আর্থিক কুরবানীর গুরুত্ব ও কল্যাণরাজি: তাহরীকে জাদীদের ৮৯তম বর্ষের ঘোষণা

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ - খলীফাতুল মসীহ্‌ আল্‌ খামেস (আই.)

০৪-নভেম্বর, ২০২২

মসজিদ মুবারক, ইসলামাবাদ, টিলফোর্ড, যুক্তরাজ্য

জুমুআর খুতবার সারমর্ম


এই জুমু’আর খুতবার সারাংশটিতে কোনো প্রকার ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে তার দায়ভার আহ্‌মদীয়া বাংলা টীম গ্রহণ করছে।

আহ্‌মদীয়া মুসলিম জামা’তের বিশ্ব-প্রধান ও পঞ্চম খলীফাতুল মসীহ্‌, আমীরুল মু’মিনীন হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) গত ৪ঠা নভেম্বর, ২০২২ইং ইসলামাবাদের মসজিদে মুবারকে প্রদত্ত জুমুআর খুতবায় তাহরীকে জাদীদের ৮৯তম বর্ষের ঘোষণা দেন এবং তাহরীকে জাদীদের বরাতে আর্থিক কুরবানীর গুরুত্ব, কল্যাণরাজি এবং কিছু ঈমানোদ্দীপক ঘটনা বর্ণনা করেন।
তাশাহ্‌হুদ, তা’ঊয এবং সূরা ফাতিহা পাঠের পর হুযূর (আই.) বলেন, আজ নভেম্বর মাসের প্রথম শুক্রবার এবং রীতি অনুসারে নভেম্বরের প্রথম শুক্রবারে তাহরীকে জাদীদের নববর্ষের ঘোষণা দেওয়া হয় এবং বিগত বছরে আল্লাহ্ তা’লা যেভাবে স্বীয় কৃপাবারি বর্ষণ করেছেন তা তুলে ধরা হয়; আজও একই রীতি অনুসরণ করা হবে। সর্বপ্রথম যে বিষয়টি স্মরণ রাখা উচিত তা হলো, যে কোন কাজ পরিচালনার জন্য, সেটির ব্যয়ভার নির্বাহের জন্য অর্থের প্রয়োজন হয়। এই বিষয়টির উল্লেখ করতে গিয়ে হযরত মসীহ্ মওউদ (আ.) বলেন, প্রত্যেক নবীই স্বীয় লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যাবলী পূরণার্থে আর্থিক কুরবানীর আহ্বান জানিয়েছেন; পবিত্র কুরআনেও বিভিন্ন আঙ্গিকে আর্থিক কুরবানীর প্রতি মু’মিনদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। আল্লাহ্ তা’লা সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, ধর্মের খাতিরে তোমরা যেসব ত্যাগ স্বীকার করে থাকো, নিজেদের সম্পদ ব্যয় করে থাকো, আল্লাহ্ তা’লা ইহকালেও এবং পরকালেও তার জন্য পুরস্কার দান করেন; তিনি কারো কাছে ঋণী থাকেন না। আল্লাহ্ তা’লা কীরূপ প্রতিদান দেন তার একটি উদাহরণ সূরা বাকারার ২৬২নং আয়াতে দেয়া হয়েছে। আল্লাহ্ বলেন,

مَثَلُ الَّذِينَ يُنْفِقُونَ أَمْوَالَهُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ كَمَثَلِ حَبَّةٍ أَنْبَتَتْ سَبْعَ سَنَابِلَ فِي كُلِّ سُنْبُلَةٍ مِئَةُ حَبَّةٍ وَاللَّهُ يُضَاعِفُ لِمَنْ يَشَاءُ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ

এর অর্থ হলো, ‘যারা নিজেদের ধন-সম্পদ আল্লাহ্‌র পথে ব্যয় করে তাদের উপমা এক শস্যবীজের ন্যায় যা সাতটি শীষ উৎপন্ন করে, আর প্রতিটি শীষে একশ’ শস্যবীজ থাকে। আর আল্লাহ্ যার জন্য চান তাকে এরচেয়েও বাড়িয়ে দেন; আর আল্লাহ্ প্রাচুর্য দানকারী, সর্বজ্ঞানী।’

এটি হলো আল্লাহ্‌র পথে নিষ্ঠার সাথে ব্যয় করা মু’মিনদের উপমা। এই যুগে আল্লাহ্ তা’লা ধর্ম-প্রচারের জন্য মহানবী (সা.)-এর নিষ্ঠাবান দাস হযরত মসীহ্ মওউদ (আ.)-কে প্রেরণ করেছেন এবং তাঁর অনুসারীদের ওপরও এই দায়িত্ব অর্পণ করেছেন; পৃথিবীময় ইসলামের বাণীর প্রচার ও প্রসার এবং পৃথিবীকে এক-অদ্বিতীয় খোদার সমীপে বিনত করার দায়িত্ব তাদের স্কন্ধে অর্পণ করা হয়েছে। যদি তারা নিষ্ঠার সাথে একাজ করে তবে তারা আল্লাহ্ তা’লার কৃপা ও অনুগ্রহরাজির উত্তরাধিকারী হবে।
মহানবী (সা.) বলেন, নামায, রোযা এবং আল্লাহ্ তা’লার যিক্‌র বা স্মরণ করা আল্লাহ্‌র পথে ব্যয়কৃত সম্পদকে সাতশ’ গুণ বৃদ্ধি করে দেয়। অর্থাৎ, আর্থিক কুরবানীর পাশাপাশি এই বিষয়গুলোরও প্রয়োজন রয়েছে এবং এটিই একজন প্রকৃত মু’মিনের চিত্র; নিজের ইবাদতের মানদ-কেও উন্নত করতে হবে, নিজের আত্মাকেও পরিশুদ্ধ করতে হবে, আল্লাহ্‌র যিক্‌র দ্বারা নিজের জিহ্বাকে সিক্ত রাখতে হবে, বৃথা কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে হবে; এরপর নিষ্ঠার সাথে শুধুমাত্র আল্লাহ্ তা’লার সন্তুষ্টিলাভের উদ্দেশ্যে আর্থিক কুরবানীও করতে হবে। একথাও ঠিক যে, কখনো কখনো আল্লাহ্ তা’লা আমাদের তুচ্ছ কুরবানীও গ্রহণ করে এত বেশি কল্যাণে ভূষিত করেন যে, তা দেখে আশ্চর্য হতে হয়, কিন্তু সেটি আল্লাহ্‌র বিশেষ কৃপা; এটি দৃষ্টান্তস্বরূপ হয়ে থাকে যেন আল্লাহ্‌র সত্তায় মানুষের বিশ্বাস বৃদ্ধি পায়। কিন্তু এমনটি যেন না হয় যে, মানুষ এতেই খুশি হয়ে যায় আর ভাবে, ‘আমি তো এরূপ কুরবানী করেছি, তাই অন্যান্য পুণ্য না করলেও আল্লাহ্ নিশ্চয় আমাকে পুরস্কৃত করবেন!’ পুরস্কার পেতে হলে আর্থিক কুরবানীর পাশাপাশি অন্যান্য সৎকর্মও করতে হবে।
আল্লাহ্ তা’লা কীভাবে প্রকৃত মু’মিনদের স্বীয় কৃপারাজিতে ভূষিত করেন তার উদাহরণ দিতে গিয়ে হযরত খলীফাতুল মসীহ্ আউয়াল (রা.), রাবেয়া বসরীর একটি ঘটনার উল্লেখ করেছেন। একবার তার বাড়িতে বিশজন অতিথি আসেন, অথচ বাড়িতে মাত্র দু’টো রুটি ছিল। তিনি তাই গৃহপরিচারিকাকে ডেকে সেই দু’টো রুটিও আল্লাহ্‌র পথে দান করে দিতে বলেন। দান করার কিছু সময় পরেই আরেক ধনী মহিলার কর্মচারী আঠারোটি রুটি নিয়ে এসে বলে, এগুলো রাবেয়া বসরীর জন্য পাঠানো হয়েছে। কিন্তু রাবেয়া বসরী তা ফিরিয়ে দিয়ে বলেন, এটা আমার নয়। তাকে বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তিনি তা গ্রহণ করেন নি; সেই কর্মচারী ফিরে যেতেই তার মনীব তাকে বলে, ১৮টি রুটি আরেকজনের জন্য, রাবেয়া বসরীর জন্য বিশটি রুটি নিয়ে যেতে হবে। রাবেয়া বসরী তখন তার পরিচারিকাকে বলেন, তিনি যে দু’টো রুটি দান করেছিলেন তা মূলত আল্লাহ্‌র সাথে ব্যবসা ছিল, যার ন্যূনতম প্রতিদান দশগুণ হবে; তাই তিনি ১৮টি রুটি গ্রহণ করেন নি। পরে আল্লাহ্ দশগুণ বাড়িয়ে ২০টি রুটি পাঠানোরই ব্যবস্থা করেছেন। খলীফাতুল মসীহ্ আউয়াল (রা.) এই ঘটনাটি উল্লেখ করে বলেন, পবিত্র কুরআনে ক্ষেত্রবিশেষে ১০ থেকে ৭০০ গুণ পর্যন্ত প্রতিদানের উল্লেখ রয়েছে; কিন্তু তোমরা আল্লাহ্ তা’লাকে পরীক্ষা করার নিমিত্তে এরূপ করো না, বরং নিষ্ঠার সাথে যদি আল্লাহ্‌র পথে ব্যয় করো তাহলে এমন ঘটনাও মাঝে মাঝে ঘটবে।
এই যুগে ধর্মের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের নিমিত্তে আল্লাহ্ তা’লা হযরত মসীহ্ মওউদ (আ.)-কে প্রেরণ করেছেন; তাঁর মাধ্যমেই পৃথিবীময় ইসলামের প্রচার ও মানবসেবার কাজ অব্যাহত রয়েছে। একাজ এত বিস্তৃত হয়ে গিয়েছে যে, নিতান্ত আল্লাহ্‌র কৃপায় অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না হওয়া সত্ত্বেও জামাতের সদস্যরা আর্থিক কুরবানীতে অগ্রগামী হয়ে তা পূর্ণ করে চলেছেন। আর ফলস্বরূপ আল্লাহ্ তা’লাও স্বীয় কৃপাবারির দৃশ্য তাদেরকে প্রদর্শন করেন; আর এসব ঘটনা ধনী-দরিদ্র, উন্নত-অনুন্নত, নবদীক্ষিত-পুরনো নির্বিশেষে বিশ্বের সকল দেশে, সব অবস্থার আহমদীকেই তাদের নিষ্ঠার ফলে প্রদর্শন করেন। এরপর হুযূর (আই.) এ সংক্রান্ত বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের কতিপয় ঈমানোদ্দীপক ঘটনা তুলে ধরেন।
লাইবেরিয়ায় একটি প্রত্যন্ত ছোট্ট গ্রামে সবেই কিছু মানুষ আহমদী হয়েছেন; স্থানীয় মুয়াল্লিম সাহেব সার্বিক বিবেচনায় তাদের কাছে তাহরীকে জাদীদের চাঁদার উল্লেখ না করে আগামী বছর আহ্বান জানাবেন বলে ভেবেছিলেন। হঠাৎ একদিন গ্রামের ইমাম আবু বুকায়ি সাহেব মিশন হাউজে ২১জনের চাঁদা নিয়ে হাজির হন এবং বলেন, রেডিও অনুষ্ঠানে তারা এই চাঁদার গুরুত্ব সম্পর্কে শুনেছেন। গাম্বিয়ার ৫৭ বছরের নবদীক্ষিতা বৃদ্ধা বাড়ির খাবারের জন্য তার কাছে থাকা শেষ সামান্য অর্থটুকুও তাহরীকে জাদীদ খাতে চাঁদা দিয়ে দেন এবং বলেন, ইসলাম প্রচারের স্বার্থে তিনি অভুক্ত থাকার কুরবানী দেবেন। এই কথা চলাকালেই সুইজারল্যাণ্ডে বসবাসকারী তার ছেলে, যে ৬ মাসের অধিক সময় ধরে কোন যোগাযোগ করে নি, হঠাৎ ফোন করে এবং বৃদ্ধার প্রদেয় চাঁদার ৬১গুণ অর্থ মাকে পাঠায়। আল্লাহ্ তা’লার প্রত্যক্ষ কৃপা দেখে বৃদ্ধা অশ্রুসজল হন এবং আরো কুরবানী করার প্রতিজ্ঞা করেন; এতে উপস্থিত অন্যদেরও ঈমান বৃদ্ধি পায়। গিনি-কোনাকরির এক যুবক আহমদী তার কাছে থাকা দশ হাজার গিনি ফ্রাংক চাঁদা হিসেবে দিয়ে দেন যা তার দুপুর এবং রাতের খাবারের জন্য ছিল; তিনিও অভুক্ত থেকে আল্লাহ্‌র পথে কুরবানী করেন। চারদিন পর তিনি মিশনারীকে ফোন করে জানান, আল্লাহ্ তা’লা তাকে মাসিক ৫৫ লক্ষ গিনি ফ্রাংক বেতনে ৫ বছরের জন্য একটি চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন আর এভাবে প্রদত্ত চাঁদার কয়েক হাজার গুণ তাকে বাড়িয়ে দিয়েছেন। ক্যামেরুনের আব্দুল্লাহ্ নামের নবদীক্ষিত দরিদ্র আহমদী গত বছর আধা বালতি বা পাঁচ কেজি ভুট্টা চাঁদাস্বরূপ দিয়েছিলেন যার বিনিময়ে আল্লাহ্ তা’লা তাকে ৫ বস্তা ভুট্টা পাইয়ে দেন। এই বছর সারসহ সবকিছুর মূল্যবৃদ্ধি এবং অন্যান্য সমস্যা নিয়ে তিনি চিন্তিত ছিলেন যে, কীভাবে চাঁদা দেবেন; কিন্তু আল্লাহ্ তা’লা এত কৃপা করেন যে, গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ ফসল উৎপন্ন হয় এবং তিনি সানন্দে ৭০ কেজির এক বস্তা ভুট্টা চাঁদা দেন। গাম্বিয়ায় একজন আহমদী বলেন, আহমদী হবার পূর্বে তিনি বেকার ছিলেন; আহমদী হবার পর চাঁদা, তবলিগী কার্যক্রম ইত্যাদিতে অংশ নেয়ায় এখন তার দু’টি চাকরি রয়েছে এবং সবকিছুতেই সমৃদ্ধি সৃষ্টি হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার জনৈক আহমদী গত বছর তাহরীকে জাদীদের খুতবার ঈমানোদ্দীপক ঘটনা শুনে নিজের ওয়াদা দ্বিগুণ করেন এবং তা পরিশোধও করে দেন। এর কিছুদিনের ভেতরেই তার কোম্পানীর বিক্রি অনেক বেড়ে যায় এবং কয়েকগুণ বেশি আয় হয়। জার্মানির জনৈক আহমদী নারী নিজের অলংকার বিক্রি করে তাহরীকে জাদীদের চাঁদা প্রদান করার কয়েকদিন পরই তার চাকরি স্থায়ী হয়ে যায় এবং বেতনও বৃদ্ধি পায়, অথচ ইতোপূর্বে তিনি চাকরিসহ চরম আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন ছিলেন। বাংলাদেশের জনৈক আহমদী করোনার সময়ে অনেক লোকসানের সম্মুখীন হন, চাঁদাও বকেয়া পড়ে যায়। তা সত্ত্বেও তিনি স্ত্রীর সঞ্চয় থেকে সাড়ে এগার হাজার টাকা চাঁদা দেন, তবে তখনো তার অর্ধেক চাঁদা বকেয়া ছিল। কয়েকদিন পরই তার স্ত্রী ফোন করে বকেয়া চাঁদা নিয়ে যেতে বলেন। জামাতের টিম সেখানে পৌঁছলে তারা তিনগুণ বেশি চাঁদা এবং অন্যান্য আবশ্যক বকেয়া চাঁদাও পরিশোধ করেন এবং বলেন, চাঁদার কল্যাণে আল্লাহ্ তা’লা তাদের উপার্জন বাড়িয়ে দিয়েছেন এবং তাদেরকে একটি জমি কেনারও সামর্থ্য দান করেছেন। তানজানিয়ার একজন নিষ্ঠাবতী সদস্যা অর্থসংকটের জন্য তাহরীকে জাদীদের চাঁদা দিতে পারছিলেন না। একজনের কাছে তিনি টাকা পেতেন, কিন্তু সেও ফোন ধরছিল না। তিনি তার সন্তানদের দোয়া করতে বলেন; ঠিক তক্ষুণি আযান হচ্ছিল দেখে সন্তানরা বলে, চলো নামায পড়ে আল্লাহ্‌র কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি! ওযু করে তারা নামায পড়ে কাকুতি-মিনতি করে দোয়া করছিলেন; নামায শেষ হওয়ার আগেই ঋণগ্রহীতার ফোন আসে যে, সে দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। সে বলে, সে বাসস্টপে দাঁড়িয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিল; হঠাৎ আযানের ধ্বনি কানে আসে এবং মনে হয় কেউ যেন তাকে বলছে- ‘আগে ঋণের টাকা শোধ করো’। এজন্য সে তৎক্ষণাৎ টাকা ফেরত দিতে চলে এসেছে।
এমন বিভিন্ন ঘটনা উল্লেখের পর হুযূর (আই.) তাহরীকে জাদীদের ৮৯তম বর্ষের ঘোষণা করেন এবং ৮৮তম বছরের বিভিন্ন পরিসংখ্যান উপস্থাপন করেন। এবছর তাহরীকে জাদীদ খাতে জামাত মোট ১৬.৪ মিলিয়ন অর্থাৎ, এক কোটি চৌষট্টি লক্ষ পাউন্ড চাঁদা প্রদান করেছে যা বিগত বছরের তুলনায় ১১ লক্ষ পাউন্ড বেশি। গতবারের মতো এবারও শীর্ষে রয়েছে জার্মানি জামাত; কুরবানীর দৃষ্টিকোণ থেকে পাকিস্তান অনেক কুরবানী করলেও সেখানকার ভঙ্গুর অর্থনৈতিক অবস্থা ও বিশ্ববাজারে তাদের মুদ্রামান অত্যন্ত হ্রাস পাওয়ায় তারা প্রথম হতে পারে নি। এরপর রয়েছে যথাক্রমে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। তাহরীকে জাদীদের চাঁদার ক্ষেত্রে যেসব জামাত উল্লেখযোগ্য কাজ করেছে, তাদের মধ্যে হুযূর বাংলাদেশের নামও উল্লেখ করেন। এবছর এই খাতে ১৫ লক্ষ ৯৪ হাজার সদস্য চাঁদা প্রদান করেছেন। এরপর হুযূর বিভিন্ন দেশের বিস্তারিত তথ্য এবং পরিসংখ্যানও তুলে ধরেন এবং এ খাতে চাঁদাপ্রদানকারীদের ধন-সম্পদ ও জনবলে সমৃদ্ধি লাভের জন্য দোয়া করেন।
নামাযের পর হুযূর (আই.) একটি নতুন ওয়েবসাইট history.ahmadiyya.uk উদ্বোধনের ঘোষণা দেন, যা যুক্তরাজ্যে আহমদীয়া জামাতের ইতিহাসের ওপর ভিত্তি করে প্রস্তুত করা হয়েছে। এতে হযরত মসীহ্ মওউদ (আ.)-এর পাশ্চাত্যে ইসলামের প্রচারের পূর্ণতার ভবিষ্যদ্বাণী সম্বলিত বিভিন্ন প্রবন্ধ, যুক্তরাজ্যে আহমদীয়াতের সূচনা এবং প্রাথমিক যুগের মুবাল্লিগদের ইতিহাস ইত্যাদি সন্নিবেশিত করা হয়েছে। হুযূর (আই.) দোয়া করেন, আল্লাহ্ তা’লা এটিকে আমাদের এবং অন্যদের জন্যও উপকৃত হবার মাধ্যম বানান, (আমীন)