শ্রেষ্ঠ মহাপুরুষ – নিষ্ঠাবান বদরী সাহাবীগণ

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ - খলীফাতুল মসীহ্‌ আল্‌ খামেস (আই.)

১৬-অক্টোবর, ২০২০

মসজিদ মুবারক, ইসলামাবাদ, টিলফোর্ড, লন্ডন

জুমুআর খুতবার সারমর্ম


এই জুমু’আর খুতবার সারাংশটিতে কোনো প্রকার ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে তার দায়ভার আহ্‌মদীয়া বাংলা টীম গ্রহণ করছে।

আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের বিশ্ব-প্রধান ও পঞ্চম খলীফাতুল মসীহ্‌ হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) গত ১৬ই অক্টোবর, ২০২০ ইসলামাবাদের মসজিদে মুবারকে প্রদত্ত জুমুআর খুতবায় পূর্বের ধারা অনুসরণে নিষ্ঠাবান বদরী সাহাবীদের বর্ণাঢ্য জীবনের স্মৃতিচারণ করেন। এ খুতবায় তিনি হযরত মুআওভেয বিন হারেস (রা.) ও হযরত উবাই বিন কা’ব (রা.)’র জীবনের স্মৃতিচারণ করেন।
তাশাহহুদ, তাআ’ব্বুয ও সূরা ফাতিহা পাঠের পর হুযূর (আই.) বলেন, আমি আজ যে দু’জন সাহাবীর স্মৃতিচারণ করব তাদের মধ্যে প্রথমজনের নাম হল, হযরত মুআওভেয বিন হারেস (রা.); তিনি আনসারদের খাযরাজ গোত্রের সদস্য ছিলেন। তার পিতার নাম ছিল হারেস বিন রিফা’ আর মায়ের ছিল, আফরা বিনতে উবায়েদ। হযরত মুআয ও অওফ তার আপন সহোদর ছিলেন, তাদের তিন ভাইকে বাবার মতই মায়ের পরিচয়েও ডাকা হতো; অর্থাৎ তারা বনু আফরা নামেও সুপরিচিত ছিলেন। ইতিহাসবিদদের মধ্যে একমাত্র ইবনে ইসহাক লিখেছেন, হযরত মুআওভেয (রা.) আকাবার দ্বিতীয় বয়আতে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তার স্ত্রীর নাম ছিল উম্মে ইয়াযিদ বিন কায়েস, যার গর্ভে রুবাই ও উমায়রা নামে দু’কন্যার জন্ম হয়েছিল। তিনি তার দু’ভাই মুআয ও অওফের সাথে বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। যুদ্ধে যাবার সময় তাদের কাছে একটি মাত্র উট ছিল, তারা তিনজন ও তাদের মুক্ত ক্রীতদাস আবুল হামরা পালাক্রমে এর পিঠে আরোহণ করে যুদ্ধে গমন করেন বলে জানা যায়।
বদরের যুদ্ধের দিন আবু জাহলকে আক্রমণ করে যারা ঘায়েল করেন তাদের মধ্যে তিনিও অন্যতম। কতক বর্ণনায় আফরার দু’পুত্র অর্থাৎ, মুআওভেয ও মুআয এর নাম এসেছে, কতক বর্ণনায় মুআয বিন আফরা ও মুআয বিন আমরের নাম এসেছে; ইমাম ইবনে হাজর আসকালানীর মতে উভয় মুআযের পর হয়তো মুআওভেযও তার ওপর আক্রমণ করেছিলেন, সবশেষে আব্দুল্লাহ্ বিন মাসঊদ (রা.) মুমূর্ষ অবস্থায় পড়ে থাকা আবু জাহলের শিরচ্ছেদ করেন।
হযরত মুসলেহ্ মওউদ (রা.) আবু জাহলের করুণ পরিণতি সম্পর্কে একস্থানে বর্ণনা করেন, যুদ্ধ আরম্ভ হওয়ার পূর্বে আবু জাহল আসন্ন বিজয়ের পর বিরাট আনন্দোৎসব করার ঘোষণা দিচ্ছিল; অথচ সেই আবু জাহলকেই মদীনার দুই নবীন বালক আক্রমণ করে হত্যা করেন। যুদ্ধ শেষে যখন সে মুমূর্ষ অবস্থায় পড়ে ছিল, তখন আব্দুল্লাহ্ বিন মাসঊদ (রা.) তার কাছে গেলে সে আক্ষেপ করে বলেছিল, মদীনার চাষাভুষোদের ছেলেদের হাতে সে মরছে- এটাই তার সবচেয়ে বড় দুঃখ। সে হযরত আব্দুল্লাহ্‌কে অনুরোধ করেছিল যেন আরবের রীতি অনুসারে যেভাবে যুদ্ধে মৃত বড় নেতাদের গ্রীবাদেশ লম্বা রেখে মস্তক ছিন্ন করা হতো, তারও গ্রীবাদেশ লম্বা রেখে যেন শিরচ্ছেদ করা হয়। কিন্তু তার এই শেষ ইচ্ছাও পূরণ করা হয়নি। যে উপলক্ষ্য সামনে রেখে সে সামান্য পূর্বেই আনন্দোৎসব করতে উন্মুখ ছিল, সেই একই উপলক্ষ্য তার চরম নৈরাশ্য ও করুণ পরিণতির কারণ হয়। হযরত মুআওভেয বদরের যুদ্ধে লড়াই করতে করতে শাহাদতবরণ করেন; আবু মুসাফে’ তাকে শহীদ করে।
এরপর হুযূর হযরত উবাই বিন কা’ব (রা.)’র স্মৃতিচারণ করেন; তিনি আনসারদের খাযরাজ গোত্রের বনু মুয়াবিয়া শাখার সদস্য ছিলেন। তার পিতার নাম কা’ব বিন কায়েস আর মায়ের নাম ছিল, সুহায়লা বিনতে আসওয়াদ। তার দু’টি ডাকনাম ছিল, মহানবী (সা.) তাকে আবু মুনযের নামে ডাকতেন, আর হযরত উমর (রা.) তার পুত্র তোফায়েলের নামের সাথে মিলিয়ে তাকে আবু তোফায়েল বলে ডাকতেন। হযরত উবাই (রা.) মাঝারি গড়নের মানুষ ছিলেন, মাথার চুল ও দাড়ি সাদা ছিল, তিনি কলপ ব্যবহার করতেন না। তিনি আকাবার দ্বিতীয় বয়আতের সময় সত্তরজন আনসারের সাথে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। তিনি ইসলাম গ্রহণের পূর্বেও লিখতে পড়তে জানতেন; ইসলাম গ্রহণের পর তিনি মহানবী (সা.)-এর অন্যতম ওহী-লেখক হবারও সৌভাগ্য অর্জন করেন। মহানবী (সা.) তার ও হযরত তালহা বিন উবায়দুল্লাহ্ (রা.)’র মধ্যে ভ্রাতৃত্ব বন্ধন স্থাপন করেন; অপর এক বর্ণনামতে তার ধর্মভাই ছিলেন হযরত সাঈদ বিন যায়েদ (রা.)।
তার সম্পর্কে বর্ণিত আছে, আল্লাহ্ তা’লা মহানবী (সা.)-কে নির্দেশ দিয়েছিলেন যেন তিনি হযরত উবাইকে কুরআন পড়ে শোনান এবং মহানবী (সা.) বলেছিলেন, ‘আমার উম্মতের শ্রেষ্ঠ কুরআন পাঠকারী হল উবাই।’ পবিত্র কুরআন সম্পর্কে তার গভীর জ্ঞান ছিল। হযরত মুসলেহ্ মওউদ (রা.) বর্ণনা করেন, হযরত উবাই সেই চার ব্যক্তির একজন, যাদের কাছ থেকে মহানবী (সা.) কুরআন শিখতে বলতেন; এছাড়া তাঁর উল্লিখিত পনেরজন কাতেবে ওহী সাহাবীর মধ্যে হযরত উবাই (রা.)’র নামও রয়েছে। মুসলেহ্ মওউদ (রা.) আরও বলেন, মহানবী (সা.) চারজন সাহাবীকে এই দায়িত্ব দিয়েছিলেন যে, তারা নিজেরা স্বয়ং মহানবী (সা.)-এর কাছ থেকে সম্পূর্ণ কুরআন মুখস্ত করবেন ও অন্যদের শেখাবেন; সেই চারজন হলেন, হযরত আব্দুল্লাহ্ বিন মাসউদ, সালেম, মুআয বিন জাবাল ও উবাই বিন কা’ব (রা.)। প্রথম দু’জন হলেন মুহাজির ও পরের দু’জন আনসারী; পেশার দিক থেকে হযরত আব্দুল্লাহ্ ছিলেন শ্রমিক, হযরত সালেম একজন মুক্ত ক্রীতদাস, হযরত উবাই ও মুআয মদীনার সম্ভ্রান্ত নেতা। অর্থাৎ মহানবী (সা.) সকল শ্রেণীর মানুষকে দৃষ্টিপটে রেখে সব শ্রেণী থেকেই তাদেরকে নির্বাচন করেছিলেন। অবশ্য এছাড়া আরো অনেক সাহাবী সরাসরি মহানবী (সা.)-এর কাছ থেকে কুরআনের অংশবিশেষ শিখেছিলেন বলে জানা যায়। মহানবী (সা.) যখন হযরত উবাইকে বলেন, ‘আল্লাহ্ তা’লা আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন, আমি যেন তোমাকে কুরআন পড়ে শোনাই’, তখন তিনি (রা.) বিস্ময়ে প্রশ্ন করেন, ‘সমগ্র জগতের প্রভু-প্রতিপালক আমার নাম উল্লেখ করেছেন?’ মহানবী (সা.) হ্যাঁ-সূচক উত্তর দিলে তিনি (রা.) আনন্দে ও আবেগে কেঁদে ফেলেন। হযরত উমর (রা.) মহানবী (সা.)-এর তিরোধানের পর অনেকবার হযরত উবাই রা.)’র এই বিশেষ মর্যাদার উল্লেখ করেছেন। হযরত আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, মহানবী (সা.)-এর জীবদ্দশায় যে চারজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ কুরআন মুখস্ত করেছিলেন তারা হল, হযরত উবাই বিন কা’ব, মুআয বিন জাবাল, আবু যায়েদ ও যায়েদ বিন সাবেত (রা.); প্রত্যেকেই আনসারী সাহাবী ছিলেন।
মহানবী (সা.) বলেন, আমার উম্মতের প্রতি সবচেয়ে দয়ালু আবু বকর, ধর্মের নিয়মাবলীর বিষয়ে সবচেয়ে দৃঢ় উমর, সবচেয়ে লজ্জাশীল উসমান, হালাল ও হারামের জ্ঞান সবচেয়ে বেশি মুআয বিন জাবালের, কর্তব্য সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি সচেতন যায়েদ বিন সাবেত, কুরআন পাঠের সবচেয়ে বেশি জ্ঞান উবাই বিন কা’ব (রা.), আর প্রত্যেক উম্মতের একজন আমীন থাকেন, এই উম্মতের আমীন হলেন আবু উবায়দা বিন জাররাহ্ (রা.)। হযরত উবাই (রা.) কুরআনের প্রতিটি শব্দ স্বয়ং রসূলুল্লাহ্ (সা.)-এর পবিত্র মুখ থেকে শুনে শুনে মুখস্ত করেন। মহানবী (সা.)-ও তার আগ্রহ দেখে তাকে শেখানোর ব্যাপারে বিশেষ যত্নবান ছিলেন। অনেক সময় জ্যেষ্ঠ সাহাবীরা যখন প্রশ্ন করা থেকে বিরত থাকতেন, তখনও হযরত উবাই (রা.) নিঃসংকোচে প্রশ্ন করতেন আর মহানবী (সা.)-ও সাগ্রহে উত্তর দিতেন, এমনকি কখনও কখনও প্রশ্ন না করলেও নিজে থেকেই কোন বিষয়ের অবতারণা করতেন ও উত্তর দিয়ে দিতেন। হযরত উবাই বিন কা’ব (রা.)’র কুরআনের জ্ঞান কতটা গভীর ছিল, সেটা এই ঘটনা থেকে কিছুটা অনুমান করা যায় যে, মহানবী (সা.) তাঁর জীবনের শেষ বছর হযরত উবাই (রা.)-কে পুরো কুরআন শোনান এবং বলেন, হযরত জীব্রাঈল তাকে বলেছেন, তিনি (সা.) যেন উবাইকে পুরো কুরআন শুনিয়ে নিশ্চিত হয়ে নেন।
একদিন মহানবী (সা.) জুমুআর খুতবায় সূরা তওবা পাঠ করেন; হযরত আবু দারদা ও আবু যার যেহেতু এটি জানতেন না, তাই তারা খুতবার মাঝেই ইশারায় হযরত উবাই (রা.)-কে জিজ্ঞেস করেন, এই আয়াত কবে নাযিল হল? তিনি তাদেরকে ইশারায় চুপ থাকতে বলেন। নামায শেষে তারা দু’জন উবাই (রা.)-কে জিজ্ঞেস করেন, তুমি আমাদের উত্তর দিলে না কেন? উবাই তাদের বলেন, আজ তুচ্ছ একটা ভুলের কারণে তোমাদের নামায নষ্ট হয়েছে। তারা দু’জন মহানবী (সা.)-এর কাছে গিয়ে অভিযোগের সুরে এই বিষয়টি বর্ণনা করলে তিনি (সা.) বলেন, উবাই ঠিক বলেছে, খুতবার মাঝে কথা বলা অনুচিত। মহানবী (সা.)-এর জীবদ্দশায় হযরত তোফায়েল বিন আমরকে হযরত উবাই কুরআন শেখান, কৃতজ্ঞতাস্বরূপ তিনি তাকে একটি সুন্দর ধনুক উপহার দেন, আরেকবার আরেক ছাত্র তাকে সুন্দর পোশাক উপহার দেন; কিন্তু মহানবী (সা.) তাকে এসব উপহার ফিরিয়ে দিতে বলেন। হযরত উবাই (রা.) এরপর থেকে যাদেরই কুরআন পড়িয়েছেন, তাদের কাছ থেকে কোনরকম উপহার নিতেন না, এমনকি খাবারের দাওয়াতও গ্রহণ করতেন না।
হযরত উবাই (রা.) বদর, উহুদ, খন্দকসহ সকল যুদ্ধেই মহানবী (সা.)-এর সহযোদ্ধা হিসেবে যোগদান করেন। উহুদের যুদ্ধের পর মহানবী (সা.)-এর নির্দেশে হযরত উবাই (রা.) আহতদের খোঁজ-খবর নিতে বের হলে হযরত সা’দ বিন রবীর সাথে তার দেখা হয়, যিনি তার অন্তিম মুহূর্তে ছিলেন। হযরত সা’দ (রা.) হযরত উবাইকে যে সংবাদ পৌঁছানোর জন্য বলেছিলেন তা এরকম ছিল: “আমার মুসলমান ভাইদের আমার সালাম পৌঁছাবে, আর আমার জাতি ও আত্মীয়দের বলবে- মহানবী (সা.) আমাদের কাছে আল্লাহ্ তা’লার শ্রেষ্ঠ আমানত, আমরা নিজেদের প্রাণ দিয়ে হলেও সেই আমানতের সুরক্ষা করেছি; এখন আমরা চলে যাচ্ছি আর সেই আমানত তোমাদের কাছে অর্পণ করছি। এমনটি যেন না হয়, তোমরা এই আমানতের সুরক্ষায় কোন দুর্বলতা দেখাও!
হযরত আবু বকর (রা.)’র খিলাফতকালে পবিত্র কুরআন সংকলন ও সুবিন্যস্ত করার কাজ আরম্ভ হলে বিজ্ঞ সাহাবীদের একটি দল এই সেবার জন্য নিযুক্ত হন, যাদের নেতৃত্বে ছিলেন হযরত উবাই (রা.); তিনি এই কাজে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য উপস্থাপন করতেন, যা অনেকেই জানতেন না। হযরত উমর (রা.) স্বীয় খিলাফতকালে যখন মজলিসে শূরার প্রবর্তন করেন, তখন সেই কমিটিতেও হযরত উবাই (রা.) বিশেষ স্থান লাভ করেন। হযরত উমর (রা.) তাকে বিশেষ সম্মান করতেন। যখন তিনি রমযান মাসে বাজামাত তারাবীহ্‌র নামাযের প্রচলন করেন, তখন হযরত উবাইয়ের ইমামতিতে সবাইকে একসাথে তারাবীহ্‌র নামায পড়ার নির্দেশ দেন। হযরত উবাই (রা.) হাদীসের দরস দিতেন; তার হাদীস ক্লাসে অধিকাংশ অংশগ্রহণকারী ছিলেন সাহাবীরাই। বিভিন্ন সময়ে হযরত উমর (রা.) ফিকাহ্ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে নিজের সিদ্ধান্তের চেয়ে হযরত উবাই (রা.)’র সিদ্ধান্তকে অগ্রগণ্য করেছেন, কারণ হযরত উবাই সে বিষয়গুলোতে কুরআন ও হাদীসের আলোকে নিখুঁত ও অধিক যৌক্তিক সিদ্ধান্ত প্রদান করতেন; অনেক সময় ফিকাহ্ সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্তের প্রয়োজন হলে তার কাছে লোকদের পাঠাতেন। হুযূর (আই.) এরূপ একাধিক ঘটনার উল্লেখও করেন। হযরত উসমান (রা.) তার খিলাফতকালে যখন মুসলমানদের বিভিন্নভাবে কুরআন তিলাওয়াত করতে দেখে সবাইকে এক রীতিতে কুরআন পড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন, তখন মুহাজির ও আনসারদের মধ্য থেকে বারজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে এই দায়িত্ব প্রদান করেন, যাদের নেতৃত্বে ছিলেন হযরত উবাই বিন কা’ব (রা.)। হযরত উবাই তিলাওয়াত করতেন আর হযরত যায়েদ (রা.) সাথে সাথে লিখতে থাকতেন; আজ পৃথিবীতে যত কুরআনের কপি রয়েছে, তা সব হযরত উবাই (রা.)’র সেই পড়ার রীতিতে লিপিবদ্ধ।
হযরত উবাই (রা.)’র বরাতে মহানবী (সা.)-এর আরেকটি চমৎকার নির্দেশনা আমাদের জন্য বিশেষভাবে শিক্ষণীয়। যদি কেউ কোন কিছু কুড়িয়ে পায় তাহলে একবছর বার বার তাকে ঘোষণা দিতে হবে এরপর আরো একবছর অপেক্ষা করবে- এ সময়ের মধ্যে কেউ তা দাবী না করলে সেটি তার হবে। এছাড়া তিনি (রা.) কোন পার্থিব বস্তু হারিয়ে গেলে মসজিদে সেটির এলান করাকে মসজিদের শিষ্ঠাচার বহির্ভূত বলে জ্ঞান করতেন।
হযরত উবাই বিন কা’ব (রা.) ২২ হিজরী ও মত্যান্তরে ৩০ হিজরীতে হযরত উসমান (রা.)’র খিলাফতকালে মৃত্যুবরণ করেন। তোফায়েল ও মুহাম্মদ নামে তার দু’পুত্র ও উম্মে আমর নামে তার এক কন্যা ছিলেন।