আপত্তি: মুজাদ্দেদ আহমদ বেরলভি(রহ.) শিখদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন
আপত্তি: মুজাদ্দেদ হযরত সৈয়দ আহমদ বেরলভি(রহ.) শিখদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন।
জবাবঃ মুজাদ্দেদ হযরত সৈয়দ আহমদ বেরলভি(রহ.) উপমহাদেশের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের উত্তরাঞ্চলে শিখদের বিরুদ্ধে ধর্ম যুদ্ধ করেছিলেন। ত্রয়োদশ হিজরি শতাব্দির মুজাদ্দেদ হযরত সৈয়দ আহমদ বেরলভী সাহেব পাঠানকোটে শিখদের বিরুদ্ধে জিহাদ করেন। এর উল্লেখ করে মূল হিন্দুস্তানী ভূখন্ডে ইংরেজদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র জিহাদ করাটা বৈধ ছিল বলে কেউ কেউ বলার চেষ্টা করেন। কিন্তু তারা এ কথা ভুলে যান, হযরত সৈয়দ আহমদ বেরলভী(রহ.) কখনও ইংরেজ শাসন বা শাসকদের বিরুদ্ধে ধর্মযুদ্ধ করেন নি বরং অত্যাচারী অনাচারী এবং মুসলিম বিদ্বেষী শিখদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করেছিলেন। এ বিষয়ে তার জীবনী রচয়িতা মোহাম্মদ থানেশ্বরী বলেন, “একজন প্রশ্নকারী তাকে প্রশ্ন করেছিলেন, আপনি এতদূরে গিয়ে শিখদের বিরুদ্ধে জিহাদ করছেন কেন? এদেশের বর্তমান শাসক ইংরেজরাও কি ইসলামের অস্বীকারকারী নয়? দেশের অভ্যন্তরে তাদের বিরুদ্ধে জেহাদ করে ভারতবর্ষ তাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেন না কেন? উত্তরে তিনি বলেছিলেন, ইংরেজ সরকার যদিও ইসলামের অস্বীকারকারী কিন্তু তারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের অন্যায় অনাচার করে না …এবং তাদেরকে ধর্মীয় কর্তব্য পালনে ও ফরয ইবাদতে বাধা দান করে না। আমরা তাদের দেশে প্রকাশ্যে বক্তৃতা করি ও ধর্ম পালন করি। তারা কখনও এটি নিষেধ করে না এবং এই ব্যাপারে বাধাও দেয় না। … আমাদের আসল কাজ হল খোদার তওহীদ ও মহানবী(সা.)-এর আদর্শ প্রতিষ্ঠা করা আমরা সেই কাজ নিদ্বিধায় এ দেশে করতে পারছি। তাহলে আমরা ইংরেজ সরকারের বিরুদ্ধে কী কারণে জিহাদ করব এবং ইসলামী নীতির বিরুদ্ধে গিয়ে কেন আমরা অযথা উভয় পক্ষের রক্তাপাত ঘটাব? এই সদুত্তর শুনে প্রশ্নকারী চুপ হয়ে গেল এবং জিহাদের প্রকৃত উদ্দেশ্য বুঝে গেল।” (‘সাওয়ানেহ আহমদী কাল’ গ্রন্থ, পৃষ্ঠা ৭১)
আল্লামা শিবলি নোমানী বলেছেন, “রসূলুল্লাহ(সা.)-এর স্বর্ণযুগ হতে আজ পর্যন্ত মুসলমানদের মাঝে এ রীতিই প্রচলিত রয়েছে, তারা যে সরকারের অধীনে থাকে সে সরকারের প্রতি বিশ্বস্ত ও আজ্ঞানুবর্তি থাকে। এটি কেবল তাদের নীতিই ছিল না বরং এটা তাদের ধর্মীয় শিক্ষাও বটে, পবিত্র কুরআন হাদীস ও ফিকাহ সবগুলোতে যার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে উল্লেখ রয়েছে।“ (“শিবলী রচনাবলী’, ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ১৭১)
মুসলমানদেরকে ধর্মীয় অধিকার ও স্বাধীনতা প্রদানকারী একটি সরকারের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ যে সুস্পষ্ট বিদ্রোহ ও হারাম কাজ এ কথা সে যুগের আলেমরাও জানতেন আর আজকের আলেমরাও জানেন। আমাদের পক্ষ থেকে এ উত্তর ছাপার সময় বাংলাদেশের লক্ষাধিক আলেম স্বাক্ষরিত ও প্রকাশিত জঙ্গিবাদ বিরোধী ফতোয়াও এর একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ। হযরত মির্যা গোলাম আহমদ সাহেবকে মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করার জন্য একটি ‘হারাম’ কাজকে ‘হালাল’ বলে বরং ইসলামী জিহাদ বলে চালিয়ে দেয়া কতটুকু ইসলামী- আমরা বিবেকবান পাঠকদের কাছে তা জানতে চাই।
অন্যান্য উত্তর
- আপত্তি: মির্যা সাহেব রসূল (সা.)-কে হেলাল এবং নিজেকে বদর আখ্যা দিয়েছেন
- আপত্তি: মির্যা সাহেব লিখেছেন, তার সিংহাসন সবার ওপরে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব নিজেকে দরুদ শরীফের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করেছেন
- আপত্তি: মির্যা সাহেব লিখেছেন ইয়ালাস খোদাতা’লার নাম
- আপত্তি: মির্যা সাহেবের উপর অন্য ভাষায় ইলহাম হল কেন?
- আপত্তি: মির্যা সাহেব বলেছেন, মাহদীর মাধ্যমে মহানবী (সা.) এর দ্বিতীয় আগমন হবে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব নতুন নবুয়্যত, ধর্ম, কিবলা, নামায এবং কুরআন বানিয়েছেন
- আপত্তি: মির্যা সাহেবের কথা- একটি নতুন বাহন আবিষ্কার হবে যা আগুন দ্বারা চলবে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব বলেন, কুরআনে তাঁর নাম ইবনে মরিয়ম রাখা হয়েছে
- আপত্তি: মির্যা সাহেব রেশমী লুঙ্গি পরিধান করেছিলেন যা হারাম