নবীনেতা মুহাম্মদ মুস্তফা (সাল্লাল্লাহো আলায়হে ওয়া সাল্লাম)

হযরত মির্যা বশীর উদ্দীন মাহমুদ আহমদ - খলীফাতুল মসীহ্ সানী (রা.)-এর লিখিত পুস্তকাবলী

মানব স্বভাবে অনুসরণ – অনুকরণের প্রবণতা রয়েছে। এ প্রবণতার সঠিক ব্যবহারের ব্যক্তি ও সমাজ প্রভুতভাবে উপকৃত হয়, অপব্যবহারে তেমনি উভয়ই মারাত্মভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এমন কি অনুসরণ- অনুকরণ মানব জীবকে সার্থকতায় বা ব্যর্থতায় পর্যবসিত করতে পারে। আদর্শগত ব্যাপারে কথাটি বিশেষভাবে প্রযােজ্য। উল্লেখ্য যে, আল্লাহ্ তাঁর প্রিয়তম সৃষ্টি মানুষকে আদর্শগত অনুসরণ-অনুকরণের সম্ভাব্য বিভ্রান্তি হতে বাঁচানাের জন্য নবী প্রেরণ করে আসছেন। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ )-এর পূর্বেকার নবীগণের প্রত্যেকেই নির্দিষ্ট কোন গােষ্ঠী, সম্প্রদায় বা এলাকার জন্য প্রেরিত হয়েছিলেন। অপরদিকে হযরত নবী করীম (সাঃ ) বিশ্বনবী রূপে প্রেরিত হয়েছেন । তাই তাঁর অনুসরণ- অনুকরণে বিশ্ববাসী সকলের সামগ্রিক কল্যাণ নিহিত রয়েছে ।
সঠিক অনুসরণ- অনুকরণের জন্যে আদর্শ পুরুষের সঠিক জীবনীর সাথে পরিচিত হওয়া একান্ত প্রয়ােজন। এদিক থেকে বিবেচনা করলে যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া যায় না, তা হলাে মহানবী ( সাঃ)-এর পূর্বেকার কোন নবীরই জীবনী এবং কুরআন পাকের পূর্বেকার কোন ঐশী কিতাবই সঠিক অবস্থায় পাওয়ার উপায় নেই। কেননা, তাঁদের জীবনীতে ও কিতাবে অনুগামীরা প্রচুর যােগ -বিয়ােগ করে মূলকে অনেকাংশে হারিয়ে ফেলেছে । অপরদিকে আল্লাহ নিজ হাতে কুরআন পাকের হেফাযতের ভার নেয়ায় তা মানবীয় হস্তক্ষেপ হতে রক্ষা পেয়েছে ও পাচ্ছে। অবশ্য রসূল করীম (সাঃ )-এর জীবনীতে তাঁর অনুগামীদের দাবীদার ও অন্যান্য অনেকেই কল্প- কাহিনীর সংযােগ ঘটাতে কোনই কার্পণ্য করে নি। এ কল্পকাহিনীর বেড়াজাল ছিন্ন করতেই হবে নতুবা তাকেও সঠিকভাবে জানা , বুঝা ও অনুসরণ- অনুকরণ করা যাবে না । কুরআন পাকে আল্লাহ্ রসূল করীম (সাঃ) সম্পর্কে যে সব কথা বলেছেন তাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে জগতের সামনে তাঁর জীবনী ও সমসাময়িক ঘটনাবলীর তাৎপর্য তুলে ধরতে হবে।এক্ষেত্রে আহমদীয়া মুসলিম জামাতকে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হবে । বস্তুতঃ ‘নবীয়ু কা সরদার (সাঃ) গ্রন্থের সম্মানিত প্রণেতা হযরত মির্যা বশীরুদ্দীন মাহমুদ আহমদ (রাঃ) সেই কর্তব্যই সম্পাদন করেছেন। তাই এই জীবনী-গ্রন্থে হুযূর (সাঃ )-কে সঠিকভাবে অনুসরণ অনুকরণের প্রচুর উপাদান পাওয়া যাবে।