অষ্টম অভিযোগ: *আয়াতগুলি গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর শানে অবতীর্ণ হয়েছে।
অষ্টম অভিযোগ: ‘মুফতী নূরানী আলোচ্য পুস্তিকার ১৩ নম্বর পৃষ্ঠায় লিখেছেন: সূরা
আলে এমরান ৩১ নম্বর আয়াত, বনী ইসরাইলের ১ নং আয়াত, সূরা ছফ এর ৬ নম্বর আয়াত, সূরা ফাতাহর ১ ও ২৯ নম্বর এবং সূরা কাওসারের ১ নম্বর আয়াত—এ আয়াতগুলি গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর শানে অবতীর্ণ হয়েছে। (তাযকিরা ও কাদিয়ানী কর্তৃক কুরআনের অনুবাদ)।
আমাদের বক্তব্য
গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর শানে অবতীর্ণ হয়েছে বলতে ‘মুফতী’ নূরানী কি বুঝাতে চাচ্ছেন তা স্পষ্ট নয়। এর দ্বারা তিনি যদি বুঝিয়ে থাকেন যে এসব আয়াত মির্যা সাহেবের কারণে বা তার জন্য অবতীর্ণ হয়েছে তবে মুফতী নূরানীর এই দাবী সম্পূর্ণ মিথ্যা। আর যদি এর দ্বারা তিনি বুঝিয়ে থাকেন পবিত্র কুরআনের উল্লেখিত আয়াতগুলোর মাঝে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ইমাম মাহদীর সত্যতার প্রমাণ আছে তবে তার এই কথা সঠিক। মুফতী নূরানী নিজেই বলেছেন, এটি বিশদ আলোচনা-পর্যালোচনা সাপেক্ষ একটি বিষয় । এখানে অতি সংক্ষেপে এর উত্তর দেয়ার চেষ্টা করা
হলো।
সূরা আলে ইমরানের ৩১ নম্বর আয়াতে (বিসমিল্লাহকে সূরার ১ নম্বর আয়াত গণনা করলে আয়াত নম্বর ১টি করে বৃদ্ধি পাবে) আল্লাহ্তা’লা মহানবী (সা:)-এর মাধ্যমে জগতের সকল মু’মিন মুত্তাকী ব্যক্তিকে আহ্বান জানিয়েছেন:
“তুমি বল, তোমরা আল্লাহকে ভালবাসলে আমার (অর্থাৎ মহানবীর) অনুসরণ কর, তাহলে আল্লাহ্ তোমাদেরকে ভালবাসবেন।”
হযরত মির্যা সাহেব দাবী করেছেন, তার সমস্ত আধ্যাত্মিক উৎকর্ষ ও খোদার নৈকট্য লাভের মূল রহস্য এটাই। তিনি ‘ফানা ফির্ রাসূল’ অর্থাৎ রসূল প্রেমে বিভোর হয়ে তার মাঝে বিলীন হয়েছিলেন বলেই মহান আল্লাহ্ তাকে কবুল করেছেন, তাকে আধ্যাত্মিকভাবে উন্নত করেছেন। প্রশ্ন হলো, ‘মুফতী নূরানীর এতে আপত্তির কি আছে? এই উম্মতের হাজার হাজার গাউস, কুতুব, আউলিয়া কি একই পথ অবলম্বন করে আল্লাহ্র নৈকট্য লাভ করেন নি? মির্যা সাহেবের ক্ষেত্রে আপত্তিটা কিসের?
‘মুফতী’ নূরানী সংক্ষেপে কেবল ইন্না আ’তায়নাকাল কাউসার আয়াতটি সম্বন্ধে এক বাক্যে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, এই আয়াতের অর্থ হলো, ‘আমি আপনাকে হাউজে কাউসার দান করেছি।’
পরকালে হাউজে কাউসার’ দান করার বিষয়টি আমরা অস্বীকার করছি না। কিন্তু আমরা জানি আরবী ভাষায় কাউসার’ শব্দের আরও গভীর অর্থ আছে। অনেক প্রাচুর্য ও কল্যাণ বন্টনকারী ব্যক্তিকেও কাউসার’ বলা হয় (মুফরাদাতে ইমাম রাগেব ও ইবনে জারীর দ্রষ্টব্য)। সেক্ষেত্রে সূরা কাউসার বিশ্বনবী (সা:)-এর অনুসারী আধ্যাত্মিক ভান্ডার বন্টনকারী এক মহান ব্যক্তির আগমণবাণী প্রদান করছে একথা স্পষ্টই প্রতীয়মান হয়।
অতএব মুফতী নূরানীকে মিছিল-ঘেরাও বাদ দিয়ে পবিত্র কুরআনকে আরও গভীরভাবে অধ্যয়ন করার আহ্বান জানাচ্ছি।
অন্যান্য উত্তর
- মাসিক মদীনা পত্রিকায় “কাদিয়ানী মতবাদ একটি ফেৎনা” শীর্ষক প্রবন্ধের সংক্ষিপ্ত উত্তর
- হযরত মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী (আ.)-এর মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল?
- হযরত মির্যা সাহেবের মৃত্যুতে বিখ্যাত মনীষীরা কি বলেছিলেন?
- মৌলবী সানাউল্লাহ অমৃতসরীর পরিণাম কি হয়েছিল?
- মির্যা সাহেবের মৃত্যু সম্পর্কিত অপবাদ খণ্ডন
- মাসিক মদীনা: ওহী ইলহামের দরজা হযরত মুহাম্মদ (সঃ)-এর ইন্তিকালের পর বন্ধ হয়ে গেছে?
- আহমদীরা মীর্যা গোলাম আহমদকে হযরত মোহাম্মাদ (দঃ)-এর পরিবর্তে শেষ নবী বলে মনে করেন – ভ্রান্ত ধারণার অপনোদন
- অভিযোগ: মুহাম্মদী বেগম সাথে বিয়ের ভবিষ্যদ্বাণীর অপূর্ণতার অভিযোগ
- দ্বিতীয় অভিযোগ: কাদিয়ানীদের বিশ্বাস ও বক্তব্য: “আমি মুহাম্মদ (সা:) থেকে উত্তম নবী”
- তৃতীয় অভিযোগ: “আমি নতুন শরীয়তপ্রাপ্ত নবী” (আরবাঈন, পৃষ্ঠা-৩)