উৎকৃষ্টতম আদর্শ – মুহাম্মদ (সা.)

হযরত মির্যা মসরূর আহমদ - খলীফাতুল মসীহ্‌ আল্‌ খামেস (আই.)

০১-ডিসেম্বর, ২০১৭

বাইতুল ফুতুহ্ মসজিদ, লন্ডন, যুক্তরাজ্য

জুমুআর খুতবার সারমর্ম


এই জুমু’আর খুতবার সারাংশটিতে কোনো প্রকার ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে তার দায়ভার আহ্‌মদীয়া বাংলা টীম গ্রহণ করছে।

নিখিল বিশ্ব আহমদীয়া মুসলিম জামাতের বর্তমান ইমাম হযরত মির্যা মসরূর আহমদ খলীফাতুল মসীহ্ আল্ খামেস (আই.) গত ১লা ডিসেম্বর, ২০১৭ইং রোজ শুক্রবার লন্ডনের বায়তুল ফুতুহ মসজিদ থেকে “উৎকৃষ্টতম আদর্শ – মুহাম্মদ (সা.)”- সম্পর্কে জুমুআর খুতবা প্রদান করেন।

তাশাহুদ, তাঊয, তাসমিয়া এবং সূরা ফাতিহা পাঠের পর,

হুযূর আনোয়ার (আই.) বলেন, আজ হচ্ছে সেই দিন অর্থাৎ ১২ই রবিউল আওয়াল যেদিন এমন জ্যোতির আগমন ঘটেছে যাকে আল্লাহ্‌ তা’লা সিরাজুম মুনীরা আখ্যা দিয়েছেন। আল্লাহ্‌ তা’লা তাঁর (সা.) সম্পর্কে কুরআন করীমে বলেন, “ওয়ামা আর সালনাকা ইল্লা রাহমাতুল্লিল আলামিন”- আর আমরা তোমাকে পৃথিবীর জন্য কেবল রহমত স্বরূপ প্রেরণ করেছি। তাছাড়া আল্লাহ্‌ তা’লা তাঁর (সা.)-এর উৎকৃষ্ট আদর্শের কথা কুরআন করীমে উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন, “লাকাদ কানা লাকুম ফী রাসূলুল্লাহে উছওয়াতুন হাসানাতুন” অর্থাৎ নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ তা’লার রসূলের মাঝে তোমাদের জন্য উৎকৃষ্ট আদর্শ রয়েছে।

হুযুর (আই.) বলেন, তাঁর (সা.)-এর উৎকৃষ্ট আদর্শের উপর আমল না করে কোন মুসলমান প্রকৃত মুসলমান হিসেবে আখ্যায়িত হতে পারে না। আমাদের নবী (সা.) আমাদের জন্য তৌহিদ প্রতিষ্ঠার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, ইবাদতের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, উত্তম নৈতিক চরিত্রের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এবং ‘হুকুকুল ইবাদ’-এর দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। অতএব আজকের এই খুশীর দিনে, অর্থাৎ নবী করীম (সা.)-এর জন্মের দিনে, আমাদেরকে পৃথিবীতে ভালবাসা এবং ভ্রাতৃত্ববোধের ঝর্ণা প্রবাহিত করতে হবে; কেননা এর শিক্ষা আঁ-হযরত (সা.) তাঁর নিজ মান্যকারীদের দিয়ে গেছেন। হুযুর (আই.) আরও বলেন, আমরা যারা আহমদী তাদের কাজ হল রসূলে করীম (সা.)-এর আদর্শের প্রতিটি দিক যেন দৃষ্টিপটে রাখি এবং তার উপর আমল করার সর্বাত্বক চেষ্টা করি।

এরপর হুযুর (আই.) হযরত মসীহ মওউদ (আ.)-এর বরাত দিয়ে রসূলে করীম (সা.)-এর জীবনের উত্তম আদর্শের কিছু দিক উল্লেখ করেন। যেমন, আঁহযরত (সা.) খোদা তা’লার সত্ত্বায় পরিপূর্ণ ভালবাসা পোষণকারী ছিলেন। তিনি (সা.) আল্লাহ্‌ তা’লার প্রতি এমন ভালবাসা পোষণ করতেন যে সাধারণ মানুষ বলত “আশেকা মুহাম্মাদুন আলা রাব্বীহি”। মুহাম্মদ (সা.) তার প্রভূর জন্য দিওয়ানা হয়ে গেছেন।

হযরত মসীহ মাওউদ (আ.) তাঁর (সা.) সুমহান মর্যাদার কথা উল্লেখ করেন এবং বলেন, তিনি (সা.) সকল কল্যাণের উৎসস্থল। অতএব তাঁকে (সা.) অনুসরণ করেই প্রকৃত তৌহিদ বা একত্ববাদের জ্ঞান অর্জিত হতে পারে। তাঁর (সা.) জীবন আদর্শ অনুসরণ করে আমরা আল্লাহ্‌ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারি। আর এটি হযরত মসীহ মাওউদ (আ.)-এর দাবীর মূল।

তাছাড়া হুযুর (আই) রসূলে করীম (সা.)-এর বিভিন্ন প্রকার উন্নত গুণাবলী যেমন, ইবাদতের মান, সত্য ও নিষ্ঠার মান, ধৈর্য্য, বিনয়, অবিচলতা, পবিত্রতা, নমনীয়তা, কোমলতা, বীরত্ব এবং দানশীলতার উল্লেখ করেন। আর এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্‌ তা’লা তাঁর সম্পর্কে কুরআন করীমে বলেন, “ইন্নাক লা আলা খুলুকীন আযীম। ” নিশ্চয়ই তুমি মহান চারিত্রিক গুণাবলীর উপর অধিষ্ঠিত।

খুতবার শেষাংশে হুযুর (আই.) বলেন, অতএব আজকে যদি সত্যিকার অর্থে আনন্দ উদযাপন করতে হয় তবে তাঁর (সা.) জীবনাদর্শ অনুসরণের মাধ্যমেই করা যেতে পারে।

জুমুআর নামাযের পর হুযুর (আই.) আমেরিকা নিবাসী সিষ্টার সালমা গনি সাহেবার গায়েবানা জানাযা পড়ান।