নবম অভিযোগ: ‘কাদিয়ানীর ওহী কুরআনের চাইতেও বেশী সম্মানের উপযোগী’


খতমে নবুওয়ত-বর্ষ কাদিয়ানী আস্তানা ঘেরাও পুস্তিকার ১৫ পৃষ্ঠায় ‘মুফতী’ নূরানী দাবী করেছেন, কাদিয়ানীদের দাবী হচ্ছে, ‘কাদিয়ানীর (অর্থাৎ মির্যা সাহেবের) ওহী কুরআনের চাইতেও বেশী সম্মানের উপযোগী (দুররে সামিন, পৃ: ২৮৭)।

আমাদের বক্তব্য

নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক। দূর্রে সামিনের উক্ত পৃষ্ঠা বা অন্য কোন পৃষ্ঠায় একথা নাই। আমাদের চ্যালেঞ্জ রইল। মুফতী নূরানী দুররে সামিনা পুস্তকটি পড়ে দেখা দূরে থাক চোখেও দেখে নি। এর প্রমাণ হলো, দুররে সামিন’ পুস্তকের মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ১৬৪। যে বই-এর মোট পৃষ্ঠার সংখ্যাই হচ্ছে ১৬৪ সেখানে ২৮৭ নম্বর পৃষ্ঠা খুঁজে বের করে তিনি যা বলছেন তা কতটুকু সত্য তা যে কোন মানুষের কাছে স্পষ্ট। হযরত মির্যা সাহেব বা
তার অনুসারীদের কেউই পবিত্র কুরআনের চেয়ে অন্য কারও ওহী বা ইলহামকে শ্রেষ্ঠ বা অধিক সম্মানিত বলে কখনও বিশ্বাস করেন না।

‘মুফতী’ নূরানী যেহেতু ‘দুররে সামিন’ পুস্তকের উদ্ধৃতি দিয়েছেন তাই এস্থলে আমি প্রথমে সেই পুস্তক থেকেই দু’টো পংতি তুলে ধরছি। হযরত মির্যা সাহেব আল কুরআনের মাহাত্ম্য বর্ণনা করে বলেছেন:

“জামাল ও হুসনে কুরআঁ নূরে জানে হার মুসলমী হ্যা

কামার হ্যা চাঁন্দ আওরোঁ কা হামারা চাঁন্দ কুরআঁ হ্যা

নাযির উসকি নেহী জাম্‌তি নাযার মেঁ ফিক্‌র কার্‌ দেখা
ভালা কিউকার না হো ইয়াকতা কালামে পাক রাহমাঁ হ্যা।”
(দুররে সামিন, পৃষ্ঠা : ৫, ইসলাম ইন্টারন্যাশনাল পাবলিকেশন্স)

অর্থাৎ “কুরআন শরীফের রূপ-সৌন্দর্য প্রত্যেক মুসলমানের প্রাণের
জ্যোতিস্বরূপ । অন্যদের জন্য আকাশের চাঁদ আকর্ষণীয় ও মোহনীয়, কিন্তু
আমাদের আকর্ষণ ও মোহের কেন্দ্র হচ্ছে আল-কুরআন। আমি আমার দৃষ্টি প্রসারিত করে গভীরভাবে চিন্তা করে দেখেছি, আল-কুরআনের কোন তুলনাই হয় না। রহমান খোদার পবিত্র বাণী অন্যন্য-অসাধারণ না হয়ে কি পারে?”

তিনি আরো বলেছেনঃ

“দিল মেঁ এহী হ্যা হারদাম তেরা সাহিফা চুমুঁ
কুরআঁ কে গিরদ ঘুমুঁ, কা’বা মের এই হ্যা।।”

(দুররে সামিন, শানে ইসলাম, পৃষ্ঠা : ৮৪)

অর্থাৎ, “(হে আল্লাহ্!) আমার মন সারাক্ষণ তোমার নাযিলকৃত কিতাবকে চুমু খেতে চায়। মন চায়, সারাক্ষণ আমি প্রেমিকের ন্যায় এই কুরআনকে প্রদক্ষিণ করি। আমার কাছে কুরআন শরীফ কা’বা তুল্য।”
হযরত মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী (আ:) আরেক স্থলে বলেছেন: “আমরা দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে বিশ্বাস রাখি, কুরআন শরীফ শেষ ঐশী গ্রন্থ এবং এর শিক্ষা, বিধান, আদেশ ও নিষেধের মাঝে এক বিন্দু বা কণা পরিমাণ সংযোজনও হতে পারে না আর বিয়োজনও হতে পারে না । এখন আল্লাহর পক্ষ থেকে এমন কোন ওহী বা ইলহাম হতে পারে না যা কুরআন শরীফের আদেশাবলীকে সংশোধন বা রহিত কিংবা কোন একটি
আদেশকেও পরিবর্তন করতে পারে । কেউ যদি এমন মনে করে তবে আমাদের মতে সে ব্যক্তি বিশ্বাসীদের জামাত বহির্ভূত, ধর্মত্যাগী ও কাফের।” (ইযালায়ে আওহাম, ১ম খন্ড, পৃ: ১৩৭-১৩৮)

অতএব, মুফতী নূরানীর অভিযোগ মিথ্যা। লা’নাতুল্লাহে আলাল কাযেবীন। মিথ্যাবাদীদের প্রতি আল্লাহর লা’নত।

অন্যান্য উত্তর