প্রথম অভিযোগ: কাদিয়ানীদের বিশ্বাস বক্তব্য: “আমিই খাতামুল আম্বিয়া।”
‘মুফতী নূরানী তার পুস্তিকায় মিথ্যা নবীর দাবীদার ভন্ড, কাদিয়ানীর ঈমান বিধ্বংসী দশটি ভ্রান্ত বিশ্বাস’ শীর্ষক অংশে প্রথম অভিযোগটি করেছেন এভাবে:
-কাদিয়ানীদের বিশ্বাস বক্তব্যঃ “আমিই খাতামুল আম্বিয়া।” (খতমে নবুওয়াত বর্ষ-কাদিয়ানী আস্তানা ঘেরাও – পৃ: ৮) ‘মুফতী নূরানী এই উক্তিটি নির্দিষ্টভাবে ইনভার্টেড কমা (“ ”)-র মাঝে আবদ্ধ করেছেন আর উদ্ধৃতি উল্লেখ করেছেন এক গালাতি কা ইযালাহ পুস্তিকার পৃ: ১০ থেকে।
আমাদের বক্তব্য:
এমন কোন কথা উক্ত এক গালাতি কা ইযালা পুস্তিকার ১০ নং পৃষ্ঠায় অন্য কোন পৃষ্ঠায় নাই। আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য হলো, আহমদীরা মহানবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তাফা (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) ছাড়া অন্য কাউকে খাতামান নবীঈন’ বা ‘খাতামুল আম্বিয়া বিশ্বাস করে না। একমাত্র হযরত মুহাম্মদ রসুলুল্লাহ্ (সা:) হলেন “খাতামান নবীঈন’ যার আধ্যাত্মিক পরশ পেয়ে আহমদীয়া মুসলিম জামাতের প্রতিষ্ঠাতা মিযা গোলাম আহমদ (আ:) আল্লাহর নৈকট্য লাভের সৌভাগ্য পেয়েছেন। এই হচ্ছে আহমদীয়া মুসলিম জামাতের বিশ্বাস । হযরত মির্যা সাহেবের কেবল একটি পুস্তিকা নয় বরং তার রচিত ছোট বড় প্রায় ৯০ খানা পুস্তকের কোন একটিতেও তিনি নিজে ‘খাতামুল আম্বিয়া হবার দাবী করেছেন-এমন কোন কথা বা লেখা খুঁজে পাওয়া যাবে না। এটা আমাদের চ্যালেঞ্জ।
পাঠকদের জন্যে এ প্রসঙ্গে হযরত মির্যা গোলাম আহমদ (আ:)-এর লেখার একটি অংশ তুলে ধরছি। তিনি বলেছেন:
“আমাদের ধর্মবিশ্বাসের সারাংশ ও সারমর্ম হলোঃ “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ্’। এই পার্থিব জীবনে আমরা যা বিশ্বাস করি এবং আল্লাহ্ তা’লার কৃপায় ও তারই প্রদত্ত তৌফিকে যা নিয়ে আমরা এই
নশ্বর পৃথিবী ত্যাগ করবো তা হলো: আমাদের সম্মানিত নেতা হযরত মুহাম্মদ মুস্তাফা (সা:) হলেন “খাতামান নবীঈন” ও “খায়রুল মুরসালিন’ যার মাধ্যমে ধর্ম পূর্ণতাপ্রাপ্ত হয়েছে এবং যে নেয়ামত দ্বারা সত্যপথ
অবলম্বন করে মানুষ আল্লাহ্ তা’লা পর্যন্ত পৌছুতে পারে তা পরিপূর্ণতা লাভ করেছে। আমরা দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে বিশ্বাস রাখি, কুরআন শরীফ শেষ ঐশী-গ্রন্থ এবং এর শিক্ষা, বিধান, আদেশ ও নিষেধের মাঝে এক বিন্দু বা কণা পরিমাণ সংযোজনও হতে পারে না আর বিয়োজনও হতে পারে না। এখন আল্লাহর পক্ষ থেকে এমন কোন ওহী বা ইলহাম হতে পারে না যা কুরআন শরীফের আদেশাবলীকে সংশোধন বা রহিত কিংবা কোন একটি আদেশকেও পরিবর্তন করতে পারে । কেউ যদি এমন মনে করে তবে আমাদের মতে সে ব্যক্তি বিশ্বাসীদের জামাত বহির্ভূত, ধর্মত্যাগী ও কাফের। আমরা আরও বিশ্বাস করি, সিরাতে মুস্তাকীমের উচ্চমার্গে উপনীত হওয়া তো দূরের কথা, কোন মানুষ আমাদের নবী (সা:)-এর অনুসরণ ছাড়া এর সামান্য পরিমাণও অর্জন করতে পারে না । অামরা অামাদের নবী (সা:)-এর সত্যিকার ও পূর্ণ অনুসরণ ছাড়া কোন ধরনের আধ্যাত্মিক সম্মান ও উৎকর্ষ কিংবা মর্যাদা ও নৈকট্য লাভ করতেই পারি না।”
(ইযালায়ে আওহাম পুস্তক, প্রথম খন্ড, পৃ: ১৩৭-১৩৮)
অতএব, মুফতী নূরানীর প্রথম মিথ্যাচারের উত্তরে আমাদের বক্তব্য হলো, লা’নাতুল্লাহে আলাল কাযেবীন-মিথ্যাবাদীদের প্রতি আল্লাহর অভিশাপ ।
অন্যান্য উত্তর
- মাসিক মদীনা পত্রিকার প্রশ্নোত্তরের কলামের উত্তর – ইমাম মাহদীর আগমন ও নিদর্শন স্বরূপ চন্দ্র ও সূর্যগ্রহণ
- মাসিক মদীনার মিথ্যাচারের উত্তর – পবিত্র কুরআনের কিছু অংশ ছেটে ফেলা এবং ঈসা (আঃ)-কে শূলীবিদ্ধ করে মেরে ফেলা হয়েছে
- ইসলামী প্রতীকসমূহের ব্যবহার আহ্মাদী ফিরকার জন্য আইনতঃ নিষিদ্ধ হওয়া উচিত কি?
- মাসিক মদীনায় প্রকাশিত “আহমদী সম্প্রদায় : আমার বক্তব্য” – আপত্তির উত্তর
- ঈসা (আ.) কি আসবেন? – মাসিক মদিনায় প্রকাশিত প্রশ্নের উত্তর
- মাসিক মদীনা পত্রিকায় “কাদিয়ানী মতবাদ একটি ফেৎনা” শীর্ষক প্রবন্ধের সংক্ষিপ্ত উত্তর
- হযরত মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী (আ.)-এর মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল?
- হযরত মির্যা সাহেবের মৃত্যুতে বিখ্যাত মনীষীরা কি বলেছিলেন?
- মৌলবী সানাউল্লাহ অমৃতসরীর পরিণাম কি হয়েছিল?
- মির্যা সাহেবের মৃত্যু সম্পর্কিত অপবাদ খণ্ডন