়। এছাড়া অজ্ঞতার যুগে তিনি সুওয়ায়েদ বিন সামাতকে হত্যা করেছিলেন যার কারণে বুআস এর যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। মুজাযযের ও হারেস বিন সুওয়ায়েদ (রা.) পরবর্তীতে ইসলাম গ্রহণ করেন আর হারেস তার পিতার প্রতিশোধ নিতে সুযোগ খুঁজতে থাকেন। উহুদের যুদ্ধে হারেস বিন সুওয়ায়েদ প্রতিশোধপ্রবণ হয়ে মুজাযযের (রা.)-কে হত্যা করেছিলেন। মহানবী (সা.) তার এ প্রতারণার জন্য তাকে হত্যার সিদ্ধান্ত প্রদান করেন।
হযরত রিফা’ বিন রাফে’ বিন মালিক বিন আযালান (রা.)’র স্মৃতিচারণে হুযূর (আই.) উল্লেখ করেন, তিনি তার খালাতো ভাই মুআয বিন আফরার সাথে মক্কায় পৌঁছেন। যখন উভয়ে সানীয়া পাহাড় থেকে নিচে অবতরণ করেন তখন মুহাম্মদ (সা.)-কে একটি গাছের নিচে বসে থাকতে দেখেন, কিন্তু তারা তাঁকে চিনতে পারেন নি। এটি আকাবার প্রথম বয়আতের পূর্বের ঘটনা। তারা সালাম বিনিময় করে তাঁকে মক্কায় আগমনকারী নবী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে মহানবী (সা.) বলেন, “আমিই সেই নবী”, এরপর তিনি (সা.) যুক্তির মাধ্যমে তাদেরকে আল্লাহ্ তা’লার একত্ববাদ, তাঁর ইবাদতের গুরুত্ব এবং নিজের দাবিসমূহ সম্পর্কে বুঝান। তারা তৎক্ষণাৎ সত্য অনুধাবন করে সেদিনই আল্লাহ্ তা’লার ঐশী নির্দেশনা পেয়ে কলেমা পড়ে ইসলাম গ্রহণ করেন। বদরের যুদ্ধে হযরত রিফা’ (রা.)’র চোখে তীর বিদ্ধ হলে তার অক্ষিগোলক কোটর থেকে বের হয়ে এসেছিল। তখন মহানবী (সা.) ক্ষতস্থানে তাঁর মুখের পবিত্র লালা লাগিয়ে দিলে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে আরোগ্য লাভ করেন। একবার রিফা’ (রা.) মসজিদে মহানবী (সা.)-এর সাথে বসেছিলেন। তখন একজন বেদুইন মসজিদে এসে দ্রুত নামায আদায় করে। এরপর সে মহানবী (সা.)-কে সালাম করলে তিনি বলেন, “তোমার প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক, তবে তোমার নামায হয় নি; পুনরায় নামায পড়”। এভাবে সেই ব্যক্তি পরপর তিনবার নামায আদায় করেন। তথাপি তিনি (সা.) বলেন, “তুমি প্রকৃত অর্থে নামায আদায় করো নি”। এরপর সেই ব্যক্তির অনুরোধে মহানবী (সা.) তাকে নামায পড়ার সঠিক রীতি-পদ্ধতি শিখিয়ে দেন অর্থাৎ, ধীরে ধীরে বুঝে-শুনে সঠিক নিয়মে নামায পড়ার বিষয়টি তাকে বুঝিয়ে দেন।
এরপর উসাইদ বিন মালেক বিন রবীয়া সা’দী (রা.) সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি শেষ জীবনে যখন অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন তখন বলতেন, “আমার চোখ ঠিক থাকলে আমি তোমাদেরকে সেসব স্থান দেখাতাম যেখান থেকে যুদ্ধের সূত্রপাত হয়েছিল”। তিনি বর্ণনা করেন, জনৈক ব্যক্তি মহানবী (সা.)-কে জিজ্ঞেস করেন, “পিতামাতার মৃত্যুর পর তাদের সাথে আমরা কীভাবে সম্পর্ক রাখবো?” মহানবী (সা.) বলেন, “তাদের জন্য দোয়া ও এস্তেগফার করো, তাদের প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করো, তাদের উভয়ের আত্মীয়স্বজনকে প্রীতির বাঁধনে আবদ্ধ রাখো, তাদের বন্ধুদের সাথে উত্তম আচরণ করো তাহলে তারা পুণ্য পেতে থাকবেন”। বদরের যুদ্ধে মহানবী (সা.) সাহাবীদেরকে নিজেদের মালে গণিমত উৎসর্গ করতে বললে হযরত আবু উসায়েদ (রা.) নিজের বিশেষ তরবারীটি দান করে দেন যা মহানবী (সা.)-এর অনুমতিক্রমে পরবর্তীতে হযরত আরকাম (রা.) গ্রহণ করেছিলেন।
এরপর রয়েছেন হযরত আব্দুল্লাহ্ বিন আব্দিল আসাদ (রা.), যিনি আবু সালামা নামেও সুপরিচিত। তার সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে, তিনি সর্বপ্রথম মহররম মাসে মদীনায় হিজরত করেছিলেন। মহানবী (সা.) তার সাথে সা’দ বিন খায়সামার ভাতৃত্ববন্ধন স্থাপন করেছিলেন। তিনি মদীনায় হিজরত করে কুবায় মুবাশ্বের বিন আব্দুল মুনযের এর বাড়িতে অবস্থান করেন। মহানবী (সা.) যখন জানতে পারেন, তুলায়হা এবং সালামা স্বজাতিকে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য উস্কানী দিচ্ছে তখন তিনি আবু সালামা (রা.)’র নেতৃত্বে ১৫০জনের একটি দল প্রেরণ করেছিলেন বনু আসাদকে প্রতিহত বা দমন করার জন্য। তিনি কৌশলে তাদেরকে প্রতিহত করেন। আবু সালামা (রা.)-কে আবু উসামা জুশমী উহুদের যুদ্ধে আহত করেছিল। এরপর মহানবী (সা.) হিজরতের ৪৫তম মাসে তাকে কাতান অভিযানেও প্রেরণ করেছিলেন। উক্ত আঘাতের কারণে অবশেষে ৪র্থ হিজরীর ৩রা জমাদিউল আখেরে তিনি ইন্তেকাল করেন। তার মৃত্যুর পর মহিলারা আহাজারি করতে আরম্ভ করলে মহানবী (সা.) বলেন, “আহাজারি কোরো না, নিজেদের জন্য কল্যাণ কামনা ছাড়া আর কোনো দোয়া কোরো না। কেননা মৃত ব্যক্তির পাশে ফিরিশ্তা অবতীর্ণ হয়”। এরপর তিনি (সা.) তার জন্য দোয়া করেন।
এরপর হযরত খাল্লাদ বিন রাফে’ (রা.) সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে, তিনি আনসারী সাহাবী ছিলেন। তার মাতার নাম ছিল উম্মে মালেক বিনতে উবাই বিন মালেক এবং তার পুত্রের নাম ছিল ইয়াহইয়া। তার সন্তানরা সবাই ইন্তেকাল করেছিল। বুখারীর এক বর্ণনায় রয়েছে, মহানবী (সা.) মসজিদে যাকে তিন বার নামায পড়িয়েছিলেন, তিনি ছিলেন খাল্লাদ বিন রাফে’ (রা.)।
হযরত আব্বাদ বিন বিশর (রা.)ও বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি খন্দকের যুদ্ধেও অনেক সেবা করার সুযোগ পেয়েছিলেন। মহানবী (সা.) আল্লাহ্ তা’লার পক্ষ থেকে সংবাদ পেয়ে যাদেরকে মুশরিকদের গোপন অশ্বারোহী দল পর্যবেক্ষণ করার জন্য পাঠিয়েছিলেন তাদের মাঝে হযরত আব্বাদ বিন বিশর (রা.)ও ছিলেন। এরপর তারা আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে যেসব শত্রু সেখানে ছিল তাদের প্রতিহত করে সেখান থেকে বিতাড়িত করেন। বর্ণিত হয়েছে, হযরত আব্বাদ বিন বিশর (রা.) মহানবী (সা.) এর সাহাবীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তাঁর তাঁবুর সাথে সম্পৃক্ত থাকতেন এবং সর্বদা মহানবী (সা.)-এর নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকতেন। হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, আনসারদের মধ্যে তিন ব্যক্তি অতুলনীয় শ্রেষ্ঠত্ব রাখতেন। এর মধ্যে একজন হলেন, আব্বাদ বিন বিশর (রা.)। হুদায়বিয়ার সন্ধি চুক্তি করার জন্য কাফিরদের পক্ষ থেকে যখন সুহায়েল এসেছিল আর আলোচনার এক পর্যায়ে সে যখন উচ্চস্বরে কথা বলতে আরম্ভ করে তখন আব্বাদ বিন বিশর (রা.) তাকে বলেন, মহানবী (সা.)-এর সাথে নিচুস্বরে কথা বলো। একবার যখন শত্রুরা মহানবী (সা.)-এর কিছু উট ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছিল তখন আব্বাদ (রা.) তাদেরকে কাবু করে উক্ত উটগুলো ফিরিয়ে নিয়ে এসেছিলেন।
এরপর হযরত হাতেব বিন বালতা (রা.) সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে, তিনি খুব সুন্দর চেহারার অধিকারী ছিলেন। তিনি মৃত্যুর সময় চার হাজার দিরহাম রেখে গিয়েছিলেন। তিনি পণ্যব্যবসায়ী ছিলেন। একদা হাতেবের গোলাম তার সম্পর্কে অভিযোগ করে বলে, “হে আল্লাহ্র রসুল (রা.)! হাতেব জাহান্নামে প্রবেশ করবে”। মহানবী (সা.) বলেন, “কখনোই নয়। কেননা সে বদর এবং সুলাহ্ হুদায়বিয়াতে অংশগ্রহণ করেছিল”। একবার তিনি বাজারে কিসমিস বিক্রি করতে গিয়ে বাজার মূল্যের চেয়ে কমদামে বিক্রি করছিলেন। হযরত উমর (রা.) এটি দেখে তাকে বুঝান যে, যদি তুমি বাজারে পণ্য বিক্রয় করো তাহলে বাজারদরে বিক্রি করতে হবে, আর স্বল্প মূল্যে বিক্রয় করতে চাইলে নিজের বাড়িয়ে বসে বিক্রয় করো, কেননা এতে করে বাজারে ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হয়। হযরত মুসলেহ্ মওউদ (রা.)ও ফিকাহ্বিদদের মতামত তুলে ধরে হযরত উমর (রা.)’র উপরোক্ত মতামতের সত্যায়ন করেছেন। এত্থেকে প্রমাণ হয় যে, বাজারদর নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। হযরত হাতেব (রা.) একবার দুপুরে হাররার নদীর পানি নিয়ে হযরত যুবায়ের (রা.)’র সাথে ঝগড়া করেছিলেন, যে-ই নদীর পানি মানুষ তাদের খেজুর বাগানে সিঞ্চন করতো। মহানবী (সা.) তখন হযরত যুবায়ের (রা.)-কে বলেন, “তুমি তোমার ভূমি সিঞ্চিত করে তারপর পানি ছেড়ে দাও”। এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআনের আয়াতও অবতীর্ণ হয়েছিল বলে বিভিন্ন তফসীরে লেখা আছে।