আপত্তি: মির্যা সাহেবের মিরাক তথা উন্মাদনার রোগ ছিল
উত্তর:
১. মির্যা সাহেব যদি পাগল হতেন তাহলে কেউ তার বিরোধিতা করতো না। সম্মিলিতভাবে তার বিরোধিতা প্রমাণ করে মির্যা সাহেব পাগল ছিলেন না।
২. পূর্ববর্তী নবীদেরকেও বিরুদ্ধবাদীরা পাগল বলে আখ্যায়িত করেছে এবং মানুষকে একথা বলে দূরে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। যেমন মহানবী (সা.)-কেও একই অপবাদ দেয়া হয়েছে। আল্লাহ এই আপত্তির উত্তর কী দিয়েছেন? বলেছেন, কলম ও দোয়াত এবং যা লেখা হচ্ছে তা সাক্ষী আল্লাহর ফজলে তুমি পাগল নও। অতএব, মির্যা সাহেব যেসব নিগূড় তত্ত্ব উপস্থাপন করে গেছেন যেসব দলিল প্রমাণ দিয়ে গেছেন সেসব প্রমাণ করছে যে মির্যা সাহেব পাগল নন।
৩. রূহানী খাযায়েন ১৭শ খণ্ড, পৃ. ৪১৯, মির্যা সাহেব বলেন, (উর্দু হতে ভাবার্থ) প্লেগ, উন্মাদনা, অন্ধত্ব-এমন রোগ হলে মানুষ বলে যে, তার ওপর আল্লাহর গযব নাযেল হয়েছে। এক্ষেত্রে বারাহীনে আহমদীয়াতেই আল্লাহ্ আমাকে জানিয়েছেন আল্লাহ আমাকে সুসংবাদ দিয়েছেন যে, আমি তোমাকে এমন সব নোংরা ব্যাধী হতে সুরক্ষিত রাখবো এবং আমার নেয়ামত পূর্ণ করবো।
অতএব, এই ভবিষ্যদ্বাণী সত্ত্বেও যদি মির্যা সাহেবের জীবদ্দশায় কেউ তার উন্মাদনার রোগ ছিল বলে উল্লেখ করে থাকে তাহলে আর কেউ কিছু বলুক বা না বলুক মিরযা সাহেব অবশ্যই এর প্রতিবাদ করতেন। তার কিছু না বলা প্রমাণ করে যা বলা হয়েছিল তা সিজোফ্রেনিয়া বা উন্মাদনা ছিল না অন্য কিছু ছিল।
৪. প্রাচীন চিকিৎসা শাস্ত্র তিব্বে আকবর (মূল আরবী) (উর্দুতেও অনুদিত হয়েছে)। এই গ্রন্থে مراق এর অধিনে তিনটি রোগের কথা উল্লেখ আছে যেগুলোকে মিরাক বলা হয়। প্রথম দু’টি হলো, মাথা ব্যাথা ও ডিপ্রেশন ও মানসিক ক্লান্তি সংশ্লিষ্ট আর তৃতীয়টি হলো উন্মাদনা যেটাকে সিজোফ্রেনিয়া বলা হয়ে থাকে। লক্ষ্য করুন, সিরাতে মাহদীর উদ্ধৃতিতেই উল্লেখ আছে যে, অতিরিক্ত পড়ালেখা ও লেখালেখির কাজ করার কারণে মানসিকভাবে মির্যা সাহেব ক্লান্ত হয়ে যেতেন এবং প্রচন্ড মাথা ব্যাথা হতো।
এখন এটাকে যে কেউ হিস্টেরিয়া বা যে নামেই ডাকুক না কেন তা কেবলমাত্র মাথা ব্যাথা ও মানসিক প্রচন্ড চাপের কারণে মানসিক ক্লান্তিই ছিল।
৫. এছাড়া মির্যা সাহেব তার পুস্তক ইযালায়ে আওহাম রূহানী খাযাযেন ৩য় খণ্ড পৃ. ১২১ এ তিনি লিখেছেন যে, তার বিরুদ্ধে উন্মাদনার রোগ হয়েছে বলে আপত্তি করা হয়। এতে তিনি আনন্দ প্রকাশ করে বলেন যে, আল্লাহর ভবিষ্যদ্বাণী পূর্ণ হয়েছে কেননা বারাহীনে আহমদীয়াতে আল্লাহ্ জানিয়েছিলেন তোমাকে পাগলও বলা হবে। অতএব যেখানে নবী-রসূলদেরকে পাগল বলা একটি সুন্নত ছিল প্রতিশ্রুত মসীহর ক্ষেত্রেও তা পূর্ণ হলো।
এই আনন্দের উল্লেখ করে মির্যা সাহেব বলেন, যারা এমন আপত্তি করেন তারা আমার উপস্থাপিত দলিল প্রমাণ ও যুক্তি দেখে নিক আর এর বিপরীতে বিরুদ্ধবাদীদের দলিল প্রমাণ ও যুক্তি দেখে নিক তাহলেই সকলের কাছে স্পষ্ট হবে কে উন্মাদনার রোগে আক্রান্ত।
অন্যান্য উত্তর
- মাসিক মদীনা পত্রিকায় “কাদিয়ানী মতবাদ একটি ফেৎনা” শীর্ষক প্রবন্ধের সংক্ষিপ্ত উত্তর
- হযরত মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী (আ.)-এর মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল?
- হযরত মির্যা সাহেবের মৃত্যুতে বিখ্যাত মনীষীরা কি বলেছিলেন?
- মৌলবী সানাউল্লাহ অমৃতসরীর পরিণাম কি হয়েছিল?
- মির্যা সাহেবের মৃত্যু সম্পর্কিত অপবাদ খণ্ডন
- মাসিক মদীনা: ওহী ইলহামের দরজা হযরত মুহাম্মদ (সঃ)-এর ইন্তিকালের পর বন্ধ হয়ে গেছে?
- আহমদীরা মীর্যা গোলাম আহমদকে হযরত মোহাম্মাদ (দঃ)-এর পরিবর্তে শেষ নবী বলে মনে করেন – ভ্রান্ত ধারণার অপনোদন
- অভিযোগ: মুহাম্মদী বেগম সাথে বিয়ের ভবিষ্যদ্বাণীর অপূর্ণতার অভিযোগ
- দ্বিতীয় অভিযোগ: কাদিয়ানীদের বিশ্বাস ও বক্তব্য: “আমি মুহাম্মদ (সা:) থেকে উত্তম নবী”
- তৃতীয় অভিযোগ: “আমি নতুন শরীয়তপ্রাপ্ত নবী” (আরবাঈন, পৃষ্ঠা-৩)