আর্থিক কুরবানীর গুরুত্ব ও তাৎপর্য – ওয়াক্‌ফে জাদীদের ৬৫তম বর্ষের ঘোষণা

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ - খলীফাতুল মসীহ্‌ আল্‌ খামেস (আই.)

০৭-জানুয়ারি, ২০২২

মসজিদ মুবারক, ইসলামাবাদ, টিলফোর্ড, লন্ডন

জুমুআর খুতবার সারমর্ম


এই জুমু’আর খুতবার সারাংশটিতে কোনো প্রকার ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে তার দায়ভার আহ্‌মদীয়া বাংলা টীম গ্রহণ করছে।

আহ্‌মদীয়া মুসলিম জামা’তের বিশ্ব-প্রধান ও পঞ্চম খলীফাতুল মসীহ্‌ হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) গত ৭ই জানুয়ারি, ২০২২ইং ইসলামাবাদের মসজিদে মুবারকে প্রদত্ত জুমুআর খুতবায় আর্থিক কুরবানীর গুরুত্ব ও তাৎপর্য বর্নণা করেন ও ওয়াক্‌ফে জাদীদের ৬৫তম বর্ষের ঘোষণা করেন।
তাশাহ্‌হুদ, তাআ’ঊয ও সূরা ফাতিহা পাঠের পর হুযূর (আই.) সূরা বাকারার ২৬৬নং আয়াত পাঠ করেন,

وَمَثَلُ الَّذِينَ يُنْفِقُونَ أَمْوَالَهُمُ ابْتِغَاءَ مَرْضَاةِ اللَّهِ وَتَثْبِيتًا مِنْ أَنْفُسِهِمْ كَمَثَلِ جَنَّةٍ بِرَبْوَةٍ أَصَابَهَا وَابِلٌ فَآَتَتْ أُكُلَهَا ضِعْفَيْنِ فَإِنْ لَمْ يُصِبْهَا وَابِلٌ فَطَلٌّ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ

এর অনুবাদ হল, ‘আর যারা নিজেদের সম্পদ আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টিলাভের আশায় এবং নিজেদের মধ্য থেকে কতককে দৃঢ়তা প্রদানের লক্ষ্যে ব্যয় করে, তাদের উপমা সেই বাগানের মত যা উঁচু স্থানে অবস্থিত; যখন এতে প্রবল বৃষ্টি হয় তখন তা দ্বিগুণ ফল দেয়, আর যদি প্রবল বৃষ্টি না-ও হয় তবে শিশিরই যথেষ্ট। আর তোমরা যা কর, আল্লাহ্ তার প্রতি গভীর দৃষ্টি রাখেন।’

হুযূর (আই.) বলেন, এই আয়াতে আল্লাহ্ তা’লা মু’মিনদের তাঁর সন্তুষ্টিলাভের উদ্দেশ্যে তাঁর পথে ব্যয় করার চিত্র তুলে ধরেছেন; একদিকে তাদের লক্ষ্য থাকে আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি অর্জন, সেইসাথে নিজেদের জাতি ও মিশনকে সুদৃঢ় করাও তাদের উদ্দেশ্য হয়ে থাকে। এই যুগে ইসলামের শিক্ষা ও বাণী প্রচারের দায়িত্ব হযরত মসীহ্ মওউদ (আ.)-এর ওপর ন্যস্ত হয়েছে। সেইসাথে তাঁর অনুসারীদেরও দায়িত্ব- এই মিশনকে পূর্ণ করার জন্য নিজেদের প্রাণ, সম্পদ ও সময় ব্যয় করা। আর সকল নবীর মত হযরত মসীহ্ মওউদ (আ.)ও আর্থিক কুরবানী করতে তাঁর অনুসারীদের উদ্বুদ্ধ করেছেন। মু’মিনদের বৈশিষ্ট্য হল, তারা অবশ্যই ধর্মের খাতিরে আল্লাহ্‌র পথে ব্যয় করে। আর এর উদ্দেশ্য কাউকে কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করা নয়, বরং শুধুমাত্র আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি লাভ, আত্মার দৃঢ়তা অর্জন, ঈমান ও বিশ্বাসে দৃঢ়তা লাভ, জাতির উন্নতি ও দুর্বল ভাইদের শক্তিশালী করা উদ্দেশ্য হয়ে থাকে। আর যখন কেউ এভাবে প্রবৃত্তির ঊর্ধ্বে গিয়ে আল্লাহ্‌র পথে ব্যয় করে, তখন আল্লাহ্ তা’লাও তাদের কুরবানী গ্রহণ করেন ও তাদেরকে স্বীয় কৃপায় ধন্য করেন। আল্লাহ্ তা’লা আমাদের মনের প্রকৃত অবস্থা জানেন, তাই কার কুরবানীর পরিমাণ কত- তা তাঁর কাছে মুখ্য বিষয় নয়; বরং তিনি মানুষের সংকল্প অনুসারে প্রতিদান দেন। উল্লিখিত আয়াতে প্রবল বৃষ্টি ও গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি বা শিশিরের উদাহরণ এজন্যই দেয়া হয়েছে। অধিক সচ্ছল ব্যক্তি ধর্মের জন্য বেশি ব্যয় করে বা করার সামর্থ্য রাখে, তাই একজন গরীব একথা ভাবতে পারে- ‘আমি কীভাবে তার সমান হব?’ এজন্যই আল্লাহ্ তা’লা বলেছেন, ঊর্বর জমি যেভাবে সামান্য বৃষ্টি বা শিশির হলেও অনেক ফল দেয়, তেমনিভাবে অসচ্ছল মু’মিনদের সামান্য কুরবানীও ব্যাপক ফলদায়ী হতে পারে। কারণ ফলাফল সৃষ্টি করা আল্লাহ্‌র কাজ। এক প্রসঙ্গে মহানবী (সা.)-এর বাণী ‘আজ এক দিরহাম লক্ষ দিরহামের চেয়ে এগিয়ে গিয়েছে’- এটিও একথার প্রমাণ বহন করে। হুযূর (আই.) বলেন, আল্লাহ্ তা’লা আমাদের প্রতিটি কাজ পর্যবেক্ষণ করেন, তাই আমাদের মনে রাখতে হবে- প্রতিটি কাজ যেন একমাত্র তাঁর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে করা হয়, তবেই মানুষ প্রকৃত অর্থে আল্লাহ্‌র কৃপারাজি লাভ করতে পারে।
হযরত মসীহ্ মওউদ (আ.)-এর যুগে তাঁর অধিকাংশ অনুসারী হতদরিদ্র ছিলেন, কিন্তু কুরবানীর ক্ষেত্রে তারা এত অগ্রসর ছিলেন যে, স্বয়ং যুগ-মসীহ্ তাদের নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার প্রশংসা করেছেন এবং কখনও কখনও বিস্ময়াভিভূতও হয়েছেন; এমনকি জামা’তের শত্রুরাও আশ্চর্য হয়েছে। হুযূর (আই.) বলেন, এরূপ নিষ্ঠা ও বিশ্বস্ততা আজও এই জামা’তের মাঝে দেখা যায়; এমনকি নবাগতদের মাঝেও এমন মাত্রায় দৃষ্টিগোচর হয় যে, তা দেখে আশ্চর্য হতে হয়। নিঃসন্দেহে এটি আল্লাহ্ তা’লার এক বিশেষ কৃপা। জগদ্বাসী যেখানে জাগতিকতায় মত্ত, আহমদীরা সেখানে নিজ সম্পদ ব্যয় করে আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টিলাভের প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত! এই জামা’ত ক্রমশঃ উন্নতি করেই যাবে; শত্রুদের কোন ষড়যন্ত্রই এর কোন ক্ষতি করতে পারবে না বা উন্নতিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।
এরপর হুযূর (আই.) জামা’তের উন্নতির বরাতে আর্থিক কুরবানী সংক্রান্ত বেশ কিছু ঈমানোদ্দীপক ঘটনা তুলে ধরেন, যা সারা পৃথিবীতে ঘটে যাওয়া অজস্র ঘটনাবলীর সামান্য নমুনামাত্র। আফ্রিকার দেশ সিয়েরা লিওনের একটি প্রত্যন্ত স্থানের ঘটনা; মুয়াল্লিম সাহেব প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি জামা’তে সফরে যান ও স্থানীয় সদস্যদের ওয়াক্ফে জাদীদের চাঁদার কথা স্মরণ করালে স্থানীয় ইমাম শেখ উসমান সাহেব খুব লজ্জিত স্বরে কিছু অর্থ তার হাতে দিয়ে বলেন, তারা তাদের ওয়াদা অনুযায়ী চাঁদা তুলতে পারেননি; তিনি ওয়াদা পূরণে আন্তরিক আশাবাদও ব্যক্ত করেন। মুয়াল্লিম সাহেব দোয়া করালে সবাই গভীর আবেগ নিয়ে তার সাথে দোয়ায় শরীক হন। মুয়াল্লিম সাহেব সেখান থেকে মিশন হাউজের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন, কিন্তু পৌঁছার পূর্বেই তিনি ইমাম সাহেবের ফোন পান। ইমাম সাহেব জানান, তাদের দোয়া আল্লাহ্ তা’লা সাথে সাথে কবুল করেছেন; দোয়ার কিছুক্ষণ পরই তার একজন আত্মীয় এসে উপহারস্বরূপ কিছু অর্থ দেন যা পরিমাণে ঠিক ততটুকু ছিল, যতটুকু তাদের ওয়াদা পূরণে বাকি ছিল। দোয়া কবুল হবার এই নিদর্শন দেখে ইমাম সাহেব আল্লাহু আকবর ধ্বনি উচ্চকিত করেন। হুযূর (আই.) বলেন, যদিও সেই অর্থের পরিমাণ খুবই স্বল্প, এখানকার হিসেব অনুযায়ী সাড়ে ছয় পাউন্ডের মত হবে; কিন্তু তাদের জন্য অনেক বড় অংক ছিল। তবুও নিজে সেই অর্থ না নিয়ে আল্লাহ্‌র পথে দান করা- এটি অসাধারণ এক কুরবানী যা আল্লাহ্‌র কৃপালাভের কারণ। এক দিরহাম লক্ষ দিরহামের চেয়ে এগিয়ে যাওয়ার উদাহরণ এরূপই হয়ে থাকে। টোগোর এক দরিদ্র আহমদী ইব্রাহীম সাহেব যিনি অন্যদের গরু-ছাগল চরানোর কাজ করেন। আর্থিকভাবে সচ্ছল না হওয়ায় তিনি নিজের ওয়াদা পূরণ করতে পারছিলেন না। তাই একরাতে তিনি বালু তোলার শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন ও দুই ট্রাক বালু ভরেন; শ্রমের বিনিময়ে যা পান তার পুরোটাই চাঁদা হিসেবে দিয়ে দেন, নিজের জন্য এক পয়সাও রাখেননি! কেবল প্রাপ্তবয়স্করাই নন, বরং আহমদী শিশু-কিশোরদের মাঝেও আর্থিক কুরবানীর এক গভীর আগ্রহ ও আকর্ষণ দেখা যায়। মধ্য-আমেরিকার একটি দেশ বেলিজ, হাজার হাজার মাইল দূরের একটি দেশ এবং খলীফা কখনও সেখানে যেতে পারেননি। কিন্তু তাদের চিন্তাধারাও অবিকল একই রকম! সেদেশের ১৪ বছরের এক বালক দানিয়েলের তাহরীকে জাদীদের চাঁদা প্রদানের ঘটনা হুযূর (আই.) খুতবায় উল্লেখ করেছিলেন, সেটি শুনে সবাই তাকে অনেক অভিনন্দন জানায় এবং কানাডা থেকে একজন তাকে দু’শ ডলার উপহারও পাঠায়। তার নিষ্ঠা ও কুরবানী দেখে আশ্চর্য হতে হয়! সে বলে, তার সোশ্যাল সিকিউরিটি কার্ড বানাতে ত্রিশ ডলার প্রয়োজন ছিল; সেটুকু রেখে বাকি টাকা সে আবারও চাঁদা হিসেবে দিয়ে দেয়। এই উপহার নিজের জন্য ব্যবহার করতে তাকে বারংবার বলা হয়, তবুও সে কুরবানী করতে বদ্ধপরিকর ছিল। হুযূর (আই.) বলেন- এটি হল ধর্মকে জাগতিকতার ওপর প্রাধান্য দেয়ার প্রকৃত চিত্র! হুযূর (আই.) দোয়া করেন, আল্লাহ্ তা’লা যেন এমন মনোভাব তার মাঝে সর্বদা বহাল রাখেন এবং তাকে জাগতিকতার পঙ্কিলতা থেকে রক্ষা করেন। (আমীন)। জ্যামাইকার এক খাদেম ইয়াসিন সাহেবের ঘটনাও হুযূর (আই.) উল্লেখ করেন। তিনি চকলেট ইত্যাদি বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। ওয়াক্ফে জাদীদের বছর প্রায় শেষদিকে, কিন্তু তখনও তিনি নিজের ওয়াদা পূরণ করতে পারেননি। ডিসেম্বর মাসের প্রায় শেষদিকে একদিন সন্ধ্যায় তিনি মুয়াল্লিম সাহেবের কাছে হাজির হন ও বলেন, সারা দিনে তিনি চারশ’ জ্যামাইকান ডলার আয় করেছেন, সেইসাথে তিনি এর চতুর্থাংশ তথা একশ’ ডলার চাঁদা দিয়ে দেন। গিনি-কোনাকরির একটি ঘটনা মুবাল্লিগ ইনচার্জ সাহেব লিখে জানিয়েছেন; তিনি খুতবায় হুযূর (আই.)-এর খুতবার বিভিন্ন উদ্ধৃতির আলোকে ওয়াক্‌ফে জাদীদের গুরুত্ব ও এর কল্যাণ তুলে ধরেন। খুতবা শেষ হতেই একজন দরিদ্র কিন্তু অত্যন্ত নিষ্ঠাবান আহমদী মূসা সাহেব নিজের পকেটে থাকা সব টাকা বের করে ওয়াক্‌ফে জাদীদ খাতে দিয়ে দেন। মুরব্বী সাহেব এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার হৃদয়ে খলীফাতুল মসীহ্‌র এই কথা শলাকার মত গেঁথে গিয়েছে- ‘এক হৃদয়ে দু’টি ভালোবাসা একসাথে থাকতে পারে না; বান্দা হয় খোদাকে ভালোবাসবে, নতুবা সম্পদকে।’ এজন্য আমি যখনই সুযোগ পাই, চেষ্টা করি আমার কর্মের মাধ্যমেও যেন সেটি প্রকাশ পায়।’ তিনি বলেন, তার পক্ষে তো হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা.)’র মত হওয়া সম্ভব না যে, বাড়ির সবকিছু আল্লাহ্ তা’লার পথে দিয়ে দেবেন, কিন্তু এটুকু করার সাহস আছে যে, পকেটে থাকা সব অর্থ আল্লাহ্‌র পথে দিয়ে দেবেন। তিনি আরও বলেন, যখন থেকে তিনি আর্থিক কুরবানীতে অংশগ্রহণ শুরু করেছেন, আল্লাহ্ তা’লাও তাকে ঈমানের সম্পদে সমৃদ্ধ করে দিয়েছেন; এটিও তার এরূপ কুরবানীর অন্যতম কারণ। হুযূর (আই.) মন্তব্য করেন- মানুষ বলে, এরা অশিক্ষিত; কিন্তু যে চিন্তাধারা ও উপলদ্ধি তাদের রয়েছে- অনেক উচ্চশিক্ষিত মানুষের মাঝেও তা নেই! সেদেশেরই একজন নিষ্ঠাবান সচ্ছল আহমদী আল্ হাসান সাহেবের ঘটনাও হুযূর (আই.) তুলে ধরেন, যার অফিসের সাথে লাগোয়া আরও দু’টি অফিসে আগুন লেগে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়, কিন্তু বিস্ময়করভাবে তার অফিস সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকে। তিনি বুঝতে পারেন, এটি চাঁদা দেয়ার প্রতিফল; সেইসাথে হযরত মসীহ্ মওউদ (আ.)-এর এই এলহামের কথাও তার মনে পড়ে- ‘এই আগুন তোমার দাস, বরং তোমার দাসানুদাস।’ হুযূর (আই.) আরও অনেকগুলো ঘটনা উল্লেখ করেন। এসব ঘটনা কোন নির্দিষ্ট একটি অঞ্চলের নয়, বরং আফ্রিকা-আমেরিকা, ইউরোপ-এশিয়া- সারা পৃথিবী জুড়েই এসব ঘটনা ঘটে থাকে। এটি প্রমাণ করে, এরূপ নিষ্ঠা ও ভালোবাসা আল্লাহ্ তা’লাই আহমদীদের হৃদয়ে সৃষ্টি করে চলেছেন এবং হযরত মসীহ্ মওউদ (আ.)-এর সাথে তাঁর কৃত অঙ্গীকার পূরণ করে চলেছেন। প্রাসঙ্গিকভাবে হুযূর (আই.) এ-ও বলেন, ওয়াক্‌ফে জাদীদের অর্থ দিয়ে বিগত বছর ১৮৭টি মসজিদ নির্মিত হয়েছে ও ১০৫টি মসজিদ নির্মাণাধীন রয়েছে, সেইসাথে ১৪০টি মিশন হাউজ নির্মিত হয়েছে এবং নির্মাণাধীন রয়েছে আরও ৪৫টি; যেখানে নির্মাণ সম্ভব নয় এমন সহস্রাধিক স্থানে মিশন হাউজ ও মুরব্বী কোয়ার্টার ভাড়া নেয়া হয়েছে, যার মধ্যে ৭৩১টি আফ্রিকায় ও ৬৩২টি এশিয়ায়। হুযূর (আই.) আরও বলেন, ওয়াক্‌ফে জাদীদের সিংহভাগ চাঁদা আফ্রিকায় জামাতের উন্নয়নের কাজে ব্যয় করা হয়ে থাকে। হুযূর (আই.) মসজিদ নির্মাণ সংক্রান্ত কিছু ঈমানোদ্দীপক ঘটনাও উল্লেখ করেন। এসব ঘটনা উল্লেখপূর্বক হুযূর (আই.) বলেন, এগুলো সবই আল্লাহ্‌র কৃপায় ঘটছে; আমাদের সৌভাগ্য যে, তিনি আমাদেরকেও এতে অংশগ্রহণের সুযোগ দিচ্ছেন, যেন আমরাও তাঁর কৃপারাজির উত্তরাধিকারী হতে পারি। অতঃপর হুযূর (আই.) ওয়াক্‌ফে জাদীদের ৬৫তম নববর্ষের ঘোষণা দেন ও ৬৪তম বছরের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন। বিগত বছর পৃথিবীজুড়ে আহমদীরা এই খাতে মোট ১ কোটি ১২ লক্ষ ৭৭ হাজার পাউন্ড কুরবানী করার সৌভাগ্য লাভ করেছেন, যা বিগত বছরের তুলনায় ৭ লক্ষ ৪২ হাজার পাউন্ড বেশি। চাঁদা প্রদানে শীর্ষ দশটি দেশ যথাক্রমে যুক্তরাজ্য, জার্মানি, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশ, ঘানা ও বেলজিয়াম। এখাতে মোট চাঁদাদাতার সংখ্যা ১৪ লক্ষ ৪৫ হাজার। হুযূর (আই.) সংশ্লিষ্ট পরিসংখ্যান সবিস্তারে তুলে ধরেন এবং প্রত্যেক আর্থিক কুরবানীকারীর ধনসম্পদ ও জনবলে প্রভূত বৃদ্ধির জন্য দোয়াও করেন। (আমীন)