শ্রেষ্ঠ মহাপুরুষ – নিষ্ঠাবান বদরী সাহাবীগণ: হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ - খলীফাতুল মসীহ্‌ আল্‌ খামেস (আই.)

০১-অক্টোবর, ২০২১

মসজিদ মুবারক, ইসলামাবাদ, টিলফোর্ড, লন্ডন

জুমুআর খুতবার সারমর্ম


এই জুমু’আর খুতবার সারাংশটিতে কোনো প্রকার ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে তার দায়ভার আহ্‌মদীয়া বাংলা টীম গ্রহণ করছে।

আহ্‌মদীয়া মুসলিম জামা’তের বিশ্ব-প্রধান ও পঞ্চম খলীফাতুল মসীহ্‌, আমীরুল মু’মিনীন হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) গত ১লা অক্টোবর, ২০২১ইং ইসলামাবাদের মসজিদে মুবারকে প্রদত্ত জুমুআর খুতবায় সাম্প্রতিক ধারা অনুসরণে নিষ্ঠাবান বদরী সাহাবীদের বর্ণাঢ্য জীবনের স্মৃতিচারণ করেন। এ খুতবায় হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)’র খিলাফতকালে বিভিন্ন অঞ্চলে অর্জিত বিজয়াভিযান সম্পর্কে আলোকপাত করেন।

তাশাহ্হুদ, তাআ’ঊয ও সূরা ফাতিহা পাঠের পর হুযূর (আই.) প্রথমে হযরত মুসলেহ্ মওউদ (রা.)’র একটি উদ্ধৃতি উপস্থাপন করেন যা তিনি তাঁর এক বক্তৃতায় হযরত উমর (রা.)’র যুগ সম্পর্কে বলেছিলেন। তিনি (রা.) ইসলামের প্রাথমিক যুগে সংঘটিত যুদ্ধাভিযানগুলোতে মুসলিম সৈন্যদের স্বল্প সংখ্যার উল্লেখ করতে গিয়ে সিরিয়ার যুদ্ধের উদাহরণ দেন। সৈন্যস্বল্পতার কারণে আবু উবায়দাহ্ (রা.) হযরত উমর (রা.)-কে শত্রুদের বিশাল বাহিনীর কথা অবগত করে আরও সৈন্য প্রেরণ করতে অনুরোধ করেন। হযরত উমর (রা.) খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, যুদ্ধে যাওয়ার মতো উপযুক্তরা হয় ইতোমধ্যেই শহীদ হয়ে গিয়েছেন নতুবা রণাঙ্গনে রয়েছেন। অবশেষে সবার সাথে পরামর্শ করলে এমন কয়েকটি গোত্রের খোঁজ পান যেখানে এখনও যুদ্ধে যাওয়ার মতো কিছু যুবক পাওয়া সম্ভব। তিনি হযরত আবু উবায়দাহ্ (রা.)-কে পত্র মারফৎ জানান, ছয় হাজার সৈন্য পাঠানো হচ্ছে; তিন হাজার সৈন্য উপরোক্ত গোত্র থেকে সংগৃহীত, আর আমর বিন মাদী কারেব যাচ্ছেন যিনি একাই তিন হাজার সৈন্যের সমতুল্য। বর্তমান যুগে কেউ একথা শুনলে এটিকে পাগলের প্রলাপ ভাববে, কারণ একজন কখনোই তিন হাজার জনের বিরুদ্ধে লড়তে পারে না। কিন্তু তখনকার মুসলমানদের ঈমান এতটাই দৃঢ় ছিল যে, তারা খলীফার এই বাণী শুনে অত্যন্ত উৎসাহ ও উচ্ছ্বাসের সাথে আমর বিন মাদীকে স্বাগত জানান ও উচ্চস্বরে ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনি উচ্চকিত করেন। শত্রুরা তাদের উদ্দীপনা দেখে মনে করে- হয়তো লাখ-দু’লাখ মুসলিম সৈন্য এসেছে, অথচ এসেছিলেন মাত্র একজন! এরপর বাকি তিন হাজার সৈন্যও এসে পড়েন এবং মুসলমানরা সংখ্যায় বহুগুণে বড় শত্রুবাহিনীকে পরাজিত করতে সক্ষম হন। এই জয়ের মূলে ছিল খলীফার সিদ্ধান্তের প্রতি মুসলমানদের অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস। মুসলেহ্ মওউদ (রা.) এই উদাহরণের আলোকে বলেন, এই আদর্শ অনুসারে আমাদেরও নিজেদের মনে সাহস সঞ্চার করতে হবে এবং সংখ্যায় অল্প হয়েও ইউরোপ ও পশ্চিমা দেশগুলোতে তবলীগের মাঠে জয়ী হতে হবে।

অতঃপর হুযূর (আই.) মিশর-জয়ের ইতিহাস তুলে ধরেন। আল্লামা শিবলী নো’মানীর মতে, বায়তুল মাকদাস জয়ের পর হযরত আমর বিন আ’স (রা.)’র বারংবার অনুরোধের প্রেক্ষিতে হযরত উমর (রা.) তাকে চার হাজার সৈন্যসহ মিশর অভিযানে যাওয়ার অনুমতি দেন; তবে এ-ও বলে দেন, যদি মিশর পৌঁছার পূর্বেই তিনি খলীফার কোন চিঠি পান তাহলে যেন ফিরে আসেন। আমর (রা.) যখন খলীফার চিঠি পান, ততক্ষণে তিনি বাহিনী নিয়ে মিশরের সীমানার ভেতর আরীশ নামক স্থানে পৌঁছে গিয়েছিলেন। তাই তিনি ফিরে না গিয়ে মিশরের একটি প্রসিদ্ধ শহর ফারমা অভিমুখে অগ্রসর হন। প্রসঙ্গক্রমে হুযূর (আই.) আরও কিছু বক্তব্য উদ্ধৃত করেন যেগুলোতে বর্ণিত আছে, হযরত আমর বিন আ’স (রা.) ইচ্ছাকৃতভাবে খলীফার চিঠি আরীশ পৌঁছার পূর্বে পড়েন নি কিংবা বিনা অনুমতিতেই মিশর চলে গিয়েছিলেন; হুযূর (আই.) এসব বর্ণনাকে ভ্রান্ত সাব্যস্ত করে বলেন, প্রকৃতপক্ষে আমর (রা.) মোটেও কোন চালাকির আশ্রয় নেন নি বা খলীফার আদেশ অমান্য করেন নি। ফারমার রোমানরা যখন জানতে পারে যে, হযরত আমর বিন আ’স (রা.) মাত্র চার হাজার সৈন্য নিয়ে আসছেন এবং তাদের কাছে যুদ্ধের জন্য পর্যাপ্ত সাজসরঞ্জামও নেই, বরং তারাই সংখ্যায় অধিক ও যুদ্ধ করতে সমর্থ- তখন তারা দুর্গে অবস্থান নিয়ে যুদ্ধে প্রবৃত্ত হয়। হযরত আমর (রা.)’র কাছে জয়ের লক্ষ্যে দু’টো পথ ছিল; হয় আকস্মিক আক্রমণ করে প্রাচীরের ফটক খুলে ভেতরে প্রবেশ করা, নতুবা দীর্ঘ সময় ধরে অবরোধ চালিয়ে যাওয়া যেন শত্রুরা রসদ ফুরিয়ে গেলে বেরিয়ে আসতে বাধ্য হয়। এভাবে কয়েক মাস পর্যন্ত অবরোধ চলতে থাকে; মাঝে মাঝে রোমান বাহিনী অকষ্মাৎ বেরিয়ে এসে লড়াই করতো, আবার ভেতরে চলে যেতো। একদিন এরূপ লড়াইয়ে হেরে গিয়ে রোমানরা যখন পালিয়ে যাচ্ছিল তখন মুসলিমরা তাদের পিছু ধাওয়া করে তাদের আগেই দুর্গের ফটকের কাছে পৌঁছে যান এবং পাঁচিল টপকে দুর্গের ফটক খুলে দেন; আর সেখানে তুমুল লড়াই হয় এবং মুসলমানরা তাদের পরাস্ত করে ফারমা জয় করেন।

ফারমার পর হযরত আমর বিন আ’স (রা.) বিলবেইস অভিমুখে যাত্রা করেন যা ফুসতাত থেকে সিরিয়া অভিমুখে ত্রিশ মাইল দূরত্বে অবস্থিত একটি শহর। রোমানরা তাঁর পথরোধ করে যেন তারা ব্যাবিলনের দুর্গগুলোর দিকে অগ্রসর হতে না পারেন। প্রাচীন অভিধানে ব্যাবিলনকে মিশরের প্রাচীর বলে উল্লেখ করা হয়েছে। হযরত আমর বিন আ’স (রা.) যুদ্ধ শুরুর আগেই তাদেরকে আলোচনার প্রস্তাব দেন। রোমানদের পক্ষ থেকে বিলবেইসের দু’জন সন্ন্যাসী আসে। হযরত আমর (রা.) তাদেরকে মহানবী (সা.)-এর মিশর জয় করার মহান ভবিষ্যদ্বাণী শোনান আর সেইসাথে তাঁর (সা.) পক্ষ থেকে মিশরবাসীদের প্রতি দায়িত্ব ও আত্মীয়তার সম্মান রক্ষার নির্দেশ শুনিয়ে তাদেরকে হয় ইসলাম গ্রহণ করার নতুবা জিযিয়া বা কর প্রদানে সম্মত হওয়ার প্রস্তাব দেন। সন্ন্যাসীরা মহানবী (সা.)-এর পক্ষ থেকে এত দূর-সম্পর্কের আত্মীয়তার সম্মান রক্ষার নির্দেশকে তাঁর (সা.) সত্যনবী হওয়ার চিহ্ন জ্ঞান করেন এবং ফিরে গিয়ে আলোচনার জন্য কয়েকদিন সময় চান। তাদেরকে সেই অবকাশ দেয়া হয়। দূত দু’জন কিবতীদের নেতা মুকাউকিস ও রোমান শাসক আতরাবুনের কাছে গিয়ে পুরো বৃত্তান্ত জানালে আতরাবুন অস্বীকৃতি জানায় ও রাতের বেলায়ই মুসলমানদের ওপর আক্রমণ করে বসে। যুদ্ধে অনেক মুসলমান শহীদ হন, তবুও রোমানরা পরাজিত হয় এবং তাদের অনেকে নিহত ও বন্দী হয়; আতরাবুন পালিয়ে যায়, কারও কারও মতে সে-ও নিহত হয়। বিলবেইসে মুসলমানদের মাসব্যাপী অবস্থানকালে আরও একটি ঘটনা ঘটেছিল যা তাদের মহত্বের পরিচায়ক। হিরাক্লিয়াসের পুত্র কনস্টানটিনের বাগদত্তা ছিল মুকাউকিসের মেয়ে আরমানুসা, সে মুসলমানদের হাতে বন্দি হয়। কিন্তু হযরত আমর (রা.) ও অন্যান্য সাহাবীরা মহানবী (সা.)-এর প্রতি তার পিতা মুকাউকিসের সম্মানজনক ব্যবহারের কথা স্মরণ করে তাকে তার সঙ্গী-সাথী ও ধন-সম্পদসহ মুক্ত করে দেন। এই ঘটনায় মুকাউকিস অত্যন্ত কৃতজ্ঞ ও অভিভূত হন।

বিলবেইস জয় করে হযরত আমর বিন আ’স (রা.) সাহারা অভিমুখে অগ্রসর হয়ে উমদুনাইন জনপদের কাছে পৌঁছেন যা বর্তমান কায়রোর স্থানবিশেষ; এটি প্রাচীন ফেরাউনদের রাজধানীও ছিল এবং ব্যাবিলনের দুর্গগুলোর সন্নিকটে ছিল। মুসলিম বাহিনী সেখানে অবস্থান নিলে রোমানরা তাদের সেরা বাহিনী ব্যাবিলন পাঠিয়ে দেয় এবং উমদুনায়ন দুর্গকেও শক্তিশালী করে। হযরত আমর বিন আস (রা.) যখন দেখেন যে, এত বড় বাহিনীর সাথে তার ছোট্ট বাহিনী পেরে উঠবে না, তখন তিনি হযরত উমর (রা.)’র কাছে সাহায্য পাঠানোর আবেদন করেন। হযরত উমর (রা.) চার হাজার সৈন্য প্রেরণ করেন, প্রতি হাজারের নেতৃত্বে ছিলেন যুবায়ের বিন আওয়াম, মিকদাদ বিন আসওয়াদ, উবাদাহ্ বিন সামেত ও মাসলামা বিন মুখাল্লাদ (রা.)। এরপর উভয় বাহিনীর মাঝে প্রচ- যুদ্ধ হয় এবং মুসলমানদের সুনিপুণ রণকৌশলের কারণে শত্রুপক্ষ পরাজিত হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে ফুয়ুম, আইনুশ-শামস, ফুসতাত প্রভৃতি স্থান বিজিত হয়। এরপর মুসলমানরা ব্যাবিলন জয় করেন যা আলেকজান্দ্রিয়ার পরই রোমানদের সবচেয়ে শক্তিশালী ঘাঁটি বলে বিবেচিত হতো। সেখানকার শাসক মুকাউকিস এক পর্যায়ে মুসলমানদের সাথে আলোচনায় বসেন এবং নিজেই হিরাক্লিয়াসের কাছে গিয়ে আবেদন করেন, তারা জিযিয়া বা কর প্রদানের শর্তে মুসলমানদের সাথে সন্ধিচুক্তি করতে আগ্রহী। কিন্তু হিরাক্লিয়াস তা কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করে এবং শাস্তিস্বরূপ মুকাউকিসকে দেশান্তরিত করে। যুদ্ধে রোমানরা পরাজিত হয় ও মুসলমানরা ব্যাবিলন জয় করেন। এরপর খলীফার অনুমতি সাপেক্ষে মুসলিমবাহিনী আলেকজান্দ্রিয়া অভিমুখে অগ্রসর হয় ও তা অবরোধ করে; কনস্টানটিনোপোলের পর এই শহরটিই বাইযেনটাইন বা রোমানদের সবচেয়ে বড় রাজধানী হিসেবে গণ্য হতো। দীর্ঘ নয় মাস অবরোধের পর মুসলমানরা তা জয় করেন। মুকাউকিসকে দেশান্তরিত করায় রোমানরা কিবতীদের সমর্থন হারিয়েছিল; কিবতীরা গোপনে মুসলমানদের জানিয়ে দেয় যে, তারা রোমানদের বিরুদ্ধে, সেইসাথে তারা মুসলমানদের সাহায্যও করে। আলেকজান্দ্রিয়া জয়ের সংবাদ শুনে হযরত উমর (রা.) অত্যন্ত আনন্দিত হন ও কৃতজ্ঞায় সিজদাবনত হন। আলেকজান্দ্রিয়া জয়ের ফলে সমগ্র মিশর মুসলমানদের করতলগত হয়। এসব জয়ের ধারাবাহিকতায় বারকা ও ত্রিপোলি জয়ের ইতিহাসও হুযূর (আই.) তুলে ধরেন।

প্রাসঙ্গিকভাবে হুযূর (আই.) কতিপয় প্রাচ্যবিদের একটি জঘন্য মিথ্যা অপবাদের উল্লেখ করে নির্ভরযোগ্য তথ্য ও যুক্তি-প্রমাণের আলোকে সেটির অপনোদন করেন। আপত্তিটি হল- হযরত উমর (রা.) নাকি আলেকজান্দ্রিয়ার প্রসিদ্ধ লাইব্রেরি পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং তা ছয়মাস ধরে পোড়ানো হয়েছিল। অথচ অনেক পশ্চিমা খ্রিস্টান গবেষকও স্বীকার করেন, এটি একটি ডাহা মিথ্যা অপবাদ এবং এর মিথ্যা হওয়ার প্রমাণও উপস্থাপন করেন। কিবতী যাজক ইউহান্নার বরাতে মিশরীয় ইতিহাসবিদ আবুল ফারায যে বর্ণনা দিয়েছেন তা একেবারেই অযৌক্তিক ও ভ্রান্ত; তাবারী, ইবনে সিরীন, ইয়াকুবী, কিন্দী, বালাযারি, ইবনে খালদূন প্রমুখ ঐতিহাসিকদের কেউ-ই এই ঘটনার কোন উল্লেখ করেন নি। এটি মহানবী (সা.) এবং ইসলামের শিক্ষা ও মূলনীতিরও সম্পূর্ণ বিরোধী একটি ঘটনা। অধ্যাপক বাটলারের মতে যে ব্যক্তিকে ঘিরে এই ঘটনা- সেই যাজক ইউহান্না আলোচ্য ঘটনার অনেক আগেই মারা গিয়েছিল। তাছাড়া মুসলমানদের তাবৎ ইতিহাস প্রমাণ করে, তারা ভিন্ন জাতির শিক্ষা ও জ্ঞান কেবল সংরক্ষণই করেন নি, বরং নিজেরা তা চর্চাও করেছে। আর বিজিত অঞ্চলে মুসলমানরা যেখানে বিধর্মীদের প্রাণ, ধন-সম্পদ, ধর্ম, ধর্মগ্রন্থ, উপাসনালয় প্রভৃতির সুরক্ষা ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করেছে, সেখানে জ্ঞানের এক সাগর তারা বিনষ্ট করবে- এটি নিতান্তই অযৌক্তিক। খলীফাতুল মসীহ্ আউয়াল (রা.) তাঁর ‘তসদীকে বারাহীনে আহমদীয়া’ পুস্তকে এই আপত্তির খণ্ডনে এ-ও বলেন, যদি একাজ ইসলাম বা ইসলামের খলীফা করে থাকতেন, তবে গ্রীক দর্শন, চিকিৎসাশাস্ত্র ইত্যাদি জ্ঞান মুসলমানরা কখনোই চর্চা করতো না। প্রকৃত বিষয় হল, রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার কোন এক যুদ্ধের সময় তার নৌবহর শত্রুদের হাতে চলে যাওয়ার ভয়ে সেগুলোতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল; ঘটনাচক্রে সেই আগুন আলেকজান্দ্র্রিয়ার লাইব্রেরিকেও ছুঁয়ে ফেলে ও তা পুড়ে যায়। আর এই বর্ণনা খোদ গ্রীক দার্শনিক প্লুটার্ক তার ‘লাইফ অব সিজার’ পুস্তকে দিয়েছে। এই আপত্তিকারীরা ভুলে যায় যে, উল্টো খ্রিস্টান কার্ডিনালের নির্দেশে স্পেনে কত বড় লাইব্রেরি পোড়ানো হয়েছিল। খুতবার শেষদিকে হুযূর (আই.) হযরত উমর (রা.)’র যুগের মুসলমানদের ধার্মিকতা, ইবাদত, জগদ্বিমুখতা, ধর্মসেবায় নিরলস পরিশ্রম ও বিপদের সময় নির্ভিকচিত্তে অবিচল থাকার চিত্র হযরত মুসলেহ্ মওউদ (রা.)’র বরাতে তুলে ধরেন এবং ব্যাখ্যা করেন যে, বিপদাপদ প্রকৃতপক্ষে উন্নতির ক্ষেত্রে সহায়ক; এটি প্রত্যেক আহমদীর অনুধাবন করা উচিত ও আহমদীয়াতের বিজয়ের জন্য সাহাবীদের এই আদর্শ নিজের মাঝে ধারণ করা উচিত।