চৌধুরী হামীদুল্লাহ্ সাহেব: আহ্‌মদীয়াত তথা ইসলামের একজন প্রকৃত সেবক

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ - খলীফাতুল মসীহ্‌ আল্‌ খামেস (আই.)

১২-ফেব্রুয়ারি, ২০২১

মসজিদ মুবারক, ইসলামাবাদ, টিলফোর্ড, লন্ডন

জুমুআর খুতবার সারমর্ম


এই জুমু’আর খুতবার সারাংশটিতে কোনো প্রকার ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে তার দায়ভার আহ্‌মদীয়া বাংলা টীম গ্রহণ করছে।

আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের বিশ্ব-প্রধান ও পঞ্চম খলীফাতুল মসীহ্‌ হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) গত ১২ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ইং ইসলামাবাদের মসজিদে মুবারকে প্রদত্ত জুমুআর খুতবায় সদ্য প্রয়াত চৌধুরী হামীদুল্লাহ্ সাহেব: আহ্‌মদীয়াত তথা ইসলামের একজন প্রকৃত সেবক-এর স্মৃতিচারণ করেন।
তাশাহহুদ, তাআ’ব্বুয ও সূরা ফাতিহা পাঠের পর হুযূর (আই.) বলেন, আজ জামাতের একজন অত্যন্ত নিষ্ঠাবান সেবক শ্রদ্ধেয় চৌধুরী হামীদুল্লাহ্ সাহেবের স্মৃতিচারণ করতে চাই, যিনি সম্প্রতি ইন্তেকাল করেছেন। তিনি যুগপৎ তাহরীকে জাদীদ, পাকিস্তানের উকিলে আলা এবং আঞ্জুমানে আহমদীয়ার সদর ছিলেন এবং এক সুদীর্ঘ সময় ধরে অফিসার জলসা সালানার দায়িত্বও পালন করেছেন; গত ৭ ফেব্রুয়ারি ৮৭ বছর বয়সে তাহের হার্ট ইনস্টিটিউটে তিনি মৃত্যুবরণ করেন, إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ। তার পিতার নাম ছিল বাবু মুহাম্মদ বখশ্ সাহেব এবং মায়ের নাম ছিল আয়েশা বিবি সাহেবা; তারা ভেরার পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তার পিতা তার জন্মের ৫ বছর পূর্বে ১৯২৯ সনে একটি স্বপ্নের ভিত্তিতে আহমদীয়াত গ্রহণ করেছিলেন। বাবু মুহাম্মদ বখশ্ সাহেব স্বপ্নে মহানবী (সা.)-কে দেখেন; মহানবী (সা.) তাকে বলেন, ‘তুমি যে চেয়ারে বসে আছ, এর পায়াগুলো নড়বড়ে হয়ে গেছে।’ তিনি সাথে সাথে চেয়ার থেকে উঠে দেখেন যে আসলেই তাই, আরেকটু হলেই চেয়ার ভেঙে পড়ে গিয়ে তার মাথা ফেটে যেত। মহানবী (সা.) তখন তাকে একটি লম্বা হাতলযুক্ত চেয়ার দেখিয়ে বলেন, ‘এই চেয়ারে বসে পড়, এটা আহমদীয়াতের চেয়ার।’ এই স্বপ্ন দেখে মুহাম্মদ বখশ্ সাহেব আহমদীয়াত গ্রহণ করেন। চৌধুরী হামীদুল্লাহ্ সাহেব ১৯৩৪ সনে কাদিয়ানে জন্মগ্রহণ করেন আর কাদিয়ানেই প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন। ১৯৪৬ সালে হযরত মুসলেহ্ মওউদ (রা.) যখন জীবনোৎসর্গ করার জন্য আহ্বান জানান, তখন চৌধুরী সাহেব ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন; তার মা তাকে নিয়ে হযরত মুসলেহ্ মওউদ (রা.)-এর কাছে যান এবং তাকে ধর্মসেবার জন্য উৎসর্গ করেন। তিনি তাকে সাধারণ লাইনে পড়াশোনা অব্যাহত রাখতে বলেন। ১৯৪৯ সালে মাধ্যমিক পাসের পর রাবওয়াতে নাযারত দিওয়ানে স্বয়ং খলীফাতুল মসীহ্ সানী (রা.) তার এবং তার সাথে থাকা মুসলেহ্ উদ্দীন সাহেব, সামীউল্লাহ্ সাহেব প্রমুখ জীবনোৎসর্গকারীদের সাক্ষাতকার নেন। হযরত মুসলেহ্ মওউদ (রা.)-এর নির্দেশে তিনি গণিতে বিএসসি করেন এবং পুরো পাঞ্জাব প্রদেশে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন, এরপর একই বিষয়ে এমএসসি করেন। অতঃপর ১৯৫৫ সালে তাকে তা’লীমুল ইসলাম কলেজে শিক্ষকতার দায়িত্ব প্রদান করা এবং গণিত বিভাগের প্রধানও নিযুক্ত করা হয়। ১৯৬০ সনে সারগোধা নিবাসী আব্দুল জব্বার খান সাহেবের কন্যা রাজিয়া খানম সাহেবাকে তিনি বিয়ে করেন। ১৯৭৪ পর্যন্ত তিনি তা’লীমুল ইসলাম কলেজে শিক্ষকতার দায়িত্ব পালন করেন, কলেজটি জাতীয়করণের পর খলীফাতুল মসীহ্ সালেস (রাহে.)’র নির্দেশে সেখান থেকে পদত্যাগ করে নাযের যিয়াফতের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। খলীফাতুল মসীহ্ রাবে (রাহে.) তাকে ১৯৮২ সনে তাহরীকে জাদীদের উকিলে আলা নিযুক্ত করেন এবং ১৯৮৯ সনে তিনি তাহরিকে জাদীদের সদরের দায়িত্বপ্রাপ্ত হন; আমৃত্যু তিনি পরম নিষ্ঠা ও বিশ্বস্ততার সাথে এসব দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৮৬ থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এডিশনাল নাযেরে আলা (হাঙ্গামী) হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৩ পর্যন্ত তিনি কেন্দ্রীয় খোদ্দামুল আহমদীয়ার সদরের দায়িত্বও পালন করেন, যখন সারা পৃথিবীতে একজনই সদর খোদ্দাম হতেন। যখন খলীফাতুল মসীহ্ সালেস (রাহে.) তাকে এই দায়িত্ব প্রদান করেন, তখন তার দায়িত্বগ্রহণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন এবং অসাধারণ উপদেশাবলী প্রদান করেন। হুযূর (আই.) খলীফাতুল মসীহ্ সালেস (রাহে.)’র সেই বক্তব্যের দীর্ঘ একটি অংশ খুতবায় উদ্ধৃত করেন, যেখানে তিনি (রাহে.) চৌধুরী সাহেবের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। খলীফাতুল মসীহ্ সালেস (রাহে.) বলেন, “আমাদের কোন স্থানে গিয়ে থেমে গেলে চলবে না, বরং সর্বদা সম্মুখে এগিয়ে যেতে হবে”। তিনি (রাহে.) বলেন, “যাকে এখন এই দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে, সে হযরত মসীহ্ মওউদ (আ.)-এর রক্ত-সম্পর্কের বংশধর নয়, কিন্তু আধ্যাত্মিকভাবে তাঁর (আ.) সন্তান গণ্য হবার উপযুক্ত। রক্ত-সম্পর্কের গণ্ডি তো একটি সীমাবদ্ধ বিষয়; বস্তুতঃ হযরত মসীহ্ মওউদ (আ.)-এর আধ্যাত্মিক সন্তানরাই তাঁর আসল সন্তান, তাদের সাথে তাঁর রক্তের সম্পর্ক থাকুক বা না-ই থাকুক। হযরত মসীহ্ মওউদ (আ.)-এর নিজ বংশধরদের সাথে যে সম্পর্ক, তা মূলতঃ আধ্যাত্মিক সম্পর্ক। হাদীসে যে বর্ণিত হয়েছে, নবীদের বাহ্যিক ওয়ারিশ বা উত্তরাধিকারী হয় না- সেটিও এই বিষয়ের প্রতিই ইঙ্গিত করে; নবীদের উত্তরাধিকার আধ্যাত্মিক হয়ে থাকে এবং যারা আধ্যাত্মিকভাবে নবীদের উত্তরাধিকারী হওয়ার যোগ্যতা রাখেন, তাদের আদর্শ ও শিক্ষা নিজেদের মধ্যে লালন করেন, তারাই সেই উত্তরাধিকারী বা বংশধর হয়ে থাকেন। এতে দু’টো বিষয় লক্ষ্যণীয়, শুধুমাত্র রক্তের সম্পর্কে যারা বংশধর, এতে তাদের কোন শ্রেষ্ঠত্ব নেই, এটি তাদেরকে কোনরূপ শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করে না। দ্বিতীয়তঃ, নবীদের বংশধর যারা শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছেন, তারা কেবল বংশধর হওয়ার কারণে তা লাভ করেন নি; বরং আত্মত্যাগ, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার মাধ্যমে আধ্যাত্মিক যোগ্যতা অর্জন করার কারণেই সেই শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছেন”। হুযূর (আই.) বলেন, খলীফা সালেস (রাহে.)-এর বর্ণিত এই স্বর্ণালী নীতি যা প্রত্যেক জীবনোৎসর্গকারী বা কর্মী বা মসীহ্ মওউদ (আ.)-এর বংশধরের পাঠ করা উচিত, তাদের একইসাথে চৌধুরী সাহেবের জন্য দোয়াও করা উচিত, কেননা তার উপলক্ষ্যেই আমরা এ কথাগুলো জানতে পেরেছি। চৌধুরী সাহেব এই দায়িত্ব যথাযথভাবে সুসম্পন্ন করার পর যখন খোদ্দাম থেকে তার বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়, তাতেও খলীফাতুল মসীহ্ সালেস (রাহে.) উপস্থিত ছিলেন এবং পুনরায় তার কর্মকালে মজলিসের উন্নতির ভূয়সী প্রশংসা করেন।
১৯৭৪ সালের উদ্ভুত পরিস্থিতিতে খলীফাতুল মসীহ্ সালেস (রাহে.) যে বিশেষ জরুরি বিভাগ গঠন করেন, তাতেও চৌধুরী সাহেব মূল্যবান সেবা করার সৌভাগ্য লাভ করেন। খলীফাতুল মসীহ্ রাবে (রাহে.)’র লন্ডনে হিজরতের পর লন্ডনে সমস্ত কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠার জন্য, তাঁর নির্দেশে চৌধুরী সাহেব এক বছরের বেশি সময় এখানে অবস্থান করেন এবং সব ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৮২ সালে তিনি মজলিস আনসারুল্লাহ্, পাকিস্তানের সদর নির্বাচিত হন এবং ১৯৯৯ পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৯ সালে জামাতের শতবার্ষিকী জুবিলী পালনের জন্য যে পরিকল্পনা কমিটি গঠিত হয়, সেটির সভাপতি হিসেবেও চৌধুরী সাহেব দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮-এ অনুষ্ঠিতব্য খিলাফত শতবার্ষিকী জুবিলীর জন্য যে পরিকল্পনা কমিটি ২০০৫ সালে গঠিত হয়, সেটিরও তিনি সভাপতি ছিলেন। ২০০৩ সালের এপ্রিল মাসে খলীফাতুল মসীহ্ রাবে (রাহে.)’র ইন্তেকালের পর খিলাফত নির্বাচন কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করার সৌভাগ্যও তিনি লাভ করেন। খলীফাতুল মসীহ্ রাবে (রাহে.)-ও বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার কর্মদক্ষতা ও বিচক্ষণতার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
মোকাররম চৌধুরী হামীদুল্লাহ্ সাহেব তার সহধর্মিনী রাজিয়া খানম সাহেবা ছাড়াও এক পুত্র ও দুই কন্যা রেখে গিয়েছেন; তার পুত্র রাশিদুল্লাহ্ সাহেব কানাডা-প্রবাসী; এক মেয়ে যিনি জহির হায়াত সাহেবের সহধর্মিনী, তিনি লন্ডনে আছেন। ছোট মেয়ে রেজওয়ানা হামীদ সাহেবা মওলানা কামাল ইউসুফ সাহেবের পুত্রবধূ এবং নিসার আহমদ সাহেবের স্ত্রী, তিনি সুইডেনে রয়েছেন। চৌধুরী হামীদুল্লাহ্ সাহেবের সহধর্মিনী তার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেছেন, বিয়ের পর থেকেই তিনি তাকে শিখিয়েছেন- বেতন থেকে প্রথমে জামাতের চাঁদা দিয়ে তারপর অন্যান্য খরচ করতে হবে। সেসময় তার বেতন ছিল মাত্র ৮০ রূপি, যা নিতান্তই স্বল্প ছিল; কিন্তু চৌধুরী সাহেবের এই নীতির কারণে সেই অল্প টাকা দিয়েই স্বচ্ছন্দ্যে তাদের সব ব্যয় নির্বাহ হয়ে যেত। চৌধুরী সাহেব প্রতিদিন তাহাজ্জুদ পড়তেন, পাঁচবেলার নামায মসজিদে গিয়ে বা অফিসে বাজামাত পড়তেন; তাকে দেখেই তার স্ত্রী তাহাজ্জুদে অভ্যস্ত হয়েছেন। তিনি প্রায়ই অনেক রাত পর্যন্ত অফিসে কাজ করতেন, কিন্তু বাড়ি ফিরে স্ত্রীকে বিরক্ত করতে চাইতেন না, নিজেই চাবি দিয়ে দরজা খুলে ঘরে ঢুকতেন, খাবার নিজেই গরম করে খেয়ে নিতেন। খাবার-দাবার বা পোশাক-আশাকের বিষয়ে কখনোই কোন চাহিদা ছিল না। কারও বিরুদ্ধে কখনও মনে কোন ক্ষোভ পুষে রাখতেন না। সন্তানদের খুব বেশি সময় দিতে পারতেন না; কিন্তু যেটুকু সময় সম্ভব হতো- তা দিতেন এবং উত্তমরূপে তাদের তরবীয়ত করতেন। সন্তানদের দু’টি বিষয়ের প্রতি তিনি সর্বদা খুবই গুরুত্ব দিতেন; নিয়মিত নামায ও যুগ-খলীফার খুতবা শোনা এবং খুতবায় নির্দেশিত বিষয়গুলো পালন করা। জামাতের অর্থ খরচের ব্যাপারে খুবই সতর্ক ছিলেন, সবসময় সাশ্রয়ের প্রতি দৃষ্টি রাখতেন। অত্যন্ত সময়নিষ্ঠ ও নিয়মনিষ্ঠ ব্যক্তি ছিলেন, প্রতিটি কাজে একদম সময়মত উপস্থিত থাকতেন; নিজের প্রয়োজনীয় কাজে অত্যন্ত কৃচ্ছতা সাধন করতেন। তার আনুগত্যের মান ছিল অতুলনীয় ও অসাধারণ। তিনি বলতেন, কোন কাজে যদি ভুলও হয়, তবুও তা যুগ-খলীফাকে অবগত করবে; এর ফলে খলীফার দোয়াও লাভ হবে এবং কাজের সংশোধনও হয়ে যাবে। খলীফার পক্ষ থেকে কোন নির্দেশনা এলে তা কয়েকবার করে পড়তেন এবং একেবারে মুখস্ত করে ফেলতেন, আর তা হুবহু পালন করতেন। জামাতের কাজে অব্যবস্থাপনা একদম সহ্য করতেন না। খলীফাতুল মসীহ্ সালেস (রাহে.)’র কাছ থেকে শেখা একটি বিষয় তিনি প্রায়ই অন্যদের বলতেন- ব্যক্তিগত কোন সমস্যা দেখা দিলে জামাতের কাজে আরো বেশি সময় দাও, তাহলে আল্লাহ্ স্বয়ং তোমার সমস্যা সমাধান করে দিবেন। যেসব ব্যক্তি যুগ-খলীফার নির্দেশের চেয়ে আইন-কানুনকে বেশি গুরুত্ব দেয়, তাদেরকে বলতেন: যুগ-খলীফা যে আদেশ ও নির্দেশনা প্রদান করেন- তা-ই আইন। একবার তাকে তার জীবনের অসাধারণ সাফল্যের রহস্য সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি উত্তরে বলেন, ‘রহস্য একটাই- নিজের জ্ঞান-গরিমাকে তুচ্ছ মনে করুন এবং চোখ বন্ধ করে খলীফার আনুগত্য করুন।’ হুযূর (আই.) চৌধুরী সাহেব সম্পর্কে নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাও বর্ণনা করেন এবং খিলাফতের পূর্বেও এবং খিলাফতের পরও তার অসাধারণ আনুগত্যের কথা তুলে ধরেন এবং বলেন, তিনি অসাধারণ যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব ও একদম দরবেশতুল্য এক মানুষ ছিলেন; যুগ-খলীফার প্রতিটি আদেশ তিনি অক্ষরে অক্ষরে পালন করতেন। তিনি হযরত মসীহ্ মওউদ (আ.)-এর পুস্তকাদীর গভীর জ্ঞান রাখতেন আর জামাতের ইতিহাসের তো এনসাইক্লোপিডিয়া ছিলেন। হুযূর (আই.) দোয়া করেন, আল্লাহ্ তা’লা তার পদমর্যাদা উন্নত করুন এবং খলীফাকে তাঁর মত ‘সুলতানে নাসীর’ সর্বদা দান করতে থাকুন। (আমীন)
খুতবার শেষদিকে হুযূর (আই.) পুনরায় পাকিস্তানের সার্বিক অবস্থার উন্নতির জন্য দোয়া করার ব্যাপারে জামাতের মনোযোগ আকর্ষণ করেন। একইসাথে হুযূর (আই.) করোনা মহামারী প্রসঙ্গেও মন্তব্য করেন যে, বিশ্বজুড়ে আহমদীরাও যথোপযুক্ত সতর্কতা অবলম্বন করছে না। হুযূর (আই.) সবাইকে যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করতে নির্দেশ দেন; মাস্ক পরিধান ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার সরকারি নির্দেশ পালন করতেএবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলেন এবং অপ্রয়োজনীয় সফর এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন। হুযূর (আই.) দোয়া করেন, আল্লাহ্ তা’লা যেন দ্রুত এই মহামারীর অবসান ঘটান এবং এতে আক্রান্ত আহমদী অ-আহমদী সবাইকে আশু আরোগ্য দান করেন। (আমীন)