খতমে নবুওয়তের অস্বীকারকারী কে?


বাংলাদেশের সকল আহমদী আল্লাহ্ তা’আলা অজস্র কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে, যিনি তাঁর বিশেষ ফযলে আহমদীয়া মুসলিম জামাত বাংলাদেশকে পবিত্র কুরআনের বাংলা অনুবাদ প্রকাশ করার তৌফীক দান করেছেন। জামাতে আহমদীয়ার পেশকৃত অনুবাদ দুনিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি, রাজনৈতিক সমস্যা, বিজ্ঞানের উন্নতির কারণে সৃষ্ট সকল ধরণের জটিলতার সমাধান দিতে সক্ষম। এই কারণে শিক্ষিত, বুদ্ধিমান ও চিন্তাশীল ব্যক্তিবর্গের মধ্যে এই অনুবাদ জনপ্রিয়তা লাভ করছে।
উল্লেখ্য যে, আমাদের অনুবাদে মূল কুরআনের একটি জের ও জবরও পরিবর্তন করা হয় নি। আহমদীয়া মুসলিম জামাতের পেশকৃত অনুবাদের প্রতিবাদ জানিয়ে কিছুদিন পূর্বে উলামা ও মাশায়েখগণ খবরের কাগজে একটি বিবৃতি দিয়েছেন এবং এই বিবৃতির সমর্থনে ঢাকার একটি দৈনিক পত্রিকা সম্পাদকীয় লিখেছে। সম্পাদকীয়ের ব্যাপারে আমাদের উত্তর নিম্নে দেয়া হলোঃ

১। আমরা খোদাতা’লাকে সাক্ষী রেখে হলফ করে বলছি যে, আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত খোদাতা’লার একত্ববাদের উপর বিশ্বাসী এবং হযরত রসূল করীম (সাঃ)-কে খাতামুন্নবীঈন বলে ঈমান রাখে। অন্যান্য মুসলমানদের মত আহমদীয়া মুসলিম জামা’তও এই দুই মৌলিক বিশ্বাসের উপর প্রতিষ্ঠিত।

২। আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত কুরআন মজীদকে এক পূর্ণ বিধান এবং চিরস্থায়ী শরীয়ত বলে বিশ্বাস রাখে।

৩। আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত বিশ্বাস রাখে, কুরআন মজীদের “বিসমিল্লাহ্” থেকে শেষ সূরার “ওয়ান্নাস” পর্যন্ত না কোন পরিবর্তন হয়েছে, আর না কখনও হবে।

৪। আহমদীয়া মুসলিম জামাত বিশ্বাস রাখে যে, কুরআন মজীদের প্রতিটি আদেশ ও আয়াতের উপর আমল করা অত্যাবশ্যকীয় এবং কোন আয়াতই রহিত হয়নি। অপরদিকে আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের বিরুদ্ধবাদী উলামাদের বিশ্বাস এই যে, কুরআন মজীদের কতিপয় আয়াত রহিত হয়েছে এবং তার উপর আমল করার কোন প্রয়োজন নেই। পরিতাপের বিষয় এই যে, বিভিন্ন ফিরকার আলেমগণ কুরআন মজীদের আয়াত বিভিন্ন সংখ্যায়, যা পাঁচ হতে পাঁচশত পর্যন্ত রহিত বলে ফতওয়া দিয়েছেন।

৫। আহমদীয়া মুসলিম জামাত বিশ্বাস রাখে যে, যেহেতু হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া আলেহী ওয়া সাল্লাম খাতামুন্নবীঈন, তাই তাঁর পর এমন কোন নবীর আবির্ভাব হতে পারে না, যিনি নতুন শরীয়ত নিয়ে আসবেন। উম্মতে মুহাম্মদীয়ার অনেক প্রাচীন সর্বজন স্বীকৃত বুযুর্গনও এই বিশ্বাসে বিশ্বাসী।

৬। আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত বিশ্বাস করে, হযরত রসূল করীম (সাঃ)-কে আল্লাহ্তা’লা তাঁর উম্মতের ভবিষ্যতের সংবাদ দিয়েছিলেন যে, তাঁর উম্মতের মধ্যে পূর্ববর্তী উম্মতের চেয়েও বেশী মতভেদের সৃষ্টি হবে এবং তারা অনেক দলে বিভক্ত হবে। অন্যান্য মুসলমানদেরও বিশ্বাস ইহাই।

৭। আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের বিশ্বাস, উম্মতে মুহাম্মদীয়ার মতভেদ ও দুরবস্থার যুগে এই উম্মতকে একত্রিত করার জন্যে ও তাদের সংস্কারের জন্যে হযরত রসূল করীম (সাঃ) এক মহাপুরুষের আগমনের সুসংবাদ দিয়েছেন, যাঁকে খোদাতা’লা মনোনীত করবেন। আহমদী ছাড়া অন্যান্য মুসলমানদেরও বিশ্বাস এরূপই।

৮। আহমদীয়া মুসলিম জামাতের বিশ্বাস এই যে, সেই মহাপুরুষের আগমন হবে উম্মতে মুহাম্মদীয়ার সংস্কার ও একত্রীকরণের জন্যে। তিনি নতুন কোন শরীয়ত নিয়ে আসবেন না বরং হযরত রসূল করীম (সাঃ)-এর অধীনস্থ হয়ে আসবেন ও তাঁর শরীয়তকে প্রতিষ্ঠিত করবেন। আহমদী ছাড়া অন্যান্য মুসলমানদেরও বিশ্বাস এরূপই।

৯। আহমদীয়া মুসলিম জামাত এই বিশ্বাস রাখে যে, যেই ব্যক্তি এই উম্মতের সংস্কারের জন্য আসবেন, তিনি হযরত রসূল করীম (সাঃ)-এর আনুগত্য ও কল্যাণে, তাঁরই ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী, হযরত ঈসা নবী সদৃশ হয়ে ইমাম মাহ্দী রূপে আগমন করবেন। হাদীসে তা স্পষ্টভাবে ব্যক্ত হয়েছে, যেমনঃ
(ক) লাল মাহদীউ ইল্লা ঈসাবনা মারয়াম ( ইবনে মাজা, বাবু সিদাতুয্যামান) অর্থাৎ মাহ্দী ঈসা ইবনে মরিয়ম ব্যতিরেকে অপর কেহ নহেন

(খ) কাইফা আনতুম ইযা নাযালা ইবনে মারয়ামা ফীকুম ফা আম্মাকুম (মুসলিম, কিতাবুল ঈমান)
অর্থাৎ তোমাদের অবস্থা তখন কেমন হবে, যখন ইবনে মরিয়ম তোমাদের মধ্যে আবির্ভূত হয়ে তোমাদের ইমামতি করবেন।

(গ) ইয়ুশেকু মান আশা মিনকুম আনূ ইয়াল্কা ঈসাবৃনা মারয়ামা ইমামাল্ মাহ্দীয়ান হাকামান আদালান (মুসনদ আহমদ বিন হাম্বল) অর্থাৎ তোমাদের মধ্যে যারা জীবিত থাকবে, তারা দেখতে পাবে ঈসা ইবনে মরিয়মকে ন্যায়পরায়ণ
মীমাংসাকারী ইমাম মাহ্দীরূপে।

১০। অপরদিকে, আহমদীয়া মুসলিম জামাতের বিরুদ্ধবাদীরা বলেন যে, উম্মতে মুহাম্মদীয়ার সংস্কারের জন্য দুই পৃথক ব্যক্তির আবির্ভাব ঘটবে, একজন উম্মত থেকে হবে, যাকে খোদাতা’লা ইমাম মাহ্দী রূপে দণ্ডায়মান করবেন। তাঁর সাথে আর একজন নবীও পুনারাগমন করবেন, নিনি খৃষ্টধর্মের প্রবর্তক হযরত ঈসা (আঃ); আর তিনি আকাশ হতে অবতরণ করবেন।

সুতরাং দেখা যায় আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত খাতামুন্নবীঈন (সাঃ)-এর পর শুধু একজন মহাপুরুষ হযরত ইমাম মাহ্দী (আঃ)-এর আগমনে বিশ্বাসী কিন্তু আহমদীয়া মুসলিম জামাতের বিরুদ্ধবাদী উলামাগণ খাতামুন্নবীঈন (সাঃ)-এর পর দুই জন মহামানবের আগমনে
বিশ্বাসী, একজন ইমাম মাহ্দী (আঃ) ও অপরজন হযরত ঈসা (আঃ), যিনি খৃষ্টান ধর্মের নবী ছিলেন।

উপরোক্ত বিশ্লেষণে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত ও এর বিরুদ্ধবাদীগণ সমভাবে বিশ্বাসী যে,
(ক) হযরত রসূল করীম (সাঃ) খাতামান্নাবীঈন
(খ) হযরত রসূল করীম (সাঃ)-এর পর কোন শরীয়তধারী নবীর আগমন হবে না
(গ) হযরত রসূল করীম (সাঃ)-এর পর হযরত রসূল করীম (সাঃ)-এর উম্মতের সংশোধন ও একত্রীকরণের জন্য যিনি আসবেন তিনি উম্মতে মোহাম্মদীয়ার মধ্য থেকেই হবেন ও তিনি হযরত ইমাম মাহ্দী (আঃ) হবেন।

আহমদীয়া মুসলিম জামাতের বিরুদ্ধবাদীগণ ইহাও বিশ্বাস করেন যে, হযরত রসূল করীম (সাঃ) এর পর এমন এক ব্যক্তি আসবেন, যিনি কিতাবধারী নবী ছিলেন এবং নবী রূপেই উম্মতে মুহাম্মদীয়ার মধ্যে আসবেন, অর্থাৎ হযরত ঈসা (আঃ)। আহমদীয়া মুসলিম জামাতের বিশ্বাস হযরত খাতামুল আম্বীয়া (সাঃ)-এর পর হযরত ঈসা (আঃ) আসতে পারেন না। প্রথম কারণ এই যে, কুরআনে করীম, হাদীসে নববী এবং অন্যান্য ঐতিহাসিক সাক্ষীসমূহ দ্বারা একথাই প্রমাণিত হয়েছে যে, হযরত ঈসা (আঃ) আকাশে উত্থিত হন নি বরং ক্রুশের ঘটনার বহু পরে স্বাভাবিক জীবন যাপনের পর মৃত্যুবরণ করেছেন এবং যিনি একবার মৃত্যু বরণ করেন, তিনি আর এই পৃথিবীতে আসতে পারেন না। দ্বিতীয় কারণ হল, যিনি খুঁষ্টধর্মের নবী ছিলেন, তাঁর পুনরাগমনে, হযরত রসূল করীম (সাঃ) শেষ নবী বলে গণ্য হতে পারেন না। তাই আহমদীয়া মুসলিম জামাত এই বিশ্বাসে বিশ্বাসী নয়।

উপরোক্ত বিশ্লেষণে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, আহমদীয়া মুসলিম জামাতের উপর এই অপবাদ দেয়া যে, তারা খতমে নবুওয়তে বিশ্বাসী নয়, এই জামাতের প্রতি একটা বড় অবিচার।
আশ্চর্যের বিষয় এই যে, আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত যদি এই বিশ্বাস করে যে, হযরত রসূল করীম (সাঃ)-এর পর এক মহাপুরুষ তাঁর উম্মতের মধ্য থেকেই আসবেন, তাহলে তারা খতমে নবুওয়তে অবিশ্বাসী হয়। অথচ যারা নিজেরাই হযরত রসূল করীম (সাঃ)- এর পর দুই ব্যক্তির আগমনে বিশ্বাসী হন, যার মধ্যে একজন পূর্বতন স্বতন্ত্রভাবে মনোনীত নবী, তারা খতমে নবুওয়তে বিশ্বাসীই থেকে যান পৃথিবী থেকে কি বিবেক, বুদ্ধি, ইনসাফ একেবারে শেষ হয়ে গিয়েছে? খোদার ওয়াস্তে চিন্তা করুন। আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত খোদার ফযলে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-কে নিঃসন্দেহে খাতামুন্নবীঈন বলে মানে।

এই জামাতের সাথে বাহাইদের কোন ধরণের সাদৃশ্য নেই। তারাতো শরীয়তে মুহাম্মদীয়াকে মনসুখ বলে নতুন শরীয়াতের দাবী করে থাকে। অনুরূপভাবে, আহমদীয়া মুসলিম জামাতের সাথে খৃষ্টানদেরও দূরতম কোন সাদৃশ্য নেই। কেননা, খৃষ্টানেরা হযরত ঈসা (আঃ)-কে খোদা এবং খোদার পুত্র বলে মনে করে এবং তাঁর পুনঃ আগমনের কথা প্রচার করে থাকে। আহমদীয়াতের বিরোধীরা, এখনও ঈসা (আঃ) আকাশে জীবিতাবস্থায় আছেন, বিশ্বাস করেন। ইহা কি খৃষ্টানী বিশ্বাসের প্রতিধ্বনি নয়? আহমদীয়া মুসলিম জামাত তো হযরত ঈসা (আঃ)-কে খোদার বান্দা এবং নবী বলে মেনে থাকে এবং অতিরিক্ত কিছুই মানে না।

আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত এমন উলামা ও মাশায়েখদের সাথেও মতভেদ রাখে, যারা বাহাইদের সমর্থন করে থাকে এবং বিশ্বাস করে যে, কুরআন করীমের বিভিন্ন আয়াত রহিত হয়ে গিয়েছে। অপরদিকে বাহাইরা সম্পূর্ণ কুরআনকে রহিত বলে দাবী করে। উলামা ও মাশায়েখদের পরস্পরের মধ্যে কুরআনের রহিত আয়াতের সংখ্যা সম্বন্ধেও মতভেদ রয়েছে। অপরদিকে এই সমস্ত উলামা ও মাশায়েখগণ খৃষ্টানদের বিশ্বাসকে আরো মজবুত করছেন এই কথা বলে যে, খৃষ্ট ধর্মের প্রবর্তক নবী যিনি শুধু বনী ইসরাঈলের নবী ছিলেন, এবং কিতাবওয়ালা নবী ছিলেন, তিনি আবার ইসলামকে বাঁচাবার জন্যে আসবেন। ঈসা (আঃ)-এর সশরীরে দ্বিতীয় আগমনের বিশ্বাস তো খৃষ্টানদেরই বিশ্বাসের প্রতিধ্বনি মাত্র। এই জগতের মুক্তিদাতা হিসাবে ঈসা (আঃ)-এর দ্বিতীয় আগমনের কথা খৃষ্টানরাই প্রচার করে।

সম্পাদক সাহেব অত্যন্ত সঠিক কথা লিখেছেন যে, ইসলাম কাউকে জোর যবরদস্তি মুসলমান বানায় না। সম্পাদক সাহেবের কাছে আমাদের প্রশ্ন, ইসলাম কি কাউকে জোর যবরদস্তি অমুসলমান বানাতে শিক্ষা দেয়? যদি এরূপ শিক্ষা না দেয়, তাহলে আহমদীয়া মুসলিম জামাতকে জোর যবরদস্তি অমুসলিম বানানোর দাবী কেন করা হচ্ছে?
এই জামা’ত একটি খাঁটি মুসলমান সম্প্রদায়। ইসলামের প্রতিটি আদেশ ও শিক্ষাকে অন্তর থেকে বিশ্বাস করে এবং বড় কথা এই যে, এর উপর আমলও করে থাকে। এরকম জামা’তকে অমুসলমান বানানো কোন ধরণের ইসলামী খেদমত? সম্পাদক সাহেব এক হাস্যাস্পদ কথা লিখেছেন যে, আহমদীয়া মুসলিম জামাত জনসাধারণকে ধোকা দিয়ে নিজদিগকে মুসলমান বলে প্রকাশ করে এবং তাদিগকে আহমদী বানায়। সম্পাদক সাহেব কি বাংলা দেশের জনসাধারণকে এতই অজ্ঞ বুদ্ধিহীন মনে করেন যে, তারা বুঝতেই পারেন না যে, আহমদীরা মুসলমান নয়, প্রতারণা দ্বারা মুসলমান হয়?
বাংলাদেশের জনসাধারণ এতই নিবোধ যে, তারা আহ্মদী হবার পরও জানতে পারে না যে, আহ্মদীরা মুসলমান নয় সম্পাদক সাহেবের এই বিবৃতি বাংলাদেশের কোটি কোটি মুসলমানের অবমাননা ছাড়া আর কিছুই নয়। সুতরাং, এই জমাতের বিরোধিতা করতে গিয়ে, যারা খোদার ভয়-ভীতি, বুদ্ধি-বিবেক ও ইনসাফকে জলাঞ্জলী দিয়ে মিথ্যার আশ্রয় নেন খোদাতা’লা যেন তাদেরকে তাকওয়া ও বুদ্ধি ফিরিয়ে দেন।

 

পরিশেষে খতমে নবুওয়ত সম্বন্ধে আহমদীয়া মুসলিম জামাতের প্রতিষ্ঠাতা হযরত মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী (আঃ)-এর একটি উক্তি দেয়া হলোঃ– “আমার এবং আমার অনুসারীদের উপর এই অপবাদ দেওয়া হয় যে, আমরা আল্লাহ্‌র নবী (সাঃ)-কে খাতামুন্নবীঈন রূপে মানি না, ইহা এক জাজ্জ্বল্যমান মিথ্যা ছাড়া আর কিছুই নয়।
আমরা যে উৎসাহ, উদ্দীপনা ও দৃঢ়তার সাথে আঁ-হযরত (সাঃ)-কে খাতামুন্নবীঈন বলে বিশ্বাস রাখি, আমাদের অপবাদ দানকারীরা তার লক্ষ ভাগের একভাগও রাখেন না”। ( আল্ হাকাম)

প্রকাশক

সেক্রেটারী ইসলাহ ও ইরশাদ

আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত, বাংলাদেশ